Book of Common Prayer
পরিচালকের প্রতি: প্রভুর দাস দায়ূদের একটি গীত। প্রভু যখন দায়ূদকে শৌল এবং অন্যান্য শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন, তখন দায়ূদ এই গীতটি লিখেছিলেন।
18 তিনি বললেন, “প্রভু আমার শক্তি,
আমি আপনাকে ভালোবাসি!”
2 প্রভুই আমার শিলা, আমার দুর্গ, আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
আমার ঈশ্বর, আমার শিলা। আমি তাঁর কাছে নিরাপত্তার জন্য ছুটে যাই।
ঈশ্বরই আমার ঢালস্বরূপ। তাঁর শক্তি আমায় রক্ষা করে।
দুর্গম পাহাড়ে প্রভুই আমার গোপন আশ্রয়স্থল।
3 ওরা আমায় উপহাস করেছে।
কিন্তু আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছি
এবং আমার শত্রুদের কাছ থেকে রক্ষা পেয়েছি!
4 আমার শত্রুরা আমায় হত্যা করতে চাইছিল!
আমার চারপাশে ছিল মৃত্যুর দড়ি।
এক তীব্র বন্যা আমাকে পাতালের দিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
5 আমার চারপাশে ছিল কবরের রজ্জুগুলি।
আমার সামনে পড়েছিল মৃত্যুর ফাঁদ।
6 ফাঁদে বদ্ধ হয়ে, আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চাইলাম।
হ্যাঁ, আমি আমার ঈশ্বরকে ডাকলাম।
ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে ছিলেন।
তিনি আমার কন্ঠস্বর শুনতে পেলেন।
তিনি আমার সাহায্যের জন্য কান্না শুনতে পেলেন।
7 সারা পৃথিবী কেঁপে উঠলো,
পর্বতের ভিতগুলো পর্যন্ত নড়ে উঠেছিল। কেন?
কারণ প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন!
8 ঈশ্বরের নাক দিয়ে ধোঁয়া বেরিয়ে এলো।
ঈশ্বরের মুখ থেকে বেরিয়ে এলো জ্বলন্ত অগ্নিশিখা।
তাঁর দেহ থেকে জ্বলন্ত আগুন বিচ্ছুরিত হতে লাগলো।
9 আকাশমণ্ডল বিদীর্ণ করে প্রভু নীচে নেমে এলেন!
একটি ঘন কালো মেঘের ওপর তিনি দাঁড়িয়েছিলেন।
10 বাতাসের পাখায় চড়ে তিনি আকাশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে উড়ে বেড়াচ্ছিলেন।
বাতাসের ওপর ভর করে, তিনি সুদূর শূন্যে ভেসে বেড়াচ্ছিলেন।
11 প্রভু একটা ঘন কালো মেঘের মধ্যে লুকিয়েছিলেন, সেই মেঘ তাঁকে তাঁবুর মত ঘিরেছিল।
তিনি ঘন বজ্রময় মেঘের মধ্যে লুকিয়েছিলেন।
12 তারপর মেঘ ভেদ করে ঈশ্বরের আলোকময় ঔজ্জ্বল্য বেরিয়ে এলো।
সেখানে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি এবং বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা দিল।
13 আকাশ থেকে প্রভু বিদ্যুতের মত ঝলসে উঠলেন!
পরাৎপরের রব শোনা গেল।
সেখানে তখন শিলাবৃষ্টি এবং বজ্রসহ অগ্নিময় বিদ্যুতের ঝলক ছিল।
14 প্রভু তাঁর তীরসমূহ[a] নিক্ষেপ করে শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করে দিলেন।
প্রভু তীরের মত ক্ষিপ্রগতিতে অনেকগুলো অশনিপাত করলেন এবং লোকরা বিভ্রান্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়লো।
15 প্রভু আপনি উচ্চস্বরে আপনার আজ্ঞা দিলেন
এবং তীব্র বেগে বাতাস বইতে শুরু করলো।
জল পেছনে সরে গেল এবং আমরা সমুদ্রের তলদেশ দেখতে সমর্থ হলাম।
আমরা পৃথিবীর ভিত দেখতে পেলাম।
16 প্রভু ওপর থেকে নীচে পৌঁছলেন এবং আমাকে রক্ষা করলেন।
প্রভু আমাকে গভীর জল থেকে টেনে তুললেন।
17 আমার শত্রুরা আমার চেয়ে শক্তিশালী ছিলো।
ওই সব লোক আমায় ঘৃণা করেছে।
আমার কাছে আমার শত্রুরা বেশ শক্তিশালীই ছিল, তাই ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেছেন!
