Book of Common Prayer
95 এস, আমরা প্রভুর প্রশংসা করি!
যে শিলা আমাদের রক্ষা করেন তাঁর উদ্দেশ্যে আমরা উচ্চস্বরে প্রশংসাধ্বনি দিই।
2 আমরা প্রভুর উদ্দেশ্যে ধন্যবাদের গান গাই।
তাঁর প্রশংসায় আমরা আনন্দগান গাই।
3 কেন? কারণ প্রভুই মহান ঈশ্বর!
তিনিই সেই মহান রাজা যিনি সকল “দেবতাদের” শাসন করছেন।
4 গভীরতম গুহা, উচ্চতম পর্বত, সবই প্রভুর।
5 সমুদ্রও তাঁরই—তিনিই তা সৃষ্টি করেছেন।
ঈশ্বর তাঁর নিজের হাতে এই শুকনো জমি সৃষ্টি করেছেন।
6 এস, আমরা অবনত হয়ে তাঁর উপাসনা করি!
যে প্রভু আমাদের সৃষ্টি করেছেন তাঁর প্রশংসা করি!
7 কেন? কারণ যদি আমরা তাঁর কন্ঠ শুনি
তাহলে তিনি আমাদের ঈশ্বর হবেন
এবং আমরা হব সেই লোকেরা যাদের তিনি খাদ্য জোগান,
আমরা হব সেই মেষ যাদের তিনি স্বহস্তে নেতৃত্ব দেন।
8 ঈশ্বর বলেন, “মরীবাতে তোমরা যেমন অবাধ্য হয়েছিলে,
মঃসার মরুপ্রান্তরে যেমন হয়েছিল, তেমন হয়ো না।
9 তোমাদের পূর্বপুরুষরা আমায় পরীক্ষা করেছে।
ওরা আমাকে পরীক্ষা করেছিলো কিন্তু এই সময় ওরা দেখেছিলো আমি কি করতে পারি!
10 40 বছর ধরে আমি ওদের প্রতি ধৈর্য্য ধারণ করেছি।
আমি জানি যে ওরা বিশ্বাসী নয়।
ওরা আমার শিক্ষামালা অনুসরণ করতে অগ্রাহ্য করেছে।
11 তাই ওদের প্রতি আমি ক্রুদ্ধ হয়েছিলাম এবং আমি কথা দিয়েছিলাম যে,
‘ওরা আমার বিশ্রামের স্থানে কখনো প্রবেশ করতে পারবে না।’”
পরিচালকের প্রতি: “ভোরের হরিণ” গানটির সুরে বসানো দায়ূদের একটি গীত।
22 হে আমার ঈশ্বর, হে আমার ঈশ্বর!
কেন আপনি আমায় ছেড়ে চলে গেছেন?
আপনি এত দূরে যে, আমাকে রক্ষা করতে পারবেন না!
আপনি এত দূরে যে, আমার সাহায্যের জন্য চিৎকারও শুনতে পাবেন না!
2 ঈশ্বর আমার, সারাদিন ধরে আমি আপনাকে ডেকেছি।
কিন্তু আপনি সাড়া দেন নি।
সারারাত ধরে আমি আপনাকে ডেকেছি।
3 ঈশ্বর, আপনি হলেন সেই পবিত্র একজন।
আপনি রাজার মত থেকে যান। ইস্রায়েলের প্রশংসাই আপনার সিংহাসন।
4 আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার ওপর বিশ্বাস করেছিলেন।
হ্যাঁ, হে ঈশ্বর তাঁরা আপনার ওপর বিশ্বাস করেছিলেন এবং আপনি তাঁদের রক্ষা করেছেন।
5 ঈশ্বর, আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার কাছে সাহায্যের জন্য কেঁদে পড়েছিলেন
এবং তাঁরা তাঁদের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।
তাঁরা আপনার ওপর আস্থা রেখেছিলেন এবং তাই তাঁরা আশাহত হন নি!
6 সুতরাং, আমি কি কীট, মানুষ নই?
