Book of Common Prayer
যন্ত্রণা কাতর একটি মানুষের প্রার্থনা। সে যখন দুর্বল বোধ করে ও প্রভুকে তার অভিযোগ জানাতে চায় তখনকার প্রার্থনা।
102 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন।
সাহায্যের জন্য আমার ক্রন্দন শুনুন।
2 যখন আমি সমস্যার মধ্যে থাকি তখন আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না।
আমার কথা শুনুন, যখন আমি সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করি তখন আমায় উত্তর দিন।
3 ধোঁয়ার মত আমার জীবন কেটে যাচ্ছে।
আমার জীবন একটি আগুনের মত যা ধীরে ধীরে পুড়ে যাচ্ছে।
4 আমার শক্তি চলে গেছে।
আমি শুকনো মৃত প্রায় ঘাসের মত।
আমি আমার খাবার পর্যন্ত খেতে ভুলে গেছি।
5 দুঃখের কারণে আমার ওজন কমে যাচ্ছে।[a]
6 আমি একটি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাস করা পেঁচার মত নিঃসঙ্গ।
ধ্বংসাবশিষ্ট অট্টালিকায় আমি একা পেঁচার মত বাস করছি।
7 আমি ঘুমোতে পারি না।
আমি ছাদে বাস করা এক নিঃসঙ্গ পাখির মত।
8 শত্রুরা সব সময়ে আমাকে অপমান করে।
ওরা আমাকে নিয়ে মজা করে ও ভৎর্সনা করে।
9 আমার খাদ্যই এখন আমার বিরাট দুঃখ।
আমার চোখের জল আমার পানীয়তে পড়ছে।
10 কেন? কারণ প্রভু আপনি আমার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন।
আপনিই আমাকে তুলে ধরেছেন এবং তারপর আপনিই আমায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন।
11 দিনের শেষের দীর্ঘ ছায়াগুলির মত আমার জীবন প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
আমি শুকনো এবং মৃত প্রায় ঘাসের মত।
12 কিন্তু প্রভু, আপনি চিরদিনই বিরাজিত থাকবেন।
আপনার নাম চিরকাল এবং অনন্তকাল মনে রাখা হবে।
13 আপনাকে উত্থান করতে হবে এবং আপনি সিয়োনকে স্বস্তি দেবেন।
কারণ তাকে সান্ত্বনা দেবার সময় হয়েছে।
14 আপনার দাসগণ সিয়োনের পাথরগুলিকে ভালোবাসে।
এই শহরের ধূলোকে পর্যন্ত তারা ভালোবাসে।
15 লোকরা প্রভুর নামের উপাসনা করবে।
হে ঈশ্বর, পৃথিবীর সমস্ত রাজারা আপনাকে মহিমান্বিত করবে।
16 প্রভু সিয়োনকে আবার নির্মাণ করবেন।
লোকেরা আবার তাঁর মহিমা দেখবে।
17 যে সব লোককে ঈশ্বর বাঁচিয়ে রেখেছেন, তিনি আবার তাদের প্রার্থনার উত্তর দেবেন।
ঈশ্বর তাদের প্রার্থনা শুনবেন।
18 ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এইসব লিখে রাখো
এবং ভবিষ্যতে ওরা প্রভুর প্রশংসা করবে।
19 প্রভু, তাঁর পবিত্র স্থান থেকে নীচের দিকে চেয়ে দেখবেন।
স্বর্গ থেকে প্রভু পৃথিবীর দিকে চেয়ে দেখবেন।
20 তিনি বন্দীদের প্রার্থনা শুনবেন।
যাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাদের তিনি মুক্ত করবেন।
21 তারপর সিয়োনে লোকরা প্রভুর কথা বলবে।
জেরুশালেমে তারা প্রভুর নামের প্রশংসা করবে।
22 সব জাতিসমূহ একসঙ্গে জড় হবে।
প্রভুর সেবার জন্য সব রাজ্য ছুটে আসবে।
23 আমার শক্তি কমে এসেছে।
আমার জীবনও ছোট হয়ে এসেছে।
24 তাই আমি বলেছিলাম, “আমি যতক্ষণ যুবক আছি আমাকে মরতে দেবেন না।
ঈশ্বর আপনি চিরদিন বিরাজিত থাকবেন!
