Book of Common Prayer
148 প্রভুর প্রশংসা কর!
হে দূতগণ স্বর্গ থেকে প্রভুর প্রশংসা কর!
2 তোমরা সব দূতগণ, প্রভুর প্রশংসা কর!
তাঁর সেনাবাহিনীরা[a] প্রভুর প্রশংসা কর!
3 চন্দ্র ও সূর্য প্রভুর প্রশংসা কর।
আকাশের তারকাগণ এবং আলো তাঁর প্রশংসা কর!
4 স্বর্গের উচ্চতম স্থানে প্রভুর প্রশংসা কর!
হে আকাশের উর্দ্ধের জলরাশি, তাঁর প্রশংসা কর!
5 প্রভুর নামের প্রশংসা কর।
কারণ ঈশ্বর আদেশ দিয়েছিলেন এবং তাই প্রতিটি বস্তু অস্তিত্ব পেয়েছে!
6 চিরদিন অব্যাহত থাকবার জন্য ঈশ্বর এইসব সৃষ্টি করেছেন।
ঈশ্বর তাদের অনন্ত বিধিসমুহ দিয়েছেন।
7 পৃথিবীর সব কিছুই প্রভুর প্রশংসা করে!
মহাসাগরের বড় বড় সামুদ্রিক প্রাণীরা, প্রভুর প্রশংসা কর!
8 আগুন ও শিলাবৃষ্টি, তুষার এবং ধোঁয়া,
এবং ঝোড়ো বাতাস সবই ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন।
9 ঈশ্বর পাহাড় ও পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন,
ফলের বৃক্ষসমুহ ও এরস গাছ সৃষ্টি করেছেন।
10 সমস্ত প্রাণী ও গবাদি পশু এবং সরীসৃপ ও পাখি সৃষ্টি করেছেন।
11 ঈশ্বরই পৃথিবীতে রাজাগণকে এবং জাতিগণকে সৃষ্টি করেছেন।
ঈশ্বরই নেতাদের ও বিচারকদের সৃষ্টি করেছেন।
12 ঈশ্বরই তরুণ তরুণীদের সৃষ্টি করেছেন।
ঈশ্বরই বৃদ্ধ ও যুবকদের সৃষ্টি করেছেন।
13 প্রভুর নামের প্রশংসা কর।
চিরদিনের জন্য তাঁর নামের সম্মান কর!
পৃথিবী এবং স্বর্গে যা কিছু রয়েছে,
তারা সবাই প্রভুর প্রশংসা কর!
14 ঈশ্বর তাঁর মানুষদের শক্তিশালী করবেন।
লোক ঈশ্বরের অনুগামীদের প্রশংসা করবে।
লোকে ইস্রায়েলের প্রশংসা করবে।
ওরা সেই লোক যাদের জন্য ঈশ্বর লড়াই করেন, প্রভুর প্রশংসা কর!
149 প্রভুর প্রশংসা কর!
প্রভু নতুন যা করেছেন তার জন্য একটা নতুন গান গাও!
যেখানে তাঁর অনুগামীরা একসঙ্গে জড় হয়, সেই সমাজে তাঁর প্রশংসা কর।
2 ইস্রায়েলকে তাদের স্রষ্টাকে নিয়ে আনন্দ করতে দাও।
সিয়োনের লোককে তাদের রাজাকে নিয়ে আনন্দ করতে দাও।
3 লোকেরা বীণা ও খঞ্জনী বাজাক
এবং নাচতে নাচতে ঈশ্বরের প্রশংসা করুক!
4 ঈশ্বর তাঁর লোকদের প্রতি প্রসন্ন।
ঈশ্বর তাঁর বিনম্র লোকদের জন্য এক বিস্ময়কর জিনিস করেছেন।
তিনি তাদের রক্ষা করেছেন!
5 হে ঈশ্বর অনুগামীরা, তোমাদের জয়কে উপভোগ কর!
