Book of Common Prayer
দায়ূদের একটি গীত।
26 প্রভু, আমার বিচার করুন। আমি যে সৎ পথে জীবনযাপন করেছি তা প্রমাণ করে দিন।
আমি কখনও প্রভুতে আস্থা রাখা থেকে বিরত হই নি।
2 প্রভু আমায় পরীক্ষা করুন,
আমার হৃদয় ও মনকে খুব ভালোভাবে দেখুন।
3 আমি সর্বদাই আপনার কোমল ভালোবাসা দেখতে পাই।
আপনার সত্যে আমি বাঁচি।
4 আমি মিথ্যাবাদী ও কপটাচারীদের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করি না।
আমি ঐসব অকেজো লোকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হই না।
5 ঐসব অপরাধীদের দলগুলিকে আমি ঘৃণা করি।
ঐসব শয়তানদের দলে আমি যোগ দেবো না।
6 হে প্রভু আমি যে নিস্পাপ তা দেখাতে
এবং আপনার যজ্ঞবেদীতে যাওয়ার জন্য আমি আমার হাত ধুই।
7 প্রভু আমি আপনার প্রশংসা গান গাই।
আপনার সৃষ্টিকরা আশ্চর্য বিষয় সম্পর্কে আমি গান গাই।
8 প্রভু আমি আপনার মন্দিরকে ভালোবাসি।
আমি আপনার মহিমাময় তাঁবু ভালোবাসি।
9 প্রভু আমাকে ঐসব পাপীদের দলভুক্ত করবেন না।
ঐসব খুনীদের সঙ্গে আমার জীবন গ্রহণ করবেন না।
10 ঐ লোকগুলো সব সময় অন্যদের প্রতারিত করে।
খারাপ কাজ করার জন্য ওরা সর্বদাই উৎকোচ নিতে প্রস্তুত।
11 কিন্তু আমি নির্দোষ।
তাই হে ঈশ্বর, আমার প্রতি সদয় হোন এবং আমায় রক্ষা করুন।
12 সব বিপদ থেকে আমি সুরক্ষিত।
হে প্রভু, আমি আপনার মণ্ডলীগণের সামনে আপনার প্রশংসা করি।
দায়ূদের একটি গীত।
28 হে প্রভু, আপনি আমার শিলা।
আপনার সাহায্যের জন্য আমি আপনাকে ডাকছি।
আমার প্রার্থনা থেকে কান ফিরিয়ে নেবেন না।
যদি আপনি আমার ডাকে সাড়া না দেন,
লোকে ভাববে আমি কবরের মৃত ব্যক্তির চেয়ে উন্নত কিছু নই।
2 প্রভু, আমার দু হাত তুলে আপনার পবিত্রতম স্থানে আমি প্রার্থনা জানাই।
যখন আমি আপনাকে ডাকি আমার ডাক শুনুন।
আমার প্রতি কৃপা প্রদর্শন করুন।
3 প্রভু, আমাকে খারাপ লোকদের একজন ভাববেন না।
তারা তাদের প্রতিবেশীদের বন্ধুভাবে অভিবাদন করে।
কিন্তু মনে মনে তারা প্রতিবেশীদের বিরুদ্ধে মন্দ ফন্দি আঁটে।
4 প্রভু, ঐসব লোক অন্যান্য লোকদের প্রতি মন্দ আচরণ করে।
অতএব তাদের যাতে খারাপ হয় তাই করুন।
যেমন ওরা অন্যদের করেছিল।
5 মন্দ লোকরা কখনই প্রভুর ভালো কাজগুলো বুঝতে পারে না।
প্রভু যে সব ভালো কাজ করেন তা তারা দেখে না।
না তারা বুঝতে চায় না, তারা শুধু ধ্বংস করতে চায়।
6 প্রভুর প্রশংসা কর!
তিনি আমার প্রতি করুণা করার প্রার্থনা শুনেছেন!
7 প্রভুই আমার শক্তি, তিনিই আমার ঢাল।
আমি তাঁকে বিশ্বাস করেছি।
তিনি আমায় সাহায্য করেছেন এবং আমি প্রচণ্ড খুশী!
