Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Book of Common Prayer

Daily Old and New Testament readings based on the Book of Common Prayer.
Duration: 861 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
গীতসংহিতা 78

আসফের একটি মস্কীল।

78 হে আমার লোকরা, আমার শিক্ষামালা শোন।
    আমি যা বলছি তা শোন।
আমি তোমাদের এই গল্প বলবো।
    আমি তোমাদের এই প্রাচীন গল্পটি বলবো।
এই গল্প আমরাও শুনেছি, এই গল্পটা আমরা খুব ভালোভাবে জানি।
    আমাদের পিতা-পিতামহরা এই গল্প বলেছেন।
এই গল্প আমরাও ভুলে যাবো না।
    আমাদের লোকরা শেষ প্রজন্মকে পর্যন্ত এই গল্প বলতে থাকবে।
আমরা সবাই প্রভুর প্রশংসা করবো
    এবং প্রভু যে সব আশ্চর্য কার্য করেছেন তা বলবো।
প্রভু যাকোবের সঙ্গে একটা চুক্তি করেছিলেন।
    ইস্রায়েলকে ঈশ্বর একটা বিধি দিয়েছিলেন।
    আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছেন।
    তিনি আমাদের পূর্বপুরুষদের বলেছেন তারা যেন তাদের উত্তরপুরুষদের সেই বিধি সম্পর্কে শিক্ষাদান করে।
নতুন শিশুরা জন্ম নেবে। তারা আস্তে আস্তে বড় হবে।
    তারা তাদের ছেলেমেয়েদের এই গল্পগুলো বলবে।
    এইভাবে শেষ প্রজন্মের মানুষ পর্যন্ত এই বিধি জানতে পারবে।
তাই ঐসব লোকরাই ঈশ্বরকে বিশ্বাস করবে।
    ঈশ্বর কি করেছেন তা তারা ভুলবে না।
    ওরা খুব যত্ন করে তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করবে।
যদি লোকরা তাদের শিশুদের ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো সম্পর্কে শিক্ষা দেয়
    তাহলে ওই শিশুরা ওদের পূর্বপুরুষদের মত হবে না, ওদের পূর্বপুরুষরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে গিয়েছিলো।
তারা তাঁকে মানতে অস্বীকার করেছিলো, ঐসব লোক প্রচণ্ড একগুঁয়ে ছিলো।
    ওরা ঈশ্বরের আত্মার প্রতি নিষ্ঠাবান ছিল না।