বিছানায় যাওয়ার পরে পর্যন্ত সুখী হও।
6 লোকজনকে চিৎকার করে প্রভুর প্রশংসা করতে দাও
এবং তাদের হাতে তরবারি ধরতে দাও।
7 ওরা ওদের শত্রুদের শাস্তি দিতে যাক।
ওরা ওই সব লোকদের শাস্তি দিতে যাক।
8 ঈশ্বরের লোকরা ওদের রাজাদের এবং বড় বড় নেতাদের
লোহার শিকল দিয়ে শৃঙ্খলিত করবে।
9 ঈশ্বরের নির্দেশ মতই ঈশ্বরের লোকরা ওদের শাস্তি দেবে।
ঈশ্বরের সমস্ত অনুগামীরা, তাঁকে সম্মান জানাও।
প্রভুর প্রশংসা কর!
150 প্রভুর প্রশংসা কর!
ঈশ্বরের মন্দিরে তাঁর প্রশংসা কর!
স্বর্গে তাঁর ক্ষমতার প্রশংসা কর!
2 ঈশ্বর যে সব মহৎ কাজ করেন, তার জন্য তাঁর প্রশংসা কর!
তাঁর সকল মহত্বের জন্য তাঁর প্রশংসা কর!
3 শিঙা ও বাঁশির সাহায্যে তাঁর প্রশংসা কর!
বীণা ও লীরা বাজিয়ে তাঁর প্রশংসা কর!
4 খঞ্জনি বাজিয়ে নাচ করতে করতে তাঁর প্রশংসা কর!
তন্ত্রবাদ্যযন্ত্র ও বাঁশি বাজিয়ে তাঁর প্রশংসা কর!
5 করতালের উচ্চ ধ্বনিতে তাঁর প্রশংসা কর!
কান ফাটানো করতালের শব্দে তাঁর প্রশংসা কর!
6 প্রত্যেকটি জীব তোমরা তাঁর প্রশংসা কর!
প্রভুর প্রশংসা কর!
113 প্রভুর প্রশংসা কর!
প্রভুর দাসরা, তাঁর প্রশংসা কর!
প্রভুর নামের প্রশংসা কর।
2 প্রভুর নাম এখনকার জন্য এবং চিরকালের জন্য ধন্য হোক্।
3 যেখানে পূর্বদিকে সূর্যোদয় হয়
সেখান থেকে শুরু করে পশ্চিমে যেখানে সূর্য অস্ত যায় সেখান পর্যন্ত প্রভুর নামের প্রশংসা হোক্।
4 প্রভু, সমস্ত জাতিগুলির উর্দ্ধে।
তাঁর মহিমা আকাশ পর্যন্ত যায়।
5 কোন ব্যক্তিই আমাদের প্রভু ঈশ্বরের মত নয়।
ঈশ্বর স্বর্গের উঁচু আসনে বসেন।
6 ঈশ্বর আমাদের থেকে এত উঁচুতে আছেন যে আকাশ ও পৃথিবীকে দেখতে হলে
তাঁকে নীচের দিকে তাকাতে হয়।
7 ঈশ্বর দরিদ্র লোকদের ধূলো থেকে ওপরে তোলেন।
আস্তাকুঁড় থেকে ঈশ্বর ভিখারীদের তুলে আনেন।
8 এবং সেই সব লোকদের ঈশ্বর খুব গুরুত্বপূর্ণ করে তোলেন।
ঈশ্বর তাদের লোকদের ওপর নেতৃত্ব করবার জন্য উচ্চ স্থানগুলি দেন।
9 একজন নারীর কোন সন্তান না থাকতে পারে।
কিন্তু ঈশ্বর তাকে সন্তান দেন ও সুখী করেন।
প্রভুর প্রশংসা কর!
114 ইস্রায়েল মিশর ত্যাগ করলো।
যাকোব সেই বিদেশ ত্যাগ করলো।
2 যিহূদা ঈশ্বরের বিশেষ মানুষ হলো।
ইস্রায়েল তাঁর রাজত্ব হলো।
3 এই দেখে লোহিতসাগর দৌড়ে পালিয়েছিলো।
যর্দন নদীও ঘুরে দৌড় দিয়েছিলো।
4 পর্বতগুলো বুনো ছাগলের মত নেচে উঠেছিলো।
পাহাড়গুলো মেষের মত নেচে উঠেছিলো।
5 লোহিতসাগর কেন তুমি ছুটে পালালে?
যর্দন নদী কেন তুমি ঘুরে দৌড় দিলে?
