Book of Common Prayer
106 প্রভুর প্রশংসা কর!
প্রভুকে ধন্যবাদ দাও কারণ তিনি মঙ্গলময়!
ঈশ্বরের প্রেম চিরন্তন!
2 ঈশ্বর যে প্রকৃতপক্ষে কত মহান তা কেউই বর্ণনা করে বলতে পারবে না।
কোন ব্যক্তিই ঈশ্বরের যথেষ্ট প্রশংসা করতে পারে না।
3 যারা ঈশ্বরের নির্দেশ মানে তারা সুখী হয়।
ওই সব লোক সর্বদাই ভালো কাজ করে।
4 হে প্রভু, যখন আপনি আপনার লোকদের দয়া করবেন, তখন আমার কথা স্মরণে রাখবেন।
যখন আপনি আপনার লোকদের রক্ষা করবেন তখন আমায় মনে রাখতে ভুলে যাবেন না।
5 আপনার পছন্দ করা লোকদের জন্য আপনি যে সব ভালো কাজ করেন,
আমাকেও তার অংশীদার হতে দিন।
আপনার জাতির সঙ্গে আমাকেও আনন্দ করতে দিন।
আপনার লোকদের সঙ্গে আমাকেও আপনার প্রশংসা করতে দিন।
6 যেমন ভাবে আমাদের পূর্বপুরুষরা পাপ করেছে, আমরাও তেমন ভাবেই পাপ করেছি।
আমরা ভুল করেছি। আমরা গর্হিত কাজ করেছি!
7 হে প্রভু, মিশরে আপনি যে সব অলৌকিক কাজ করেছিলেন
তা থেকে আমাদের পূর্বপুরুষরা কিছুই শেখেনি।
তারা আপনার ভালবাসা ও দয়া মনে রাখে নি।
লোহিত সাগরের ধারে, আমাদের পূর্বপুরুষরা, আপনার বিরুদ্ধাচরণ করেছিল।
8 কিন্তু তাঁর পবিত্র নামের মহিমার জন্য ঈশ্বর তাদের রক্ষা করেছিলেন।
তাঁর মহৎ শক্তি প্রদর্শনের জন্য ঈশ্বর ওদের রক্ষা করেছিলেন।
9 ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছিলেন এবং লোহিত সাগর শুকিয়ে গিয়েছিলো।
শুকনো মরুভূমি দিয়ে চলার মত, তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের সমুদ্রের গভীরতার ভেতর দিয়ে ডাঙায় নিয়ে গিয়েছিলেন।
10 ঈশ্বর আমাদের পূর্বপুরুষদের শত্রুদের হাত থেকে আমাদের বাঁচিয়েছিলেন!
তাদের শত্রুদের হাত থেকে ঈশ্বর তাদের উদ্ধার করেছিলেন।
11 ঈশ্বর সমুদ্র দ্বারা ওদের শত্রুদের আবৃত করেছিলেন!
ওদের একজন শত্রুও পালাতে পারে নি!
12 তারপর আমাদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরকে বিশ্বাস করেছিলেন।
তাঁরা তাঁর প্রশংসা করেছিলেন।
13 কিন্তু ঈশ্বর যা করেছিলেন, আমাদের পূর্বপুরুষরা খুব তাড়াতাড়ি তা ভুলে গিয়েছিলেন।
তাঁরা ঈশ্বরের পরামর্শের জন্য অপেক্ষা করেন নি।
14 আমাদের পূর্বপুরুষরা মরুভূমিতে ক্ষুধার্ত হয়েছিলেন।
উষর প্রান্তরে তাঁরা ঈশ্বরকে পরীক্ষা করেছিলেন।
15 কিন্তু আমাদের পূর্বপুরুষরা যা চেয়েছিলেন, ঈশ্বর ওঁদের তাই দিয়েছিলেন।
কিন্তু ঈশ্বর ওঁদের এক ভয়াবহ রোগও দিয়েছিলেন।
16 পবিত্র শিবিরে লোকরা বিশ্বস্ত রইল
এবং মোশি ও হারোণের প্রতি তাদের উদ্যম দেখাল।
17 কিন্তু দাথন এবং অবীরামের গোষ্ঠীর দিকে মাটি দ্বিধাবিভক্ত হল,
তাদের গিলে ফেলল এবং ঢেকে দিল।[a]
18 তারপর এক আগুনের হল্কা সেই জনতাকে পুড়িয়ে দিলো।
তারপর আগুন সেই সব দুষ্ট লোকদের পুড়িয়ে দিলো।
19 হোরেব পর্বতে তারা একটা সোনার বাছুর তৈরী করেছিল।
তারা সেই মূর্ত্তিকে পূজো করেছিলো।
20 এইভাবে তৃণগ্রাসী বলদ মূর্ত্তির সঙ্গে
ওদের মহিমাময় ঈশ্বরের আদান-প্রদান করেছিলো!
