Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Book of Common Prayer

Daily Old and New Testament readings based on the Book of Common Prayer.
Duration: 861 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
গীতসংহিতা 78

আসফের একটি মস্কীল।

78 হে আমার লোকরা, আমার শিক্ষামালা শোন।
    আমি যা বলছি তা শোন।
আমি তোমাদের এই গল্প বলবো।
    আমি তোমাদের এই প্রাচীন গল্পটি বলবো।
এই গল্প আমরাও শুনেছি, এই গল্পটা আমরা খুব ভালোভাবে জানি।
    আমাদের পিতা-পিতামহরা এই গল্প বলেছেন।
এই গল্প আমরাও ভুলে যাবো না।
    আমাদের লোকরা শেষ প্রজন্মকে পর্যন্ত এই গল্প বলতে থাকবে।
আমরা সবাই প্রভুর প্রশংসা করবো
    এবং প্রভু যে সব আশ্চর্য কার্য করেছেন তা বলবো।
প্রভু যাকোবের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছিলেন।
    ইস্রায়েলকে ঈশ্বর একটা বিধি দিয়েছিলেন।
    আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছেন।
    তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের বলেছেন তারা যেন তাদের উত্তরপুরুষদের সেই বিধি সম্পর্কে শিক্ষাদান করে।
নতুন শিশুরা জন্ম নেবে। তারা আস্তে আস্তে বড় হবে।
    তারা তাদের ছেলেমেয়েদের এই গল্পগুলো বলবে।
    এইভাবে শেষ প্রজন্মের মানুষ পর্যন্ত এই বিধি জানতে পারবে।
তাই ঐসব লোকরাই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করবে।
    ঈশ্বর কি করেছেন তা তারা ভুলবে না।
    ওরা খুব যত্ন করে তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করবে।
যদি লোকরা তাদের শিশুদের ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো সম্পর্কে শিক্ষা দেয়
    তাহলে ওই শিশুরা ওদের পূর্বপুরুষদের মত হবে না, ওদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গিয়েছিলো।
তারা তাঁকে মানতে অস্বীকার করেছিলো, ঐসব লোক প্রচণ্ড একগুঁয়ে ছিলো।
    ওরা ঈশ্বরের আত্মার প্রতি নিষ্ঠাবান ছিল না।

