Book of Common Prayer
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: লোকেদের স্মরণ করিয়ে দেবার মানসে দায়ূদের একটি গীত।
70 ঈশ্বর আমায় রক্ষা করুন!
ঈশ্বর শীঘ্র আমায় সাহায্য করুন!
2 লোকে আমায় হত্যা করার চেষ্টা করছে।
ওদের নিরাশ করুন!
ওদের লজ্জিত বোধ করান!
যে সব লোক আমার খারাপ করতে চায়
তাদের যেন পতন হয় ও তারা যেন লজ্জা পায়।
3 লোকে আমায় নিয়ে হাসাহাসি করে।
আশা করি ওদের যা প্রাপ্য ওরা তাই পাবে এবং লজ্জাবোধ করবে।
4 আমি কামনা করি যারা আপনার উপাসনা করে তারা যেন সত্যিকারের সুখী হয়।
যারা আপনার সাহায্য চায় তারা যেন সর্বদাই আপনার প্রশংসা করে।
5 ঈশ্বর আমি দীন অসহায় মানুষ।
ঈশ্বর তাড়াতাড়ি করুন!
আপনি আসুন, আমায় রক্ষা করুন! ঈশ্বর একমাত্র আপনিই আমায় উদ্ধার করতে পারেন।
আর দেরী করবেন না!
71 হে প্রভু, আমি আপনাতে বিশ্বাস রাখি,
তাই আমি কখনও হতাশ হব না।
2 আপনার ধার্ম্মিকতা দিয়ে আপনি আমায় রক্ষা করবেন।
আপনিই আমায় উদ্ধার করবেন। আমার কথা শুনুন, আমায় রক্ষা করুন।
3 আপনি আমার দুর্গ হোন,
সেই গৃহ হোন যেখানে আমি নিরাপত্তার জন্য ছুটে যেতে পারি।
আপনিই আমার শিলা এবং আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
তাই আমাকে রক্ষার আজ্ঞা দিন।
4 হে আমার ঈশ্বর, আমায় দুষ্ট লোকের হাত থেকে রক্ষা করুন।
নৃশংস ও মন্দ লোকেদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
5 আমার জন্মের সময় থেকে আমি আপনার যত্নে ছিলাম।
আমার জন্মের সময় থেকে আপনি আমার সঙ্গে ছিলেন।
6 এমনকি আমার জন্মের আগে থেকেই আমি আপনার ওপর নির্ভর করেছি।
আমি যখন মাতৃগর্ভে ছিলাম তখনও আমি আপনার ওপর আস্থা রেখেছি।
সর্বদাই আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি।
7 আপনিই আমার শক্তির উৎস।
তাই অন্য লোকদের কাছে আমি দৃষ্টান্তস্বরূপ ছিলাম।
8 যে সব বিস্ময়কর জিনিস আপনি করেন তার সম্বন্ধে সর্বদাই আমি গান গাই।
9 আমি বৃদ্ধ হয়েছি বলে আমায় ছুঁড়ে ফেলে দেবেন না।
হত-শক্তি হয়েছি বলে আমায় ত্যাগ করবেন না।
10 শত্রুরা আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে।
ওরা একসঙ্গে মিলিত হয়েছিলো, এবং আমাকে হত্যা করার চক্রান্ত করেছিলো।
11 আমার শত্রুরা বলছে, “যাও ওকে তুলে নিয়ে এসো!
ঈশ্বর ওকে ত্যাগ করেছেন। আর কেউ ওকে সাহায্য করবে না।”
12 ঈশ্বর, আমায় পরিত্যাগ করবেন না!
ঈশ্বর তাড়াতাড়ি এসে আমায় রক্ষা করুন!
13 আমার শত্রুদের পরাজিত করুন!
ওদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিন!
