Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Book of Common Prayer

Daily Old and New Testament readings based on the Book of Common Prayer.
Duration: 861 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
গীতসংহিতা 69

পরিচালকের প্রতি: “পদ্মসমূহ” গানটির পর্দায় গাওয়া। দায়ূদের একটি গীত।

69 হে ঈশ্বর আমার সংকটসমূহ থেকে আমায় রক্ষা করুন!
    আমার মুখ পর্যন্ত জল পৌঁছে গেছে।
এখানে এমন কিছু নেই, যার ওপর আমি দাঁড়াতে পারি।
    আমি কাদায় ডুবে যেতে বসেছি,
আমি গভীর জলে ডুবে রয়েছি, আমার চারদিকে ঢেউ উত্তাল হয়ে উঠেছে।
    আমি প্রায় ডুবে মরতে বসেছি।
আমি এতই দুর্বল হয়ে পড়েছি যে সাহায্য চাইতেও অক্ষম হয়ে গেছি।
    আমার গলা যন্ত্রণা করছে।
আমার চোখ যন্ত্রণায় টন্ টন্ করে ওঠার আগে পর্যন্ত
    আমি আপনার সাহায্যের প্রতীক্ষা করেছি।
আমার মাথায় যত চুল আছে, আমার শত্রুর সংখ্যা তার থেকেও বেশী।
    কোন কারণ ছাড়াই তারা আমায় ঘৃণা করে।
    আমাকে বিনাশ করার জন্য ওরা খুব কঠিন চেষ্টা করে।
শত্রুরা আমার সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলছে।
    ওরা বলছে যে আমি নাকি চুরি করেছি।
    এরপর যে জিনিস আমি চুরি করি নি, ওরা আমায় তার দাম দিতে বাধ্য করেছে।
হে ঈশ্বর, আপনি আমার ত্রুটিগুলি জানেন।
    আপনার কাছে আমি আমার পাপ লুকোতে পারি না।
হে আমার সদাপ্রভু, সর্বশক্তিমান প্রভু, আমার জন্য যেন আপনার অনুগামীরা লজ্জায় না পড়ে।
    হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আপনার অনুগামীরা যেন আমার জন্য বিব্রত বোধ না করে।
আমার মুখ লজ্জায় ঢেকে গেছে।
    এই লজ্জা আমি আপনার জন্য বহন করছি।
আমার ভাইরা অচেনা মানুষের সঙ্গে যেরকম ব্যবহার করে সেরকম আমার সঙ্গে করে।
    আমার মায়ের সন্তানরা আমার সঙ্গে ভিন দেশীর মতই ব্যবহার করে।
আপনার মন্দির সম্পর্কে আমার তীব্র অনুভূতিই আমাকে শেষ করে দিচ্ছে।
    যারা আপনাকে নিয়ে মজা করে তাদের কাছ থেকে আমি অপমান কুড়িয়েছি।
10 আমি কাঁদি এবং উপবাস করি,
    এর জন্য ওরা আমায় নিয়ে হাসাহাসি করে।
11 দুঃখ প্রকাশের জন্য আমি প্রায়শ্চিত্ত করি, কাপড় পরি,
    লোকে আমায় নিয়ে মজা করে।
12 প্রকাশ্য স্থানে ওরা আমায় নিয়ে আলোচনা করে।
    ওই মাতালরা আমায় নিয়ে গান বাঁধে।
13 হে ঈশ্বর, আমার দিক থেকে আপনার কাছে এই প্রার্থনা:
    আমি চাই আপনি আমায় গ্রহণ করুন!
হে ঈশ্বর আমি চাই প্রেমের সঙ্গে আপনি আমায় সাড়া দিন।
    আমি জানি আপনি আমায় উদ্ধার করবেন।
    এ ব্যাপারে আমি আপনার ওপর নির্ভর করতে পারি।
14 আমাকে কাদা থেকে টেনে তুলুন।
    আমায় কাদায় ডুবে যেতে দেবেন না।
যারা আমায় ঘৃণা করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
    এই গভীর জল থেকে আমায় উদ্ধার করুন।
15 ঢেউগুলো যেন আমায় ডুবিয়ে না দেয়।
