Book of Common Prayer
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: তন্ত্রবাদ্য সহযোগে দায়ূদের গানগুলির অন্যতম।
61 হে ঈশ্বর, আমার প্রার্থনা সঙ্গীত শুনুন।
আমার প্রার্থনা শুনুন।
2 আমি যেখানেই থাকি, যতই দুর্বল হই না কেন,
আমি সাহায্যের জন্য আপনাকে ডাকবো!
আমাকে বহু বহু উঁচুতে
নিরাপদ স্থানে নিয়ে চলুন।
3 আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল!
আপনিই সেই শক্তিশালী দুর্গ যা আমাকে আমার শত্রুদের থেকে রক্ষা করে।
4 আমি চিরদিনের জন্য আপনার তাঁবুতে থাকতে চাই।
যেখানে আপনি আমায় সুরক্ষিত করবেন আমি সেখানেই লুকিয়ে থাকতে চাই।
5 হে ঈশ্বর, আপনাকে যা দেবার প্রতিশ্রুতি আমি করেছি তা আপনি শুনেছেন।
কিন্তু আপনার অনুগামীদের যা আছে, তার প্রতিটি জিনিসই আপনার কাছ থেকে এসেছে।
6 রাজাকে দীর্ঘ জীবন দিন!
তাকে চিরদিন জীবিত থাকতে দিন!
7 তাকে চিরদিন ঈশ্বরের সঙ্গে বেঁচে থাকতে দিন!
আপনার প্রকৃত ভালোবাসা দিয়ে তাকে আপনি রক্ষা করুন।
8 আমি চিরকাল আপনার নামের প্রশংসা করবো।
আমি যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, প্রতিদিনই আমি তা পালন করবো।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: যিদূথূনের উদ্দেশ্যে দায়ূদের একটি গীত।
62 যাই ঘটুক না কেন, ঈশ্বর আমায় উদ্ধার করবেন এই আশায় আমার আত্মা ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করছে।
আমার পরিত্রাণ একমাত্র তাঁর কাছ থেকেই আসবে।
2 হয়তো আমার অনেক শত্রু আছে, কিন্তু ঈশ্বরই আমার দুর্গ।
ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেন।
উঁচু পর্বতে ঈশ্বরই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
আমার মস্ত বড় শত্রুও আমায় পরাজিত করতে পারবে না।
3 কতক্ষণ তোমরা আমায় আক্রমণ করবে?
আমি একটা ঝুঁকে পড়া দেওয়ালের মত।
আমি একটা ভগ্ন প্রায় বেড়ার মত।
4 আমার গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও
ঐসব লোক আমার বিনাশের পরিকল্পনা করছে।
আমার সম্পর্কে মিথ্যা বলে ওরা আনন্দ পায়।
জনসমক্ষে ওরা আমার সম্পর্কে ভাল কথা বলে
কিন্তু গোপনে আমায় অভিশাপ দেয়।
5 আমাকে রক্ষা করবার জন্য আমার আত্মা ধৈর্য্য ধরে শুধুমাত্র ঈশ্বরের অপেক্ষা করছে!
ঈশ্বর আমার একমাত্র আশা।
6 ঈশ্বরই আমার দুর্গ। ঈশ্বরই আমায় রক্ষা করেন।
উঁচু পর্বতে ঈশ্বরই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
7 আমার মহিমা ও জয় ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে।
তিনিই আমার দৃঢ় দুর্গ, তিনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
8 হে লোক সকল, সর্বদাই ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস রাখো।
তোমাদের সব সমস্যা ঈশ্বরকে বল।
ঈশ্বরই আমাদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
9 প্রকৃতপক্ষে লোকজন কোন সাহায্য করতে পারে না।
প্রকৃত সাহায্যের জন্য তোমরা ওদের ওপর নির্ভর করতে পারবে না।
ঈশ্বরের সঙ্গে তুলনা করলে,
ওরা একটি বাতাসের ফুত্কার ছাড়া আর বেশী কিছু নয়।
10 জোর করে কেড়ে নেওয়ার ব্যাপারে তোমার ক্ষমতার ওপর বিশ্বাস কর না।
একদম ভেবো না যে চুরি করে কিছু নিয়ে লাভবান হবে।
যদি তুমি ধনী হও,
তবে মোটেই বিশ্বাস করো না সম্পদ তোমায় সাহায্য করবে।
11 ঈশ্বর বলেন, একটাই মাত্র জিনিস আছে যার ওপর তুমি নির্ভর করতে পারো এবং আমি তা বিশ্বাস করি।
“একমাত্র ঈশ্বরের কাছ থেকেই শক্তি আসে!”