ইফ্রয়িমের লোকেরা অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত ছিল
    কিন্তু তারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল।
10 তারা ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের চুক্তি রক্ষা করে নি।
    তারা তাঁর শিক্ষামালা মান্য করতে অস্বীকার করেছিলো।
11 ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করেছিলেন, ইফ্রয়িমের লোকরা তা ভুলে গিয়েছিলো।
    তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য ওদের দেখিয়েছিলেন, তা তারা ভুলে গিয়েছিলো।
12 ঈশ্বর ওদের পিতৃপুরুষদের মিশরের সোয়নে,
    তাঁর পরাক্রম প্রদর্শন করে দেখিয়েছিলেন।
13 ঈশ্বর লোহিত সাগরকে দুভাগ করেছিলেন এবং লোকদের সাগর পার করিয়েছিলেন।
    সেই জল দুধারে একটি শক্তি দেওয়ালের মত দাঁড়িয়েছিলো।
14 প্রতিদিন প্রলম্বিত মেঘের দ্বারা ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়েছিলেন।
    প্রতিটি রাত্রে আগুনের আলো দিয়ে ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়ে ছিলেন।
15 ঈশ্বর মরুভূমির পাথরকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন।
    মাটির গভীর অতল থেকে ওই সব লোকদের তিনি জলও দিয়েছেন।
16 পাথর থেকে আগত ঝর্ণার জলকে
    ঈশ্বরই নদীর প্রবাহ দিয়েছেন!
17 কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ কাজ অব্যাহত রেখেছিল।
    পরাৎ‌‌পরের বিরুদ্ধে তারা মরুভূমিতে পর্যন্ত বিদ্রোহ করেছে।
18 তারা যখন তাদের ইচ্ছা পূর্ণ করবার জন্য খাবার চাইল
    তখন তারা তাদের মনে মনে ঈশ্বরকে পরীক্ষা করল।
19 ওরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছিলো,
    “ঈশ্বর কি আমাদের এই মরুভূমিতে খাবার এনে দিতে পারবেন?
20 তিনি পাথরে আঘাত করলেন এবং বন্যার মতো জলধারা বেরিয়ে এলো।
    কিন্তু তিনি কি আমাদের কিছু রুটি এবং মাংস দিতে পারেন?”
21 ওই লোকগুলো কি বলছে, প্রভু তা শুনলেন।
    যাকোবের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন।
ইস্রায়েলের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন।
22 কেন? কারণ লোকরা তাঁকে বিশ্বাস করে নি।
ঈশ্বর যে ওদের রক্ষা করতে পারেন, তা ওরা বিশ্বাস করে নি।
23-24 এর পর ঈশ্বর মেঘকে উন্মুক্ত করে দিলেন
    এবং খাদ্যের জন্য ওদের ওপরে মান্না বর্ষিত হল।
এ যেন আকাশের দ্বার খুলে গেল
    এবং স্বর্গের ভাণ্ডার থেকে শস্যরাশি পড়তে লাগলো।
25 লোকরা দেবদূতদের[a] সেই খাবার খেয়েছিলো।
    ওদের সন্তুষ্ট করার জন্য ঈশ্বর প্রচুর খাবার পাঠিয়েছিলেন।
26 ঈশ্বর পূর্বদিক থেকে একটা ঝোড়ো বাতাস প্রবাহিত করলেন
    এবং ওদের কাছে একধরণের পাখি বৃষ্টির মত পড়তে লাগলো।
27 ঈশ্বর তেমানের দিক থেকে সেই বায়ুকে প্রবাহিত করালেন
    এবং যে নীল আকাশের দিকটায় প্রচুর পাখি ছিল সেই দিকটা অন্ধকারময় হয়ে গেল।
28 ওদের তাঁবুর ঠিক মাঝখানে,
    ওদের তাঁবুর চারপাশে পাখিগুলো পড়ে গিয়েছিল।
29 তাদের কাছে বিরাট খাদ্যের ভাণ্ডার ছিল।
    কিন্তু তাদের ক্ষুধা তাদের পাপকার্যে প্ররোচিত করেছিল।
30 তারা তাদের ভোজন নিয়ন্ত্রিত করে নি।
    তাই পাখীগুলোর দেহ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসার আগেই তারা পাখীগুলোকে খেয়ে ফেলেছিল।