25 সুদূর অতীতে আপনি এই বিশ্বসৃষ্টি করেছিলেন।
নিজের হাতে আপনি আকাশ সৃষ্টি করেছিলেন!
26 এই বিশ্ব, এই আকাশ একদিন শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আপনি চির বিরাজমান থাকবেন!
ওদের বস্ত্রের মতই পরিধান করা হবে।
এবং জামাকাপড়ের মতই আপনি ওদের বদল করবেন।
ওরা সবাই পরিবর্তিত হবে।
27 কিন্তু ঈশ্বর, আপনি পরিবর্তিত হবেন না।
আপনি চিরদিন বিরাজ করবেন!
28 আজ আমরা আপনার দাস।
আমাদের সন্তানরাও এখানে বসবাস করবে।
এমনকি তাদের উত্তরপুরুষরাও আপনার উপাসনা করার জন্য এখানেই বসবাস করবে।”
পঞ্চম খণ্ড
(গীতসংহিতা 107–150)
107 প্রভুকে ধন্যবাদ দাও, কেননা তিনি মঙ্গলময়।
তাঁর প্রেম চিরন্তন!
2 প্রভু যাদের রক্ষা করেছেন, তারা প্রত্যেকে অবশ্যই এই একই কথাগুলি উচ্চারণ করবে।
প্রভু ওদের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন।
3 প্রভু বিভিন্ন দেশ থেকে তাঁর লোকদের জড় করেছেন।
তাদের তিনি পূর্ব ও পশ্চিম এবং উত্তর ও দক্ষিণ থেকে নিয়ে এসেছেন।
4 ওদের কেউ কেউ মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো।
ওরা বাঁচার জন্য অন্য জায়গা খুঁজছিলো
কিন্তু ওরা কোন শহর খুঁজে পাচ্ছিলো না।
5 ক্ষুধা-তৃষ্ণায় ওরা ক্রমশঃই
দুর্বল হয়ে পড়ছিলো।
6 তখন ওরা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডাকলো
তাই তিনি ওদের বিপদ থেকে উদ্ধার করলেন।
7 ঈশ্বর সোজা তাদের সেই শহরে নিয়ে গেলেন যেখানে তারা বাস করতে পারে।
8 প্রভুকে তাঁর প্রেমের জন্য এবং তাঁর আশ্চর্য কার্য,
যা তিনি লোকদের জন্য করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ দাও।
9 ঈশ্বর তৃষিত আত্মার তৃষ্ণা নিবৃত্ত করেন;
ঈশ্বর সুন্দর জিনিস দিয়ে ক্ষুধিত আত্মার সন্তুষ্টি করেন।
10 ঈশ্বরের কিছু লোক বন্দী ছিল,
ওরা অন্ধকার গারদে বদ্ধ হয়েছিলো।
11 কেন? কারণ ঈশ্বর যা বলেছেন, ওরা তার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলো।
তারা পরাৎপরের উপদেশসমুহ মান্য করতে অস্বীকার করেছিলো।
12 ওদের কুকর্মের জন্য ঈশ্বর ওদের জীবনকে কঠিনতর করে তুলেছিলেন।
ওরা হোঁচট খেয়ে পড়লো কিন্তু ওদের সাহায্যের জন্য কেউ ছিল না।
13 ওরা সমস্যায় পড়েছিলো, তাই ওরা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডেকেছিলো
এবং তিনি তাদের সমস্যাসমূহ থেকে বাঁচিয়েছিলেন।
14 ঈশ্বর ওদের অন্ধকার কারাগার থেকে বাইরে বার করে এনেছিলেন।
যে দড়ি দিয়ে ওদের বেঁধে রাখা হয়েছিলো, ঈশ্বর তা ছিন্ন করেছিলেন।
15 প্রভুর প্রেমের জন্য এবং মানুষের জন্য
তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য করেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দাও।
16 শত্রুদের পরাজিত করতে ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করেন।
ঈশ্বর ওদের পিতলের দরজা ভেঙে দিতে পারেন।
ঈশ্বর ওদের ফটকের লোহা ভেঙে দিতে পারেন।
17 কিছু লোক ওদের পাপসমূহ ও অন্যায়গুলোকে, নিজেদের নির্বোধে পরিণত করতে দেয়।