18 আমি সমস্যার মধ্যে নিমজ্জিত ছিলাম এবং আমার শত্রুরা আমায় আক্রমণ করেছিল।
কিন্তু আমাকে সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রভু সেখানে ছিলেন!
19 প্রভু আমায় ভালোবাসেন, তাই তিনি আমায় উদ্ধার করলেন।
তিনি আমায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেলেন।
20 আমি নিস্পাপ, তাই প্রভু আমাকে আমার যোগ্য পুরস্কার দেবেন।
আমি কোন অন্যায় কাজ করি নি, তাই তিনি আমার জন্য হিতকর কাজই করবেন।
21 কেন? কারণ আমি প্রভুর নির্দেশ পালন করেছি!
আমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন পাপ করি নি।
22 আমি সর্বদাই প্রভুর নির্দেশসমূহ স্মরণে রাখি।
আমি তাঁর নির্দেশিত বিধি পালন করি!
23 তাঁর সামনে আমি সর্বদাই সৎ ও বিশুদ্ধ ছিলাম।
আমি নিজেকে অন্যায় কাজ থেকে দূরে রেখেছিলাম।
24 এই কারণে প্রভু আমাকে আমার পুরস্কার দেবেন!
কেন? কারণ আমি নির্দোষ!
প্রভু দেখেছেন, আমি কোন গর্হিত কাজ করি নি।
তাই আমার প্রতি তিনি হিতকর কাজই করবেন।
25 প্রভু, যদি কোন লোক প্রকৃতই আপনাকে ভালোবাসে আপনিও তাঁর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা প্রদর্শন করুন।
আপনার প্রতি কেউ যদি সৎ ও একনিষ্ঠ হয়, আপনিও তার প্রতি সৎ হন।
26 হে প্রভু, যারা ভাল এবং শুচি তাদের কাছে আপনিও ভাল এবং শুচি।
কিন্তু, নীচতম এবং ক্রুরতম ব্যক্তিকেও আপনি পরাক্রমী করতে পারেন।
27 প্রভু, নম্র লোকদের আপনি সাহায্য করেন।
কিন্তু উদ্ধত ও অহঙ্কারী লোকদের আপনি অবদমিত করেন।
28 প্রভু, আপনিই আমার প্রদীপ জ্বালান।
আমার ঈশ্বর, আমার চারদিকের অন্ধকারকে আলোকিত করেন!
29 আপনার সাহায্যে হে প্রভু, আমি সৈন্যদের সঙ্গে ছুটতে পারি।
ঈশ্বরের সাহায্য পেয়ে, আমি শত্রুদের দেওয়ালের ওপর চড়তে পারি।
30 ঈশ্বর সর্বদাই যা সঠিক তাই করে থাকেন।
প্রভুর বাক্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখে, তিনি তাদের রক্ষা করেন।
31 প্রভু ছাড়া আর অন্য কোন ঈশ্বর নেই।
আমাদের প্রভু ছাড়া আর কোন শিলা নেই।
32 ঈশ্বর আমায় শক্তি দেন।
তিনি আমাকে পবিত্র জীবনযাপন করতে সাহায্য করেন।
33 ঈশ্বর আমাকে হরিণের মত দ্রুত দৌড়তে সাহায্য করেন।
উচ্চস্থানে তিনিই আমাকে অবিচল রাখেন।
34 ঈশ্বর আমাকে যুদ্ধের কৌশল শিক্ষা দেন,
তাই আমার বাহুগুলি একটি শক্তিশালী ধনুকে ছিলা পরাতে পারে।
35 ঈশ্বর আপনি আমায় রক্ষা করেছেন এবং জয়ী হতে সাহায্য করেছেন।
আপনার ডান হাত দিয়ে আপনি সহায়তা করেছেন।
আমার শত্রুকে পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন।
36 আমার পা এবং গোড়ালি শক্ত করে দিন,
যেন আমি হোঁচট না খেয়ে দ্রুত দৌড়তে পারি।
37 আমি যেন আমার শত্রুদের তাড়া করতে পারি এবং তাদের ধরে ফেলতে পারি।
তাদের শেষ না করে আমি আর ফিরবো না!