এবং তাই আমি তাঁর প্রশংসা করে গান গাইছি।
8 প্রভু যাকে পছন্দ করেন তাঁকে রক্ষা করেন।
প্রভুই তাঁর শক্তি!
9 ঈশ্বর আপনার লোকদের রক্ষা করেন।
আপনার অধিকারভুক্ত যারা তাদের আশীর্বাদ করুন।
তাদের আপনি চিরকালের জন্য নেতৃত্ব দিন এবং তাদের সম্মান দিন!
পরিচালকের প্রতি: প্রভুর দাসের প্রতি, দায়ূদের একটি গীত।
36 একজন খারাপ লোক নিজের উপরেই খুব খারাপ আচরণ করে,
যখন সে বলে, “আমি ঈশ্বরকে ভয় বা শ্রদ্ধা করবো না।”
2 সেই লোক নিজের প্রতিই মিথ্যাচার করে।
সেই লোক তার নিজের দোষ দেখে না।
তাই সে ক্ষমাও চায় না।
3 তার কথামাত্রই অকাজের মিথ্যা কথা।
ঐ লোকের কোনদিন সত্য জ্ঞান হবে না এবং কোনদিন সে ভাল কাজ করতে শিখবে না।
4 রাতের বেলায় সে অকাজের পরিকল্পনা করে
সকালে উঠে সে কোনও ভাল কাজই করে না।
এমনকি সে মন্দ করাকেও এড়িয়ে চলে না।
5 হে প্রভু, আপনার প্রকৃত প্রেম আকাশ ছুঁয়ে যায়,
আর আপনার আনুগত্য স্বর্গে পৌঁছায়।
6 হে প্রভু আপনার ধার্মিকতা উচ্চতম পর্বতের চেয়েও উঁচু।
আপনার ন্যায়নীতি গভীরতম সমুদ্রের চেয়েও গভীর।
প্রভু, আপনিই মানুষ এবং পশুদের রক্ষা করেন।
7 আপনার বিশ্বস্ত প্রেমের চেয়ে মূল্যবান আর কিছুই নেই।
লোকরা এবং দূতরা আপনার পাখার ছায়ায় আশ্রয় নেয়।
8 হে প্রভু, আপনার মন্দিরের ভাল জিনিস থেকে তারা নতুন শক্তি পায়।
আপনার আনন্দ—নদী থেকে আপনি ওদের জল পান করতে দেন।
9 প্রভু আপনার থেকেই জীবনের ঝর্ণা ধারা প্রবাহিত হয়!
আপনার আলো আমাদের আলো দেখতে সাহায্য করে।
10 প্রভু, যারা সত্যি সত্যিই আপনাকে চেনে, তাদের প্রতি আপনার ভালোবাসা অব্যাহত রাখুন।
যারা আপনার প্রতি নিষ্ঠাবান আপনি তাদের মঙ্গল করুন।
11 প্রভু অহঙ্কারী লোকদের হাতে আমাকে ধরা পড়তে দেবেন না।
দুষ্ট লোকদের আমাকে ধরতে দেবেন না।
12 ওদের কবরের ফলকে লিখে দিন,
“এখানে দুষ্ট লোকদের দেহ পড়ে রয়েছে।
ওদের ধ্বংস করা হয়েছে।
আর কোনদিন ওরা জাগবে না।”
পরিচালকের প্রতি: যিদূথূনের প্রতি দায়ূদের একটি গীত।
39 আমি বলেছিলাম, “আমি যা বলবো সে সম্পর্কে সতর্ক থাকবো।
আমার জিভকে আমাকে কোন পাপ করতে দেবো না।
যখন আমি দুষ্ট লোকদের মধ্যে থাকবো তখন আমি চুপ করে থাকবো।”
2 তাই আমি কিছু বলি নি।
এমন কি আমি কোন ভালো কথাও বলি নি!
কিন্তু আমি আরো বেশী যন্ত্রণা বোধ করছি।
3 আমি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ ছিলাম।
এ বিষয়ে আমি যত ভেবেছি, ততই ক্রুদ্ধ হয়েছি।
তাই আমি কিছু বলি নি।
4 হে প্রভু, আমায় বলে দিন, এখন আমার কী হবে?
বলুন, আর কতদিন আমি বাঁচবো?
