Book of Common Prayer
পরিচালকের প্রতি: “পদ্মসমূহ” গানটির পর্দায় গাওয়া। দায়ূদের একটি গীত।
69 হে ঈশ্বর আমার সংকটসমূহ থেকে আমায় রক্ষা করুন!
আমার মুখ পর্যন্ত জল পৌঁছে গেছে।
2 এখানে এমন কিছু নেই, যার ওপর আমি দাঁড়াতে পারি।
আমি কাদায় ডুবে যেতে বসেছি,
আমি গভীর জলে ডুবে রয়েছি, আমার চারদিকে ঢেউ উত্তাল হয়ে উঠেছে।
আমি প্রায় ডুবে মরতে বসেছি।
3 আমি এতই দুর্বল হয়ে পড়েছি যে সাহায্য চাইতেও অক্ষম হয়ে গেছি।
আমার গলা যন্ত্রণা করছে।
আমার চোখ যন্ত্রণায় টন্ টন্ করে ওঠার আগে পর্যন্ত
আমি আপনার সাহায্যের প্রতীক্ষা করেছি।
4 আমার মাথায় যত চুল আছে, আমার শত্রুর সংখ্যা তার থেকেও বেশী।
কোন কারণ ছাড়াই তারা আমায় ঘৃণা করে।
আমাকে বিনাশ করার জন্য ওরা খুব কঠিন চেষ্টা করে।
শত্রুরা আমার সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলছে।
ওরা বলছে যে আমি নাকি চুরি করেছি।
এরপর যে জিনিস আমি চুরি করি নি, ওরা আমায় তার দাম দিতে বাধ্য করেছে।
5 হে ঈশ্বর, আপনি আমার ত্রুটিগুলি জানেন।
আপনার কাছে আমি আমার পাপ লুকোতে পারি না।
6 হে আমার সদাপ্রভু, সর্বশক্তিমান প্রভু, আমার জন্য যেন আপনার অনুগামীরা লজ্জায় না পড়ে।
হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আপনার অনুগামীরা যেন আমার জন্য বিব্রত বোধ না করে।
7 আমার মুখ লজ্জায় ঢেকে গেছে।
এই লজ্জা আমি আপনার জন্য বহন করছি।
8 আমার ভাইরা অচেনা মানুষের সঙ্গে যেরকম ব্যবহার করে সেরকম আমার সঙ্গে করে।
আমার মায়ের সন্তানরা আমার সঙ্গে ভিন দেশীর মতই ব্যবহার করে।
9 আপনার মন্দির সম্পর্কে আমার তীব্র অনুভূতিই আমাকে শেষ করে দিচ্ছে।
যারা আপনাকে নিয়ে মজা করে তাদের কাছ থেকে আমি অপমান কুড়িয়েছি।
10 আমি কাঁদি এবং উপবাস করি,
এর জন্য ওরা আমায় নিয়ে হাসাহাসি করে।
11 দুঃখ প্রকাশের জন্য আমি প্রায়শ্চিত্ত করি, কাপড় পরি,
লোকে আমায় নিয়ে মজা করে।
12 প্রকাশ্য স্থানে ওরা আমায় নিয়ে আলোচনা করে।
ওই মাতালরা আমায় নিয়ে গান বাঁধে।
13 হে ঈশ্বর, আমার দিক থেকে আপনার কাছে এই প্রার্থনা:
আমি চাই আপনি আমায় গ্রহণ করুন!
হে ঈশ্বর আমি চাই প্রেমের সঙ্গে আপনি আমায় সাড়া দিন।
আমি জানি আপনি আমায় উদ্ধার করবেন।
এ ব্যাপারে আমি আপনার ওপর নির্ভর করতে পারি।
14 আমাকে কাদা থেকে টেনে তুলুন।
আমায় কাদায় ডুবে যেতে দেবেন না।
যারা আমায় ঘৃণা করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
এই গভীর জল থেকে আমায় উদ্ধার করুন।
15 ঢেউগুলো যেন আমায় ডুবিয়ে না দেয়।
গভীর গহ্বরকে আমায় ভক্ষণ করতে দেবেন না।
কবরকে আমায় গিলে ফেলতে দেবেন না।
16 প্রভু, আপনার প্রেম ভালো, আপনার ভালোবাসা দিয়ে আমায় উত্তর দিন।
আপনার সব দয়া নিয়ে আমার দিকে ফিরুন, আমায় সাহায্য করুন!
17 আপনার দাসের কাছ থেকে দূরে সরে যাবেন না।
আমি সংকটের মধ্যে পড়েছি! তাড়াতাড়ি আমায় সাহায্য করুন!
18 আসুন আমার আত্মাকে রক্ষা করুন।
শত্রুদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
19 আমার লজ্জা আপনি জানেন।
আপনি জানেন যে আমার শত্রুরা আমাকে ঘৃণা ও অপমান করেছে।
ওরা আমার প্রতি যে কাজ করেছে তাও আপনি দেখেছেন।
20 সেই লজ্জা আমায় বিদীর্ণ করে দিয়েছে।
লজ্জায় আমি মরে যেতে বসেছি!