লোকে আমার সম্পর্কে লজ্জা বোধ করে এবং আমাকে ঘৃণা করে।
7 প্রত্যেকে যারা আমাকে দেখে, আমায় নিয়ে ঠাট্টা করে।
তারা তাদের মাথা নাড়ায় এবং আমায় জিভ ভেঙ্গায়।
8 তারা আমায় বলে: “প্রভুর কাছে সাহায্য চাও।
হয়তো বা তিনি তোমার পরিত্রাণ করবেন।
তিনি যদি সত্যিই তোমায় পছন্দ করেন, নিশ্চয়ই তিনি তোমায় উদ্ধার করবেন!”
9 হে ঈশ্বর, এটাই প্রকৃত সত্য যে, একমাত্র আপনার ওপরেই আমি নির্ভর করি।
এমন কি আমি যখন আমার মায়ের বুকের দুধ খেতাম আপনি আমাকে আশ্বাস এবং স্বস্তি দিতেন।
10 যে দিন আমি জন্মেছি, সে দিন থেকেই আপনি আমার ঈশ্বর।
মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার পরেই আমি আপনার যত্নে লালিত হয়েছি।
11 তাই, হে আমার ঈশ্বর, আমাকে ছেড়ে যাবেন না!
কারণ সংকট নিকটবর্ত্তী।
আমাকে সাহায্য করার মত কেউই নেই।
12 আমার চারপাশে লোকজন রয়েছে, শক্তিশালী বলদের মত
তারা আমার চারদিকে ঘিরে রয়েছে।
13 তাদের মুখগুলো একটা গর্জনকারী সিংহের মত হাঁ করে খোলা,
যেন তার শিকারের দিকে সবেগে ছুটে যাচ্ছে।
14 মাটিতে ফেলে দেওয়া জলের মত আমার শক্তি চলে গেছে।
আমার অস্থিগুলো আলাদা হয়ে গেছে।
আমি আমার সাহস হারিয়ে ফেলেছি!
15 আমার শক্তি[a] ভাঙ্গা মৃত্ পাত্রের মতই শুকিয়ে গেছে।
আমার জিভ তালুতে আটকে যাচ্ছে।
আপনি আমাকে মৃত্যুর ধূলায় পৌঁছে দিয়েছেন।
16 আমার চারপাশে “কুকুর” ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সেই সব মন্দ লোকেদের দল আমাকে ফাঁদে ফেলেছে।
সিংহের মত তারা আমার হাত ও পা বিদ্ধ করে দিয়েছে।
17 আমি আমার হাড়গুলো পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি।
লোকজন আমার দিকে চেয়ে রয়েছে!
তারা ক্রুর দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে!
18 ঐ লোকগুলো ওদের মধ্যে আমার কাপড়গুলো ভাগাভাগি করে নিচ্ছে।
তারা আমার কাপড়ের জন্য ঘুঁটি চালছে।
19 প্রভু, আমাকে ছেড়ে যাবেন না!
আপনিই আমার শক্তি।
শীঘ্রই আমাকে সাহায্য করুন!
20 প্রভু, শত্রুর তরবারি হতে আমায় রক্ষা করুন।
ওই সব কুকুরদের হাত থেকে আমার মূল্যবান জীবন রক্ষা করুন।
21 আমাকে সিংহের মুখ থেকে রক্ষা করুন।
বলদের শিং এর আঘাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
22 প্রভু, আপনার সম্পর্কে আমি আমার ভাইদের বলবো।
মহাসমাজের সামনে আমি আপনার প্রশংসা করব।
23 তোমরা যারা প্রভুর উপাসনা কর, তারা প্রভুর প্রশংসা কর!
হে ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষগণ প্রভুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর!