6 পর্বতমালা কেন তোমরা বুনো ছাগলের মত নাচলে?
পাহাড় সকল, কেন তোমরা মেষশাবকের মত নাচলে?
7 যাকোবের প্রভু, ঈশ্বরের সামনে, পৃথিবী কেঁপে গিয়েছিলো।
8 ঈশ্বর হলেন এমন একজন, যিনি পাথর থেকে জলকে প্রবাহিত করান।
ঈশ্বর শক্ত পাথর থেকে একটি জলধারা প্রবাহিত করেছিলেন।
118 প্রভুকে সম্মান কর, কারণ তিনিই ঈশ্বর।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চির প্রবহমান থাকে!
2 ইস্রায়েল এই কথা বল,
“তাঁর প্রকৃত প্রেম চির প্রবহমান থাকে!”
3 যাজকরা তোমরা বল,
“তাঁর প্রকৃত প্রেম চির প্রবহমান থাকে!”
4 তোমরা লোকেরা যারা প্রভুকে উপাসনা কর,
তোমরা বলো, “তাঁর প্রকৃত প্রেম চির প্রবহমান থাকে!”
5 আমি সমস্যায় পড়েছিলাম তাই সাহায্যের জন্য আমি প্রভুকে ডেকেছিলাম।
প্রভু আমায় উত্তর দিয়েছেন এবং আমায় মুক্ত করেছেন।
6 আমার সঙ্গে প্রভু আছেন, তাই আমি ভয় পাবো না।
লোকেরা আমাকে আহত করার জন্য কিছু করতে পারে না।
7 প্রভুই আমার সহায়।
আমি আমার শত্রুদের পরাজিত দেখবো।
8 মানুষকে বিশ্বাস করার থেকে
প্রভুকে বিশ্বাস করা অনেক ভালো।
9 তোমাদের নেতাদের বিশ্বাস করা থেকে
প্রভুকে বিশ্বাস করা অনেক ভালো।
10 বহু শত্রু আমাকে ঘিরে ধরেছিল।
কিন্তু প্রভুর শক্তির দ্বারা আমি আমার শত্রুদের পরাজিত করেছি।
11 আমার শত্রুরা ক্রমাগত আমায় ঘিরেই যাচ্ছিল।
প্রভুর শক্তির সাহায্যে আমি ওদের পরাজিত করেছি।
12 ঝাঁক ঝাঁক মৌমাছির মত শত্রুরা আমায় ঘিরে ধরেছিলো।
কিন্তু দ্রুত জ্বলনশীল ঝোপের মত ওরা শেষ হয়ে গিয়েছিলো।
প্রভুর শক্তি দিয়ে আমি ওদের পরাজিত করেছি।
13 আমার শত্রুরা আমায় আক্রমণ করেছিলো এবং আমাকে প্রায় শেষ করে দিয়েছিলো।
কিন্তু প্রভু আমায় সাহায্য করেছিলেন।
14 প্রভুই আমার শক্তি এবং আমার জয়গান!
প্রভু আমায় রক্ষা করেন!
15 ধার্ম্মিক লোকেদের বাড়ীতে তুমি এই বিজয় উৎসব শুনতে পাবে।
প্রভু আবার তাঁর মহান শক্তি প্রদর্শন করলেন।
16 প্রভুর বাহুগুলি জয়ে উত্তোলিত।
তিনি আবার একবার তাঁর মহান শক্তি দেখালেন।
17 আমি মরবো না, আমি বেঁচে থাকবো
এবং প্রভু কি করেছেন তা আমি বলবো।
18 প্রভু আমায় শাস্তি দিয়েছেন,
কিন্তু তিনি আমায় মরতে দেন নি।
19 ন্যায়ের সিংহদ্বারগুলি আমার জন্য খুলে যাও,
আমি প্রভুর উপাসনা করতে ভেতরে আসবো।
20 ওইগুলো প্রভুর দ্বার।
একমাত্র ধার্ম্মিক লোকরাই ওর মধ্যে দিয়ে যেতে পারে।
21 হে প্রভু, আমার প্রার্থনার উত্তর দেওয়ার জন্য
এবং আমাকে রক্ষা করবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ জানাই।
22 যে পাথরটিকে স্থপতিরা চায় নি, সেটাই হয়ে গেল মুখ্য প্রস্তর।
23 প্রভু এটি করেছেন
এবং এটি দেখতে অদ্ভুত লাগছে!