12 হে আমার প্রভু, আপনার ভালোবাসাই প্রকৃত ভালোবাসা।
লোকে যে কাজ করে তার জন্যই আপনি তাকে পুরস্কার বা শাস্তি দেন।
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি প্রশংসা গীত।
68 ঈশ্বর, আপনি উঠুন এবং শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করুন।
তাঁর সব শত্রুরা যেন তাঁর থেকে দূরে পালিয়ে যায়।
2 ধোঁয়া যেমন বাতাসে উড়ে যায়,
তেমনি আপনার শত্রুরা যেন ছত্রভঙ্গ হয়।
মোম যেমনভাবে আগুনে গলে যায়,
তেমনই করে যেন আপনার শত্রুরাও ধ্বংস হয়।
3 কিন্তু ধার্ম্মিক লোকরা সুখী।
ধার্ম্মিক লোকরা ঈশ্বরের সঙ্গে আনন্দোল্লাসে সময় কাটাবে।
ধার্ম্মিক লোকরা নিজেদের উপভোগ করতে পারবে এবং প্রচণ্ড সুখী হবে!
4 ঈশ্বরের উদ্দেশ্য গান গাও।
তাঁর নামে প্রশংসা কর। ঈশ্বরের জন্য পথ প্রস্তুত কর।
মরুভূমিতে তিনি রথে চড়ে আসছেন।
তাঁর নাম “যাঃ।” তাঁর নামের প্রশংসা কর!
5 তাঁর পবিত্র মন্দিরে তিনিই অনাথের পিতার মত।
ঈশ্বর বিধবাদের যত্ন নেন।
6 সঙ্গীহীন লোককে ঈশ্বর গৃহ দেন;
ঈশ্বর তাঁর লোকদের কারাগার থেকে মুক্ত করেন, তারা ভীষণ সুখী।
কিন্তু যে লোকরা ঈশ্বরের বিরোধিতা করবে তারা রৌদ্র দগ্ধ মরুভূমিতে বাস করবে।
7 ঈশ্বর, আপনিই আপনার লোকদের মিশর থেকে বেরিয়ে আসতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
আপনিই মরুভূমিতে হেঁটে গিয়েছিলেন।
8 এবং ভূমি কেঁপে উঠেছিল।
ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বর স্বয়ং সীনয় পর্বতে নেমে এলেন এবং আকাশ বিগলিত হল।
9 একটা পরিশ্রান্ত ও প্রাচীন ভূখণ্ডকে পুনরায় সতেজ করার জন্য
আপনি বৃষ্টি পাঠিয়েছিলেন।
10 আপনার সব পশু সেই ভূখণ্ডে ফিরে এলো।
হে ঈশ্বর, সেই জায়গায় দরিদ্র লোকদের আপনি বহু ভাল জিনিস দিয়েছেন।
11 ঈশ্বর আজ্ঞা দিলেন
এবং বহু লোক সুসমাচার দিতে গেল:
12 “শক্তিশালী রাজার সৈনিকরা পালিয়ে গেছে! সৈনিকরা যুদ্ধ ফেরৎ যে সব জিনিস আনবে, বাড়ীর মহিলারা সেগুলো ভাগ করে নেবে।
যারা বাড়ীতে আছে তারা সেই সব সম্পদ ভাগ করে নেবে।
13 রূপোয় মোড়া ঘুঘুর ডানা ওরা পাবে।
সোনায় ঝকঝক্ করা ডানা তারা পাবে।”
14 সল্মোন পর্বতে ঈশ্বর শত্রু রাজাদের ছত্রভঙ্গ করলেন।
ওরা হয়েছিল তুষারে ঝরে যাওয়ার মত।
15 বাশন পর্বত অনেকগুলো শৃঙ্গ সম্বলিত এক বিরাট পর্বত।
16 হে বাশন পর্বত, কেন তুমি সিয়োন পর্বতকে নীচু নজরে দেখ?