হে ইস্রায়েলের মানুষ, প্রভুকে ভয় ও শ্রদ্ধা কর।
24 কেন? কারণ প্রভু দরিদ্র লোকদের তাদের সংকটে সাহায্য করেন।
প্রভু তাদের জন্য লজ্জিত নন।
যদি মানুষ তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে
তিনি তাদের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকেন না।
25 প্রভু, মহাসমাজে আমার প্রশংসা আপনার কাছ থেকেই আসে।
এইসব উপাসনাকারী ভক্তদের সামনে, আমার মানত করা বলি আমি আপনাকে উৎসর্গ করবো।
26 দরিদ্র লোকরা খেয়ে তৃপ্ত হবে।
তোমরা যারা প্রভুকে খুঁজছ, তারা তাঁর প্রশংসা কর!
তোমাদের অন্তঃকরণ চিরজীবি হউক!
27 তোমরা, সুদূর দেশগুলির জনগণ, প্রভুকে মনে রেখো
এবং তাঁর কাছে ফিরে এস!
যে সব মানুষ বিদেশে থাকে তারাও যেন প্রভুরই উপাসনা করে।
28 কেন? কারণ প্রভুই রাজা।
তিনি সব জাতিকে শাসন করেন।
29 বলিষ্ঠ এবং সুদেহী লোকেরা আহারান্তে ঈশ্বরের কাছে প্রণিপাত করবে।
বস্তুতঃ সকলে যারা মারা যাবে
এবং যারা ইতিমধ্যেই মারা গেছে
তারা সকলেই ঈশ্বরের কাছে অবনত হবে!
30 এবং ভবিষ্যতে আমাদের উত্তরপুরুষরা প্রভুর সেবা করবে।
লোকে চিরদিন তাঁর কথা বলবে।
31 প্রত্যেকটি প্রজন্ম তাদের শিশুদের কাছে
ঈশ্বর যে ভাল জিনিসগুলি করেছেন সে সম্পর্কে বলবে।
দায়ূদের প্রশংসা গীতের অন্যতম।
141 প্রভু, সাহায্যের জন্য আমি আপনাকে ডাকছি।
যখন আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি তখন আমার প্রার্থনা শুনুন।
শীঘ্রই আমাকে সাহায্য করুন!
2 প্রভু আমার প্রার্থনা গ্রহণ করুন; এটা যেন জ্বলন্ত ধূপের সুগন্ধির মত হয়।
এটা যেন সান্ধ্যকালীন উৎসর্গের মত হয়।
3 প্রভু, আমি যা বলি সে সম্বন্ধে যেন সাবধান হই;
আমি যেন কোন মন্দ কথা না বলি।
4 মন্দ কাজ করার আকাঙ্খা আমার মধ্যে থাকতে দেবেন না।
মন্দ লোকরা যা করে আনন্দ পায়
আমাকে তার সামিল হতে দেবেন না।
5 একজন সৎ লোক আমার ভুল সংশোধন করিয়ে দিতে পারে।
সেটা তারই দয়া।
আপনার অনুগামীরা আমার সমালোচনা করতে পারে।
সেটা ওদের পক্ষে ভালো কাজ হবে; তাও আমি মেনে নেবো।
কিন্তু মন্দ লোকরা যে সব মন্দ কাজ করে তার বিরুদ্ধে আমি সর্বদাই প্রার্থনা করবো।
6 ওদের শাসকদের শাস্তি পেতে দিন।
তখন লোকে জানতে পারবে আমি সত্য বলেছিলাম।
7 লোকে মাটি খোঁড়ে, জমি চাষ করে এবং সার ছড়িয়ে দেয়।
একই রকমভাবে ওদের কবরের চারদিকে আমাদের হাড় ছড়ানো থাকবে।
8 হে আমার প্রভু, আমি সাহায্যের জন্য আপনার দিকে চেয়ে থাকি।
আমি আপনাকে বিশ্বাস করি। আমাকে মরে যেতে দেবেন না।
9 মন্দ লোকরা আমার জন্য ফাঁদ পেতেছে।
আমাকে ওদের ফাঁদে পড়তে দেবেন না।
ওরা যেন ওদের ফাঁদে আমার ধরতে না পারে।
10 দুষ্ট লোকরা নিজেরাই যেন নিজেদের ফাঁদে পড়ে।
এবং আমি যেন অনাহত ভাবে চলে যেতে পারি।
দায়ূদের প্রশংসা গীতের অন্যতম।