ইফ্রয়িমের লোকেরা অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত ছিল
    কিন্তু তারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দৌড়ে পালিয়ে গেল।
10 তারা ঈশ্বরের সঙ্গে তাদের চুক্তি রক্ষা করে নি।
    তারা তাঁর শিক্ষামালা মান্য করতে অস্বীকার করেছিলো।
11 ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করেছিলেন, ইফ্রয়িমের লোকরা তা ভুলে গিয়েছিলো।
    তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য ওদের দেখিয়েছিলেন, তা তারা ভুলে গিয়েছিলো।
12 ঈশ্বর ওদের পিতৃপুরুষদের মিশরের সোয়নে,
    তাঁর পরাক্রম প্রদর্শন করে দেখিয়েছিলেন।
13 ঈশ্বর লোহিত সাগরকে দুভাগ করেছিলেন এবং লোকদের সাগর পার করিয়েছিলেন।
    সেই জল দুধারে একটি শক্তি দেওয়ালের মত দাঁড়িয়েছিলো।
14 প্রতিদিন প্রলম্বিত মেঘের দ্বারা ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়েছিলেন।
    প্রতিটি রাত্রে আগুনের আলো দিয়ে ঈশ্বর ওদের পথ দেখিয়ে ছিলেন।
15 ঈশ্বর মরুভূমির পাথরকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন।
    মাটির গভীর অতল থেকে ওই সব লোকদের তিনি জলও দিয়েছেন।
16 পাথর থেকে আগত ঝর্ণার জলকে
    ঈশ্বরই নদীর প্রবাহ দিয়েছেন!
17 কিন্তু লোকরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ কাজ অব্যাহত রেখেছিল।
    পরাৎ‌‌পরের বিরুদ্ধে তারা মরুভূমিতে পর্যন্ত বিদ্রোহ করেছে।
18 তারা যখন তাদের ইচ্ছা পূর্ণ করবার জন্য খাবার চাইল
    তখন তারা তাদের মনে মনে ঈশ্বরকে পরীক্ষা করল।
19 ওরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেছিলো,
    “ঈশ্বর কি আমাদের এই মরুভূমিতে খাবার এনে দিতে পারবেন?
20 তিনি পাথরে আঘাত করলেন এবং বন্যার মতো জলধারা বেরিয়ে এলো।
    কিন্তু তিনি কি আমাদের কিছু রুটি এবং মাংস দিতে পারেন?”
21 ওই লোকগুলো কি বলছে, প্রভু তা শুনলেন।
    যাকোবের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন।
ইস্রায়েলের ওপর ঈশ্বর প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন।
22 কেন? কারণ লোকরা তাঁকে বিশ্বাস করে নি।
ঈশ্বর যে ওদের রক্ষা করতে পারেন, তা ওরা বিশ্বাস করে নি।
23-24 এর পর ঈশ্বর মেঘকে উন্মুক্ত করে দিলেন
    এবং খাদ্যের জন্য ওদের ওপরে মান্না বর্ষিত হল।
এ যেন আকাশের দ্বার খুলে গেল
    এবং স্বর্গের ভাণ্ডার থেকে শস্যরাশি পড়তে লাগলো।
25 লোকরা দেবদূতদের[a] সেই খাবার খেয়েছিলো।
    ওদের সন্তুষ্ট করার জন্য ঈশ্বর প্রচুর খাবার পাঠিয়েছিলেন।
26 ঈশ্বর পূর্বদিক থেকে একটা ঝোড়ো বাতাস প্রবাহিত করলেন
    এবং ওদের কাছে একধরণের পাখি বৃষ্টির মত পড়তে লাগলো।
27 ঈশ্বর তেমানের দিক থেকে সেই বায়ুকে প্রবাহিত করালেন
    এবং যে নীল আকাশের দিকটায় প্রচুর পাখি ছিল সেই দিকটা অন্ধকারময় হয়ে গেল।
28 ওদের তাঁবুর ঠিক মাঝখানে,
    ওদের তাঁবুর চারপাশে পাখিগুলো পড়ে গিয়েছিল।
29 তাদের কাছে বিরাট খাদ্যের ভাণ্ডার ছিল।
    কিন্তু তাদের ক্ষুধা তাদের পাপকার্যে প্ররোচিত করেছিল।
30 তারা তাদের ভোজন নিয়ন্ত্রিত করে নি।
    তাই পাখীগুলোর দেহ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসার আগেই তারা পাখীগুলোকে খেয়ে ফেলেছিল।