31 অতএব, খাবার যখন তাদের মুখের মধ্যে তখনও ছিল তখন ঈশ্বর ওইসব লোকের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হলেন
    এবং ওদের অনেককে মেরে ফেললেন। ঈশ্বর বহু স্বাস্থ্যবান তরুণের মৃত্যুর কারণ হলেন।
32 ওইসব লোকরা আবার পাপ করলো!
    ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করতে পারেন তার ওপর নির্ভর করলো না।
33 তাই ওদের মূল্যহীন জীবনগুলোতে
    ঈশ্বর দুর্বিপাক এনে শেষ করে দিলেন।
34 যখনই ঈশ্বর ওদের কাউকে হত্যা করেছেন, অন্যরা তাঁর কাছে ফিরে এসেছেন।
    ওরা ছুটে ছুটে ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসেছে।
35 তখন এইসব লোকরা স্মরণ করবে যে ঈশ্বরই ছিলেন তাদের শিলা।
    ওরা তখন মনে করবে যে পরাৎ‌‌পরই একমাত্র ওদের মুক্তিদাতা।
36 ওরা বলেছিলো, ওরা তাঁকে ভালোবাসে কিন্তু ওরা মিথ্যা কথা বলেছিলো।
    ওই সব লোক একেবারেই আন্তরিক ছিলো না।
37 প্রকৃতপক্ষে ওদের হৃদয় ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলো না।
    চুক্তির প্রতি ওরা একেবারেই বিশ্বস্ত ছিলো না।
38 কিন্তু ঈশ্বর করুণাময় ছিলেন।
    তিনি ওদের সব পাপ ক্ষমা করে দিলেন, তিনি কিন্তু ওদের ধ্বংস করেন নি।
বহুবার ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ সংবরণ করেছেন।
    তিনি নিজেকে কখনই অতিরিক্ত ক্রুদ্ধ হতে দেন নি।
39 ঈশ্বর মনে রেখেছিলেন যে ওরা ন্যায়পরায়ণ মানুষ।
    লোকরা বাতাসেরই মত, যারা বয়ে যায় এবং চলে যায়।
40 ওঃ, কতবার ঐ লোকগুলো মরুভূমিতে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে!
    ওরা তাঁকে কত দুঃখই দিয়েছে!
41 ওই লোকগুলো বার বার ঈশ্বরের ধৈর্য্য পরীক্ষা করেছে।
    ইস্রায়েলের পবিত্র একজনকে ওরা সত্যই ক্রুদ্ধ করেছে।
42 ওই লোকরা ঈশ্বরের পরাক্রমের কথা ভুলে গিয়েছিলো।
    ঈশ্বর যে বহুবার শত্রুদের হাত থেকে ওদের রক্ষা করেছিলেন, তা ওরা ভুলে গিয়েছিলো।
43 মিশরে ঈশ্বর যে সব চমৎ‌‌কার কাজগুলি করেছিলেন তার কথা ওরা ভুলে গিয়েছিলো,
    সোয়ন প্রান্তরের চমৎ‌‌কার কাজের কথা ওরা ভুলে গিয়েছিলো।
44 ঈশ্বর নদীগুলিকে রক্তে পরিণত করেছিলেন!
    মিশরবাসীরা সেই জল পান করতে পারলো না।
45 ঈশ্বর ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি পাঠালেন যারা মিশরবাসীদের কামড় দিলো,
    তিনি অগনিত ব্যাঙ পাঠালেন যারা মিশরবাসীর জীবন ধ্বংস করে দিলো।
46 ওদের শস্যকে ঈশ্বর গঙ্গা ফড়িংয়ের কবলে
    এবং ওদের বৃক্ষ লতাকে পঙ্গপালের কবলে করে দিলেন।
47 ঈশ্বর শিলাবৃষ্টির দ্বারা ওদের দ্রাক্ষাক্ষেত নষ্ট করলেন।
    শিলাবৃষ্টির দ্বারা তিনি ওদের বৃক্ষরাজি ধ্বংস করলেন।
48 শিলাবৃষ্টি দিয়ে তিনি ওদের পশুদের মারলেন
    এবং বজ্র-বিদ্যুৎ দিয়ে গবাদি পশুদের মারলেন।
49 ঈশ্বর মিশরের লোকদের তাঁর ক্রোধ দেখালেন।
    ওদের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর বিধ্বংসকারী দূতদের পাঠালেন।
50 ক্রোধ প্রদর্শনের জন্য ঈশ্বর একটা রাস্তা পেয়েছিলেন।
    ওদের একটা লোককেও তিনি বাঁচতে দিলেন না।
    এক মহামড়কের মধ্যে দিয়ে তিনি ওদের মরতে দিলেন।
51 মিশরের প্রত্যেকটি প্রথমজাত সন্তানকে ঈশ্বর হত্যা করলেন।
    হাম পরিবারের প্রত্যেকটি প্রথম জাতককে তিনি হত্যা করলেন।
52 তারপর একজন মেষপালকের মত তিনি ইস্রায়েলকে পথ দেখিয়েছিলেন।