143 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন।
এবং তারপর আমার প্রার্থনার উত্তর দিন।
আমাকে দেখান যে সত্যিই আপনি কত মঙ্গলকর ও বিশ্বস্ত।
2 আমি আপনার দাস, আমাকে বিচার করবেন না।
কারণ কোন জীবিত ব্যক্তি আপনার সামনে কখনই নির্দোষ বলে বিবেচিত হতে পারে না।
সারা জীবন ধরে আমি কি কখনও নিষ্পাপ বলে বিবেচিত হব।
3 কিন্তু শত্রুরা আমায় তাড়া করেছে।
তারা আমার জীবনকে ভেঙে গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।
দীর্ঘদিন আগে মরে যাওয়া লোকের মত
ওরা আমাকে অন্ধকার কবরে ঠেলে দিচ্ছে।
4 আমি ত্যাগ করতে প্রস্তুত।
আমি আমার সাহস হারিয়ে ফেলেছি।
5 কিন্তু দীর্ঘকাল আগে কি ঘটেছিলো আমার তা মনে আছে।
বহু বিষয়, যেগুলো আপনি করেছিলেন তার সম্বন্ধে আমি ভাবি।
আপনার বিপুল ক্ষমতা দিয়ে আপনি যা করেছিলেন সে সম্পর্কে আমি বলে থাকি।
6 প্রভু, আমার দু হাত তুলে আপনার কাছে প্রার্থনা করি,
যেমন করে শুকনো জমি বৃষ্টির প্রতীক্ষা করে তেমন করে আমি আপনার সাহায্যের প্রতীক্ষা করি।
7 শীঘ্রই আমাকে উত্তর দিন প্রভু।
আমি সাহস হারিয়েছি।
আমার থেকে বিমুখ হবেন না।
কবরে শুয়ে থাকা মৃত লোকের মত আমাকে মৃত হতে দেবেন না।
8 প্রভু আজকের সকালে আমাকে আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন।
আমি আপনাতে বিশ্বাস রাখি।
আমার যা করণীয় তা আমায় দেখান।
আমি আমার জীবন আপনার হাতে সমর্পণ করছি!
9 প্রভু আমি নিরাপত্তার জন্য আপনার কাছে এসেছি।
শত্রুদের থেকে আমায় রক্ষা করুন।
10 আমাকে দিয়ে আপনি কি করাতে চান তা আমায় দেখান।
আপনি আমার ঈশ্বর।
আপনার মহৎ উদ্দীপনা দিয়ে
আমায় সঠিক পথে এগিয়ে দিন।
11 প্রভু আমাকে বাঁচতে দিন,
তাহলে লোকে আপনার নামের প্রশংসা করবে।
আপনি যে প্রকৃতই মঙ্গলকর তা আমায় দেখান
এবং শত্রুদের থেকে আমায় রক্ষা করুন।
12 হে প্রভু, আপনার প্রকৃত প্রেম প্রদর্শন করুন
এবং যারা আমায় মেরে ফেলতে চাইছে সেই শত্রুদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
তাদের পরাজিত করুন
এবং তাদের ধ্বংস করুন।
শিলাবৃষ্টি
13 এরপর প্রভু, ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “সকালে উঠে ফরৌণের কাছে গিয়ে বলবে, প্রভু ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমার লোকদের আমার উপাসনা করতে যেতে দাও। 14 যদি তুমি তা না কর, তবে তোমাকে, তোমার সমস্ত রাজকর্মচারীদের এবং লোকদের সমস্ত রকমের দুর্ভোগ ভুগতে হবে। তখন তুমি জানবে যে এই পৃথিবীতে আমার মতো ঈশ্বর আর নেই, 15 আমি আমার ক্ষমতা দিয়ে তোমাদের এমন রোগ দিতে পারি যা তোমাদের পৃথিবী থেকে মুছে দেবে। 16 কিন্তু আমি তোমাদের একটা কারণে এখানে রেখেছি। আমি তোমাদের আমার ক্ষমতা দেখানোর জন্য রেখেছি, যাতে সারা পৃথিবীর লোক আমার কথা শুনতে পারে। 