যারা আমার ক্ষতি করতে চাইছে,
তারা যেন লজ্জিত ও অপমানিত হয়।
14 তাহলে আমি সব সময়ই আপনার ওপর নির্ভর করবো
এবং আমি আরো বেশী করে আপনার প্রশংসা করবো।
15 আপনি যে কত ভালো, তা আমি লোকদের বলবো।
আমি লোকদের বলবো কিভাবে আপনি আমায় প্রতিবার রক্ষা করেছিলেন।
তা এত বার ঘটেছে যে গুনে শেষ করা যায় না।
16 আমি আপনার মহত্বের কথা বলবো, প্রভু আমার সদাপ্রভু।
আমি সেই সব ধার্ম্মিকতার কথা বলব, যা শুধুমাত্র আপনি করতে পারেন।
17 ঈশ্বর, আমি যখন একটি ছোট্ট বালক ছিলাম তখন থেকে আপনি আমায় শিক্ষা দিয়েছেন।
তখন থেকে আজ পর্যন্ত আপনি যে সব আশ্চর্য কার্য করেছেন তা আমি মানুষকে বলেছি!
18 এখন আমি বৃদ্ধ হয়েছি, আমার চুল পেকে গেছে।
কিন্তু হে ঈশ্বর, আমি জানি, আপনি আমায় ত্যাগ করবেন না।
প্রত্যেকটি নতুন প্রজন্মকে আমি আপনার ক্ষমতা ও মহত্বের কথা বলবো।
19 ঈশ্বর, আপনার ধার্ম্মিকতা আকাশের সীমা অতিক্রম করে যায়।
ঈশ্বর, কোন দেবতাই আপনার মত নয়।
আপনি বিস্ময়কর সব কাজ করেছেন।
20 আপনি আমাকে সমস্যা এবং দুঃসময় প্রত্যক্ষ করিয়েছেন।
কিন্তু তাদের সবকিছু থেকে রক্ষা করে আপনি আমায় বাঁচিয়ে রেখেছেন।
কত গভীরে আমি ডুবে গিয়েছিলাম সেটা কথা নয়, কিন্তু আপনি আমায় সমস্যা থেকে টেনে তুলেছেন।
21 অতীতে যা করেছি তার থেকেও মহৎ কাজসমূহ করতে আমায় সাহায্য করুন।
আমাকে আরাম দিতে থাকুন।
22 আমি বীণা বাজিয়ে আপনার প্রশংসা করবো।
হে ঈশ্বর আমি গাইবো ও বলবো যে, আপনার ওপর নির্ভর করা যেতে পারে।
ইস্রায়েলের পবিত্র এক এর জন্য বীণা বাজিয়ে আমি গান গাইবো।
23 আপনি আমার আত্মাকে রক্ষা করেছেন।
আমার আত্মা সুখী হবে। নিজের মুখে আমি আপনার প্রশংসা গান করবো।
24 আমার জিভ সর্বদাই আপনার ধর্মশীলতার গান গাইবে
এবং যারা আমাকে হত্যা করতে চেয়েছিলো তারা পরাজিত ও অসম্মানিত হবে।
আসফের একটি মস্কীল।
74 ঈশ্বর আপনি কি চিরকালের জন্য আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন?
আপনি কি এখনও আপনার লোকদের ওপর ক্রুদ্ধ আছেন?
2 অতীতে আপনি যে সব লোকদের এনেছিলেন তাদের কথা স্মরণ করুন।
আপনি আমাদের রক্ষা করেছেন, তাই আমরা সবাই আপনার।
সিয়োন পর্বতের কথা স্মরণ করুন, যেখানে আপনি বাস করতেন।
3 ঈশ্বর, সেই সব প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের ওপর দিয়ে আপনি হেঁটে আসুন।
যে পবিত্র স্থানকে শত্রুরা ধ্বংস করে দিয়েছে সেখানে ফিরে আসুন।
4 মন্দিরেই তারা যুদ্ধের উন্মত্ত গর্জন শুরু করেছিলো।
যুদ্ধে তারা জয়ী হয়েছে এটা বোঝানোর জন্য ওরা মন্দিরে পতাকা উড়িয়েছিল।
5 যারা নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিষ্কার করে
শত্রু সৈন্যরা সেই সব লোকের মত নির্মম।
6 হে ঈশ্বর, কুঠার ও কুড়ুল ব্যবহার করে
ওরা আপনার মন্দিরের খোদাই করা কাঠের কক্ষগুলি ভেঙে চুরমার করেছে।
7 ঐ সৈন্যরা আপনার পবিত্রস্থান পুড়িয়ে দিয়েছে।
আপনার নামের সম্মানে সেই মন্দির তৈরী হয়েছিলো
কিন্তু ওরা তা মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।
8 শত্রুরা আমাদের সম্পূর্ণভাবে গুঁড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
দেশের প্রত্যেকটা পবিত্রস্থান ওরা পুড়িয়ে দিয়েছে।
9 আমরা আমাদের কোন চিহ্নসমূহ দেখতে পাচ্ছি না।
আর কোন ভাববাদী নেই।
কেউই জানে না এখন কি করতে হবে।
10 ঈশ্বর আর কতদিন শত্রুরা আমাদের নিয়ে উপহাস করবে?