31 অতএব, খাবার যখন তাদের মুখের মধ্যে তখনও ছিল তখন ঈশ্বর ওইসব লোকের ওপর প্রচণ্ড ক্ষুদ্ধ হলেন
    এবং ওদের অনেককে মেরে ফেললেন। ঈশ্বর বহু স্বাস্থ্যবান তরুণের মৃত্যুর কারণ হলেন।
32 ওইসব লোকরা আবার পাপ করলো!
    ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করতে পারেন তার ওপর নির্ভর করলো না।
33 তাই ওদের মূল্যহীন জীবনগুলোতে
    ঈশ্বর দুর্বিপাক এনে শেষ করে দিলেন।
34 যখনই ঈশ্বর ওদের কাউকে হত্যা করেছেন, অন্যরা তাঁর কাছে ফিরে এসেছেন।
    ওরা ছুটে ছুটে ঈশ্বরের কাছে ফিরে এসেছে।
35 তখন এইসব লোকরা স্মরণ করবে যে ঈশ্বরই ছিলেন তাদের শিলা।
    ওরা তখন মনে করবে যে পরাৎ‌‌পরই একমাত্র ওদের মুক্তিদাতা।
36 ওরা বলেছিলো, ওরা তাঁকে ভালোবাসে কিন্তু ওরা মিথ্যা কথা বলেছিলো।
    ওই সব লোক একেবারেই আন্তরিক ছিলো না।
37 প্রকৃতপক্ষে ওদের হৃদয় ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলো না।
    চুক্তির প্রতি ওরা একেবারেই বিশ্বস্ত ছিলো না।
38 কিন্তু ঈশ্বর করুণাময় ছিলেন।
    তিনি ওদের সব পাপ ক্ষমা করে দিলেন, তিনি কিন্তু ওদের ধ্বংস করেন নি।
বহুবার ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ সংবরণ করেছেন।
    তিনি নিজেকে কখনই অতিরিক্ত ক্রুদ্ধ হতে দেন নি।
39 ঈশ্বর মনে রেখেছিলেন যে ওরা ন্যায়পরায়ণ মানুষ।
    লোকরা বাতাসেরই মত, যারা বয়ে যায় এবং চলে যায়।
40 ওঃ, কতবার ঐ লোকগুলো মরুভূমিতে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে!
    ওরা তাঁকে কত দুঃখই দিয়েছে!
41 ওই লোকগুলো বার বার ঈশ্বরের ধৈর্য্য পরীক্ষা করেছে।
    ইস্রায়েলের পবিত্র একজনকে ওরা সত্যই ক্রুদ্ধ করেছে।
42 ওই লোকরা ঈশ্বরের পরাক্রমের কথা ভুলে গিয়েছিলো।
    ঈশ্বর যে বহুবার শত্রুদের হাত থেকে ওদের রক্ষা করেছিলেন, তা ওরা ভুলে গিয়েছিলো।
43 মিশরে ঈশ্বর যে সব চমৎ‌‌কার কাজগুলি করেছিলেন তার কথা ওরা ভুলে গিয়েছিলো,
    সোয়ন প্রান্তরের চমৎ‌‌কার কাজের কথা ওরা ভুলে গিয়েছিলো।
44 ঈশ্বর নদীগুলিকে রক্তে পরিণত করেছিলেন!
    মিশরবাসীরা সেই জল পান করতে পারলো না।
45 ঈশ্বর ঝাঁকে ঝাঁকে মাছি পাঠালেন যারা মিশরবাসীদের কামড় দিলো,
    তিনি অগনিত ব্যাঙ পাঠালেন যারা মিশরবাসীর জীবন ধ্বংস করে দিলো।
46 ওদের শস্যকে ঈশ্বর গঙ্গা ফড়িংয়ের কবলে
    এবং ওদের বৃক্ষ লতাকে পঙ্গপালের কবলে করে দিলেন।
47 ঈশ্বর শিলাবৃষ্টির দ্বারা ওদের দ্রাক্ষাক্ষেত নষ্ট করলেন।
    শিলাবৃষ্টির দ্বারা তিনি ওদের বৃক্ষরাজি ধ্বংস করলেন।
48 শিলাবৃষ্টি দিয়ে তিনি ওদের পশুদের মারলেন
    এবং বজ্র-বিদ্যুৎ দিয়ে গবাদি পশুদের মারলেন।
49 ঈশ্বর মিশরের লোকদের তাঁর ক্রোধ দেখালেন।
    ওদের বিরুদ্ধে তিনি তাঁর বিধ্বংসকারী দূতদের পাঠালেন।
50 ক্রোধ প্রদর্শনের জন্য ঈশ্বর একটা রাস্তা পেয়েছিলেন।
    ওদের একটা লোককেও তিনি বাঁচতে দিলেন না।
    এক মহামড়কের মধ্যে দিয়ে তিনি ওদের মরতে দিলেন।
51 মিশরের প্রত্যেকটি প্রথমজাত সন্তানকে ঈশ্বর হত্যা করলেন।
    হাম পরিবারের প্রত্যেকটি প্রথম জাতককে তিনি হত্যা করলেন।
52 তারপর একজন মেষপালকের মত তিনি ইস্রায়েলকে পথ দেখিয়েছিলেন।