    গভীর গহ্বরকে আমায় ভক্ষণ করতে দেবেন না।
    কবরকে আমায় গিলে ফেলতে দেবেন না।
16 প্রভু, আপনার প্রেম ভালো, আপনার ভালোবাসা দিয়ে আমায় উত্তর দিন।
    আপনার সব দয়া নিয়ে আমার দিকে ফিরুন, আমায় সাহায্য করুন!
17 আপনার দাসের কাছ থেকে দূরে সরে যাবেন না।
    আমি সংকটের মধ্যে পড়েছি! তাড়াতাড়ি আমায় সাহায্য করুন!
18 আসুন আমার আত্মাকে রক্ষা করুন।
    শত্রুদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
19 আমার লজ্জা আপনি জানেন।
    আপনি জানেন যে আমার শত্রুরা আমাকে ঘৃণা ও অপমান করেছে।
    ওরা আমার প্রতি যে কাজ করেছে তাও আপনি দেখেছেন।
20 সেই লজ্জা আমায় বিদীর্ণ করে দিয়েছে।
    লজ্জায় আমি মরে যেতে বসেছি!
আমি সহানুভূতি পাওয়ার আশা করেছিলাম
    কিন্তু কখনই আমি তা পাই নি।
আমি অপেক্ষা করেছিলাম কোন লোক এসে আমায় সান্ত্বনা দিক
    কিন্তু কোন লোক আসে নি।
21 ওরা আমায়, আহার নয়, বিষ দিয়েছে।
    যখন আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম দ্রাক্ষারসের বদলে ওরা আমায় অম্লরস দিয়েছিল।
22 ওদের টেবিলগুলো খাবারে পরিপূর্ণ।
সমারোহপূর্ণ মঙ্গল আহার ওদের আছে।
    ওদের ভোজ যেন ওদের বিনাশ করে।
23 আমি কামনা করি ওরা যেন অন্ধ হয়ে যায় এবং ওদের মেরুদণ্ড যেন দুর্বল হয়ে পড়ে।
24 ওদের আপনার সব ক্রোধ
    অনুভব করতে দিন।
25 ওদের ঘর শূন্য করে দিন।
    একটা কেউ যেন ওখানে বেঁচে না থাকে।
26 ওদের শাস্তি দিন, ওরা ছুটে পালাবে।
    তখন ওরা আলোচনা করার জন্য কিছু যন্ত্রণা ও ক্ষত পাবে।
27 মন্দ কাজের জন্য ওদের শাস্তি দিন।
    আপনার ধার্ম্মিকতা ওদের দেখাবেন না।
28 জীবনের গ্রন্থ থেকে ওদের নাম মুছে দিন।
    জীবনের পুস্তকে ধার্ম্মিক লোকদের নামের সঙ্গে ওদের নাম লিখবেন না!
29 আমি দুঃখী এবং যন্ত্রণাবিদ্ধ।
    ঈশ্বর আমায় টেনে তুলুন; আমায় রক্ষা করুন!
30 গানের মধ্যে দিয়ে আমি ঈশ্বরের প্রশংসা করবো।
    ধন্যবাদ গীতের মধ্য দিয়ে আমি তাঁর প্রশংসা করবো।
31 এটাই ঈশ্বরকে সুখী করবে!
    উৎসর্গ হিসেবে একটা গোটা পশু দেওয়ার চেয়ে অথবা একটা ষাঁড় হত্যা করার চেয়ে, গানের মধ্যে দিয়ে ধন্যবাদ দেওয়া অনেক ভাল হবে।
32 হে বিনয়ী লোকরা, ঈশ্বরের উপাসনার জন্য এসো।
    এইসব জেনে তোমরা খুশী হবে।
33 দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কথা প্রভু শোনেন।
    যারা বন্দী আছেন প্রভু তাদের এখনও পছন্দ করেন।
34 হে আকাশ ও পৃথিবী, ঈশ্বরের প্রশংসা কর!
    হে সমুদ্র এবং সমুদ্রের মধ্যের সবকিছু, প্রভুর প্রশংসা কর!
35 প্রভু সিয়োনকে রক্ষা করবেন।
    প্রভু যিহূদার শহরগুলি আবার নির্মাণ করবেন।
সেই ভূখণ্ড যাদের, সেখানে তারা আবার বাস করবে!
36     তাঁর দাসদের উত্তরপুরুষরা এই ভূখণ্ড পাবে।
    সেই সব লোক যারা তাঁর নামকে ভালোবাসে তারা সেই ভূখণ্ডে বসবাস করবে।