21 ঈশ্বর আমাদের পূর্বপুরুষদের রক্ষা করেছিলেন! কিন্তু তাঁরা তাঁকে সম্পূর্ণ ভুলে গিয়েছিলেন।
মিশরে যে ঈশ্বর বিরাট অলৌকিক কাজ করেছিলেন, তাঁকে তাঁরা ভুলে গেলেন।
22 হামের দেশে ঈশ্বর আশ্চর্য কার্য করেছিলেন।
লোহিত সাগরের ধারে ঈশ্বর ভয়ঙ্কর কাজ করেছিলেন।
23 ঈশ্বর ওসব লোককে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু মোশি, যাকে তিনি মনোনীত করেছিলেন তিনি ঈশ্বরকে নিরস্ত করেন।
ঈশ্বর ভীষণ ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন, কিন্তু মোশি পথ রোধ করে দাঁড়ান
তাই ঈশ্বর সেইসব লোকদের আর ধ্বংস করেন নি।
24 কিন্তু তারপর এইসব লোক কনানের চমৎকার রাজ্যে প্রবেশ করতে অস্বীকার করে।
ওরা বিশ্বাস করেনি যে, ওই দেশে (কনানে) বসবাসকারী মানুষদের পরাজিত করতে ঈশ্বর ওদের সাহায্য করবেন।
25 আমাদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ করতে তাঁবুর ভেতরে রয়ে গিয়েছিলেন।
তাঁরা প্রভুর কন্ঠস্বর শুনতে অস্বীকার করেছিলেন।
26 তাই ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি করেছিলেন যে তাঁরা মরুভূমিতে মারা যাবেন।
27 ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, তিনি অন্য লোকদের তাদের উত্তরপুরুষদের পরাজিত করতে দেবেন।
ঈশ্বর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, আমাদের পূর্বপুরুষদের তিনি বিভিন্ন জাতিদের মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন।
28 তারপর, বাল-পিয়োরে, ঈশ্বরের লোকরা বাল মূর্ত্তির পূজা করায় যোগ দিয়েছিলো।
ঈশ্বরের লোকরা জংলী দলটিতে যোগ দিয়েছিলো এবং মৃত লোকের সম্মানে উৎসর্গ করা বলি আহার করেছিলো।
29 ঈশ্বর তাঁর লোকদের প্রতি ভীষণ ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন
এবং তিনি তাদের ভীষণ অসুস্থ করে দিয়েছিলেন।
30 কিন্তু পীনহস ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলো
এবং ঈশ্বর অসুস্থতা রদ করেছিলেন।
31 ঈশ্বর জানতেন যে পীনহস খুব ভালো একটা কাজ করেছিলো।
ঈশ্বর সেটা চিরদিন, অনন্তকালের জন্য স্মরণে রাখবেন!
32 মরীবার কাছে লোকজন প্রচণ্ড ক্রোধান্বিত হল।
তারা মোশিকে দিয়ে কিছু কু-কাজ করালো।
33 কারণ ওই লোকরা মোশিকে ভীষণ বিমর্ষ করে তুলল[b]
এবং সে কিছু চিন্তা-ভাবনা না করেই কথা বলল।
34 ঈশ্বর তাঁর লোকদের কনানে অন্য জাতিসমূহ যারা বাস করছিল তাদের ধ্বংস করে দিতে বললেন।
কিন্তু ইস্রায়েলের লোকরা ঈশ্বরের কথা মান্য করে নি!