    একজন মেষপালকের মত তিনি তাঁর লোকেদের, মেষপালকের মত জনহীন প্রান্তরে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
53 ঈশ্বর তাঁর লোকদের নিরাপদে চালনা করেছিলেন।
    তাঁর লোকদের ভয় করার মত কিছু ছিল না।
    তাদের শত্রুদের তিনি লোহিত সাগরে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন।
54 তাঁর পবিত্র ভূখণ্ডে ঈশ্বর তাঁর লোকদের পৌঁছে দিয়েছিলেন।
    তিনি তাঁর লোকদের নিজ ক্ষমতা বলে পাওয়া সেই পর্বতে যেটা তিনি রূপ দিয়েছিলেন সেটাতে নিয়ে গেলেন।
55 ঈশ্বর অন্যান্য জাতিদের সেই ভূখণ্ডের থেকে বাইরে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
    প্রত্যেকটি পরিবারকে বাধ্য করিয়েছেন।
    প্রত্যেকটি পরিবারকে ঈশ্বর সে ভূখণ্ডের অংশ দিয়েছেন।
এখান বাস করার জন্য ইস্রায়েলের প্রত্যেকটি পরিবারগোষ্ঠীকে
    ঈশ্বর সেই ভূখণ্ডে ঘর দিয়েছেন।
56 কিন্তু ওরা পরাৎ‌‌পর ঈশ্বরকে পরীক্ষা করেছিলো এবং তাঁকে দুঃখী করেছিলো।
    ওই সব লোক ঈশ্বরের আজ্ঞা মান্য করে নি।
57 ওরা ঠিক ওদের পূর্বপুরুষদের মতই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলো।
    ওরা একটি বঞ্চক ধনুকের মত[b] দিক পরিবর্তন করেছিলো।
58 ইস্রায়েলের লোকরা উচ্চস্থান তৈরী করেছিলো এবং ঈশ্বরকে ক্রুদ্ধ করেছিলো।
    তারা মূর্ত্তিসমূহ তৈরী করেছিলো এবং ঈশ্বরকে অত্যন্ত ঈর্ষান্বিত করে তুলেছিল।
59 এইসব শুনে ঈশ্বর ক্রোধান্বিত হয়েছিলেন।
    ঈশ্বর ইস্রায়েলকে তীব্রভাবে অস্বীকার করেছিলেন!
60 ঈশ্বর পবিত্র তাঁবুটি শীলোতে রেখেছিলেন।
    সাধারণ লোকদের মধ্যে ঈশ্বর সেই তাঁবুতে থাকতেন।
61 ঈশ্বর অন্য জাতিকে তাঁর লোকদের অধিকার করতে দিয়েছেন।
    শত্রুরা ঈশ্বরের সুন্দরতম রত্ন নিয়ে গিয়েছিলো।
62 ঈশ্বর তাঁর লোকদের বিরুদ্ধে ক্রোধ প্রকাশ করলেন।
    তিনি তাদের যুদ্ধে নিহত হতে দিলেন।
63 তরুণরা সব পুড়ে মারা গেল
    এবং যে মেয়েদের ওরা বিয়ে করবে ভেবেছিলো তারা কেউই বিয়ের গান গাইছিলো না।
64 যাজকরা মারা গেল
    কিন্তু তাদের বিধবারা ওদের জন্য কাঁদে নি।
65 শেষ কালে, যেমন করে একজন লোক ঘুম থেকে ওঠে,
    প্রচুর দ্রাক্ষারস পান করে যেমন একজন সৈনিক ওঠে,
    তেমন করে আমাদের প্রভু উঠলেন।
66 ঈশ্বর তাঁর শত্রুদের জোর করে হঠিয়ে দিয়ে ওদের পরাজিত করালেন।
    ঈশ্বর তাঁর শত্রুদের পরাজিত করে চিরদিনের জন্য ওদের অসম্মানিত করলেন।
67 তারপর ঈশ্বর যোষেফের তাঁবুটিকে[c] বাতিল করলেন
    এবং ইফ্রয়িমের শাসন ক্ষমতা কেড়ে নিলেন।
68 তারপর ঈশ্বর যিহূদা জাতিকে শাসক জাতি হিসেবে মনোনীত করলেন
    এবং তাঁর প্রিয় জেরুশালেমকে মন্দির নির্মাণের স্থান হিসেবে বেছে নিলেন।
69 সেই পাহাড়ের উঁচু জায়গায় ঈশ্বর তাঁর মন্দির নির্মাণ করলেন।
    পৃথিবীর মত তিনি তাঁর মন্দির চিরকালের জন্য স্থাপন করলেন।
70 ঈশ্বর তাঁর বিশেষ সেবকরূপে দায়ূদকে মনোনীত করলেন।
    দায়ূদ মেষ চরাচ্ছিলো, কিন্তু ঈশ্বর সেই কাজ থেকে তাকে নিয়ে এলেন।
71 ঈশ্বর দায়ূদকে, তাঁর লোকদের মেষপালক হওয়ার দায়িত্ব,
    যাকোবের লোকদের দায়িত্ব এবং ইস্রায়েলের লোকদের ও তাদের সম্পত্তির দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
72 দায়ূদ পবিত্র মনে তাদের নেতৃত্ব দিলেন।
    তিনি খুব প্রজ্ঞার সঙ্গে তাদের পরিচালিত করলেন।