তারা তাদের পাপসমূহের জন্য ভয়ঙ্কর ভাবে ভুগবে।
18 ওরা আহার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলো
এবং প্রায় মারা গিয়েছিলো।
19 ওরা সমস্যায় পড়েছিলো, তাই ওরা প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছিলো।
এবং ওদের সমস্যা থেকে তিনি ওদের বাঁচিয়েছিলেন।
20 ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছিলেন এবং ওদের সমস্যা মুক্ত করেছিলেন।
তাই ওই লোকরা মৃত্যু থেকে রক্ষা পেয়েছিলো।
21 প্রভুকে তাঁর প্রেমের জন্য এবং লোকদের জন্য
তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য করেন তার জন্য ধন্যবাদ দাও।
22 প্রভু যা কিছু করেছেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যে, প্রভুর কাছে বলি উৎসর্গ কর।
প্রভু যা যা করেছেন তা আনন্দের সঙ্গে বল।
23 কিছু লোক নৌকা করে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলো,
ওদের জীবিকা ওদের মহাসমুদ্রে টেনে নিয়ে গিয়েছিলো।
24 ওই সব লোক দেখেছে প্রভু কি করতে পারেন।
সমুদ্রে তিনি যে সব বিস্ময়কর কাজ করেছেন, তা ওরা দেখেছে।
25 ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছিলেন এবং প্রবল বাতাস বইতে শুরু করেছিলো।
ঢেঊগুলো ক্রমেই উচ্চ থেকে উচ্চতর হয়েছিল।
26 ঢেউগুলো ওদের আকাশে তুলে দিচ্ছিলো
এবং সমুদ্রের গভীরে নামিয়ে দিচ্ছিলো।
সে এমন ভয়ঙ্কর ঝড় ছিলো যে ওরা সাহস হারিয়ে ফেলেছিলো।
27 ওরা টল্মল করছিলো এবং নেশাগ্রস্তের মত বোধ করছিলো।
নাবিক হিসেবে তাদের ক্ষমতা কোন কাজেই লাগেনি।
28 ওরা সমস্যায় পড়েছিলো তাই ওরা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডেকেছিলো
এবং তিনি সমস্যাসমুহ থেকে ওদের রক্ষা করেছিলেন।
29 ঈশ্বর ঝড় থামিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি সমুদ্রকে শান্ত করে দিয়েছিলেন।
30 সমুদ্র শান্ত দেখে নাবিকরা খুশী হয়েছিলো
এবং তারা যেখানে যেতে চেয়েছিলো সেখানে ঈশ্বর তাদের নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছিলেন।
31 তাঁর প্রেমের জন্য এবং লোকদের জন্য তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য করেন,
তার জন্য প্রভুকে ধন্যবাদ দাও।
32 বিরাট মহাসমাজের সামনে প্রভুর মহাসভায় প্রশংসা কর।
প্রবীণ নেতারা যখন একত্রিত হবে তখন তাঁর প্রশংসা করো।
19 রাজা গাতের ইত্তয়কে বললেন, “কেন তুমিও আমাদের সঙ্গে যাচ্ছ? ফিরে যাও। নতুন রাজা অবশালোমের সঙ্গে যোগ দাও। তুমি একজন ভিন দেশী। এটা তোমার দেশ নয়। 20 কেবলমাত্র গতকাল তুমি আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছ। তুমি নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় ঘুরে বেড়াবে না? তুমি তোমার ভাইদের নাও এবং যাও। তোমার প্রতি দয়া ও আনুগত্য প্রদর্শিত হোক্।”
21 কিন্তু ইত্তয় রাজাকে উত্তর দিল, “আমি প্রভুর নামে শপথ নিয়ে বলছি, আপনি যতদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন আমি আপনার সঙ্গেই থাকব!”