আপনি কি চিরদিন ওদের আপনার নামের অবমাননা করতে দেবেন?
11 ঈশ্বর, কেন আপনি আমাদের এত কঠিন শাস্তি দিলেন?
আপনার বিপুল শক্তি ব্যবহার করে আপনি আমাদের সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিলেন!
12 ঈশ্বর দীর্ঘদিন ধরে আপনি আমাদের রাজা ছিলেন।
এই দেশে যে কোন যুদ্ধ জয় করতে আপনি আমাদের সাহায্য করেছেন।
13 ঈশ্বর লোহিত সাগরকে দুভাগে ভাগ করতে
আপনি আপনার পরাক্রম প্রয়োগ করেছিলেন।
14 বড় বড় সমুদ্র দানবদের আপনি পরাজিত করেছেন!
আপনিই লিবিয়াথনের মাথা গুঁড়িয়ে দিয়েছেন এবং তার দেহ পশুদের খাওয়ার জন্য ফেলে এসেছেন।
15 নদী এবং ঝর্ণায আপনিই প্রবাহ দিয়েছেন।
আপনিই নদীকে শুষ্ক করে দিয়েছেন।
16 হে ঈশ্বর, আপনিই দিন এবং রাত্রি নিয়ন্ত্রণ করেন।
আপনিই চাঁদ এবং সূর্য সৃষ্টি করেছেন।
17 আপনিই পৃথিবীর সব কিছুর সীমা নির্ধারণ করেছেন।
আপনিই শীত, গ্রীষ্ম সৃষ্টি করেছেন।
18 প্রভু মনে রাখবেন কেমন করে শত্রুরা আপনাকে অপমান করেছিলো!
ঐ লোকগুলো আপনাকে অপমান করেছিল।
ঐসব মূর্খ লোক আপনার নামকে ঘৃণা ও নিন্দে করেছে!
19 ঐসব বন্য পশুদের আপনার পারাবত নিয়ে যেতে দেবেন না!
আপনার দীন দরিদ্র মানুষদের চিরদিনের জন্য ভুলে যাবেন না।
20 আমাদের চুক্তির কথা স্মরণ করুন!
এই দেশের প্রত্যেকটি অন্ধকার স্থানে রয়েছে হিংসাত্মক ঘটনা।
21 ঈশ্বর, আপনার লোকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে।
ওদের আর আহত হতে দেবেন না।
আপনার দীন দুঃখী লোকরা আপনার প্রশংসা করে।
22 ঈশ্বর, উঠুন এবং যুদ্ধ করুন!
প্রতিদিন যে অবমাননা ঐসব নির্বোধদের কাছ থেকে আপনাকে পেতে হয়েছে তা মনে রাখবেন।
23 আপনার শত্রুদের উন্মত্ত চিৎকারের কথা মনে রাখবেন।
বার বার ওরা আপনাকে অপমান করেছে!