17 তুমি এখনও আমার লোকদের সঙ্গে বিরোধিতা করছ এবং তাদের যেতে দিচ্ছ না। 18 তাই আগামীকাল এই সময় আমি এক ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টি ঘটাবো। মিশরের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত এই রকম ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টি আর কখনও হয় নি। 19 এখন তুমি তোমার পশুদের একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাও। তোমার ক্ষেতে যা কিছু আছে সব একটি নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাও। কেন? কারণ কোন লোক যদি ক্ষেতে পড়ে থাকে, তবে সে মারা যাবে; যদি কোন পশু মাঠে পড়ে থাকে সে মারা যাবে। তোমার বাড়ীর বাইরে যা কিছু পড়ে থাকবে সে সব কিছুর ওপরেই শিলাবৃষ্টি হবে।’”
20 ফরৌণের সেই কর্মচারীরা যারা প্রভুর বার্তাকে গুরুত্ব দিয়েছিল তারা তাদের পশু ও ক্রীতদাসদের ক্ষেত থেকে নিয়ে এলো এবং ঘরে রেখে দিল। 21 কিন্তু যে সব কর্মচারীরা প্রভুর বার্তা অগ্রাহ্য করেছিল তারা তাদের ক্রীতদাসদের ও পশুদের মাঠে রেখে দিল।
22 প্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার হাত আকাশের দিকে তুলে ধরো, তাহলে মিশরের ওপর শিলাবৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। মিশরের সমস্ত ক্ষেতের মানুষ, পশু ও গাছপালার ওপর এই শিলাবৃষ্টি হবে।”
23 তাই মোশি তার হাতের ছড়ি আকাশের দিকে তুলল, তারপর প্রভু ভূমির ওপর বজ্রনির্ঘোষ, শিলাবৃষ্টি ও অশনি ঘটালেন। সারা মিশরে শিলাবৃষ্টি হল। 24 শিলাবৃষ্টি হচ্ছিল এবং চারিদিকে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছিল। এই ধরণের ভয়ঙ্কর শিলাবৃষ্টি মিশরের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আগে কখনও হয়নি। 25 এই শিলাবৃষ্টি মিশরের ক্ষেতের সমস্ত কিছু, লোকজন ও পশুসহ গাছপালা ধ্বংস করে দিল। এই শিলাবৃষ্টিতে মাটির সমস্ত গাছ ভেঙ্গে পড়েছিল। 26 একমাত্র ইস্রায়েলের লোকদের বাসস্থান গোশন প্রদেশে শিলাবৃষ্টি হল না।
27 ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে বললেন, “এইবার বুঝেছি যে আমি পাপ করেছি। প্রভুই ঠিক ছিলেন। আমি ও আমার লোকরা ভুল করেছি। 28 প্রভুর দেওয়া শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত আর সহ্য হচ্ছে না। ঈশ্বরকে গিয়ে এই ঝড় থামাতে বল। তাহলে আমি তোমাদের যেতে দেব, তোমাদের আর এখানে থাকতে হবে না।”
29 মোশি ফরৌণকে বললেন, “আমি যখন শহর ত্যাগ করে যাবো তখন আমি প্রভুকে প্রার্থনার ভঙ্গীতে আমার হাতগুলো ওপরে তুলব। এবং তারপর বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি থামবে। তখন তুমি জানবে যে এই পৃথিবী প্রভুর অধিকারে। 30 কিন্তু আমি জানি যে তুমি এবং তোমার কর্মচারীরা এখনও প্রভুকে শ্রদ্ধা করো না।”