আমি সহানুভূতি পাওয়ার আশা করেছিলাম
কিন্তু কখনই আমি তা পাই নি।
আমি অপেক্ষা করেছিলাম কোন লোক এসে আমায় সান্ত্বনা দিক
কিন্তু কোন লোক আসে নি।
21 ওরা আমায়, আহার নয়, বিষ দিয়েছে।
যখন আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম দ্রাক্ষারসের বদলে ওরা আমায় অম্লরস দিয়েছিল।
22 ওদের টেবিলগুলো খাবারে পরিপূর্ণ।
সমারোহপূর্ণ মঙ্গল আহার ওদের আছে।
ওদের ভোজ যেন ওদের বিনাশ করে।
23 আমি কামনা করি ওরা যেন অন্ধ হয়ে যায় এবং ওদের মেরুদণ্ড যেন দুর্বল হয়ে পড়ে।
24 ওদের আপনার সব ক্রোধ
অনুভব করতে দিন।
25 ওদের ঘর শূন্য করে দিন।
একটা কেউ যেন ওখানে বেঁচে না থাকে।
26 ওদের শাস্তি দিন, ওরা ছুটে পালাবে।
তখন ওরা আলোচনা করার জন্য কিছু যন্ত্রণা ও ক্ষত পাবে।
27 মন্দ কাজের জন্য ওদের শাস্তি দিন।
আপনার ধার্ম্মিকতা ওদের দেখাবেন না।
28 জীবনের গ্রন্থ থেকে ওদের নাম মুছে দিন।
জীবনের পুস্তকে ধার্ম্মিক লোকদের নামের সঙ্গে ওদের নাম লিখবেন না!
29 আমি দুঃখী এবং যন্ত্রণাবিদ্ধ।
ঈশ্বর আমায় টেনে তুলুন; আমায় রক্ষা করুন!
30 গানের মধ্যে দিয়ে আমি ঈশ্বরের প্রশংসা করবো।
ধন্যবাদ গীতের মধ্য দিয়ে আমি তাঁর প্রশংসা করবো।
31 এটাই ঈশ্বরকে সুখী করবে!
উৎসর্গ হিসেবে একটা গোটা পশু দেওয়ার চেয়ে অথবা একটা ষাঁড় হত্যা করার চেয়ে, গানের মধ্যে দিয়ে ধন্যবাদ দেওয়া অনেক ভাল হবে।
32 হে বিনয়ী লোকরা, ঈশ্বরের উপাসনার জন্য এসো।
এইসব জেনে তোমরা খুশী হবে।
33 দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কথা প্রভু শোনেন।
যারা বন্দী আছেন প্রভু তাদের এখনও পছন্দ করেন।
34 হে আকাশ ও পৃথিবী, ঈশ্বরের প্রশংসা কর!
হে সমুদ্র এবং সমুদ্রের মধ্যের সবকিছু, প্রভুর প্রশংসা কর!
35 প্রভু সিয়োনকে রক্ষা করবেন।
প্রভু যিহূদার শহরগুলি আবার নির্মাণ করবেন।
সেই ভূখণ্ড যাদের, সেখানে তারা আবার বাস করবে!
36 তাঁর দাসদের উত্তরপুরুষরা এই ভূখণ্ড পাবে।
সেই সব লোক যারা তাঁর নামকে ভালোবাসে তারা সেই ভূখণ্ডে বসবাস করবে।
তৃতীয় খণ্ড
(গীতসংহিতা 73–89)
আসফের একটি প্রশংসা গীত।
73 ঈশ্বর সত্যিই ইস্রায়েলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন।
যাদের হৃদয় শুচি তাদের সঙ্গে ঈশ্বর ভালো ব্যবহার করেন।
2 আমার প্রায় পদস্খলন হয়েছিলো
এবং আমি পাপ কাজ করতে শুরু করেছিলাম।
3 আমি দেখেছি ঐসব দুষ্ট লোকরা কৃতকার্য হয়েছে
এবং তা দেখে ঐসব উদ্ধত লোকদের প্রতি আমি ঈর্ষা করেছিলাম।
4 ওরা সবাই বলবান লোক ছিলো।
বেঁচে থাকবার জন্য ওদের কোন লড়াই করতে হত না।
5 ঐসব উদ্ধত লোককে আমাদের মত দুর্ভোগ পোহাতে হয় না।
অন্যান্য লোকেদের মত ওদের কোন সংকট নেই।
6 তাই ওরা উদ্ধত এবং মানুষকে ঘৃণা করে।
এই অহঙ্কারকে তারা গলার মালার মত এবং শৌখিন বস্ত্রের মত সহজেই ধারণ করে।
7 ঐসব লোক যদি ওদের পছন্দের কিছু দেখে, ওরা গিয়ে তা নিয়ে চলে আসে।
ওরা যা মনে করে, ওরা তাই করতে পারে।
8 লোকের সম্পর্কে ওরা নির্মম ও অহিতকর কথাবার্তা বলে।
অন্যদের কাছ থেকে ওরা কিভাবে সুবিধে নেয় সে সম্বন্ধে ওরা গর্বের সঙ্গে কথা বলে।
9 ঐসব অহঙ্কারী লোকরা নিজেদের দেবতা বলে ভাবে!