24 আজকের দিন সেই দিন যা প্রভু সৃষ্টি করেছেন।
আজ আমাদের আনন্দ করতে দিন, সুখী হতে দিন।
25 লোকেরা বললো, “প্রভুর প্রশংসা কর!
প্রভু আমাদের রক্ষা করেছেন!
26 সেই লোকটিকে স্বাগত জানাও, যে প্রভুর নাম নিয়ে আসছে।”
যাজকরা উত্তর দিয়েছিলো, “আমরা তোমাকে প্রভুর গৃহে স্বাগত জানাই!
27 প্রভুই ঈশ্বর এবং তিনি আমাদের গ্রহণ করেন।
বলির জন্য একটা মেষ বাঁধ এবং সেটাকে বেদীর কোণে নিয়ে চল।”
28 প্রভু, আপনিই আমার ঈশ্বর, আপনাকে ধন্যবাদ দিই।
আমি আপনার প্রশংসা করি!
29 প্রভুর প্রশংসা কর! কারণ তিনি মঙ্গলময়।
তাঁর প্রকৃত প্রেম চিরন্তন।
নিস্তারপর্ব
12 মোশি ও হারোণ মিশরে থাকার সময় প্রভু তাদের বললেন, 2 “এই মাস হবে তোমাদের জন্য বছরের প্রথম মাস। 3 এই আদেশ সমস্ত ইস্রায়েলবাসীর জন্য: এই মাসের দশম দিনে প্রত্যেকে তার বাড়ীর জন্য একটি করে পশু জোগাড় করবে। পশুটি একটি মেষ অথবা একটি ছাগলও হতে পারে। 4 যদি তার বাড়ীতে একটি গোটা পশুর মাংস খাওয়ার মতো যথেষ্ট লোক না থাকে তবে সে তার কিছু প্রতিবেশীকে মাংস ভাগ করে খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করবে। প্রত্যেকের খাওয়ার জন্য যথেষ্ট মাংস থাকবে। 5 পশুটিকে হতে হবে একটি এক বছরের পুংশাবক এবং সম্পূর্ণরূপে স্বাস্থ্যবান। 6 মাসের চতুর্দশ দিন পর্যন্ত এই পশুটির ওপর তোমাদের নজর রাখতে হবে। সেই দিন ইস্রায়েলীয় মণ্ডলীর সমস্ত লোকরা এই পশুটিকে গোধুলি বেলায় হত্যা করবে। 7 তোমরা এই প্রাণীর রক্ত সংগ্রহ করে, যে বাড়ীতে লোকরা ভোজ খাবে সেই বাড়ীর দরজার কাঠামোর ওপরে ও পাশে এই রক্ত লাগিয়ে দেবে।
8 “এই দিন রাতে তোমরা মেষটিকে পুড়িয়ে তার মাংস খাবে। তোমরা তেঁতো শাক ও খামিরবিহীন রুটিও খাবে। 9 মেষটিকে কাঁচা অথবা জলে সিদ্ধ করা অবস্থায় তোমাদের খাওয়া উচিৎ হবে না, কিন্তু আগুনের তাপে সেঁকবে। মেষশাবকটির মাথা, পা এবং ভিতরের অংশ সব কিছুই অক্ষুন্ন থাকবে। 10 তোমরা সব মাংস রাতের মধ্যেই খেয়ে শেষ করবে। যদি পরদিন সকালে কিছু অবশিষ্ট থাকে তবে তা পুড়িয়ে ফেলবে।
11 “যখন তোমরা আহার করবে তখন তোমরা যাত্রার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে থাকার পোশাকে থাকবে। তোমাদের পায়ে জুতো থাকবে, হাতে ছড়ি থাকবে এবং তোমরা তাড়াহুড়ো করে খাবে। কারণ এ হল প্রভুর নিস্তারপর্ব।
12 “আমি মিশরীয়দের প্রথমজাত শিশুগুলিকে এবং তাদের সমস্ত পশুর প্রথমজাত শাবকগুলিকে হত্যা করব। এইভাবে, আমি মিশরের সমস্ত দেবতাদের ওপর রায় দেব যাতে তারা জানতে পারে যে আমিই প্রভু। 13 কিন্তু তোমাদের দরজায় লাগানো রক্ত একটি বিশেষ চিহ্নের কাজ করবে। যখন আমি ঐ রক্ত দেখব তখন আমি তোমাদের বাড়ীগুলোর ওপর দিয়ে চলে যাব। আমি শুধু মিশরের লোকদের ক্ষতি করব। এইসব মারাত্মক রোগে তোমাদের কোন ক্ষতি হবে না।
14 “তাই তোমরা সবসময় মনে রাখবে যে আজ তোমাদের একটি বিশেষ ছুটির দিন। তোমাদের উত্তরপুরুষরা এই ছুটির দিনের মাধ্যমে প্রভুকে সম্মান জানাবে।
ঈশ্বরের আপন ক্ষমতা তাঁর লোকদের রক্ষা করবে
9 প্রভুর বাহু (শক্তি) জেগে ওঠো। জেগে ওঠো!