আমাকে জানতে দিন আসলে আমার জীবন কত ছোট।
5 হে প্রভু আপনি আমায় একটি স্বল্প আয়ু দান করেছেন।
আপনার তুলনায় আমার জীবন কিছুই নয়।
প্রত্যেকটি মানুষের জীবন মেঘের মতই যা তাড়াতাড়ি মিলিয়ে যায়।
কোন মানুষই চিরদিন বাঁচবে না।
6 আমাদের জীবন দর্পণের প্রতিবিম্বের মত, আমাদের সমস্যারও প্রকৃত কোন মূল্য নেই।
আমাদের মৃত্যুর পর কারা এইসব ভোগ করবে
তা না জেনেই আমরা সারা জীবন ধরে জিনিসপত্র সংগ্রহ করে চলেছি।
7 তাই প্রভু, আমি আর কী আশা রাখবো?
আপনিই আমার আশা!
8 প্রভু আমি যে সব মন্দ কাজ করেছি, তা থেকে আমাকে বাঁচান।
আমাকে যেন একজন দুষ্ট মূর্খের লজ্জ্বার সম্মুখীন হতে না হয়।
9 আমি আমার মুখ খুলবো না।
আমি কোন কিছুই বলবো না।
প্রভু যা করণীয়, আপনি তাই করেছেন।
10 কিন্তু হে ঈশ্বর, আমাকে আর শাস্তি দেবেন না।
আপনি যদি না থামেন আপনার হাতে আমি শেষ হয়ে যাবো!
11 হে প্রভু, বাঁচার প্রকৃত পথ সম্পর্কে শিক্ষা দেবার জন্য, যারা ভুল কাজ করে, তাদের আপনি শাস্তি দেন।
মথ যেমন কাপড় কেটে নষ্ট করে, তেমন করে মানুষ যা ভালোবাসে, তা আপনি বিনষ্ট করে দেন।
হ্যাঁ, আমাদের জীবন ক্ষুদ্র মেঘের মত যা তাড়াতাড়ি মিলিয়ে যায়।
12 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন!
চিৎকার করে আমি যে প্রার্থনা করি তা শুনুন।
আমার চোখের জলের দিকে তাকান।
আমি একজন পথিক মাত্র যে এই জীবন আপনার সঙ্গে ভোগ করছি।
আমার পূর্বপুরুষদের মত আমি ক্ষণিকের জন্য এখানে থাকবো।
13 মৃত্যুর পূর্বে, আমার চলে যাওয়ার আগে,
আমাকে একা থাকতে দিন, আমাকে সুখী হতে দিন।
যোনাথন দায়ূদকে সাহায্য করল
19 শৌল তাঁর পুত্র যোনাথনকে এবং আধিকারিকদের দায়ূদকে হত্যা করবার আদেশ দিলেন। কিন্তু যোনাথন দায়ূদকে ভালবাসত। 2-3 যোনাথন দায়ূদকে সাবধান করে বলল, “সাবধান! শৌল তোমাকে মারবার সুযোগ খুঁজছে। সকাল বেলা মাঠে গিয়ে লুকিয়ে থেকো। আমি পিতাকে নিয়ে সেই মাঠে আসব এবং তুমি যেখানে লুকিয়ে থাকবে তার কাছে গিয়ে দাঁড়াব। আমি তোমার ব্যাপারে পিতার সঙ্গে কথা বলব। তারপর আমি কি জানলাম তা তোমাকে জানাব।”
4 পিতার সঙ্গে যোনাথন কথা বলতে লাগল। সে দায়ূদের গুণগান করল। সে পিতাকে বলল, “তুমি হচ্ছ রাজা। দায়ূদ তোমার দাস। সে তোমার কোন ক্ষতি করে নি, সুতরাং তার প্রতি তুমি অন্যায় ব্যবহার করো না। সে তো সর্বদা তোমার ভালই করেছে। 5 পলেষ্টীয়কে হত্যা করতে গিয়ে সে তার জীবন বিপন্ন করেছিল। আর প্রভু ইস্রায়েলীয়দের জন্য মহাবিজয় এনেছিলেন। তুমি স্বচক্ষে এসব দেখেছিলে, তুমি খুশিও হয়েছিলে। তাহলে কেন তুমি দায়ূদকে মারতে চাও? সে নির্দোষ। তাকে মেরে ফেলার কোন কারণই দেখছি না।”