31 য়ব ও শন গাছে ফুল এসে গিয়েছিল। তাই এই সমস্ত শস্য নষ্ট হয়ে গেল। 32 কিন্তু যেহেতু গম ও জনার বড় হল না তাই সেগুলো নষ্ট হল না।
33 মোশি ফরৌণের কাছে থেকে শহরের বাইরে গেল, প্রভুকে প্রার্থনা করার ভঙ্গীতে তার হাতগুলো ওপরে তুলল এবং তৎক্ষণাৎ বজ্র, শিলাবৃষ্টি এমনকি বৃষ্টিও থেমে গেল।
34 যখন ফরৌণ দেখলেন বৃষ্টি, বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি থেমে গিয়েছে তখন তিনি আবার ভুল করলেন। তিনি ও তার কর্মচারীরা জেদী হয়ে গেল। 35 ফরৌণ উদ্ধত হলেন এবং ইস্রায়েলের লোকদের যেতে দিতে অস্বীকার করলেন। এসবই হয়েছিল ঠিক প্রভু যেমন মোশিকে বলেছিলেন সেইরকম ভাবেই।
মাটির পাত্রে আত্মিক সম্পদ
4 ঈশ্বরের দয়ায় আমরা এই কাজের ভার পেয়েছি, তাই আমরা কখনও নিরাশ হই না; 2 বরং আমরা লজ্জাজনক গোপন কাজ একেবারেই করি না। আমরা কোন চাতুরী করি না, ঈশ্বরের শিক্ষাকে বিকৃত করি না; বরং যা সত্য তা স্পষ্টভাবে বলে ঈশ্বরের সামনে ও প্রতিটি মানুষের বিবেকের কাছে আমাদের সততা প্রকাশ করি। 3 কিন্তু আমরা যে সুসমাচার প্রচার করি তা যদি ঢাকা থাকে, তবে যারা ধ্বংসের পথে চলেছে তাদের কাছেই ঢাকা থেকে যায়। 4 এই যুগের দেবতা অবিশ্বাসীদের মন অন্ধ করেছে, যাতে ঈশ্বরের প্রতিমূর্ত্তি যে খ্রীষ্ট, তাঁর মহিমার সুসমাচারের আলো তারা দেখতে না পায়। 5 আমরা নিজেদের কথা প্রচার করি না, বরং যীশু খ্রীষ্টকে প্রভু বলে প্রচার করছি এবং আমরা যীশুর অনুসারী বলেই নিজেদের যীশুর সেবক বলে দেখিয়ে থাকি। 6 কারণ যে ঈশ্বর বলেছিলেন, “অন্ধকারের মধ্যে থেকে আলোর উদয় হবে!” সেই তিনিই আমাদের অন্তরে ঈশ্বরের জ্ঞানের আলোর মহিমা প্রজ্জ্বলিত করেছিলেন, যে আলো খ্রীষ্টের মুখমণ্ডলেই প্রকাশিত রয়েছে।
7 কিন্তু এই সম্পদ আমরা মাটির পাত্রে অর্থাৎ এই মরণশীল দেহে ধারণ করছি, যাতে বুঝতে পারা যায় যে এই মহাপরাক্রম ঈশ্বরের কাছ থেকেই এসেছে, আমাদের নিজেদের কাছ থেকে আসে নি। 8 আমরা সবদিক দিয়েই নানা কষ্টদায়ক চাপের মধ্যে রয়েছি, কিন্তু ভেঙে পড়ি নি। আমরা জানি না কি করব, অথচ হাল ছেড়ে দিই না। 9 আমরা অত্যাচারিত হলেও ঈশ্বর কখনও আমাদের ছেড়ে দেন না। আমাদের মেরে ধরাশায়ী করে দিলেও আমরা ধ্বংস হচ্ছি না। 10 আমরা সবসময় যীশুর মতোই এই দেহে মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছি, যাতে যীশুর জীবনও আমাদের মর্ত্য দেহে প্রকাশ পায়। 11 আমরা যারা বেঁচে আছি আমাদের সবসময় যীশুর জন্য মৃত্যুর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, যেন আমাদের মর্ত্য দেহে যীশুর জীবনও প্রকাশ পায়। 12 এইভাবে আমাদের মধ্যে মৃত্যু এবং তোমাদের মধ্যে জীবন কাজ করে চলেছে।