শক্ত হও!
বহুদিন আগেকার মত, প্রাচীন কালের মতো তোমার শক্তি ব্যবহার কর।
তুমি হচ্ছো সেই শক্তি যে রহবকে পরাজিত করেছিল।
তুমি সেই প্রকাণ্ড জলচরকে পরাস্ত করেছিলে।
10 সমুদ্র শুকিয়ে যাবার কারণ হয়েছিলে তুমি!
তুমি গভীর জলাশয়ে জল শুকিয়ে দিয়েছিলে!
সমুদ্রের অতলে পথ গড়ে উঠেছিল তোমার জন্যই!
তোমার লোকরা নিরাপদে সমুদ্র পারাপার করেছিল।
11 প্রভু নিজের লোকদের রক্ষা করবেন,
তারা আনন্দের সাথে সিয়োনে ফিরে যাবে।
তারা খুব, খুব সুখী হবে।
তাদের সুখ হবে চিরকালীন রাজমুকুটের মত।
তারা আনন্দে গান গাইতে থাকবে।
সব দুঃখ চলে যাবে অনেক দূরে।
যীশুর পৃথিবীতে আগমন
1 আদিতে বাক্য[a] ছিলেন, বাক্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন আর সেই বাক্যই ছিলেন ঈশ্বর। 2 সেই বাক্য আদিতে ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন। 3 তাঁর মাধ্যমেই সব কিছুর সৃষ্টি হয়েছিল এবং এর মধ্যে তাঁকে ছাড়া কোন কিছুরই সৃষ্টি হয় নি। 4 তাঁর মধ্যে জীবন ছিল; আর সেই জীবন জগতের মানুষের কাছে আলো নিয়ে এল। 5 সেই আলো অন্ধকারের মাঝে উজ্জ্বল হয়ে উঠল; আর অন্ধকার সেই আলোকে জয় করতে পারে নি।
6 একজন লোক এলেন তাঁর নাম যোহন; ঈশ্বর তাঁকে পাঠিয়েছিলেন। 7 তিনি সেই আলোর বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য সাক্ষী রূপে এলেন যাতে তাঁর মাধ্যমে সকল লোক সেই আলোর কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারে। 8 যোহন নিজে সেই আলো ছিলেন না; কিন্তু তিনি এসেছিলেন যাতে লোকদের কাছে সেই আলোর বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে পারেন। 9 প্রকৃত যে আলো, তা সকল মানুষকে আলোকিত করতে পৃথিবীতে এসেছিলেন।
10 সেই বাক্য জগতে ছিল এবং এই জগত তাঁর দ্বারাই সৃষ্ট হয়েছিল; কিন্তু জগত তাঁকে চিনতে পারে নি। 11 যে জগত তাঁর নিজস্ব সেখানে তিনি এলেন, কিন্তু তাঁর নিজের লোকরাই তাঁকে গ্রহণ করল না। 12 কিন্তু কিছু লোক তাঁকে গ্রহণ করল এবং তাঁকে বিশ্বাস করল। যারা বিশ্বাস করল তাদের সকলকে তিনি ঈশ্বরের সন্তান হবার অধিকার দান করলেন। 13 ঈশ্বরের এই সন্তানরা প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারে কোন শিশুর মতো জন্ম গ্রহণ করে নি। মা-বাবার দৈহিক কামনা-বাসনা অনুসারেও নয়, ঈশ্বরের কাছ থেকেই তাদের এই জন্ম।