শৌলের পরিবারে সমস্যা ঘনিয়ে এলো
4 শৌলের পুত্র ঈশ্ বোশত্ শুনলেন যে হিব্রোণে অব্নের মারা গেছেন। ঈশ্বোশৎ এবং তাঁর লোকরা ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। 2 দুজন লোক শৌলের পুত্র ঈশ্বোশতের সঙ্গে দেখা করতে গেল। ঐ দুজন লোক সৈন্যবাহিনীর প্রধান ছিল। তারা ছিল বেরোতীয় রিম্মোণের পুত্র রেখব এবং বানা। (এরা ছিল বিন্যামীনীয় যেহেতু বেরোত শহর বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর ছিল। 3 কিন্তু বেরোতের সব লোক গিত্তয়িমে পালিয়ে গিয়েছিল এবং এখনও পর্যন্ত তারা সেখানেই বসবাস করছে।)
4 শৌলের পুত্র যোনাথনের মফীবোশৎ নামে একটি পুত্র ছিল। শৌল এবং যোনাথন নিহত হয়েছেন এই খবর যখন যিষ্রিয়েল থেকে এল তখন মফীবোশতের বয়স পাঁচ বছর। মফীবোশৎকে যে মহিলা দেখাশোনা করতো এই সংবাদে সে অত্যন্ত ভীত হল এবং শত্রুরা আসছে এই ভেবে সে মফীবোশতকে নিয়ে পালিয়ে গেল। কিন্তু দৌড়ে পালাবার সময়, সে ছেলেটিকে ফেলে দিল, তাই তার দুটো পা-ই পঙ্গু।
5 রিম্মোণের পুত্ররা রেখব ও বানা বিরোত থেকে দুপুর বেলায় ঈশ্বোশতের বাড়ী গিয়েছিল। প্রচণ্ড গরম ছিল বলে ঈশ্বোশৎ বিশ্রাম করছিলেন। 6-7 রেখব ও বানা এমন ভাবে বাড়ীতে এল যেন তারা কিছু গম নিতে এসেছে। ঈশ্বোশৎ শোয়ার ঘরে তাঁর বিছানায় শুয়েছিলেন। রেখব ও বানা ছুরি বিদ্ধ করে তাঁকে হত্যা করল। তারা তাঁর মাথা কেটে সঙ্গে নিয়ে নিল। এরপর সারারাত তারা যর্দন উপত্যকার মধ্য দিয়ে হাঁটল। 8 তারা হিব্রোণে এলো এবং মাথাটি দায়ূদকে দিল।
রেখব এবং বানা রাজা দায়ূদকে বলল, “এই যে আপনার শত্রু শৌলের পুত্র ঈশ্বোশতের মাথা। সে আপনাকে হত্যার চেষ্টা করছিল। আপনার জন্য, শৌল এবং তার পরিবারকে প্রভু আজ শাস্তি দিলেন।”
9 কিন্তু দায়ূদ রেখব এবং তার ভাই বানাকে বললেন, “এ কথা জীবিত প্রভুর মতই সত্য যে তিনি সব সমস্যা থেকে আমাকে রক্ষা করেছেন। 10 এর আগে একবার এক ব্যক্তি ভেবেছিল সে আমার কাছে সুসংবাদ আনবে। সে বলেছিল, ‘দেখুন শৌল মারা গেছে।’ সে ভেবেছিল যে আমার কাছে এই খবর আনার জন্য আমি তাকে পুরস্কার দেব। কিন্তু আমি এই লোকটিকে ধরে ফেলেছিলাম এবং তাকে সিক্লগে হত্যা করি। 11 সেই মত আমি তোমাদের হত্যা করে এই দেশ থেকে সরিয়ে দেব। কেন? কারণ একজন সৎ লোককে তার বাড়ীতে, তার বিছানায় ঘুমন্ত অবস্থায়, তোমরা মন্দ লোকরা হত্যা করেছ।”
12 তখন দায়ূদ রেখব ও বানাকে হত্যা করার জন্য তরুণ সেনাদের আদেশ দিলেন। সেনারা রেখব ও বানার হাত পা কেটে নিল এবং হিব্রোণের একটি পুকুরের পাড়ে তাদের দেহ ঝুলিয়ে দিল। তারপর তারা ঈশ্বোশতের মাথাটি নিয়ে হিব্রোণে ঠিক সেখানেই কবর দিল যেখানে অব্নেরকে কবর দেওয়া হয়েছিল।
25 মাঝরাতে পৌল ও সীল ঈশ্বরের স্তবগান ও প্রার্থনা করছিলেন, অন্য বন্দীরা তা শুনছিল। 26 হঠাৎ প্রচণ্ড ভূমিকম্পে কারাগারের ভিত কেঁপে উঠল আর সঙ্গে সঙ্গে কারাগারের সব দরজা খুলে গেল, বন্দীদের শেকল খসে পড়ল। 27 কারারক্ষক জেগে উঠে যখন দেখলেন যে কারাগারের সব দরজা খোলা তখন তিনি কোষ থেকে তাঁর তরবারি বার করে আত্মহত্যা করতে চাইলেন, কারণ তিনি ভাবলেন বন্দীরা সব পালিয়েছে। 28 কিন্তু পৌল চিৎকার করে বলে উঠলেন, “নিজের ক্ষতি করবেন না! আমরা সকলেই এখানে আছি!”