আদি 26:1-6

অবীমেলকের কাছে ইস‌্হাকের মিথ্যাভাষণ

26 একবার দুর্ভিক্ষ হল। অব্রাহামের সময় যেমন হয়েছিল এই দুর্ভিক্ষটা তেমনই ছিল। তখন ইস‌্হাক পলেষ্টীয়দের অবীমেলকের সঙ্গে দেখা করার জন্য গরারে গেলেন। প্রভু ইস‌্হাককে দর্শন দিলেন এবং বললেন, “মিশরে যেও না। আমি তোমায় যে দেশে বাস করার পরামর্শ দিচ্ছি সেই দেশে বাস করো। সেই দেশে থাকো এবং আমি তোমার সঙ্গে থাকব। আমি তোমায় আশীর্বাদ করব। এই যত জমিজমা দেখছ সব আমি তোমায় ও তোমার পরিবারকে দেব। তোমার পিতা অব্রাহামকে আমি যা-যা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম সে সব কথা আমি রাখব। আকাশের তারার মত তোমার উত্তরপুরুষরা হবে অসংখ্য এবং তোমার পরিবার এই সমস্ত জমির মালিক হবে। তোমার উত্তরপুরুষদের মাধ্যমে পৃথিবীর সমস্ত জাতি আমার আশীর্বাদ পাবে। তোমার পিতা অব্রাহাম আমার কথা, আমার আদেশ, আমার বিধি, আমার নিয়ম সব কিছু পালন করেছিল এবং আমি তাকে যা যা করতে বলেছিলাম সব করেছিল বলে আমি এটা করব।”