35 তারা অন্য জাতিগুলোর সঙ্গে মেলামেশা করেছিল
এবং তারা যা করত ওরা তাই করতে শিখেছিল।
36 ওই লোকগুলো ঈশ্বরের লোকদের জন্য ফাঁদের মতই ভয়ঙ্কর হল।
ঈশ্বরের লোকরাও সেইসব মূর্ত্তিসমূহের পূজা করতে শুরু করলো যাদের ওরা পূজা করত।
37 এমনকি ঈশ্বরের লোকেরা তাদের সন্তানদের পর্যন্ত হত্যা করেছিলো
এবং ওই দানবদের কাছে উৎসর্গ করেছিলো।
38 ঈশ্বরের লোকরা নিস্পাপ লোকদের হত্যা করেছিলো।
ওরা ওদের নিজেদের সন্তানদেরও হত্যা করেছিলো
এবং তাদের মূর্ত্তিসমূহের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছিলো।
39 তাই অন্য লোকদের পাপে ঈশ্বরের লোকরা অপবিত্র হয়ে উঠেছিল।
ঈশ্বরের লোকরা তাদের ঈশ্বরের কাছে অবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিলো এবং অন্য লোকরা যা করতো ওরাও তাই করতে শুরু করেছিল।
40 ঈশ্বর তাঁর লোকজনের ওপরে চটে গেলেন।
তাদের ব্যাপারে ঈশ্বর ক্লান্ত হয়ে গেলেন!
41 ঈশ্বর তাঁর লোকেদের,[c] কেউ চায় নি এমন কিছুতে পরিবর্তন করে দিলেন।
ঈশ্বর ওদের শত্রুদের দিয়ে ওদের শাসন করালেন।
42 ঈশ্বরের লোকদের শত্রুরা ওদের দাবিয়ে রাখলো
এবং তাদের নিজেদের ক্ষমতার মধ্যে রাখলো।
43 ঈশ্বর তাদের বহুবার রক্ষা করেছিলেন
কিন্তু তারা ঈশ্বরের উপদেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল।[d]
অতএব, এই কারণে লোকদের সম্মানে খাটো করা হয়েছিল।
44 কিন্তু ঈশ্বরের লোকরা যখনই সমস্যায় পড়েছে ওরা সাহায্যের জন্য ঈশ্বরকে ডেকেছে
এবং প্রত্যেকবারই ঈশ্বর ওদের প্রার্থনা শুনেছেন।
45 ঈশ্বর সর্বদাই তাঁর চুক্তির কথা স্মরণে রেখেছিলেন
এবং তাঁর মহৎ প্রেম দিয়ে তিনি সর্বদাই ওদের স্বস্তি দিয়েছিলেন।
46 অন্য জাতিরা ওদের বন্দী হিসেবে নিয়ে গিয়েছিলো।
কিন্তু তাঁর লোকদের প্রতি ওদের সদয় করেন।
47 হে প্রভু, আমাদের ঈশ্বর, আমাদের রক্ষা করুন!
আমাদের অন্য সব জাতি থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন
যাতে আমরা আপনার পবিত্র নামের প্রশংসা করতে পারি
এবং বন্দনা গান করে আপনাকে সম্মান করতে পারি।
48 ইস্রায়েলের প্রভু ঈশ্বরের বন্দনা কর। ঈশ্বর চির বিরাজমান
এবং তিনি চিরদিন বিরাজিত থাকবেন।
সব লোকরা বলল, “আমেন!”
প্রভুর প্রশংসা কর!