14 বাক্য মানুষের রূপ ধারণ করলেন এবং আমাদের মধ্যে বসবাস করতে লাগলেন। পিতা ঈশ্বরের একমাত্র পুত্র হিসাবে তাঁর যে মহিমা, সেই মহিমা আমরা দেখেছি। সেই বাক্য অনুগ্রহ ও সত্যে পরিপূর্ণ ছিলেন। 15 যোহন তাঁর সম্পর্কে মানুষকে বললেন, “ইনিই তিনি যাঁর সম্বন্ধে আমি বলেছি। ‘যিনি আমার পরে আসছেন, তিনি আমার থেকে মহান, কারণ তিনি আমার অনেক আগে থেকেই আছেন।’”
16 সেই বাক্য অনুগ্রহ ও সত্যে পূর্ণ ছিলেন। আমরা সকলে তাঁর থেকে অনুগ্রহের ওপর অনুগ্রহ পেয়েছি। 17 কারণ মোশির মাধ্যমে বিধি-ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু অনুগ্রহ ও সত্যের পথ যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে এসেছে। 18 ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি; কিন্তু একমাত্র পুত্র, যিনি পিতার কাছে থাকেন, তিনিই তাঁকে প্রকাশ করেছেন।
ইম্মায়ুর পথে
(মার্ক 16:12-13)
13 ঐ দিনই দুজন অনুগামী জেরুশালেম থেকে সাত মাইল দূরে ইম্মায়ু নামে একটি গ্রামে যাচ্ছিলেন। 14 এই যে সব ঘটনাগুলি ঘটে গেল, যেতে যেতে তাঁরা সে বিষয়েই পরস্পর আলোচনা করছিলেন। 15 তাঁরা যখন এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন, এমন সময় যীশু নিজে এসে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে চলতে লাগলেন। 16 (ঘটনাটি এমনভাবেই ঘটল যাতে তাঁরা যীশুকে চিনতে না পারেন।) 17 যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা যেতে যেতে পরস্পর কি নিয়ে আলোচনা করছ?”
তাঁরা থমকে দাঁড়ালেন, তাঁদের খুবই বিষন্ন দেখাচ্ছিল। 18 তাঁদের মধ্যে ক্লিয়পা নামে একজন তাঁকে বললেন, “জেরুশালেমের অধিবাসীদের মধ্যে আমাদের মনে হয় আপনিই একমাত্র লোক, যিনি জানেন না গত কদিনে সেখানে কি কাণ্ডটাই না ঘটে গেছে।”
19 যীশু তাঁদের বললেন, “কি ঘটেছে, তোমরা কিসের কথা বলছ?”