সুতরাং ইস‌্হাক গরারে থেকে গেলেন এবং সেখানেই বাস করতে লাগলেন।

আদি 26:12-33

ইস‌্হাক ধনী হলেন

12 ইস‌্হাক তাঁর ক্ষেতে চাষ করলেন। এবং সে বছর খুব ভাল ফসল হল। প্রভু তাঁকে খুব আশীর্বাদ করলেন। 13 ইস‌্হাক ধনী হলেন। তিনি আরও অনেক ধন উপার্জন করলেন। এভাবে তিনি একজন অত্যন্ত ধনবান ব্যক্তি হলেন। 14 তিনি প্রচুর মেষপাল ও গো-পালের মালিক হলেন। তাঁর বিশাল ধন ও অনেক দাস-দাসী ছিল। সমস্ত পলেষ্টীয় মানুষরা তাঁকে ঈর্ষা করতে লাগল। 15 ফলে অনেক কাল আগে অব্রাহাম ও তাঁর লোকজন যেসব কূপ খনন করেছিলেন সেগুলো পলেষ্টীয়রা বুজিয়ে ফেলল। 16 এমনকি অবীমেলক পর্যন্ত ইস‌্হাককে বললেন, “আমাদের দেশ ছেড়ে চলে যাও। তুমি আমাদের অপেক্ষা অনেক বেশী শক্তিশালী হয়ে গেছ।”

17 সুতরাং ইস‌্হাক সেই স্থান ত্যাগ করে সঙ্কীর্ণ গরার নদীর ধারে এসে শিবির স্থাপন করলেন। ইস‌্হাক সেখানে অবস্থান করে সেখানেই বসবাস করতে লাগলেন। 18 এর বহুকাল আগে অব্রাহাম প্রচুর কূপ বা জলাশয় খনন করেছিলেন। অব্রাহাম মারা গেলে পলেষ্টীয়রা সেইসব কূপ মাটি দিয়ে বুজিয়ে ফেলেছিল। 19 তখন ইস‌্হাক ফিরে গিয়ে আবার সেই কূপগুলি খনন করলেন। ইস‌্হাকের ভৃত্যরাও ছোট নদীটির কাছে একটা কূপ খনন করল এবং তারা সেই কূপের মধ্যে একটি জলের ঝর্ণা দেখতে পেল। 20 গরার উপত্যকায় যারা মেষ চরাত তাদের সঙ্গে ইস‌্হাকের লোকজনদের বিবাদ বাধল। তারা বলল, “এই জল আমাদের।” তাই ইস‌্হাক ঐ কূপটির নাম দিলেন এষক। তিনি কূপটির ঐ নাম দিলেন, কারণ ঐখানেই তর্কাতর্কিটা হয়েছিল।

21 ইস‌্হাকের লোকরা আর একটি কূপ খনন করল। সেই কূপ নিয়ে ইস‌্হাকের লোকদের সঙ্গে স্থানীয় লোকদের আবার বিবাদ বাধল। তাই ইস‌্হাক ঐ কূপটির নাম দিলেন সিটনা।

22 সেখান থেকে সরে গিয়ে ইস‌্হাক আবার একটি কূপ খনন করলেন। এবার ঐ কূপ নিয়ে কেউ বিবাদ করতে এল না। তাই ইস‌্হাক ঐ কূপটির নাম দিলেন রহোবোত্। ইস‌্হাক বললেন, “এবার প্রভু আমাদের জন্য একটা জায়গা পেয়েছেন। এখানেই আমরা বহুগুণ হব ও সফল হব।”

23 সেখান থেকে ইস‌্হাক গেলেন বের্-শেবাতে। 24 সেই রাত্রে প্রভু ইস‌্হাকের সঙ্গে কথা বললেন। প্রভু বললেন, “আমি তোমার পিতা অব্রাহামের ঈশ্বর। ভয় পেও না। আমি তোমার সঙ্গে আছি এবং তোমায় আশীর্বাদ করছি। তোমার পরিবারকে আমি এক মহান পরিবারে পরিণত করব। আমার বিশ্বস্ত সেবক অব্রাহামের জন্য আমি একাজ করব।” 25 সুতরাং ইস‌্হাক এক বেদী নির্মাণ করে সেখানে প্রভুর উপাসনা করলেন। ইস‌্হাক সেই জায়গায় তাঁবু স্থাপন করলেন আর তাঁর পরিচারকরা সেখানে কূপ খনন করলো।