6 শৌল যোনাথনের কথা শুনলেন। শুনে তিনি প্রতিজ্ঞা করে বললেন, “যেমন প্রভুর অস্তিত্ব নিশ্চিত তেমনই নিশ্চিত হও যে দায়ূদকে হত্যা করা হবে না।”
7 যোনাথন দায়ূদকে ডেকে সব বলল। সে দায়ূদকে শৌলের কাছে ডেকে আনল। তাই দায়ূদ আগের মতই শৌলের কাছে থেকে গেলেন।
শৌল আবার দায়ূদকে হত্যা করতে চাইলেন
8 আবার যুদ্ধ শুরু হল। দায়ূদ পলেষ্টীয়দের সঙ্গে লড়তে গেলেন। তিনি তাদের হারিয়ে দিলেন। তারা পালিয়ে গেল। 9 কিন্তু প্রভুর কাছ থেকে এক দুষ্ট আত্মা শৌলের উপর এল। তিনি ঘরে বসেছিলেন। তাঁর হাতে ছিল বল্লম। দায়ূদ বীণা বাজাচ্ছিলেন। 10 শৌল বল্লম ছুঁড়ে দায়ূদকে দেওয়ালে গেঁথে দিতে গেলেন, কিন্তু দায়ূদ লাফ দিয়ে সরে গেলেন। বল্লম ফসকে গিয়ে দেওয়ালে বিঁধে গেল। সেই রাত্রে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন।
11 দায়ূদের বাড়িতে শৌল লোক পাঠালেন। তারা সারারাত দায়ূদের বাড়ির কাছাকাছি পাহারা দিল। তারা সকালে দায়ূদকে হত্যা করবে বলে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু দায়ূদের স্ত্রী মীখল দায়ূদকে সাবধান করে দিয়েছিল। সে বলল, “আজ রাত্রেই তুমি পালিয়ে গিয়ে নিজেকে বাঁচাও, না হলে ওরা কালই তোমাকে মেরে ফেলবে।” 12 মীখল দায়ূদকে জানালা দিয়ে নীচে নামতে সাহায্য করল। দায়ূদ পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পেলেন। 13 মীখল গৃহদেবতাকে নিয়ে তাকে কাপড় পরাল। তারপর বিছানার ওপর মূর্ত্তিটাকে রাখল। মূর্ত্তির মাথায় কিছু ছাগলের চুলও ছড়িয়ে দিল।
14 শৌল দায়ূদকে ধরে আনার জন্য লোক পাঠালেন। কিন্তু মীখল বলল, “দায়ূদের অসুখ করেছে।”
15 লোকরা শৌলকে একথা বলতে শৌল আবার তাদের দায়ূদকে আনার জন্য পাঠালেন। শৌল তাদের বলে দিলেন, “দায়ূদকে শুয়ে থাকা অবস্থাতেই নিয়ে আসবে। আমি তাকে হত্যা করব।”
16 আবার তারা দায়ূদের বাড়ি গেল। বাড়ির ভেতর ঢুকে ঘরে গিয়ে দেখল বিছানার ওপর দেবতার মূর্ত্তি, মূর্ত্তির মাথায় ছাগলের চুল।
17 শৌল মীখলকে বললেন, “তুমি কেন আমার সঙ্গে এইভাবে চালাকি করলে? কেন তুমি আমার শত্রুকে পালাতে দিলে? দায়ূদ তো পালিয়ে গেছে!”