তাঁরা যীশুকে বললেন, “নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে বলছি। তিনি ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি তাঁর কথা ও কাজের শক্তিতে ঈশ্বর ও সমস্ত মানুষের চোখে নিজেকে এক মহান ভাববাদীরূপে প্রমাণ করেছেন। 20 কিন্তু আমাদের প্রধান যাজকরা ও নেতারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেবার জন্য ধরিয়ে দিল, তারা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে মারল। 21 আমরা আশা করেছিলাম যে তিনিই সেই যিনি ইস্রায়েলকে মুক্ত করবেন।
“কেবল তাই নয়, আজ তিন দিন হল এসব ঘটে গেছে। 22 আবার আমাদের মধ্যে কয়েকজন স্ত্রীলোক আমাদের অবাক করে দিলেন। তাঁরা আজ খুব ভোরে সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; 23 কিন্তু সেখানে তাঁরা যীশুর দেহ দেখতে পান নি। সেখান থেকে ফিরে এসে তাঁরা আমাদের বললেন যে তাঁরা স্বর্গদূতদের দর্শন পেয়েছেন, আর সেই স্বর্গদূতরা তাঁদের বলেছেন যে যীশু জীবিত। 24 এরপর আমাদের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজন সেই সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; আর তাঁরা দেখলেন স্ত্রীলোকরা যা বলেছেন তা সত্য। তাঁরা যীশুকে সেখানে দেখতে পান নি।”
25 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা সত্যি কিছু বোঝ না, তোমাদের মন বড়ই অসাড়, তাই ভাববাদীরা যা কিছু বলে গেছেন তোমরা তা বিশ্বাস করতে পার না। 26 খ্রীষ্টের মহিমায় প্রবেশ লাভের পূর্বে কি তাঁর এইসব কষ্টভোগ করার একান্ত প্রয়োজন ছিল না?” 27 আর তিনি মোশির পুস্তক থেকে শুরু করে ভাববাদীদের পুস্তকে তাঁর বিষয়ে যা যা লেখা আছে, শাস্ত্রের সে সব কথা তাঁদের বুঝিয়ে দিলেন।
28 তাঁরা যে গ্রামে যাচ্ছিলেন তার কাছাকাছি এলে পর যীশু আরো দূরে যাবার ভাব দেখালেন। 29 তখন তাঁরা যীশুকে খুব অনুরোধ করে বললেন, “দেখুন, বেলা পড়ে গেছে, এখন সন্ধ্যা হয়ে এল, আপনি আমাদের এখানে থেকে যান।” তাই তিনি তাঁদের সঙ্গে থাকবার জন্য ভেতরে গেলেন।
30 তিনি যখন তাঁদের সঙ্গে খেতে বসলেন, তখন রুটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। পরে সেই রুটি টুকরো টুকরো করে তাঁদের দিলেন। 31 সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চোখ খুলে গেল, তাঁরা যীশুকে চিনতে পারলেন, আর তিনি সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। 32 তখন তাঁরা পরস্পর বলাবলি করলেন, “তিনি যখন রাস্তায় আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন ও শাস্ত্র থেকে আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন আমাদের অন্তর কি আবেগে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে নি?”
33 তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে উঠে জেরুশালেমে গেলেন। সেখানে তাঁরা সেই এগারোজন প্রেরিত ও তাঁদের সঙ্গে আরো অনেককে দেখতে পেলেন। 34 প্রেরিত ও অন্যান্য যাঁরা সেখানে ছিলেন তাঁরা বললেন, “প্রভু, সত্যি জীবিত হয়ে উঠেছেন। তিনি শিমোনকে দেখা দিয়েছেন।”
35 তখন সেই দুজন অনুগামীও রাস্তায় যা ঘটেছিল তা তাঁদের কাছে ব্যক্ত করলেন। আর যীশু যখন রুটি টুকরো টুকরো করছিলেন তখন কিভাবে তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন তাও জানালেন।
যীশু শিষ্যদের দেখা দিলেন
(মথি 28:16-20; মার্ক 16:14-18; লূক 24:36-49)
19 দিনটা ছিল রবিবার, সেদিন সন্ধ্যায় শিষ্যরা একটি ঘরে জড়ো হলেন। ইহুদীদের ভয়ে তাঁরা ঘরের দরজায় চাবি দিয়ে দিলেন। এমন সময় যীশু এসে তাঁদের মাঝে দাঁড়ালেন, আর বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক্।” 20 একথা বলার পর তিনি তাঁদের তাঁর হাত ও পাঁজরের পাশটা দেখালেন। শিষ্যেরা প্রভুকে দেখতে পেয়ে খুবই আনন্দিত হলেন।
21 এরপর যীশু আবার তাঁদের বললেন, “তোমাদের শান্তি হোক্! পিতা যেমন আমাকে পাঠিয়েছেন, আমিও তেমনি তোমাদের পাঠাচ্ছি।” 22 এই বলে তিনি তাঁদের ওপর ফুঁ দিলেন, আর বললেন, “তোমরা পবিত্র আত্মা গ্রহণ কর। 23 যদি তোমরা কোন লোকের পাপ ক্ষমা কর, তবে তাদের পাপ ক্ষমা পাবে, আর যদি কারো পাপ ক্ষমা না কর তার পাপের ক্ষমা হবে না।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International