যীশু পুনরায় নিজের মৃত্যুর বিষয়ে বললেন
(মথি 20:17-19; লূক 18:31-34)
32 একদিন তাঁরা রাস্তা দিয়ে জেরুশালেমের দিকে যাচ্ছেন এবং যীশু তাঁদের আগে আগে চলেছেন। শিষ্যরা আশ্চর্য হচ্ছিলেন আর তাঁর সঙ্গে যারা চলছিল, সেই লোকেরা ভীত হল। তখন তিনি আবার সেই বারোজন প্রেরিতকে নিয়ে নিজের প্রতি যা যা ঘটবে তা তাদের বলতে লাগলেন। 33 শোন, “আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি আর প্রধান যাজক এবং ব্যবস্থার শিক্ষকের হাতে মানবপুত্রকে সঁপে দেওয়া হবে তারা তাকে মৃত্যুদণ্ড দেবে এবং অইহুদীদের হাতে তুলে দেবে। 34 তারা বিদ্রূপ করবে, তাঁর মুখে থুথু দেবে, তাঁকে চাবুক মারবে এবং হত্যা করবে, আর তিন দিন পরে তিনি আবার বেঁচে উঠবেন।”
যাকোব এবং যোহনের অনুগ্রহ ভিক্ষা
(মথি 20:20-28)
35 পরে সিবদিয়ের ছেলে যাকোব এবং যোহন তাঁর কাছে এসে বললেন, “হে গুরু, আমাদের ইচ্ছা এই, আমরা আপনার কাছে যা চাইব, আপনি আমাদের জন্য তা করবেন।”
36 যীশু তখন তাঁদের বললেন, “তোমাদের ইচ্ছা কি, তোমাদের জন্য আমি কি করব?”
37 তাঁরা তাঁকে বললেন, “আমাদের এই বর দান করুন যাতে আপনি মহিমান্বিত হলে আমরা একজন আপনার ডানদিকে আর একজন বাঁ দিকে বসতে পাই।”
38 যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা জান না তোমরা কি চাইছ। আমি যে পেয়ালায় পান করি, তাতে তোমরা কি চুমুক দিতে পারবে বা আমি যে বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজ হই তাতে কি তোমরা বাপ্তাইজ হতে পারবে?”
39 তাঁরা তাঁকে বললেন, “আমরা পারব!”
তখন যীশু তাদের বললেন, “আমি যে পেয়ালায় পান করি তাতে তোমরা অবশ্যই চুমুক দেবে এবং আমি যে বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজ হই তাতে তোমরাও বাপ্তাইজ হবে। 40 কিন্তু আমার ডান দিকে বা বাঁদিকে বসতে দেবার অধিকার আমার নেই। কারা সেখানে বসবে তা আগেই স্থির হয়ে গেছে।”
41 এই কথা শুনে অন্য দশ জন যোহন ও যাকোবের প্রতি অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হলেন। 42 কিন্তু যীশু তাঁদের ডেকে বললেন, “তোমরা জান জগতের মধ্যে যারা শাসনকর্তা বলে গন্য, তারা তাদের উপর প্রভুত্ব করে এবং তাদের মধ্যে যারা প্রধান, তারা তাদের উপর কর্ত্তৃত্ব করে। 43 তোমাদের ক্ষেত্রে সেই রকম হবে না। তোমাদের মধ্যে কেউ যদি প্রধান হতে চায়, তবে সে তোমাদের ক্রীতদাস হবে, 44 এবং তোমাদের মধ্যে কেউ যদি প্রধান হতে চায়, সে সকলের দাস হবে। 45 কারণ বাস্তবে মানবপুত্রও সেবা পেতে আসেন নি, তিনি অন্যের সেবা করতেই এসেছেন এবং অনেক মানুষের মুক্তিপণ হিসাবে নিজের জীবন দিতে এসেছেন।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International