38 আমি আমার শত্রুদের পরাজিত করবো। তারা আর উঠে দাঁড়াবে না।
আমার সব শত্রু আমার পায়ের নীচে পড়ে থাকবে।
39 ঈশ্বর, যুদ্ধে আপনিই আমাকে শক্তিশালী করেছেন।
আপনিই আমার শত্রুকে আমার সামনে ভূপতিত করেছেন।
40 আমার শত্রুদের পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন
এবং আমি আমার বিরোধীদের বিনষ্ট করেছি!
41 আমার শত্রুরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিল।
কিন্তু তাদের সাহায্য করার কেউ ছিল না।
তারা এমনকি প্রভুকেও ডেকেছিল,
কিন্তু প্রভু তাদের উত্তর দেন নি।
42 আমি আমার শত্রুদের মেরে টুকরো টুকরো করে দিয়েছি।
তারা ধূলোর মত বাতাসে উড়ে গিয়েছিল।
আমি তাদের একেবারে খণ্ড বিখণ্ড করে ছেড়েছি।
43 যারা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করুন।
আমাকে সেই সব জাতির নেতা বানিয়ে দিন।
যে সব লোকদের আমি জানি না, তারা আমার সেবা করবে।
44 সেই সব লোক আমার সম্পর্কে শোনামাত্রই আমার আজ্ঞাকারী হবে।
ঐ বিদেশীরা আমায় ভয় করবে।
45 ঐসব বিদেশীরা ভয়ে শুকিয়ে যাবে।
ভয়ে কম্পমান হয়ে ওরা ওদের গোপন ডেরা থেকে বেরিয়ে আসবে।
46 প্রভু জীবন্ত!
আমি আমার শিলার প্রশংসা করি। ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেন।
তিনি মহান!
47 ঈশ্বর আমার জন্য আমার শত্রুদের শাস্তি দিয়েছেন।
তিনি লোকদের আমার অধীনে এনে দিয়েছেন।
48 প্রভু, আপনি শত্রুর হাত থেকে আমায় বাঁচিয়েছেন।
যারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল, তাদের পরাস্ত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন।
নিষ্ঠুর মানুষের হাত থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন।
49 হে প্রভু, এই কারণে আমি সকল জাতির কাছে আপনার প্রশংসা করি।
এই জন্যই আপনার নামে আমি স্তোত্র গান করি।
50 প্রভু তাঁর মনোনীত রাজাকে বহু যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করেন!
তাঁর মনোনীত রাজার প্রতি তিনি প্রকৃত ভালোবাসা দেখান।
তিনি দায়ূদ এবং তাঁর উত্তরপুরুষদের প্রতি চিরদিন বিশ্বস্ত থাকবেন!
31 “মহারাজ, স্বপ্নে আপনি আপনার সামনে এক বিশাল মূর্ত্তিকে দেখেছিলেন। সেই মূর্ত্তিটি ছিল প্রকাণ্ড এবং চকচকে। এই মূর্ত্তি দেখলে যে কেউ বিস্ময়ে তার চোখ বিস্তারিত করে ফেলবে। 32 মূর্ত্তিটির মাথা ছিল খাঁটি সোনার, বুক ও হাতগুলো এবং করযুগল ছিল রূপার। পেট ও ঊরু ছিল পিতলের। 33 পায়ের নিচের দিক ছিল লোহার। সেই মূর্ত্তিটির পায়ের পাতা ছিল লোহা এবং মাটির মিশ্রনে তৈরী। 34 মূর্ত্তিটির দিকে তাকিয়ে থাকাকালীন আপনি এক টুকরো পাথর দেখেছিলেন যেটা একটা পর্বত থেকে কেটে বার করা, কোন ব্যক্তির দ্বারা নয়। সেই পাথরের টুকরোটি এসে মূর্ত্তিটির লোহা এবং মাটির পায়ে আঘাত করল এবং তাদের সম্পূর্ণরূপে ভেঙে দিল। 35 এরপর লোহা, মাটি, পিতল, রূপা ও সোনা সব কিছু এক সঙ্গে ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। তারপর এগুলো গ্রীষ্মকালীন শস্যাদি মাড়াবার জায়গায় কিছুই ফেলে না রেখে তুষের মতো বাতাসের সঙ্গে উড়ে গেল। তারপর সেই পাথরের খণ্ডটি এক বিরাট পর্বতের আকার নিল ও সারা পৃথিবী ঢেকে ফেলল।