গীতসংহিতা 73

তৃতীয় খণ্ড

(গীতসংহিতা 73–89)

আসফের একটি প্রশংসা গীত।

73 ঈশ্বর সত্যিই ইস্রায়েলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন।
    যাদের হৃদয় শুচি তাদের সঙ্গে ঈশ্বর ভালো ব্যবহার করেন।
আমার প্রায় পদস্খলন হয়েছিলো
    এবং আমি পাপ কাজ করতে শুরু করেছিলাম।
আমি দেখেছি ঐসব দুষ্ট লোকরা কৃতকার্য হয়েছে
    এবং তা দেখে ঐসব উদ্ধত লোকদের প্রতি আমি ঈর্ষা করেছিলাম।
ওরা সবাই বলবান লোক ছিলো।
    বেঁচে থাকবার জন্য ওদের কোন লড়াই করতে হত না।
ঐসব উদ্ধত লোককে আমাদের মত দুর্ভোগ পোহাতে হয় না।
    অন্যান্য লোকেদের মত ওদের কোন সংকট নেই।
তাই ওরা উদ্ধত এবং মানুষকে ঘৃণা করে।
    এই অহঙ্কারকে তারা গলার মালার মত এবং শৌখিন বস্ত্রের মত সহজেই ধারণ করে।
ঐসব লোক যদি ওদের পছন্দের কিছু দেখে, ওরা গিয়ে তা নিয়ে চলে আসে।
    ওরা যা মনে করে, ওরা তাই করতে পারে।
লোকের সম্পর্কে ওরা নির্মম ও অহিতকর কথাবার্তা বলে।
    অন্যদের কাছ থেকে ওরা কিভাবে সুবিধে নেয় সে সম্বন্ধে ওরা গর্বের সঙ্গে কথা বলে।
ঐসব অহঙ্কারী লোকরা নিজেদের দেবতা বলে ভাবে!
    ওরা ভাবে ওরাই পৃথিবীর শাসনকর্তা।
10 এমনকি ঈশ্বরের লোকরা পর্যন্ত সাহায্যের জন্য ওদের কাছে ছুটে যায়।
    ঐ উদ্ধত লোকরা যা বলে, ওরাও তাই করে।
11 ঐ মন্দ লোকরা বলে, “আমরা কি করছি ঈশ্বর তা জানেন না!
    ঈশ্বর, যিনি পরাৎ‌‌পর, তিনি জানেন না!”