ঈশ্বর সিয়োন পর্বতকে ভালোবাসেন।
প্রভু চিরদিন সেখানে থাকবেন বলে স্থির করেছেন।
17 ঈশ্বর পবিত্র সিয়োন পর্বতে আসেন।
তাঁর পিছু পিছু লক্ষ লক্ষ রথ আসে।
18 লোকদের কাছ থেকে উপহার নেওয়ার জন্য,
এমনকি যারা তাঁর বিরুদ্ধে গিয়েছিল
তাদের কাছ থেকেও উপহার গ্রহণ করার জন্য
তিনি জাঁকজমক করে বন্দীদের নেতৃত্ব দিয়ে উচ্চ পর্বতের ওপরে গেলেন।
প্রভু ঈশ্বর সেখানে থাকার জন্য গেলেন।
19 প্রভুর প্রশংসা কর!
দিনের পর দিন তিনি আমাদের ভার বহন করেন।
ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করেন!
20 তিনিই আমাদের ঈশ্বর, তিনি সেই ঈশ্বর যিনি আমাদের রক্ষা করেন।
প্রভু আমাদের ঈশ্বর, আমাদের মৃত্যু থেকে রক্ষা করেন।
21 ঈশ্বর অবশ্যই দেখাবেন যে তিনি তাঁর শত্রুদের পরাজিত করেছেন।
যারা তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে ঈশ্বর তাদের শাস্তি দেবেন।
22 আমার প্রভু বলেছেন, “বাশন থেকে আমি আমার শত্রুদের নিয়ে আসবো,
পশ্চিম দেশ থেকে আমি শত্রুদের নিয়ে আসবো।
23 তোমরা তাদের রক্তের ওপর দিয়ে হাঁটতে পারবে।
তোমাদের কুকুর ওদের রক্ত চেটে খাবে।”
24 ঈশ্বরের শোভাযাত্রার দিকে তাকিয়ে দেখ।
আমার ঈশ্বর, আমার রাজার পবিত্র শোভাযাত্রার দিকে তাকিয়ে দেখ।
25 প্রথমেই আসছে গায়করা, তাদের পেছনে রয়েছে বীণাযন্ত্র বাদ্যকারীগণ
যাদের অনুসরণ করছিল খঞ্জণী বাজনারতা মেয়েরা।[a]
26 মহাসমাবেশে ঈশ্বরের প্রশংসা কর!
হে ইস্রায়েলের লোকরা, প্রভুর প্রশংসা কর!
27 ছোট বিন্যামীন নামক উপজাতি তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে।
সেখানে যিহূদার বড় পরিবারও রয়েছে।
সবূলূন এবং নপ্তালির নেতারাও সেখানে রয়েছেন।
28 ঈশ্বর, আপনার ক্ষমতা আমাদের দেখান!
যে ক্ষমতা আমাদের জন্য অতীতে ব্যবহার করেছেন সেই ক্ষমতা প্রদর্শন করুন।
29 জেরুশালেমে, আপনার প্রাসাদে আপনাকে উপহার দেবার জন্য
রাজারা তাঁদের ঐশ্বর্য্য নিয়ে আসবেন।
30 আপনি যা চান আপনার দণ্ড ব্যবহার করে,
ঐসব জন্তুদের দিয়ে আপনি তাই করান।
ঐসব জাতির ষাঁড় ও গোরুদের
আপনার অনুগত করুন।
ওই সব জাতিকে আপনি যুদ্ধে পরাজিত করেছেন।
ওদের দিয়ে আপনার কাছে রূপো আনয়ন করুন।
31 ওদের দিয়ে মিশর থেকে ধন-সম্পদ আনয়ন করুন।
ঈশ্বর, কূশীয়রা যেন ওদের সম্পদ আপনার কাছে নিয়ে আসে।
32 পৃথিবীতে রাজারা যারা আছো, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে প্রশংসা কর!
আমাদের প্রভুর উদ্দেশ্যে প্রশংসা গান কর!
33 ঈশ্বরের গীত গাও! তিনি তাঁর রথ প্রাচীন স্বর্গগুলির মধ্য দিয়ে চালান।
তাঁর পরাক্রান্ত রব শোন!