মীখল বলল, “দায়ূদ বলেছিলেন, আমি যদি ওকে পালাতে সাহায্য না করি তাহলে তিনি আমাকে হত্যা করবেন।”
দায়ূদ রামায় শিবিরে গেলেন
18 দায়ূদ পালিয়ে গিয়ে রামায় শমূয়েলের কাছে এলেন। শৌল তাঁর প্রতি কি করেছেন সে সব দায়ূদ শমূয়েলকে বললেন। তারপর তাঁরা দুজন তাঁবুগুলোর দিকে গেলেন। সেখানে ভাববাদীরা থাকত। সেখানেই দায়ূদ থেকে গেলেন।
আগ্রিপ্পার মণ্ডলীর উপর হেরোদের অত্যাচার
12 সেই সময় রাজা হেরোদ বিশ্বাসী মণ্ডলীর কিছু লোকের ওপর নির্যাতন শুরু করলেন। 2 যোহনের ভাই যাকোবকে হেরোদ তরবারির আঘাতে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন। 3 তিনি যখন দেখলেন এতে ইহুদীরা খুব খুশী হল, তখন তিনি পিতরকে গ্রেপ্তার করলেন। তখন ছিল ইহুদীদের নিস্তারপর্বের[a] সময়। 4 পিতরকে গ্রেপ্তার করে হেরোদ তাঁকে কারাগারে রাখলেন। তাঁকে পাহারা দেবার জন্য চারজন করে ষোল জন সৈনিককে নিয়োগ করলেন। তিনি মনে করলেন নিস্তারপর্বের পরে পিতরকে জনসাধারণের কাছে বিচারের জন্য হাজির করবেন। 5 তাই পিতরকে কারাগারে বন্দী করে রাখা হল, কিন্তু বিশ্বাসী মণ্ডলী তাঁর জন্য ঈশ্বরের কাছে একাগ্রভাবে প্রার্থনা করতে থাকলেন।
পিতর কারাগার থেকে মুক্ত হলেন
6 সেই রাতে পিতর দুজন প্রহরারত সৈনিকের মাঝখানে শুয়ে ঘুমাচ্ছিলেন, দুটি শেকল দিয়ে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল এবং সৈনিকরা ফটকে পাহারা দিচ্ছিল। হেরোদ ঠিক করেছিলেন যে পরদিন সকালে বিচারের জন্য পিতরকে কারাগারের বাইরে আনবেন। 7 হঠাৎ প্রভুর এক দূত সেখানে এসে দাঁড়ালেন; আর কারাগারের মধ্যে একটা আলো ঝলসে উঠল। স্বর্গদূত পিতরের গায়ে মৃদু আঘাত দিয়ে তাঁকে জাগিয়ে বললেন, “শিগগির ওঠ!” তখন তাঁর দুহাতের শেকল খসে পড়ল। 8 এরপর সেই স্বর্গদূত পিতরকে বললেন, “পোশাক পর, আর পায়ে জুতো দাও।” পিতর সেই মত কাজ করলেন। তখন স্বর্গদূত পিতরকে বললেন, “তোমার আলখাল্লাটি গায়ে দিয়ে আমাকে অনুসরণ কর।”
9 স্বর্গদূত বার হলেন আর পিতর তাঁর পিছু পিছু বাইরে বেরিয়ে গেলেন; কিন্তু স্বর্গদূত যা করলেন তা যে বাস্তবে সত্য তা তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তিনি মনে করলেন হয়তো কোন দর্শন দেখছেন। 10 তাঁরা প্রথম ও দ্বিতীয় পাহারাদারদের পেছনে ফেলে এগিয়ে গেলেন, আর যেখান দিয়ে শহরে যাওয়া যায়, লোহার সেই বিরাট ফটকের কাছে এলেন। সেই ফটক তাঁদের জন্য নিজে থেকে খুলে গেল আর তাঁরা সেখান দিয়ে বাইরে বেরিয়ে গেলেন। তাঁরা দুজনে যখন একটা রাস্তার শেষ পর্যন্ত গেলেন, অমনি সেই স্বর্গদূত পিতরের কাছ থেকে হঠাৎ কোথায় মিলিয়ে গেলেন।
11 তখন পিতর বুঝলেন কি ঘটেছে এবং বলে উঠলেন, “আমি নিশ্চয় জানলাম যে এসবই বাস্তব। প্রভু তাঁর দূতকে পাঠিয়েছিলেন আর তিনিই হেরোদের ও যে ইহুদীরা নির্যাতন দেখবে ভেবেছিল তাদের হাত থেকে আমায় উদ্ধার করেছেন।”