12 ঐ অহঙ্কারী লোকরা প্রচণ্ড দুর্জন,
    কিন্তু ওরা ধনী এবং ওরা ক্রমশঃ আরো ধনী হয়ে উঠছে।
13 তাই আমার আত্মাকে কেন শুদ্ধ হতে হবে?
    আমি কেন আমার হাত নির্দোষ রাখব?
14 হে ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমি যন্ত্রণা ভোগ করি।
    প্রত্যেকদিন সকালে আপনি আমায় শাস্তি দেন।

15 ঈশ্বর, এইসব বিষয়ে আমি অন্য লোকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি।
    কিন্তু আমি জানি তাতে আপনার লোকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।
16 এইসব বিষয় বোঝার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি।
    কিন্তু এটা আমার পক্ষে ভীষণ কষ্টকর।
17 ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনার মন্দিরে যাই নি,
    আমি ঈশ্বরের মন্দিরে গেলাম এবং তারপর বুঝতে পারলাম।
18 ঈশ্বর, সত্যিই ঐসব লোককে আপনি ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছেন।
    ওদের পতন এবং বিনাশ এখন সহজ হবে।
19 হঠাৎ‌‌ই সমস্যা আসতে পারে
    এবং ঐ অহঙ্কারী লোকরা ধ্বংস হবে।
ওদের সাংঘাতিক কিছু ঘটতে পারে
    এবং ওরা শেষ হয়ে যাবে।
20 প্রভু, যেমন করে আমরা জেগে উঠে স্বপ্নকে ভুলে যাই,
    ঐসব লোকরা সেই স্বপ্নের মতই বিস্মৃত হবে।
আমাদের রাতের দুঃস্বপ্ন যেমন আপনি অদৃশ্য করে দেন,
    তেমনি করে আপনি ওই লোকগুলোকে অদৃশ্য করে দেবেন।

21-22 আমি অত্যন্ত নির্বোধ ছিলাম।
    আমি দুষ্ট ও ধনী লোকদের কথা ভাবতাম এবং ক্লেশগ্রস্ত হয়ে পড়তাম।
হে ঈশ্বর, আমি ক্লেশগ্রস্ত ছিলাম এবং আপনার ওপর রাগ করেছিলাম!
    আমি নির্বোধ ও অজ্ঞ পশুর মত ব্যবহার করেছিলাম।
23 আমার যা কিছু দরকার তা আমার আছে!
আমি সর্বদাই আপনার সঙ্গে আছি।
    হে ঈশ্বর আপনি আমার হাত ধরুন।
24 ঈশ্বর, আমায় সুপরামর্শ দিন ও পরিচালিত করুন।
    তাহলে আপনি আমায় গৌরবের পথে নিয়ে যাবেন।
25 হে স্বর্গের ঈশ্বর, আমি সর্বদা আপনার সঙ্গে রয়েছি
    এবং আমি যখন আপনার সঙ্গে রয়েছি তখন এই পৃথিবীতে আমি আর কী চাইতে পারি?
26 আমার এই দেহ মন একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে,
    কিন্তু আমার শিলা, যাঁকে আমি ভালোবাসি তিনি থাকবেন।
    চিরকালের জন্য আমার কাছে ঈশ্বর আছেন!
27 ঈশ্বর যারা আপনাকে ত্যাগ করেছে তারা হারিয়ে যাবে।
    যারা আপনার প্রতি অবিশ্বস্ত তাদের আপনি ধ্বংস করে দেবেন।
28 আমি জানি, আমি ঈশ্বরের কাছে এসেছি এবং তাঁর কাছাকাছি থাকা আমার পক্ষে ভালো।
    আমি আমার প্রভু, সদাপ্রভুকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে নিয়েছি।
    ঈশ্বর আপনি যা কিছু করেছেন তাঁর সব কিছু বলতে আমি এসেছি।

যাত্রা 1:6-22

পরে যোষেফ তাঁর ভাইরা এবং ঐ প্রজন্মের প্রত্যেকেই মারা গেলেও ইস্রায়েলের লোকদের অসংখ্য সন্তান ছিল। তাদের লোকসংখ্যা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে গিয়েছিল। ফলস্বরূপ মিশর দেশটি ইস্রায়েলীয়তে ভরে গিয়েছিল।