36 “এই ছিল আপনার স্বপ্ন। এখন আমরা আপনাকে বলব এর অর্থ কি। 37 মহারাজ, আপনি হলেন সমস্ত রাজাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। ঈশ্বর আপনাকে রাজত্ব, পরাক্রম, শক্তি ও মহিমা দিয়েছেন। 38 যেখানে মানুষ, বন্য পশু ও পাখীরা বাস করে ঈশ্বর আপনাকে সেই সমস্ত জায়গার ওপর শাসন করবার ক্ষমতা দিয়েছেন। মহারাজ আপনিই হলেন সেই মূর্ত্তির সোনার মাথাটি।
39 “আপনার পরে যে রাজ্যের উত্থান হবে তা হল সেই মূর্ত্তির রূপার অংশটি। কিন্তু সেই রাজ্য আপনার মত মহান হবে না। এরপর একটি তৃতীয় রাজ্য আসবে। এটি হল মূর্ত্তির পিতলের অংশটি। এটি পুরো পৃথিবীর ওপর শাসন করবে। 40 চতুর্থ রাজ্য লৌহবৎ দৃঢ় হবে। চতুর্থ রাজ্যটি অন্য আর সমস্ত রাজ্যের ধ্বংসের কারণ হবে যেমন লোহা সব কিছু টুকরো টুকরো করে ভেঙে দেয়।
41 “আপনি দেখেছেন যে মূর্ত্তিটির পায়ের পাতার খানিকটা ছিল কুমোরের মাটি দিয়ে তৈরী এবং খানিকটা লোহার তৈরী। এর অর্থ হল এটা হবে একটা বিভক্ত রাজ্য কারণ আপনি মাটির সঙ্গে লোহার মিশ্রন দেখেছেন। 42 তাই চতুর্থ রাজ্যটির একটা অংশ হবে লোহার মত দৃঢ় ও অপর অংশটি হবে মাটির মত ভঙ্গুর। 43 আপনি মাটির সাথে লোহার মিশ্রণ দেখেছেন কিন্তু মাটি ও লোহা সম্পূর্ণ ভাবে মেশে না। তাই চতুর্থ রাজ্যের লোকরা অন্তর্বিবাহ করবে। কিন্তু তারা ঐক্যবদ্ধ লোকের মত হবে না।
44 “চতুর্থ রাজ্যের রাজাদের সময় স্বর্গের ঈশ্বর আর একটি রাজ্য স্থাপন করবেন। এই রাজ্যটি চিরকালের জন্য থাকবে। এটি ধ্বংস হবে না এবং এটি সেই জাতীয় রাজ্য হবে না যেটা একটি জাতি থেকে আর একটিকে দেওয়া হবে। এই রাজ্য অন্য সমস্ত রাজ্যকে ধ্বংস করে ফেলবে কিন্তু নিজে চিরস্থায়ী হবে।
45 “এটাই হল সেই পাথরের টুকরোটা যেটা আপনি দেখেছিলেন। আপনা আপনি পর্বত কেটে বেরিয়ে এসেছিল এবং তারপর লোহা, পিতল, মাটি, রূপো ও সোনা সব কিছুকে টুকরো টুকরো করে ভেঙে দিয়েছিল। এইভাবেই ঈশ্বর আপনাকে দেখিয়েছেন ভবিষ্যতে কি হবে। স্বপ্নটি সত্যি ও আপনি এর ব্যাখ্যাকে সঠিক বলে বিশ্বাস করতে পারেন।”
46 তখন নবূখদ্নিৎসর মাথা নীচু করে দানিয়েলের সামনে নতজানু হলেন এবং দানিয়েলকে সম্মান জানাবার জন্য সুগন্ধি নৈবেদ্য উৎসর্গ করতে আদেশ দিলেন। 47 তারপর রাজা দানিয়েলকে বললেন, “আমি নিশ্চিত যে তুমি এবং তোমার বন্ধুদের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈশ্বর হলেন সব চেয়ে পরাক্রমী। এবং তিনি সব রাজার প্রভু। মানুষ যা জানতে পারে না ঈশ্বর তা বলে দেন। আমি জানি এটা সত্য কারণ তুমি আমাকে এই গুপ্ত বিষয় প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছো।”