29 তখন কারারক্ষক কাউকে আলো আনতে বলে ভেতরে দৌড়ে গেলেন, আর ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে পৌল ও সীলের সামনে উপুড় হয়ে পড়লেন। 30 পরে তাঁদের বাইরে নিয়ে এসে বললেন, “মহাশয়রা, উদ্ধার পেতে হলে আমায় কি করতে হবে?”
31 তাঁরা বললেন, “প্রভু যীশুর ওপর বিশ্বাস করুন, তাহলে আপনি ও আপনার গৃহের সকলেই উদ্ধার লাভ করবেন।” 32 এরপর তাঁরা সেই কারারক্ষক ও তাঁর বাড়ির লোকের কাছে প্রভুর বার্তা প্রচার করলেন। 33 বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল কিন্তু কারারক্ষক সেই রাতেই পৌল ঔ সীলের সমস্ত ক্ষত ধুয়ে দিলেন এবং সপরিবারে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করলেন। 34 এরপর কারারক্ষক পৌল ও সীলকে নিজের গৃহে নিয়ে গিয়ে তাঁদের আহারের ব্যবস্থা করলেন। ঈশ্বরে বিশ্বাসী হওয়ায় তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে খুব আনন্দিত হলেন।
35 পরদিন সকাল হলে শাসকগণ রক্ষীবাহিনীদের দিয়ে কারারক্ষককে বলে পাঠালেন, “ঐ লোকদের ছেড়ে দাও!”
36 তখন কারারক্ষক সেকথা পৌলকে জানালেন, “নগর অধ্যক্ষরা আপনাদের ছেড়ে দেবার জন্য বলে পাঠিয়েছেন, তাই এখন আপনারা নির্বিঘ্নে এখান থেকে চলে যান।”
37 কিন্তু পৌল তাদের বললেন, “আমরা রোমান নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা আমাদের বিচার না করেই সকলের সামনে বেত মেরেছেন। শেষে আমাদের কারাগারে বন্দী করেছিলেন। এখন তাঁরা চুপি-চুপি আমাদের ছেড়ে দিতে চাইছেন? এ হতে পারে না! তাঁদের এখানে আসতে হবে আর এসে আমাদের কারাগারের বাইরে নিয়ে যেতে হবে।”
38 সেই রক্ষীবাহিনীর লোকরা বিচারকদের জানাল যে পৌল ও সীল রোমান নাগরিক, তখন তাঁরা ভয় পেয়ে গেলেন। 39 তাই তাঁরা এসে ক্ষমা চাইলেন, আর তাঁদের কারাগারের বাইরে নিয়ে গিয়ে সেই শহর ছেড়ে চলে যাবার জন্য অনুরোধ করলেন। 40 পৌল ও সীল কারাগার থেকে বাইরে এসে লুদিয়ার বাড়ি গেলেন। সেখানে বিশ্বাসীদের সঙ্গে দেখা হলে তাদের সকলকে উৎসাহ দিলেন। এরপর পৌল ও সীল শহর ছেড়ে চলে গেলেন।
ঈশ্বরের নিয়ম এবং মানুষের চিরাচরিত প্রথা
(মথি 15:1-20)
7 কয়েকজন ফরীশী ও ব্যবস্থার শিক্ষক জেরুশালেম থেকে যীশুর কাছে এলেন। 2 তাঁরা দেখলেন যে, তাঁর কয়েকজন শিষ্য হাত না ধুয়ে খাবার খাচ্ছেন। 3 ফরীশী সম্প্রদায়ের লোকেরা এবং সমস্ত ইহুদীরা প্রাচীন রীতি অনুসারে ভাল করে হাত না ধুয়ে খাবার খেতো না। 4 আর বাজার থেকে কোন কিছু কিনলে তা বিশেষভাবে না ধুয়ে খেতো না। আরও বহু প্রাচীন রীতি নীতি তারা মেনে চলত, যেমন পানপাত্রটি, কলসী ও পিতলের নানা পাত্র ধোওয়া ইত্যাদি।
5 সেই ফরীশীরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা যীশুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনার শিষ্যরা প্রাচীন রীতিনীতি অনুসারে চলে না, তারা হাত না ধুয়ে তাদের খাবার খায়, এর কারণ কি?”