26 গরার থেকে অবীমেলক এলেন ইস‌্হাকের সঙ্গে দেখা করতে। অবীমেলকের সঙ্গে তাঁর উপদেষ্টা অহূষত্‌ এবং তাঁর সৈন্যাধ্যক্ষ ফীকোলও এলেন।

27 ইস‌্হাক জিজ্ঞাসা করলেন, “আমার কাছে এসেছেন কেন? আগে আপনি আমার সঙ্গে বন্ধুর মত ব্যবহার করেন নি। এমনকি আপনার রাজ্য থেকে আপনি আমায় তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।”

28 উত্তরে তাঁরা বললেন, “এখন আমরা জেনেছি যে প্রভু আপনার সঙ্গে আছেন। আমরা মনে করি যে আমাদের মধ্যে একটা চুক্তি হওয়া উচিৎ‌। আমরা চাই আপনি আমাদের কাছে শপথ নিন। 29 আমরা আপনাকে কখনও আঘাত করি নি। আপনিও দিব্য করুন যে আমাদের কখনও আঘাত করবেন না। আমরা আপনাকে বহিষ্কার করেছিলাম। এখন এটা পরিষ্কার যে প্রভু আপনাকে আশীর্বাদ করেছেন।”

30 সুতরাং ইস‌্হাক অভ্যাগতদের জন্য এক ভোজসভার আয়োজন করলেন। সবাই পরিতৃপ্তির সঙ্গে পানভোজন করলেন। 31 পরদিন খুব সকালে তাঁরা একে অপরের কাছে একটি প্রতিজ্ঞা করলেন। তারপর তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে বিদায় নিলেন।

32 সেইদিন ইস‌্হাকের ভৃত্যরা এসে তারা যে কূপ খনন করেছিল তার কথা জানাল। তারা বলল, “ঐ কূপের মধ্যে জল পাওয়া গেছে।” 33 তাই ইস‌্হাক ঐ কূপের নাম দিলেন শিবিয়া এবং এখনও ঐ নগরী বের্-শেবা নামে পরিচিত।

ইব্রীয় 13:17-25

17 তোমাদের নেতাদের আদেশ মেনে চলো, তাঁদের কর্তৃত্ত্বের অধীন হও, কারণ তোমাদের আত্মাকে নিরাপদে রাখার জন্য তাঁরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন। তাঁদের কথা মেনে চলো কারণ তাঁদের এব্যাপারে হিসেব নিকেশ করতে হবে, যাতে তাঁরা আনন্দে এই কাজ করতে পারেন, যন্ত্রণা ও দুঃখ নিয়ে নয়। তাঁদের কাজকে কঠিন করে তুললে তোমাদের লাভ হবে না।

18 আমাদের জন্য প্রার্থনা করো। আমরা নিশ্চয় করে বলতে পারি যে, আমাদের শুদ্ধ বিবেক আছে; আর জীবনে যা কিছু করি তা শ্রেষ্ঠ উদ্দেশ্য নিয়ে করি। 19 আমি তোমাদের বিশেষভাবে এই প্রার্থনা করতে বলছি যে, আমি যেন শীঘ্রই তোমাদের কাছে ফিরে যেতে পারি। এটাই আমি অন্য সব কিছু থেকে বেশী করে চাইছি।