22 দায়ূদ ইত্তয়কে বললেন, “এসো, আমরা কিদ্রোণ স্রোত পার হয়ে যাই।”
তখন গাতের ইত্তয় এবং তার সব লোক তাদের ছেলে-মেয়েসহ কিদ্রোণ স্রোত পার হয়ে গেল। 23 সব লোকরা উচ্চৈস্বরে কাঁদছিল। রাজা দায়ূদ কিদ্রোণ স্রোত পার হয়ে গেলেন। তারপর সব লোক মরুভূমির পথে পা বাড়াল। 24 সাদোক এবং তার সঙ্গে অন্যান্য লেবীয়রা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক বয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তারা ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক নামিয়ে রাখল। যতক্ষণ পর্যন্ত না সব লোক জেরুশালেম ত্যাগ করল, ততক্ষণ পর্যন্ত অবিয়াথর পবিত্র সিন্দুকের পাশে দাঁড়িয়ে রইলেন এবং প্রার্থনা করলেন।
25 রাজা দায়ূদ সাদোককে বললেন, “ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক জেরুশালেমে নিয়ে যাও। প্রভু যদি আমার প্রতি প্রসন্ন হন, তিনি আবার আমায় জেরুশালেমে ফিরিয়ে আনবেন এবং আমাকে জেরুশালেম ও তাঁর আবাস স্থান দেখতে দেবেন। 26 আর যদি প্রভু আমার প্রতি প্রসন্ন না হন, তিনি আমার প্রতি তাঁর যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন।”
27 রাজা যাজক সাদোককে বললেন, “তুমিও একজন ভাববাদী। তুমি শান্তিতে নগরীতে ফিরে যাও। তোমার পুত্র অহীমাস এবং অবীয়াথরের পুত্র যোনাথনকে সঙ্গে নিয়ে এস। 28 মরুভূমিতে যাবার জন্য যে জায়গায় সবাই নদী পার হয়, সেখানে আমি তোমার কাছ থেকে কোন খবর না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করব।”
29 সেই মত, সাদোক এবং অবীয়াথর ঈশ্বরের পবিত্র সিন্দুক জেরুশালেমে নিয়ে গিয়ে রেখে দিল।
দায়ূদ অহীথোফলের বিরুদ্ধে প্রার্থনা করলেন
30 দায়ূদ জৈতুন পর্বতে উঠলেন। তিনি কাঁদছিলেন। তিনি মাথা ঢেকে খালি পায়ে গেলেন। অন্যান্য সকলে মাথা ঢেকে দায়ূদের সঙ্গে গেল। তারাও কাঁদতে কাঁদতে দায়ূদের সঙ্গে গেল।
31 একজন লোক দায়ূদকে বলল, “যারা অবশালোমের সঙ্গে ফন্দি আঁটছে অহীথোফল তাদের মধ্যে একজন।” তখন দায়ূদ প্রার্থনা করলেন, “প্রভু আমরা তোমার কাছে প্রার্থনা করি তুমি অহীথোফলের চক্রান্ত ব্যর্থ কর।” 32 দায়ূদ পর্বতের শিখরে এলেন। এখান থেকে তিনি মাঝে মাঝে ঈশ্বরের উপাসনা করতেন। সেই সময় অর্কীয় হূশয় তাঁর কাছে এল। তার মাথায় ধূলোবালি এবং পরণে ছিন্নবস্ত্র।
33 দায়ূদ হূশয়কে বললেন, “যদি তুমি আমার সঙ্গে যাও তাহলে আমাকে দেখাশোনা করবার জন্য তুমি হবে আর একজন ব্যক্তি। 34 কিন্তু যদি তুমি জেরুশালেমে ফিরে যাও তবে তুমি অহীথোফলের চক্রান্তকে ব্যর্থ করতে পারবে। অবশালোমকে গিয়ে বল, ‘হে রাজা আমি আপনার দাস। আমি আপনার পিতার সেবা করেছি। এখন আমি আপনার সেবা করব।’ 35 সাদোক এবং অবিয়াথর যাজকগণ তোমার সঙ্গে থাকবেন। রাজার বাড়ীতে তুমি যা যা শুনেছ, তুমি অবশ্যই তাদের সবই বলে দেবে। 36 সাদোকের পুত্র অহীমাস এবং অবিয়াথরের পুত্র যোনাথন তাদের সঙ্গে থাকবে। তুমি রাজার প্রাসাদে যা কিছু শুনবে, তা ওদের মাধ্যমে আমাকে জানাতে থাকবে।”
37 তারপর দায়ূদের বন্ধু হূশয় সেই শহরে চলে গেল। অবশালোমও জেরুশালেমে এল।
37 তারা পৌলকে দুর্গের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে পৌল সেনাপতিকে বললেন, “আমি কি আপনাকে কিছু বলতে পারি?”