48 তারপর রাজা দানিয়েলকে সম্মানিত করলেন এবং তাঁকে প্রচুর বহুমূল্য উপহার দিলেন। নবূখদ্নিৎসর তাঁকে সমগ্র বাবিল প্রদেশের শাসনকর্তা হিসেবে নিয়োগ করলেন। তাঁকে বাবিলের সমস্ত জ্ঞানী মানুষের অধিপতি করা হল। 49 দানিয়েল রাজাকে বললেন শদ্রক, মৈশক ও অবেদ্-নগোকে প্রদেশের শাসনকার্যে নিয়োগ করতে এবং দানিয়েল যেমন চেয়েছিলেন রাজা তাই করলেন। এবং দানিয়েল নিজে রাজার একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে রাজদ্বারে থাকলেন।
খ্রীষ্টারির অনুসরণ করো না
18 প্রিয় সন্তানরা, জগতের শেষ সময় ঘনিয়ে এসেছে। আর তোমরা শুনেছ যে খ্রীষ্টারিরা আসছে। এখনই সেই খ্রীষ্টারিরা এসে গেছে, এর ফলেই আমরা বুঝতে পারছি যে এই শেষ সময়। 19 সেই খ্রীষ্টারিরা আমাদের দলের মধ্যেই ছিল। তারা আমাদের মধ্য থেকে বাইরে চলে গেছে। বাস্তবে তারা কোন দিনই আমাদের লোক ছিল না, কারণ তারা যদি আমাদের দলের লোক হত, তবে আমাদের সঙ্গেই থাকত। তারা আমাদের ছেড়ে চলে গেল; এর দ্বারাই প্রমাণ হল যে তারা কেউই আদৌ আমাদের নয়।
20 তোমরা সেই পবিত্রতমের (খ্রীষ্টের) কাছে অভিষিক্ত হয়েছ, তাই তোমরা সকলে সত্য কি তা জান। তবে তোমাদের কাছে কেন আমি লিখি? 21 এটা বলার জন্য আমি লিখছি না যে তোমরা সত্য জান না। আমি তোমাদের লিখছি কারণ তোমরা সত্য জান; আর এও জান যে সত্য থেকে কখনও কোন মিথ্যার উৎপত্তি হতে পারে না।
22 তবে সেই মিথ্যাবাদী কে? সে-ই, যে ব্যক্তি বলে যে যীশুই সেই খ্রীষ্ট নন, সে-ই খ্রীষ্টের শত্রু, যে বলে যীশু সেই খ্রীষ্ট নয়, সেই ব্যক্তি পিতাকে বিশ্বাস করে না, বিশ্বাস করে না তাঁর পুত্র খ্রীষ্টকে। 23 যে পুত্রকে অস্বীকার করে, সে পিতা ঈশ্বরকেও পায় না। কিন্তু যে পুত্রকে গ্রহণ করে, সে পিতা ঈশ্বরকেও পেয়েছে।
24 শুরু থেকে তোমরা যা শুনে আসছ, সেই সব বিষয় অবশ্যই তোমাদের অন্তরে রেখো। শুরু থেকে তোমরা যা শুনেছ তা যদি তোমাদের অন্তরে থাকে তবে তোমরা পিতা ঈশ্বর ও তাঁর পুত্রের সাহচর্য্যে থাকবে। 25 আর ঈশ্বর এটাই আমাদের দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা হল অনন্ত জীবন।
26 যারা তোমাদের ভুল পথে নিয়ে যেতে চায় তাদের বিষয়ে তোমাদের এইসব কথা লিখলাম। 27 খ্রীষ্ট তোমাদের এক বিশেষ বরদান দিয়েছেন এবং তা তোমাদের মধ্যে রয়েছে। তাই তোমাদের অন্য কারোর শিক্ষার দরকার নেই। যে বরদান তোমরা পেয়েছ তা তোমাদের সব বিষয়ে শিক্ষা দেয়। এ বরদান সত্য, এর মধ্যে মিথ্যার লেশমাত্র নেই। তাই এই বরদান যেমন শিক্ষা দিয়েছে, সেইমত তোমরা খ্রীষ্টে থাক।