শমূয়েল শৌলকে রাজা বলে ঘোষণা করল
17 শমূয়েল ইস্রায়েলবাসীদের মিস্পায় প্রভুর সঙ্গে মিলিত হবার জন্য বলল। 18 সে বলল, “ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর, আমাদের প্রভু বলেন, ‘আমি ইস্রায়েলীয়দের মিশর থেকে বার করে এনেছি। আমি তোমাদের মিশরের ক্ষমতা থেকে এবং যে সমস্ত রাজ্যগুলি তোমাদের নিষ্পেষিত করে দুর্দশাগ্রস্ত করেছিল, তাদের থেকে বাঁচিয়েছি।’ 19 কিন্তু আজ তোমরা সেই ঈশ্বরকে পরিত্যাগ করেছ। ঈশ্বরই তোমাদের সব বিপদ ও বিপত্তি থেকে উদ্ধার করেছেন, কিন্তু তোমরা বলছ, ‘আমাদের শাসন করবার জন্য আমরা একজন রাজা চাই।’ বেশ তবে তাই হোক্। এখন তোমাদের পরিবারগোষ্ঠী অনুসারে প্রভুর সামনে দাঁড়াও।”
20 শমূয়েল ইস্রায়েলবাসীদের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীকে তার কাছে ডাকল। তারপর সে নতুন রাজা মনোনয়ন করতে শুরু করল। প্রথমে বাছা হল বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীকে। 21 সেই পরিবারগোষ্ঠীর প্রত্যেক পরিবারকে শমূয়েল তার সামনে দিয়ে হেঁটে যেতে বলল। শমূয়েল এবার পছন্দ করল মট্রীয়দের পরিবার। তারপর মট্রীয়দের পরিবারের প্রত্যেককে শমূয়েল হেঁটে যেতে বলল। কীশের পুত্র শৌলকে সে এবার মনোনীত করল।
কিন্তু লোকরা যখন শৌলকে খুঁজল, তারা তাকে পেল না। 22 তখন তারা প্রভুকে জিজ্ঞাসা করল, “শৌল কি এখানে এসেছে?”
প্রভু বললেন, “শৌল জিনিসপত্রের পেছনেই লুকিয়ে রয়েছে।”
23 লোকরা ছুটে গিয়ে সেখান থেকে শৌলকে বার করে আনলে শৌল সকলের মাঝখানে দাঁড়াল। সকলের মধ্যে শৌলই ছিল লম্বায় এক মাথা উঁচু।
24 শমূয়েল সকলকে বলল, “এর দিকে তাকিয়ে দেখ। প্রভু একেই মনোনীত করেছেন। শৌলের মতো এখানে তোমাদের মধ্যে আর কেউ নেই।”
লোকরা বলে উঠল, “রাজা দীর্ঘায়ু হোন্।”
25 শমূয়েল তাদের সমস্ত রাজকীয় নিয়ম ও বিধিগুলি বুঝিয়ে দিল। সে সেগুলো একটা বইয়ে লিখে রাখল। পরে প্রভুর সামনে সেই বইখানি রেখে শমূয়েল সবাইকে বাড়ি চলে যেতে বলল।
26 শৌলও গিবিয়ায় তার বাড়ি চলে গেল। ঈশ্বর সাহসীদের হৃদয় স্পর্শ করল। এই সাহসীরা শৌলকে অনুসরণ করল। 27 কিন্তু কিছু অশান্তি সৃষ্টিকারী লোক বলল, “এই লোকটা কি করে আমাদের রক্ষা করবে?” শৌলকে নিয়ে তারা নিন্দামন্দ করতে লাগল। তারা শৌলকে কোন উপহার দিল না। কিন্তু শৌল এ নিয়ে কিছু বলল না।
অম্মোনদের রাজা নাহশ
অম্মোনদের রাজা নাহশ গাদ আর রূবেণ পরিবারগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন চালাত। এদের প্রত্যেকেরই ডান চোখ সে উপড়ে নিয়েছিল, কেউ তাদের সাহায্য করুক নাহশ তা চাইত না। যর্দন নদীর পূর্বদিকে যেসব ইস্রায়েলীয় বসবাস করত, তাদের ডান চোখ সে উপড়ে নিয়েছিল। কিন্তু 7000 ইস্রায়েলীয় অম্মোনদের হাত থেকে পালিয়ে গিয়ে যাবেশ গিলিয়দে চলে গিয়েছিল।