সেনাপতি বললেন, “তুমি দেখছি গ্রীক বলতে পার? 38 তাহলে তুমি সেই মিশরীয় নও যে কিছু সময় পূর্বে বিদ্রোহী হয়েছিল ও চার হাজার সন্ত্রাসবাদীকে নিয়ে মরুপ্রান্তরে পালিয়েছিল?”
39 তখন পৌল বললেন, “না, আমি একজন ইহুদী, কিলিকিয়ার তার্ষ নামে এক প্রসিদ্ধ শহরের বাসিন্দা। আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, এই লোকদের কাছে আমায় কিছু বলতে দিন।”
40 সেনাপতি অনুমতি দিলে পৌল সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে লোকদের শান্ত হবার জন্য হাত নেড়ে ইঙ্গিত করলেন। সবাই যখন চুপ করল তখন তিনি ইব্রীয় ভাষায় বলতে শুরু করলেন।
পৌলের আত্মপক্ষ সমর্থণ
22 পৌল বললেন, “ভাইরা ও পিতৃতুল্য ব্যক্তিরা, এখন শুনুন, আমি আপনাদের সামনে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি!”
2 ইহুদীরা যখন পৌলকে ইহুদীদের প্রচলিত ইব্রীয় ভাষায় কথা বলতে শুনল, তারা শান্ত হল। তখন তিনি বললেন,
3 “আমি একজন ইহুদী, আমি কিলিকিয়ার তার্ষের শহরে জন্মেছি; কিন্তু এই শহরে আমি বড় হয়ে উঠেছি। গমলীয়েলের[a] চরণে বসে আমি আমাদের পিতৃপুরুষদের দেওয়া বিধি-ব্যবস্থা শিক্ষালাভ করেছি। আজ আপনারা সকলে যেমন, তেমনি আমিও ঈশ্বরের সেবার জন্য উদ্যোগী ছিলাম। 4 খ্রীষ্টের পথে যারা চলত তাদের আমি নির্যাতন করতাম, এমনকি কারো কারো মৃত্যুও ঘটিয়েছিলাম। স্ত্রী, পুরুষ সকলকেই আমি গ্রেপ্তার করে কারাগারে রাখতাম।
5 “মহাযাজক ও ইহুদী সমাজপতিরা সকলে এই কথার সত্যতা প্রমাণ দিতে পারেন। তাদের কাছ থেকে চিঠি নিয়ে ইহুদী ভাইদের কাছে যাবার জন্য আমি দম্মেশকের পথে রওনা হয়েছিলাম। যীশুর অনুগামী যারা সেখানে ছিল তাদের গ্রেপ্তার করে জেরুশালেমে আনবার জন্য গিয়েছিলাম, যেন তাদের শাস্তি দেওয়া হয়।
পৌল তাঁর মন-পরিবর্তন সম্পর্কে বললেন
6 “আর একটা ব্যাপার ঘটল। আমি চলতে চলতে দম্মেশকের কাছাকাছি এলে, দুপুর বেলা হঠাৎ আকাশ থেকে তীব্র আলোর ছটা আমার চারদিকে ছেয়ে গেল। 7 আমি মাটিতে পড়ে গেলাম আর এক রব শুনলাম, ‘শৌল, শৌল, তুমি কেন আমায় নির্যাতন করছ?’