12 এই কথা বুঝতে পেরে তিনি মরিয়মের বাড়ির দিকে রওনা দিলেন। এই মরিয়ম হলেন যোহনের মা। এই যোহনকে আবার মার্কও বলে। এদের বাড়িতে অনেকে জড়ো হয়ে প্রার্থনা করছিলেন। 13 পিতর এসে বাইরের দরজায় ঘা দিলে রোদা নামে একজন চাকরানী এসে দরজায় কে তা জিজ্ঞেস করল। 14 পিতরের কন্ঠস্বর চিনতে পেরে তার এত আনন্দ হল যে সে দরজা খুলতে ভুলে গেল, আর দৌড়ে ভেতরে গিয়ে এই খবর জানাল। সে বলল, “পিতর দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন!” 15 তাঁরা তাকে বললেন, “তোমার মাথা খারাপ হয়েছে!” কিন্তু সে যখন বারবার বলতে লাগল, তার কথাই ঠিক, তখন তাঁরা বললেন, “তবে ও নিশ্চয়ই স্বর্গদূত।”
16 কিন্তু পিতর দরজায় আঘাত করেই চললেন, আর তাঁরা দরজা খুলে তাঁকে দেখতে পেয়ে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। 17 তিনি হাত দিয়ে ইঙ্গিতে তাদের চুপ করতে বললেন এবং প্রভু কিভাবে সেই কারাগার থেকে তাঁকে উদ্ধার করে এনেছেন সে কথা জানালেন। তিনি বললেন, “তোমরা যাকোবকে ও অন্যান্য ভাইদের এই ঘটনার কথা জানাও।” পরে তিনি সেখান থেকে অন্য জায়গায় চলে গেলেন।
এক পঙ্গুর আরোগ্যলাভ
(মথি 9:1-8; লূক 5:17-26)
2 কয়েকদিন পরে তিনি কফরনাহূমে ফিরে এলে এই খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল যে তিনি বাড়ি ফিরে এসেছেন। 2 এর ফলে এত লোক জড় হল যে সেখানে তিল ধারণেরও জায়গা রইল না, এমনকি দরজার বাইরেও এতটুকু জায়গা রইল না। তিনি তাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করতে লাগলেন। 3 সেই সময় চারজন লোক খাটে করে এক পঙ্গুকে তাঁর কাছে নিয়ে এল। 4 তারা সেই পঙ্গু লোকটিকে যীশুর কাছে নিয়ে যেতে পারল না, তাই যীশু যেখানে ছিলেন সেখানকার ছাদের কিছু টালি খুলে ফাঁকা করে, ঠিক তাঁর সামনে খাটিয়া সমেত সেই পঙ্গু লোকটিকে নামিয়ে দিল। 5 তাদের বিশ্বাস দেখে যীশু সেই পঙ্গু লোকটিকে বললেন, “বাছা, তোমার সব পাপের ক্ষমা হল।”
6 সেখানে কিছু ব্যবস্থার শিক্ষক বসে ছিলেন, তাঁরা মনে মনে ভাবতে লাগলেন, 7 “এ লোকটি এমন কথা বলছে কেন? এ যে ঈশ্বর নিন্দা করছে; ঈশ্বর ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করতে পারেন?”
8 যীশু নিজের আত্মায় ব্যবস্থার শিক্ষকদের মনের কথা জানতে পেরে তখনই তাদের বললেন, “তোমরা এসব কথা ভাবছ কেন? 9-10 কোনটা বলা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা করা হল’ অথবা ওঠ, তোমার খাটিয়া নিয়ে চলে যাও?” কিন্তু পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করার ক্ষমতা যে মানবপুত্রের আছে এটা আমি তোমাদের প্রমাণ করে দেব। তাই তিনি সেই পঙ্গু লোকটিকে বললেন, 11 “আমি তোমায় বলছি ওঠ! তোমার খাটিয়াটি তুলে নিয়ে তোমার ঘরে চলে যাও।”
12 সে উঠে দাঁড়াল এবং সঙ্গে সঙ্গে তার খাটিয়াটি তুলে নিয়ে সকলের সামনে দিয়ে হেঁটে বেরিয়ে গেল। এতে সকলে আশ্চর্য হয়ে ঈশ্বরের প্রশংসা করে বলল, “এর আগে আমরা এমন কখনও দেখিনি।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International