44 “মরু এলাকায় আমাদের সেই পিতৃপুরুষদের কাছেই সেই পবিত্র তাঁবু ছিল। এই পবিত্র তাঁবু তৈরী হয়েছিল সেই ধারায়, যেভাবে নমুনা দেখিয়ে ঈশ্বর মোশিকে তা করতে বলেছিলেন। 45 পরবর্তীকালে যিহোশূয় আমাদের পিতৃপুরুষদের পরিচালিত করলে তাঁরা ভিন্ন জাতির দেশ দখল করলেন। আমাদের লোকরা সেই দেশে প্রবেশ করলে ঈশ্বর সেখানকার লোকদের সেই দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য করলেন। আমাদের লোকরা এই নতুন দেশে গেলে ঐ তাঁবুও সঙ্গে নিয়ে এলেন। পিতৃপুরুষদের কাছ থেকে তাঁরা এই তাঁবু পেয়েছিলেন। সেই তাঁবু রাজা দায়ূদের সময় পর্যন্ত তাঁদের কাছে ছিল। 46 দায়ূদ ঈশ্বরের দৃষ্টিতে বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করলেন আর যাকোবের ঈশ্বরের জন্য এক গৃহ নির্মাণ করার অনুমতি চাইলেন। 47 কিন্তু দায়ূদের ছেলে শলোমন তাঁর জন্য মন্দির নির্মাণ করলেন।
48 “কিন্তু যিনি পরমেশ্বর তিনি কখনও মানুষের হাতে তৈরী গৃহে বাস করেন না। এ বিষয়ে ভাববাদী বলেছেন:
‘প্রভু বলেন,
49 স্বর্গ আমার সিংহাসন।
পৃথিবী আমার পা রাখার জায়গা।
তুমি আমার জন্য কিরূপ গৃহ নির্মাণ করবে?
আমার বিশ্রামের স্থান কোথায়!
50 আমার হাতই কি এই বস্তুগুলি নির্মাণ করে নি!’(A)
51 “আপনারা একগুঁয়ে লোক! ঈশ্বরকে আপনারা নিজ নিজ হৃদয় সঁপে দেন নি! আপনারা তাঁর কথা শুনতে চান নি! আপনারা সব সময় পবিত্র আত্মা যা বলতে চাইছেন তা প্রতিরোধ করে এসেছেন। আপনাদের পিতৃপুরুষরা যেমন করেছিলেন, আপনারাও তাদের মতোই করছেন। 52 এমন কোন ভাববাদী ছিলেন কি যাকে আপনাদের পিতৃপুরুষরা নির্যাতন করেন নি? সেই ধার্মিক ব্যক্তির আগমণের কথা যাঁরা বহুপূর্বে ঘোষণা করেছিলেন আপনাদের পিতৃপুরুষরা তাদের খুন করেছেন; আর এখন আপনারা সেই ধার্মিককে শত্রুর হাতে সঁপে দিয়ে হত্যা করছেন। 53 আপনারা মোশির বিধি-ব্যবস্থা পেয়েছিলেন, ঈশ্বরই তাঁর স্বর্গদূতদের মাধ্যমে তা দিয়েছিলেন, কিন্তু আপনারা তা পালন করেন নি!”
স্তিফানকে হত্যা
54 ইহুদী নেতারা স্তিফানের এইসব কথা শুনে প্রচণ্ড রেগে গেল। স্তিফানের প্রতি তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে দাঁতে দাঁত ঘষতে লাগল। 55 স্তিফান পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে স্বর্গের দিকে তাকালেন আর দেখলেন ঈশ্বরের মহিমা, দেখলেন যীশু ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন। 56 তিনি বললেন, “দেখ! আমি দেখছি স্বর্গ খোলা রয়েছে; আর মানবপুত্র ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন!”