ইস্রায়েলের লোকদের সমস্যা

সেই সময় একজন নতুন রাজা মিশর শাসন করতে লাগলেন। এই রাজা যোষেফকে চিনতেন না। রাজা তাঁর প্রজাদের উদ্দেশ্যে বললেন, “ইস্রায়েলের লোকদের দিকে চেয়ে দেখ, ওরা সংখ্যায় অসংখ্য এবং আমাদের থেকে বেশী শক্তিশালী! 10 তাদের শক্তিবৃদ্ধি বন্ধ করবার জন্য আমাদের কিছু একটা চতুরতার সাহায্য নিতেই হবে। কারণ, এখন যদি যুদ্ধ লাগে তাহলে ওরা আমাদের পরাজিত করবার জন্য ও আমাদের দেশ থেকে বার করে দেবার জন্য আমাদের শত্রুদের সঙ্গে হাত মেলাতে পারে।”

11 মিশরের লোকরা তাই ইস্রায়েলের লোকদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলার ফন্দি আঁটল। অতএব ইস্রায়েলীয়দের তত্ত্বাবধান করবার জন্য মিশরীয়রা ক্রীতদাস মনিবদের নিয়োগ করল। এই দাস শাসকরা ইহুদীদের দিয়ে জোর করে রাজার জন্য পিথোম ও রামিষেষ নামে দুটি শহর নির্মাণ করাল। এই দুই শহরে রাজা শস্য এবং অন্যান্য জিনিসপত্র মজুত করে রাখলেন।

12 মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল। কিন্তু তাদের যত বেশী কঠিন পরিশ্রম করানো হতে থাকল ততই ইস্রায়েলের লোকদের সংখ্যাবৃদ্ধি এবং বিস্তার ঘটতে থাকল। ফলে মিশরীয়রা ইস্রায়েলের লোকদের আরও বেশী ভয় পেতে শুরু করল। 13 আর সেইজন্য তারা উদ্বিগ্ন হয়ে ইস্রায়েলের লোকদের প্রতি আরও বেশী নির্দয় হয়ে উঠল। ফলস্বরূপ মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের আরো কঠিন পরিশ্রম করতে বাধ্য করল।

14 মিশরীয়রা ইস্রায়েলীয়দের জীবন দুর্বিসহ করে তুলল। তারা ইস্রায়েলীয়দের ইঁট তৈরি করবার জন্য গাদা গাদা ভারী ঢালাই এর মিশ্রণ বহন করতে এবং মাঠে লাঙল চালাতে বাধ্য করেছিল। তারা ইস্রায়েলীয়দের সব রকমের কঠিন কাজ করতে বাধ্য করেছিল।

ঈশ্বরকে অনুসরণকারী ধাইমাগণ

15 ইস্রায়েলীয় মহিলাদের সন্তান প্রসবে সাহায্য করবার জন্য দুজন ধাইমা ছিল। তাদের দুজনের নাম ছিল শিফ্রা ও পূয়া। 16 স্বয়ং রাজা এসে সেই দুই ধাইমাকে বললেন, “দেখছি তোমরা বরাবর হিব্রু মহিলাদের সন্তান প্রসবের সময় সাহায্য করে চলেছো। দেখ, যদি কেউ কন্যা সন্তান প্রসব করে তাহলে ঠিক আছে, তাকে বাঁচিয়ে রেখ, কিন্তু পুত্র সন্তান হলে সঙ্গে সঙ্গেই সেই সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে হত্যা করবে।”

17 কিন্তু ধাইমা দুজন ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রেখে রাজার আদেশ অমান্য করে পুত্র সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখল। 18 রাজা এবার তাদের ডেকে পাঠিয়ে বললেন, “তোমরা এটা কি করলে? কেন তোমরা আমার অবাধ্য হয়েছ এবং পুত্র সন্তানদের বাঁচিয়ে রেখেছ?”