20-21 শান্তির ঈশ্বর যিনি মৃতদের মধ্য থেকে আমাদের প্রভু যীশুকে ফিরিয়ে এনেছেন, রক্তের মাধ্যমে শাশ্বত চুক্তি অনুযায়ী যিনি মহান মেষপালক, প্রার্থনা করি সেই ঈশ্বর যেন তোমাদের প্রয়োজনীয় সব উত্তম বিষয়গুলি দেন যাতে তোমরা তাঁর ইচ্ছা পালন করতে পার। আমি নিবেদন করি যেন যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমেই তিনি তা সাধন করেন। যুগে যুগে যীশুর মহিমা অক্ষয় হোক্।

22 প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এই চিঠিতে আমি সংক্ষেপে যে উৎসাহজনক কথা তুলে ধরলাম তা ধৈর্য্য ধরে শুনবে। 23 তোমাদের জানাচ্ছি আমাদের ভাই তীমথিয় জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। তিনি যদি শীঘ্রই আসেন তবে আমি তাঁকে নিয়ে তোমাদের সঙ্গে দেখা করতে যাব।

24 তোমাদের নেতাদের ও ঈশ্বরের সকল লোককে আমাদের শুভেচ্ছা জানিও। যাঁরা ইতালী থেকে এখানে এসেছেন তাঁরা সকলে তোমাদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

25 ঈশ্বরের অনুগ্রহ তোমাদের সকলের সহবর্তী হোক্।

যোহন 7:53-8:11

ব্যভিচারিণীর বিচার

53 এরপর ইহুদী নেতারা সেখান থেকে যে যার বাড়ি চলে গেলেন।

এরপর যীশু সেখান থেকে জৈতুন পর্বতমালায় চলে গেলেন। খুব ভোরে তিনি আবার মন্দিরে ফিরে গেলে লোকেরা আবার তাঁর কাছে এসে জড়ো হল, তখন তিনি সেখানে বসে তাদের কাছে শিক্ষা দিতে শুরু করলেন।

সেই সময় ব্যবস্থার শিক্ষকরা ও ফরীশীরা, ব্যভিচার করতে গিয়ে ধরা পড়েছে এমন একজন স্ত্রীলোককে তাঁর কাছে নিয়ে এল। তারা সেই স্ত্রীলোককে তাদের মাঝখানে দাঁড় করিয়ে যীশুকে বলল, “গুরু, এই স্ত্রীলোকটি ব্যভিচার করার সময় হাতে নাতেই ধরা পড়েছে। বিধি-ব্যবস্থার মধ্যে মোশি আমাদের বলছেন, এই ধরণের স্ত্রীলোককে যেন আমরা পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলি। এখন আপনি এবিষয়ে কি বলবেন?”

তাঁকে পরীক্ষা করার ছলেই তারা একথা বলছিল, যাতে তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ তারা খুঁজে পায়। কিন্তু যীশু হেঁট হয়ে মাটিতে আঙ্গুল দিয়ে লিখতে লাগলেন। ইহুদী নেতারা যখন বার বার তাঁকে জিজ্ঞেস করতে লাগল, তখন তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেন, “তোমাদের মধ্যে যে নিস্পাপ সেই প্রথম একে পাথর মারুক।” এরপর তিনি আবার হেঁট হয়ে আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন।

তারা ঐ কথা শোনার পর বুড়ো লোক থেকে শুরু করে সকলে এক এক করে সেখান থেকে চলে গেল। কেবল যীশু সেখানে একা থাকলেন আর সেই স্ত্রীলোকটি মাঝখানে দাঁড়িয়ে ছিল। 10 তখন যীশু মাথা তুলে সেই স্ত্রীলোকটিকে বললেন, “হে নারী, তারা সব কোথায়? কেউ কি তোমায় দোষী সাব্যস্ত করল না?”

11 স্ত্রীলোকটি উত্তর দিল, “কেউ করে নি, মহাশয়।”

তখন যীশু বললেন, “আমিও তোমায় দোষী করছি না, যাও এখন থেকে আর পাপ কোরো না।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International