57 তখন ইহুদী নেতারা জোরে চিৎকার করে উঠল, আর নিজেদের কানে হাত চাপা দিল। এরপর সবাই মিলে এক সঙ্গে তাঁর দিকে ছুটে গেল। 58 তারা স্তিফানকে মেরে ফেলার জন্য তাঁকে টানতে টানতে শহর থেকে বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর মারতে লাগল। যারা স্তিফানের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিতে এসেছিল, তারা শৌল নামে এক যুবকের পায়ের কাছে তাদের আলখাল্লা খুলে জমা রাখল। 59 তারা যখন স্তিফানকে পাথর মেরে চলেছে তখন তিনি প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু যীশু আমার আত্মাকে গ্রহণ কর!” 60 এরপর তিনি হাঁটু গেড়ে বসে চিৎকার করে বললেন, “প্রভু, এদের বিরুদ্ধে এই পাপ গন্য করো না!” এই বলে তিনি মৃত্যুতে ঢলে পড়লেন।
8 1-3 আর শৌল স্তিফানের হত্যার অনুমোদন করেছিলেন।
বিশ্বাসীদের কষ্ট
কয়েকজন ধার্মিক লোক এসে স্তিফানকে কবর দিলেন আর স্তিফানের জন্য গভীর শোক প্রকাশ করলেন। সেইদিন থেকে জেরুশালেমের মণ্ডলীর উপর ভীষণ নির্যাতন শুরু হল। প্রেরিতগণ ছাড়া সবাই যিহূদিয়া ও শমরিয়া প্রদেশের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়লেন। এদিকে শৌল বিশ্বাসী সমাবেশকে ধ্বংস করার জন্য উঠে পড়ে লাগলেন। বাড়ি বাড়ি ঢুকে তিনি স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে টানতে টানতে নিয়ে এসে কারাগারে ভরলেন।
52 এরপর যীশু, যারা তাঁকে ধরতে এসেছিল, সেই প্রধান যাজক, মন্দির রক্ষী বাহিনীর পদস্থ কর্মচারীদের ও ইহুদী সমাজপতিদের উদ্দেশ্যে বললেন, “ডাকাত ধরতে লোকে যেমন বার হয় তোমরাও কি সেরকম ছোরা ও লাঠি নিয়ে আমাকে ধরতে এসেছ? 53 প্রত্যেক দিনই তো আমি তোমাদের মাঝে মন্দিরেই ছিলাম, তখন তো তোমরা আমায় স্পর্শ কর নি! কিন্তু এই তোমাদের সময়, অন্ধকারের রাজত্বের এই তো সময়।”
যীশুকে স্বীকার করতে পিতরের ভয়
(মথি 26:57-58, 69-75; মার্ক 14:53-54, 66-72; যোহন 18:12-18, 25-27)
54 তারা তাঁকে গ্রেপ্তার করে মহাযাজকের বাড়িতে নিয়ে চলল। পিতর কিন্তু দূরত্ব বজায় রেখে তাদের পেছনে পেছনে চললেন। 55 মহাযাজকের বাড়ির উঠোনের মাঝখানে লোকেরা আগুন জ্বেলে তার চারপাশে বসল, পিতরও তাদের সঙ্গে বসলেন। 56 একজন চাকরাণী দেখল যে পিতর সেই আগুনের ধারে বসেছেন। সে পিতরকে খুব ভালভাবে দেখে নিয়ে বলল, “আরে, এই লোকটাও তো ওর সঙ্গী ছিল!”
57 কিন্তু পিতর অস্বীকার করে বললেন, “এই মেয়ে, আমি ওঁকে চিনি না।” 58 এর কিছুক্ষণ পরে আর একজন পিতরকে দেখে বলল, “আরে, তুমিও তো ওদেরই দলের একজন!”
কিন্তু পিতর বললেন, “না, মশায়, আমি নই।”
59 এর প্রায় একঘন্টা পরে আর একজন বেশ জোর দিয়ে বলল, “নিঃসন্দেহে এ লোকটা ওরই সঙ্গী ছিল, কারণ এ তো একজন গালীলীয়!”
60 কিন্তু পিতর বললেন, “মশায়, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না, আপনি কি বলছেন।”
পিতরের কথা শেষ না হতেই একটা মোরগ ডেকে উঠল। 61 তখন প্রভু মুখ ফিরিয়ে পিতরের দিকে তাকালেন, আর প্রভুর কথা পিতরের মনে পড়ে গেল, প্রভু বলেছিলেন, “আজ রাতে মোরগ ডাকার আগে, তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে।” 62 তখন তিনি বাইরে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International