19 ধাইমারা রাজাকে বলল, “হে রাজা, ইস্রায়েলীয় মহিলারা মিশরের মহিলাদের থেকে অনেক বেশী শক্তিশালী। আমরা তাদের সাহায্যের জন্য পৌঁছাবার আগেই ইস্রায়েলীয় মহিলারা সন্তান প্রসব করে ফেলে।” 20-21 ঈশ্বর ঐ ধাইমাদের এই আচরণে খুশী হলেন। তাই ঈশ্বর ধাইমাদের আশীর্বাদ করলেন এবং তাদের নিজেদের পরিবার তৈরী করতে দিলেন। ইস্রায়েলীয়রা সংখ্যায় আরও বাড়তে থাকল এবং আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল।

22 পরে ফরৌণ নিজস্ব লোকদের আদেশ দিলেন, “তোমরা কন্যা সন্তান বাঁচিয়ে রাখতে পারো। কিন্তু পুত্র সন্তান হলে তাকে নীলনদে ছুঁড়ে ফেলতে হবে।”

1 করিন্থীয় 12:12-26

খ্রীষ্টের দেহ

12 আমাদের প্রত্যেকের দেহ নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ নিয়ে গঠিত। যদিও অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ তবু তারা মিলে হয় একটি দেহ; খ্রীষ্টও ঠিক সেই রকম। 13 আমাদের মধ্যে কেউ ইহুদী, কেউ অইহুদী, কেউ দাস, আবার কেউ স্বাধীন, কিন্তু আমরা সকলেই দেহেতে এক হওয়ার জন্য এক আত্মার দ্বারা বাপ্তাইজ হয়েছি। আর আমাদের সকলকেই পান করার জন্য একই আত্মা দেওয়া হয়েছে।

14 একজনের দেহের মধ্যে একের অধিক অঙ্গ আছে। 15 পা যদি বলে, “আমি তো হাত নই; তাই আমি দেহের অঙ্গ নই,” তবে কি তা দেহের অঙ্গ হবে না? 16 কান যদি বলে, “আমি তো চোখ নই, তাই আমি দেহের অঙ্গ নই,” তবে কি তা দেহের অঙ্গ হবে না? 17 সমস্ত দেহটাই যদি চোখ হত তবে কান কোথায় থাকত? আর সমস্ত দেহটাই যদি কান হত তবে নাক কোথায় থাকত? 18-19 কিন্তু ঈশ্বর যেমনটি চেয়েছেন সেইভাবে দেহের সমস্ত অংশগুলিকে সাজিয়েছেন। তা না হয়ে সব অঙ্গগুলি যদি একরকম হত তবে দেহ বলে কি কিছু থাকত? 20 কিন্তু এখন অঙ্গ অনেক বটে, কিন্তু দেহ এক।

21 চোখ কখনও হাতকে বলতে পারে না, “তোমাকে আমার কোন দরকার নেই।” আবার মাথাও পা দুটিকে বলতে পারে না, “তোমাদের আমার কোন প্রয়োজন নেই।” 22 বরং দেহের সেই অংশগুলি, যাদের দুর্বল মনে হয় তাদের প্রয়োজন খুবই বেশী। 23 যে অঙ্গগুলির প্রতি আমরা যত্নবান নই, তাদের বেশী যত্ন নিতে হবে। আমাদের যে সব অঙ্গ প্রদর্শনের অযোগ্য সেগুলিকেই বেশী করে শালীনতায় ভূষিত করা হয়। 24 আমাদের যে সব অঙ্গ সুশ্রী, সেগুলির জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রয়োজন হয় না। ঈশ্বর দেহকে এমনভাবে গঠন করেছেন যেন যে অঙ্গের মর্যাদা নেই সে অধিক মর্যাদা পায়, 25 যেন দেহের মধ্যে কোন বিভেদ সৃষ্টি না হয়, কিন্তু দেহের প্রতিটি অঙ্গই যেন পরস্পরের জন্য সমানভাবে চিন্তা করে। 26 দেহের কোন একটি অঙ্গ যদি কষ্ট পায়, তবে তার সাথে সবাই কষ্ট করে আর একটি অঙ্গ যদি মর্যাদা পায়, তাহলে তার সঙ্গে অপর সকল অঙ্গ ও খুশী হয়।