8 “আমি বললাম, ‘প্রভু, আপনি কে?’ তিনি আমায় বললেন, ‘যাকে তুমি নির্যাতন করছ, আমি সেই নাসরতীয় যীশু।’ 9 যারা আমার সঙ্গে ছিল তারা সেই আলো দেখতে পেয়েছিল, কিন্তু যিনি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাঁর রব তারা শুনতে পায় নি।
10 “আমি বললাম, ‘প্রভু আমায় কি করতে হবে?’ প্রভু আমায় বললেন, ‘ওঠ, দম্মেশকে যাও। যে কাজের জন্য তোমাকে মনোনীত করা হয়েছে তা সেখানেই তোমাকে বলা হবে।’ 11 সেই তীব্র আলোর ঝলকে আমি অন্ধ হয়ে গেছিলাম। তাই আমার সঙ্গীরা আমার হাত ধরে দম্মেশকে নিয়ে গেল।
12 “সেখানে অননিয় নামে একজন ধার্মিক ব্যক্তি ছিলেন। তিনি মোশির বিধি-ব্যবস্থা পালন করতেন। সেখানকার ইহুদীদের মধ্যে তাঁর সুনাম ছিল। 13 তিনি আমার কাছে এসে আমার পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ভাই শৌল, তুমি দৃষ্টিশক্তি লাভ কর।’ আর সেই মুহূর্তে আমি তাঁকে দেখতে পেলাম।
14 “তিনি বললেন, ‘আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর তোমায় বহুপূর্বেই মনোনীত করেছেন, যাতে তুমি তাঁর পরিকল্পনা জানতে পার এবং সেই ধার্মিকজনকে দেখতে পাও ও তাঁর রব শুনতে পাও। 15 তুমি যা দেখলে ও শুনলে সকল লোকের কাছে সে বিষয়ে সাক্ষ্য দেবে। 16 এখন আর দেরী না করে ওঠ, বাপ্তিস্ম নাও আর তোমার পাপ ধুয়ে ফেল। উদ্ধার লাভের জন্য যীশুতে বিশ্বাস কর।’
অন্ধের দৃষ্টিলাভ
(মথি 20:29-34; লূক 18:35-43)
46 তারপর তাঁরা যিরীহোতে এলেন। তিনি যখন নিজের শিষ্যদের এবং বহুলোকের সাথে যিরীহো ছেড়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় পথের ধারে বরতীময় (অর্থ “তীময়ের ছেলে”) নামে এক অন্ধ ভিখারী বসেছিল। 47 সে যখন শুনতে পেল যে উনি নাসরতীয় যীশু, তখন চেঁচিয়ে বলতে লাগল, “হে যীশু, দায়ূদের পুত্র, আমার প্রতি দয়া করুন।”
48 তখন বহুলোক চুপ-চুপ বলে তাকে ধমক দিল। কিন্তু সে আরও জোরে চেঁচিয়ে বলতে লাগল, “হে দায়ূদের পুত্র, আমার প্রতি দয়া করুন!”
49 তখন যীশু সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ে বললেন, “তাকে ডাকো।”
তারা সেই অন্ধ লোকটিকে ডাকল এবং বলল, “ওহে সাহস কর, ওঠ, উনি তোমাকে ডাকছেন।” 50 তখন সে নিজের পায়ের চাদর ফেলে দিয়ে লাফ দিয়ে উঠে যীশুর কাছে এল।
51 যীশু তাকে বললেন, “তুমি কি চাও, আমি তোমার জন্য কি করব?”
অন্ধ লোকটি তাকে বলল, “হে গুরু, আমি যেন দেখতে পাই।”
52 তখন যীশু তাকে বললেন, “যাও, তোমার বিশ্বাসই তোমায় সুস্থ করল।” সঙ্গে সঙ্গে সে দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেল এবং রাস্তা দিয়ে যীশুর পেছন পেছন চলতে লাগল।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International