    একজন মেষপালকের মত তিনি তাঁর লোকেদের, মেষপালকের মত জনহীন প্রান্তরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
53 ঈশ্বর তাঁর লোকদের নিরাপদে চালনা করেছিলেন।
    তাঁর লোকদের ভয় করার মত কিছু ছিল না।
    তাদের শত্রুদের তিনি লোহিত সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন।
54 তাঁর পবিত্র ভূখণ্ডে ঈশ্বর তাঁর লোকদের পৌঁছে দিয়েছিলেন।
    তিনি তাঁর লোকদের নিজ ক্ষমতা বলে পাওয়া সেই পর্বতে যেটা তিনি রূপ দিয়েছিলেন সেটাতে নিয়ে গেলেন।
55 ঈশ্বর অন্যান্য জাতিদের সেই ভূখণ্ডের থেকে বাইরে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
    প্রত্যেকটি পরিবারকে বাধ্য করিয়েছেন।
    প্রত্যেকটি পরিবারকে ঈশ্বর সে ভূখণ্ডের অংশ দিয়েছেন।
এখান বাস করার জন্য ইস্রায়েলের প্রত্যেকটি পরিবারগোষ্ঠীকে
    ঈশ্বর সেই ভূখণ্ডে ঘর দিয়েছেন।
56 কিন্তু ওরা পরাৎ‌‌পর ঈশ্বরকে পরীক্ষা করেছিলো এবং তাঁকে দুঃখী করেছিলো।
    ওই সব লোক ঈশ্বরের আজ্ঞা মান্য করে নি।
57 ওরা ঠিক ওদের পূর্বপুরুষদের মতই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলো।
    ওরা একটি বঞ্চক ধনুকের মত[b] দিক পরিবর্তন করেছিলো।
58 ইস্রায়েলের লোকরা উচ্চস্থান তৈরী করেছিলো এবং ঈশ্বরকে ক্রুদ্ধ করেছিলো।
    তারা মূর্ত্তিসমূহ তৈরী করেছিলো এবং ঈশ্বরকে অত্যন্ত ঈর্ষান্বিত করে তুলেছিল।
59 এইসব শুনে ঈশ্বর ক্রোধান্বিত হয়েছিলেন।
    ঈশ্বর ইস্রায়েলকে তীব্রভাবে অস্বীকার করেছিলেন!
60 ঈশ্বর পবিত্র তাঁবুটি শীলোতে রেখেছিলেন।
    সাধারণ লোকদের মধ্যে ঈশ্বর সেই তাঁবুতে থাকতেন।
61 ঈশ্বর অন্য জাতিকে তাঁর লোকদের অধিকার করতে দিয়েছেন।
    শত্রুরা ঈশ্বরের সুন্দরতম রত্ন নিয়ে গিয়েছিলো।
62 ঈশ্বর তাঁর লোকদের বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করলেন।
    তিনি তাদের যুদ্ধে নিহত হতে দিলেন।
63 তরুণরা সব পুড়ে মারা গেল
    এবং যে মেয়েদের ওরা বিয়ে করবে ভেবেছিলো তারা কেউই বিয়ের গান গাইছিলো না।
64 যাজকরা মারা গেল
    কিন্তু তাদের বিধবারা ওদের জন্য কাঁদে নি।
65 শেষ কালে, যেমন করে একজন লোক ঘুম থেকে ওঠে,
    প্রচুর দ্রাক্ষারস পান করে যেমন একজন সৈনিক ওঠে,
    তেমন করে আমাদের প্রভু উঠলেন।
66 ঈশ্বর তাঁর শত্রুদের জোর করে হঠিয়ে দিয়ে ওদের পরাজিত করালেন।
    ঈশ্বর তাঁর শত্রুদের পরাজিত করে চিরদিনের জন্য ওদের অসম্মানিত করলেন।
67 তারপর ঈশ্বর যোষেফের তাঁবুটিকে[c] বাতিল করলেন
    এবং ইফ্রয়িমের শাসন ক্ষমতা কেড়ে নিলেন।
68 তারপর ঈশ্বর যিহূদা জাতিকে শাসক জাতি হিসেবে মনোনীত করলেন
    এবং তাঁর প্রিয় জেরুশালেমকে মন্দির নির্মাণের স্থান হিসেবে বেছে নিলেন।
69 সেই পাহাড়ের উঁচু জায়গায় ঈশ্বর তাঁর মন্দির নির্মাণ করলেন।
    পৃথিবীর মত তিনি তাঁর মন্দির চিরকালের জন্য স্থাপন করলেন।
70 ঈশ্বর তাঁর বিশেষ সেবকরূপে দায়ূদকে মনোনীত করলেন।
    দায়ূদ মেষ চরাচ্ছিলো, কিন্তু ঈশ্বর সেই কাজ থেকে তাকে নিয়ে এলেন।
71 ঈশ্বর দায়ূদকে, তাঁর লোকদের মেষপালক হওয়ার দায়িত্ব,
    যাকোবের লোকদের দায়িত্ব এবং ইস্রায়েলের লোকদের ও তাদের সম্পত্তির দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
72 দায়ূদ পবিত্র মনে তাদের নেতৃত্ব দিলেন।
    তিনি খুব প্রজ্ঞার সঙ্গে তাদের পরিচালিত করলেন।