28 এখন আমার স্নেহের সন্তানরা, খ্রীষ্টেতে থাক। তা করলে খ্রীষ্ট যখন প্রকাশিত হবেন তখন আমাদের আর ভয়ের কিছু থাকবে না। তিনি এলে তাঁর সামনে দাঁড়াতে ভয় বা লজ্জা পেতে হবে না। 29 যদি তোমরা জান যে খ্রীষ্ট ধার্মিক তাহলে তোমরা এও জান যে যারা ধর্মাচরণ কাজ করে তারা ঈশ্বরের সন্তান।
যোহনের প্রচার
(মথি 3:1-12; মার্ক 1:1-8; যোহন 1:19-28)
3 তিবিরিয় কৈসরের রাজত্বের পনের বছরের মাথায়
যিহূদিয়ার রাজ্যপাল ছিলেন পন্তীয় পীলাত।
সেই সময় হেরোদ ছিলেন গালীলের শাসনকর্তা
এবং তাঁর ভাই ফিলিপ ছিলেন যিতুরিয়া ও ত্রাখোনীতিয়ার শাসনকর্তা,
লুষাণিয় ছিলেন অবিলীনীর শাসনকর্তা।
2 হানন ও কায়াফা ছিলেন ইহুদীদের মহাযাজক। সেই সময় প্রান্তরের মধ্যে সখরিয়র পুত্র যোহনের কাছে ঈশ্বরের আদেশ এল। 3 আর তিনি যর্দনের চারপাশে সমস্ত জায়গায় গিয়ে প্রচার করতে লাগলেন যেন লোকে পাপের ক্ষমা লাভের জন্য মন ফেরায় ও বাপ্তিস্ম নেয়। 4 ভাববাদী যিশাইয়র পুস্তকে যেমন লেখা আছে:
“প্রান্তরের মধ্যে একজনের কন্ঠস্বর ডেকে ডেকে বলছে,
‘প্রভুর জন্য পথ প্রস্তুত কর।
তাঁর জন্য চলার পথ সোজা কর।
5 সমস্ত উপত্যকা ভরাট কর,
প্রতিটি পর্বত ও উপপর্বত সমান করতে হবে।
আঁকা-বাঁকা পথ সোজা করতে হবে
এবং এবড়ো-খেবড়ো পথ সমান করতে হবে।
6 তাতে সকল লোকে ঈশ্বরের পরিত্রাণ দেখতে পাবে।’”(A)
7 তখন বাপ্তিস্ম নেবার জন্য অনেক লোক যোহনের কাছে আসতে লাগল। তিনি তাদের বললেন, “হে সাপের বংশধরেরা! ঈশ্বরের কাছ থেকে যে ক্রোধ নেমে আসছে তা থেকে বাঁচার জন্য কে তোমাদের সতর্ক করে দিল? 8 তোমরা যে মন ফিরিয়েছ তার ফল দেখাও। একথা বলতে শুরু করো না, যে ‘আরে অব্রাহাম তো আমাদের পিতৃপুরুষ’ কারণ আমি তোমাদের বলছি এই পাথরগুলো থেকে ঈশ্বর অব্রাহামের জন্য সন্তান উৎপন্ন করতে পারেন। 9 গাছের গোড়াতে কুড়ুল লাগানোই আছে, যে গাছ ভাল ফল দিচ্ছে না তা কেটে আগুনে ফেলে দেওয়া হবে।”
10 তখন লোকরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “তাহলে আমাদের কি করতে হবে?”
11 এর উত্তরে তিনি তাদের বললেন, “যদি কারো দুটো জামা থাকে, তবে যার নেই তাকে যেন তার থেকে একটি জামা দেয়; আর যার খাবার আছে, সেও অন্যের সঙ্গে সেইরকম যেন ভাগ করে নেয়।”
12 কয়েকজন কর আদায়কারীও বাপ্তাইজ[a] হবার জন্য এল। তারা তাঁকে বলল, “গুরু, আমরা কি করব?”
13 তখন তিনি তাদের বললেন, “যতটা কর আদায় করার কথা তার চেয়ে বেশী আদায় কোরো না।”
14 কয়েকজন সৈনিকও তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “আমাদের কি হবে? আমরা কি করব?”
তিনি তাদের বললেন, “কারো কাছ থেকে জোর করে কোন অর্থ নিও না। কারো প্রতি মিথ্যা দোষারোপ করো না। তোমাদের যা বেতন তাতেই সন্তুষ্ট থেকো।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International