34 তোমাদের যে কোন দেবতার থেকে
ঈশ্বর অনেক বেশী শক্তিশালী।
ইস্রায়েলের ঈশ্বর তাঁর লোকদের শক্তিশালী করেছেন।
35 তাঁর মন্দিরে ঈশ্বর অবিস্মরণীয়, ইস্রায়েলের ঈশ্বর তাঁর লোকদের শক্তি এবং ক্ষমতা দিয়েছেন।
ঈশ্বরের প্রশংসা কর!
জেরুশালেমের প্রাচীর উৎসর্গীকরণ
27 অতঃপর লোকরা জেরুশালেমের দেওয়ালটি উৎসর্গ করল। লেবীয়রা যেখানে থাকতেন সেখান থেকে দেওয়াল উৎসর্গ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে জেরুশালেমে এলেন। তাঁরা ঈশ্বরের প্রশংসাগান করতে ও তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে এসেছিলেন। তাঁরা এসে খোল, করতাল এবং বীণা প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্র বাজালেন।
28-29 গায়করাও সকলে জেরুশালেমের আশেপাশের শহরগুলি থেকে উৎসবে যোগ দিতে এসেছিলেন। তাঁরা নিজেদের বসবাসের জন্য জেরুশালেমের আশেপাশে ছোট শহর বানিয়ে ছিলেন। তাঁরা নটোফাত, বৈৎ-গিল্গল, গেবা এবং অস্মাবৎ থেকে এসেছিলেন।
30 যাজকগণ ও লেবীয়রা প্রথমে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের শুদ্ধ করলেন, তারপর লোকরা, ফটকসমূহ ও জেরুশালেমের প্রাচীরটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুদ্ধ করলেন।
31 আমি যিহূদার নেতাদের দেওয়ালের ওপরে উঠে দাঁড়াতে বললাম। এছাড়াও, ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের জন্য বড় দু’টি গানের দলকে বেছে নিলাম। একটি দল ছিল দেওয়ালের ওপরে ডানদিকে ছাইগাদার ফটকের দিকে।
42 এরপর এইসব যাজকগণও তাঁদের নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়ালেন: মাসেয়, শময়িয়, ইলিয়াসর, উষি, যিহোনাথন, মল্কিয়, এলম ও এষর।
অতঃপর যিষ্রহিয়র পরিচালনায় এর দুটি দল গান শুরু করল। 43 ওই বিশেষ দিনটিকে উপলক্ষ করে যাজকরা বহু বলি উৎসর্গ করলেন। সকলেই খুশী ছিল কারণ ঈশ্বর সকলকে খুব খুশী করেছিলেন। এমন কি মেয়েদের ও তাদের বাচ্চাদেরও খুবই উত্তেজিত ও আনন্দিত দেখাচ্ছিল। বহু দূরের লোকরাও জেরুশালেম থেকে ভেসে আসা আনন্দের স্বর শুনতে পাচ্ছিল।
44 ভাঁড়ার ঘরের তত্ত্বাবধানের জন্য লোক ঠিক করার পর প্রতিশ্রুতি মতো লোকরা গাছের প্রথম ফল ও উৎপন্ন শস্যের দশ ভাগের এক ভাগ জমা করল। তত্ত্বাবধায়ক সেসব ফল ও ফসল ভাঁড়ারে তুলে রাখল। ইহুদীরা সকলেই দায়িত্বাধীন যাজক ও লেবীয়দের কাজে খুবই সন্তুষ্ট হয়েছিল। তাই তারা মুক্তহস্তে ভাঁড়ারের জন্য উপহার বয়ে আনছিল। 45 যাজকগণ ও লেবীয়রা তাঁদের ঈশ্বরের সেবা করছিলেন। তাঁরা লোকদের শুচি করার জন্য অনুষ্ঠান সম্পাদন করলেন। গায়ক ও দ্বাররক্ষীরাও দায়ূদ ও শলোমনের নির্দেশ পালন করেছিল। 46 (বহুকাল আগে, দায়ূদ এবং সঙ্গীত দলের পরিচালক আসফের সময় ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে অনেক প্রশস্তি এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপনের গান রচনা করেছিলেন।)