আদি 45:1-15

যোষেফ নিজের পরিচয় দিলেন

45 যোষেফ আর নিজেকে সামলে রাখতে পারলেন না। তিনি সেখানে উপস্থিত সমস্ত লোকের সামনে কেঁদে উঠলেন এবং বললেন, “সবাইকে চলে যেতে বলো।” তাই সব লোক চলে গেল। কেবল যোষেফের ভাইরা সঙ্গে রইল। তখন যোষেফ নিজের পরিচয় দিলেন। যোষেফ খুব উচ্চস্বরে কাঁদছিলেন, আর ফরৌণের বাড়ীর সমস্ত মিশরীয়রা তা শুনতে পেল। যোষেফ তাঁর ভাইদের বললেন, “আমি তোমাদের ভাই যোষেফ। আমার পিতা ভাল আছেন তো?” কিন্তু ভাইরা উত্তর দিল না কারণ তারা হতবুদ্ধি হল, ভয় পেল।

তাই যোষেফ আবার তাঁর ভাইদের বললেন, “এখানে আমার কাছে এস। দয়া করে এখানে এস।” তাই ভাইরা যোষেফের কাছে গেল। যোষেফ তাদের বললেন, “আমি তোমাদের ভাই যোষেফ। আমিই সেই, যাকে তোমরা দাস হিসাবে মিশরের জন্য বেচে দিয়েছিলে। এখন চিন্তা করো না। তোমরা যা করেছিলে তার জন্য রাগও করো না। ঈশ্বরের পরিকল্পনা অনুসারেই আমি এখানে এসেছি। আমি তোমাদের প্রাণ বাঁচাতেই এখানে এসেছি। দুর্ভিক্ষের কেবল দুটো বছরই কেটেছে। এখনও আরও পাঁচ বছর কোন চাষ হবে না, ফসলও ফলবে না। সুতরাং ঈশ্বর আমাকে তোমাদের আগেই এখানে পাঠিয়েছেন যাতে আমি তোমাদের লোকজনদের এই দেশে এনে বাঁচাতে পারি। আমাকে যে এখানে পাঠানো হয়েছে তাতে তোমাদের দোষ নেই। এ ছিল ঈশ্বরের পরিকল্পনা। ঈশ্বরই আমাকে ফরৌণের পিতার স্থানে বসিয়েছেন। আমি তার সমস্ত বাড়ীর সমস্ত মিশর দেশের রাজ্যপাল হয়েছি।”