6 যীশু তাঁদের বললেন, “ভণ্ডরা, ভাববাদী যিশাইয় তোমাদের বিষয়ে ঠিকই বলেছেন, যেমন লেখা আছে,
‘এই লোকেরা মুখেই শুধু আমাকে সম্মান করে,
কিন্তু তাদের মন আমার থেকে অনেক দূরে থাকে।
7 এরা অনর্থক আমার উপাসনা করে।
কারণ এরা মানুষের তৈরী রীতি-নীতি ঈশ্বরের আদেশ বলে লোকদের শিক্ষা দেয়।’(A)
8 তোমরা ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করে মানুষের প্রচলিত প্রথা পালন করে থাকো।”
9 যীশু তাদের আরো বললেন, “তোমরা নিজেদের ঐতিহ্য বজায় রাখার জন্য খুব বুদ্ধি খাটিয়ে ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করছ। 10 মোশি বলেছেন, ‘তুমি নিজের বাবা, মাকে সম্মান করো,’(B) আর ‘যে লোকটি বাবা কিংবা মায়ের নিন্দা করবে তার মৃত্যুদণ্ড হবে।’(C) 11 কিন্তু তোমরা বল লোকটি যদি তার বাবা-মাকে বলে, ‘আমি যা কিছু দিয়ে তোমাদের উপকার করতে পারতাম, তা ঈশ্বরকে উৎসর্গ করেছি,’ 12 তখন এমন লোককে তোমরা বাবা বা মায়ের জন্য কিছুই করতে দাও না। 13 ঈশ্বরের বাক্য তোমাদের বংশানুক্রমে পালন করা ঐতিহ্য দ্বারা তোমরা নিষ্ফল কর।”
14 তিনি সমস্ত লোককে আবার তাঁর কাছে ডেকে বললেন, “তোমরা সকলে আমার কথা শোন এবং বোঝ। 15 মানুষের বাইরে এমন কিছু নেই যা ভেতরে গিয়ে তাকে কলুষিত করতে পারে কিন্তু যা যা মানুষের ভেতর থেকে বেরোয় সেটাই মানুষকে কলুষিত করে।” 16 [a]
17 পরে তিনি লোকদের ছেড়ে বাড়িতে ঢুকলে, তাঁর শিষ্যরা তাঁকে সেই দৃষ্টান্তটির অর্থ জিজ্ঞাসা করলেন। 18 তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরাও কি অবোধ? তোমরা কি বোঝ না, বাইরে থেকে যা কিছু মানুষের ভেতরে যায় তা তাকে কলুষিত করতে পারে না? 19 কারণ এটা তার অন্তরে যেতে পারে না, পাকস্থলীতে যায় এবং তারপর দেহের বাইরে গিয়ে পড়ে।” এই কথার মাধ্যমে তিনি সমস্ত খাবারকেই শুদ্ধ বললেন।
20 তিনি আরও বললেন, “মানুষের অন্তর থেকে যা বার হয়, সেটাই মানুষকে কলুষিত করে। 21 কারণ মানুষের ভেতর অর্থাৎ মন থেকে বার হয় কুৎসিত চিন্তা, লালসা, চুরি, খুন, 22 যৌন পাপ, লোভ, দুষ্টামি, প্রতারণা, অশ্লীলতা, ঈর্ষা, নিন্দা, অভিমান ও অহঙ্কার। 23 এই সমস্ত খারাপ বিষয় মানুষের ভেতর থেকে বার হয় ও মানুষকে কলুষিত করে।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International