47 সরুব্বাবিল ও নহিমিয়ের রাজত্বের সময়ে, ইস্রায়েলের লোকরা দ্বাররক্ষী ও গায়কদের দৈনিক ব্যয়ের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতেন। ইস্রায়েলীয়রা লেবীয়দের জন্য অর্থ সরিয়ে রাখতেন। লেবীয়রা হারোণের উত্তরপুরুষ যাজকদের জন্য সেই অর্থ রেখে দিয়েছিল।
দুই সাক্ষী
11 এরপর আমাকে বেড়ানোর লাঠির মতো একটি মাপকাঠি দেওয়া হল। একজন বললেন, “ওঠ, ঈশ্বরের মন্দির ও যজ্ঞবেদীর পরিমাপ কর আর তার মধ্যে যারা উপাসনা করছে তাদের সংখ্যা গণনা কর। 2 কিন্তু মন্দিরের বাইরের প্রাঙ্গণের কোন মাপ নিও না, কারণ তা অইহুদীদের দেওয়া হয়েছে। বিয়াল্লিশ মাস ধরে তারা সেই পবিত্র নগরটি পায়ে দলবে। 3 আমি আমার দুজন সাক্ষীকে ক্ষমতা দেব, তাঁরা বারশো ষাট দিন পর্যন্ত ভাববাণী বলবেন।”
4 সেই দুজন সাক্ষী হলেন দুটি জলপাই গাছ ও দুটি দীপাধার, যাঁরা পৃথিবীর প্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। 5 যদি কেউ তাঁদের ক্ষতি করতে চায়, তবে ঐ সাক্ষীদের মুখ থেকে আগুন বেরিয়ে এসে তাঁদের শত্রুদের গ্রাস করবে, যে কেউ তাঁদের ক্ষতি করতে চাইবে তাদেরও এইভাবে মরতে হবে। 6 আকাশ রুদ্ধ করে দেবার ক্ষমতা তাঁদের আছে, যেন ভাববাণী বলার সময় বৃষ্টি না হয়; আর জল রক্তে পরিণত করবার ও পৃথিবীর বুকে সব রকমের মহামারী যতবার ইচ্ছা ততবার পাঠাবার ক্ষমতা তাঁদের আছে।
7 তাঁদের সাক্ষ্যদান শেষ হলে, যে পশু পাতালের অতলস্পর্শী কূপ থেকে উঠে আসবে সে তাঁদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে, আর যুদ্ধে তাঁদের হারিয়ে দিয়ে হত্যা করবে। 8 তাঁদের মৃত দেহগুলি সেই মহানগরের রাস্তার ওপরে পড়ে থাকবে, এ সেই নগর যাকে আত্মিক অর্থে সদোম ও মিশর বলে; আর এই নগরেই তাঁদের প্রভু ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিলেন। 9 লোকরা তাঁদের কবর দিতে অনুমতি দেবে না। সমস্ত উপজাতি, সম্প্রদায়, ভাষাভাষী ও জাতির লোকরা জড়ো হয়ে সাড়ে তিন দিন ধরে তাঁদের শব দেখতে থাকবে। 10 পৃথিবীর লোকরা আনন্দিত হবে, কারণ ঐ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা আমোদ-প্রমোদ করবে, পরস্পরকে উপহার পাঠাবে, কারণ এই দুজন ভাববাদী পৃথিবীর লোকদের অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন।
11 এরপর সেই সাড়ে তিন দিন শেষ হলে ঈশ্বরের কাছ থেকে জীবনের আত্মা তাঁদের মধ্যে প্রবেশ করল, আর তাঁরা উঠে দাঁড়ালেন। যারা তাদের দেখল তাদের মধ্যে প্রচণ্ড ভয়ের সঞ্চার হল। 12 সেই দুজন ভাববাদী স্বর্গ থেকে এক রব শুনলেন, “এখানে উঠে এস!” তখন তাঁরা মেঘের মধ্য দিয়ে স্বর্গে উঠে গেলেন; আর তাঁদের শত্রুরা তাদের যেতে দেখল।
13 সেই মুহূর্তে প্রচণ্ড ভূমিকম্প হল, তার ফলে শহরের দশভাগের একভাগ ধ্বংস হয়ে গেল এবং সাত হাজার লোক মারা পড়ল। যাঁরা বাকি রইল তারা সকলে প্রচণ্ড ভয় পেল ও স্বর্গের ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করল।