ইস্রায়েল মিশরে আমন্ত্রিত হলেন

যোষেফ বলল, “তোমরা তাড়াতাড়ি আমার পিতার কাছে যাও। তাঁকে বল তাঁর পুত্র যোষেফ এই বার্তা পাঠিয়েছে: ‘ঈশ্বর আমাকে মিশরের রাজ্যপাল করেছেন। তাই এখানে আমার কাছে চলে আসুন। দেরী করবেন না। এখনই চলে আসুন। 10 আপনি আমার কাছাকাছি গোশন প্রদেশে থাকতে পারেন। আপনি, আপনার সন্তানরা, আপনার নাতি-নাতনিরা এবং আপনার সমস্ত পশুদেরও নিয়ে আসুন। 11 দুর্ভিক্ষের পরের পাঁচ বছর আমি আপনার যত্ন নেব। ফরে আপনি এবং আপনার পরিবারের যা আছে তার কিছুই হারিয়ে যাবে না।’”

12 যোষেফ তাঁর ভাইদের বললেন, “আমি যে সত্যি সত্যিই যোষেফ তা তোমরা চোখেই দেখছ। এখন আমার ভাই বিন্যামীনও জানে যে আমি তোমাদের ভাই, তোমাদের সঙ্গে কথা বলছি। 13 আমি মিশর দেশে যে সম্মান অর্জন করেছি সে সম্বন্ধে পিতাকে বলো। এখানে তোমরা যা যা দেখছ সে সম্বন্ধে তাঁকে বলো। এবার ওঠ, যত তাড়াতাড়ি পার আমার পিতাকে এখানে নিয়ে এস।” 14 এরপর যোষেফ বিন্যামীনকে বুকে জড়িয়ে ধরে দুজনেই কাঁদতে লাগলেন। 15 যোষেফ অন্যান্য ভাইদেরও চুমু খেয়ে কাঁদলেন। এরপর ভাইরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতে শুরু করল।

1 করিন্থীয় 7:32-40

32 আমি চাই যেন তোমরা দুর্ভাবনা থেকে মুক্ত হও। একজন অবিবাহিত লোক প্রভুর কাজের বিষয়ে বেশী করে চিন্তা করতে পারে, কিভাবে সে প্রভুকে সন্তুষ্ট করবে সেটাই তার চিন্তা হয়। 33 কিন্তু যে বিবাহিত সে এই সংসারের বিষয় চিন্তা করে, কিভাবে সে তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করবে, সেই হয় তার চিন্তা। 34 সে প্রভুকে সন্তুষ্ট করতে চায় আবার সেই সঙ্গে তার স্ত্রীকে খুশী করতে চায়, এইভাবে দুই দিকেই তার চিন্তা হয়। একজন অবিবাহিতা বা কুমারী মেয়ে প্রভুর বিষয় চিন্তা করে, যেন সে দেহে ও আত্মায় পবিত্র হয়। কিন্তু বিবাহিতা স্ত্রীলোক তার সংসারের প্রতি বেশী চিন্তা করে, আর তার চিন্তা থাকে কিভাবে সে তার স্বামীকে সন্তুষ্ট করবে। 35 আমি তোমাদের ভালোর জন্যই একথা বলছি, তোমাদের ওপর কোন বিধি-নিষেধ চাপিয়ে দেবার জন্য নয়, বরং তোমরা যাতে ঠিক পথে চল আর যাতে তোমরা নানা বিষয়ে জড়িয়ে না পড়ো এবং সম্পূর্ণ সমর্পণ দ্বারা প্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেদের উৎসর্গ কর সেইজন্যই বলছি।

36 কেউ যদি মনে করে যে সে তার কুমারী বাগদত্তার প্রতি সঙ্গত আচরণ করছে না, তার বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে, সে যদি মনে করে যে বিষয়টা শীঘ্রই হওয়াই ভাল তবে সে যা চায় তাই করুক। এতে সে পাপ করছে না, তার বিয়ে হোক্। 37 কিন্তু যে তার নিজের মনে দৃঢ়, যার কোন চাপ নেই, যে তার ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে আর তার মনে ঠিক করে যে সে তার বাগদত্তাকে বিয়ে না করেই নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম, তবে সে ভালই করবে। 38 তাই তার বাগদত্তা বন্ধুকে বিয়ে করে সে ঠিক কাজই করে; আর যে তাকে বিয়ে না করে সে আরো ভালো করে।