মার্ক 8:27-9:1

পিতরের স্বীকৃতি—যীশুই খ্রীষ্ট

(মথি 16:13-20; লূক 9:18-21)

27 তারপর যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা সেখান থেকে কৈসরিযা ফিলিপীয় অঞ্চলে চলে গেলেন। রাস্তার মধ্যে তিনি তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কে, এ বিষয়ে লোকের কি বলে?”

28 তাঁরা বললেন, “অনেকে বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন। কেউ কেউ বলে, আপনি এলিয়। আবার কেউ কেউ বলে, আপনি ভাববাদীদের মধ্যে একজন।”

29 তখন তিনি তাঁদের জিজ্ঞাসা করলেন, “কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?”

পিতর তাঁকে বললেন, “আপনি সেই খ্রীষ্ট।”

30 তখন তিনি তাঁদের সাবধান করে দিয়ে বললেন, “তোমরা এ কথা কাউকে বলো না।”

যীশু বললেন তাঁর মৃত্যু অনিবার্য

(মথি 16:21-28; লূক 9:22-27)

31 এরপর তিনি তাঁদের এই শিক্ষা দিতে শুরু করলেন যে, মানবপুত্রকে অনেক দুঃখ ভোগ করতে হবে এবং বয়স্ক ইহুদী নেতারা, প্রধান যাজক ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে, হত্যা করবে এবং মৃত্যুর তিনদিন পর তিনি আবার বেঁচে উঠবেন। 32 এই কথা তিনি তাঁদের স্পষ্টভাবে বললেন।

তাতে পিতর তাঁকে একপাশে নিয়ে গিয়ে অনুযোগ করতে লাগলেন। 33 কিন্তু যীশু তাঁর শিষ্যদের দিকে মুখ ফিরিয়ে পিতরকে ধমক দিয়ে বললেন, “আমার সামনে থেকে দূর হও, শয়তান! কারণ তুমি ঈশ্বরের ইচ্ছার সমাদর করছ না; তুমি মানুষের মতোই ভেবে এই কথা বলছ।”

34 এরপর তিনি শিষ্যদেব সঙ্গে অন্যান্য লোকদেরও নিজের কাছে ডেকে বললেন, “কেউ যদি আমার সঙ্গে আসতে চায়, সে নিজেকে অস্বীকার করুক এবং তার নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার অনুসারী হোক্। 35 কারণ কেউ যদি নিজের প্রাণ রক্ষা করতে চায় তবে সে তা হারাবে; কিন্তু কেউ যদি আমার এবং সুসমাচারের জন্য নিজের প্রাণ হারায় তবে তার জীবন চিরস্থায়ী হবে। 36 মানুষ যদি নিজের জীবন হারিয়ে সমস্ত জগৎ‌ লাভ করে তবে তার কি লাভ? 37 কিংবা মানুষ তার প্রাণের বিনিময়ে কি দিতে পারে? 38 যে কেউ এই ব্যভিচারী ও পাপীদের যুগে আমাকে এবং আমার শিক্ষাকে লজ্জার বিষয় মনে করে, মানবপুত্র যখন তাঁর পিতার মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে পবিত্র স্বর্গদূতদের সঙ্গে ফিরে আসবেন, তখন তিনিও সেই লোকের বিষয়ে লজ্জাবোধ করবেন।”

তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তদের মধ্যে কয়েকজন আছে, যারা কোনমতেই মৃত্যু দেখবে না; যতক্ষণ পর্যন্ত ঈশ্বরের রাজ্য মহাপরাক্রমের সঙ্গে আসতে না দেখে।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International