14 দ্বিতীয় সন্তাপ কাটল। দেখ, তৃতীয় সন্তাপ শীঘ্রই আসছে।
সপ্তম তূরী ধ্বনি
15 এরপর সপ্তম স্বর্গদূত তূরী বাজালেন, তখন স্বর্গে কারা যেন উদাত্ত কন্ঠে বলে উঠল:
“জগতের ওপর শাসন করবার ভার এখন আমাদের প্রভুর ও তাঁর খ্রীষ্টের হল,
আর তিনি যুগপর্যায়ে যুগে যুগে রাজত্ব করবেন।”
16 পরে সেই চব্বিশ জন প্রাচীন, যাঁরা ঈশ্বরের সামনে নিজেদের সিংহাসনে বসে থাকেন, তাঁরা উপুড় হয়ে ঈশ্বরের উপাসনা করলেন। 17 তাঁরা বললেন:
“প্রভু ঈশ্বর, সর্বশক্তিমান, যিনি আছেন ও ছিলেন,
আমরা তোমাকে ধন্যবাদ জানাই;
কারণ তুমি নিজ পরাক্রম ব্যবহার করেছ
এবং রাজত্ব করতে শুরু করেছ।
18 জগতের জাতিবৃন্দ তোমার ওপর ক্রুদ্ধ ছিল;
কিন্তু এখন তোমার ক্রোধের পালা।
মৃত লোকদের বিচারের সময় হয়েছে;
আর তোমার ভাববাদী, যারা তোমার দাস, যারা তোমার লোক,
ক্ষুদ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ সব লোক যারা তোমাকে শ্রদ্ধা করে,
তাদের পুরস্কার দেওয়ার সময় হয়েছে।
যারা পৃথিবীকে ধ্বংস করছে তাদের ধ্বংস করবার সময় হয়েছে।”
19 পরে স্বর্গে ঈশ্বরের মন্দিরের দরজা উন্মুক্ত হলে মন্দিরের মধ্যে তাঁর চুক্তির সিন্দুকটি দেখা গেল, বিদ্যুত চমকালো, গুরু গুরু শব্দ, বজ্রপাত, ভূমিকম্প ও প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি হল।
গুপ্তধন ও মুক্তার দৃষ্টান্ত মূলক গল্প
44 “স্বর্গরাজ্য ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখা ধনের মতো। একজন লোক তা খুঁজে পেয়ে আবার সেই ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে রাখল। সে এতে এত খুশী হল যে সেখান থেকে গিয়ে তার সর্বস্ব বিক্রি করে সেই ক্ষেতটি কিনল।
45 “আবার স্বর্গরাজ্য এমন একজন সওদাগরের মতো, যে ভাল মুক্তা খুঁজছিল। 46 যখন সে একটা খুব দামী মুক্তার খোঁজ পেল, তখন গিয়ে তার যা কিছু ছিল সব বিক্রি করে সেই মুক্তাটাই কিনল।
মাছ ধরা জালের দৃষ্টান্ত
47 “স্বর্গরাজ্য আবার এমন একটা বড় জালের মতো যা সমুদ্রে ফেলা হলে তাতে সব রকম মাছ ধরা পড়ল। 48 জাল পূর্ণ হলে লোকরা সেটা পাড়ে টেনে তুলল, পরে তারা বসে ভালো মাছগুলো বেছে ঝুড়িতে রাখল এবং খারাপগুলো ফেলে দিল। 49 জগতের শেষের দিনে এই রকমই হবে। স্বর্গদূতরা এসে ধার্মিক লোকদের মধ্য থেকে দুষ্ট লোকদের আলাদা করবেন। 50 স্বর্গদূতরা জ্বলন্ত আগুনের মধ্যে দুষ্ট লোকদের ফেলে দেবেন। সেখানে লোকে কান্নাকাটি করবে ও দাঁতে দাঁত ঘসবে।”
51 যীশু তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কি এসব কথা বুঝলে?”
তারা তাঁকে বলল, “হ্যাঁ, আমরা বুঝেছি।”
52 তখন তিনি তাদের বললেন, “প্রত্যেক ব্যবস্থার শিক্ষক, যিনি স্বর্গরাজ্যের বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেছেন তিনি এমন একজন গৃহস্থের মতো, যিনি তাঁর ভাঁড়ার থেকে নতুন ও পুরানো উভয় জিনিসই বার করেন।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International