39 স্বামী যতদিন বেঁচে থাকে স্ত্রী ততদিনই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ থাকে, কিন্তু স্বামী মারা গেলে সে মুক্ত, সে তখন যাকে ইচ্ছা আবার বিয়ে করতে পারে, অবশ্য সেই লোক যেন প্রভুর হয়। 40 তবে আমার মতে সে যদি আর বিয়ে না করে তবে আরো সুখী হবে। এই আমার মত আর আমি মনে করি আমারও ঈশ্বরের আত্মা আছে।

মার্ক 6:1-13

যীশু নিজের শহরে গেলেন

(মথি 13:53-58; লূক 4:16-30)

পরে যীশু তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সেখান থেকে নিজের শহরে চলে এলেন। এরপর তিনি বিশ্রামবারে সমাজ-গৃহে শিক্ষা দিতে লাগলেন; আর সমস্ত লোক তাঁর শিক্ষা শুনে আশ্চর্য হল। তারা বলল, “এ কোথা থেকে এ সমস্ত বিজ্ঞতা অর্জন করল? এ কি করে এমন বিজ্ঞতার সঙ্গে কথা বলে? কি করেই বা এইসব অলৌকিক কাজ করে? এ তো সেই ছুতোর মিস্ত্রি এবং মরিয়মের ছেলে; যাকোব, যোসি, যিহূদা ও শিমোনের ভাই; তাই নয় কি? আর এর বোনেরা কি আমাদের মধ্যে নেই?” এইসব চিন্তা তাদের মাথায় আসায় তারা তাঁকে গ্রহণ করতে পারল না।

তখন যীশু তাদের বললেন, “নিজের শহর ও নিজের আত্মীয় স্বজন এবং পরিজনদের মধ্যে ভাববাদী সম্মানিত হন না।” তিনি সেখানে কোন অলৌকিক কাজ করতে পারলেন না। শুধু কয়েকজন রোগীর ওপর হাত রেখে তাদের সুস্থ করলেন। তারা যে তাঁর ওপর বিশ্বাস করল না, এতে তিনি আশ্চর্য হয়ে গেলেন। এর পরে তিনি চারদিকে গ্রামে গ্রামে ঘুরে শিক্ষা দিলেন।

যীশু তাঁর শিষ্যদের প্রচারে পাঠালেন

(মথি 10:1, 5-15; লূক 9:1-6)

পরে তিনি সেই বারোজনকে ডেকে দুজন দুজন করে তাঁদের পাঠাতে শুরু করলেন এবং তাঁদের অশুচি আত্মার ওপরে ক্ষমতা দান করলেন। তিনি তাঁদের আদেশ দিলেন যেন তারা পথে চলবার জন্য একটা লাঠি ছাড়া আর কিছু সঙ্গে না নেয় এবং রুটি, থলে এমনকি কোমরবন্ধনীতে কোন টাকাপয়সা নিতেও বারণ করলেন। তবে বললেন, পায়ে জুতো পরবে কিন্তু কোন বাড়তি জামা নেবে না। 10 তিনি আরও বললেন, তোমরা যে কোন শহরে যে বাড়িতে ঢুকবে, সেই শহর না ছাড়া পর্যন্ত সেই বাড়িতে থেকো। 11 যদি কোন শহরের লোক তোমাদের গ্রহণ না করে বা তোমাদের কথা না শোনে তবে সেখান থেকে চলে যাবার সময় তাদের উদ্দেশ্যে সাক্ষ্যের জন্য নিজের নিজের পায়ের ধূলো সেখানে ঝেড়ে ফেলো।

12 পরে তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়লেন, প্রচার করতে আরম্ভ করলেন এবং লোকদের মন-ফেরাতে বললেন। 13 তাঁরা অনেক ভূত ছাড়ালেন ও অনেক লোককে তেল মাখিয়ে সুস্থ করলেন।

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International