ওরা ভাবে ওরাই পৃথিবীর শাসনকর্তা।
10 এমনকি ঈশ্বরের লোকরা পর্যন্ত সাহায্যের জন্য ওদের কাছে ছুটে যায়।
ঐ উদ্ধত লোকরা যা বলে, ওরাও তাই করে।
11 ঐ মন্দ লোকরা বলে, “আমরা কি করছি ঈশ্বর তা জানেন না!
ঈশ্বর, যিনি পরাৎপর, তিনি জানেন না!”
12 ঐ অহঙ্কারী লোকরা প্রচণ্ড দুর্জন,
কিন্তু ওরা ধনী এবং ওরা ক্রমশঃ আরো ধনী হয়ে উঠছে।
13 তাই আমার আত্মাকে কেন শুদ্ধ হতে হবে?
আমি কেন আমার হাত নির্দোষ রাখব?
14 হে ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমি যন্ত্রণা ভোগ করি।
প্রত্যেকদিন সকালে আপনি আমায় শাস্তি দেন।
15 ঈশ্বর, এইসব বিষয়ে আমি অন্য লোকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি।
কিন্তু আমি জানি তাতে আপনার লোকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।
16 এইসব বিষয় বোঝার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি।
কিন্তু এটা আমার পক্ষে ভীষণ কষ্টকর।
17 ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনার মন্দিরে যাই নি,
আমি ঈশ্বরের মন্দিরে গেলাম এবং তারপর বুঝতে পারলাম।
18 ঈশ্বর, সত্যিই ঐসব লোককে আপনি ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছেন।
ওদের পতন এবং বিনাশ এখন সহজ হবে।
19 হঠাৎই সমস্যা আসতে পারে
এবং ঐ অহঙ্কারী লোকরা ধ্বংস হবে।
ওদের সাংঘাতিক কিছু ঘটতে পারে
এবং ওরা শেষ হয়ে যাবে।
20 প্রভু, যেমন করে আমরা জেগে উঠে স্বপ্নকে ভুলে যাই,
ঐসব লোকরা সেই স্বপ্নের মতই বিস্মৃত হবে।
আমাদের রাতের দুঃস্বপ্ন যেমন আপনি অদৃশ্য করে দেন,
তেমনি করে আপনি ওই লোকগুলোকে অদৃশ্য করে দেবেন।
21-22 আমি অত্যন্ত নির্বোধ ছিলাম।
আমি দুষ্ট ও ধনী লোকদের কথা ভাবতাম এবং ক্লেশগ্রস্ত হয়ে পড়তাম।
হে ঈশ্বর, আমি ক্লেশগ্রস্ত ছিলাম এবং আপনার ওপর রাগ করেছিলাম!
আমি নির্বোধ ও অজ্ঞ পশুর মত ব্যবহার করেছিলাম।
23 আমার যা কিছু দরকার তা আমার আছে!
আমি সর্বদাই আপনার সঙ্গে আছি।
হে ঈশ্বর আপনি আমার হাত ধরুন।
24 ঈশ্বর, আমায় সুপরামর্শ দিন ও পরিচালিত করুন।
তাহলে আপনি আমায় গৌরবের পথে নিয়ে যাবেন।
25 হে স্বর্গের ঈশ্বর, আমি সর্বদা আপনার সঙ্গে রয়েছি
এবং আমি যখন আপনার সঙ্গে রয়েছি তখন এই পৃথিবীতে আমি আর কী চাইতে পারি?
26 আমার এই দেহ মন একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে,
কিন্তু আমার শিলা, যাঁকে আমি ভালোবাসি তিনি থাকবেন।
চিরকালের জন্য আমার কাছে ঈশ্বর আছেন!
27 ঈশ্বর যারা আপনাকে ত্যাগ করেছে তারা হারিয়ে যাবে।
যারা আপনার প্রতি অবিশ্বস্ত তাদের আপনি ধ্বংস করে দেবেন।
28 আমি জানি, আমি ঈশ্বরের কাছে এসেছি এবং তাঁর কাছাকাছি থাকা আমার পক্ষে ভালো।
আমি আমার প্রভু, সদাপ্রভুকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে নিয়েছি।
ঈশ্বর আপনি যা কিছু করেছেন তাঁর সব কিছু বলতে আমি এসেছি।
ইস্হাকের স্ত্রী
24 অব্রাহাম অত্যন্ত বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। অব্রাহামের ওপর ও তাঁর কৃত সমস্ত কর্মে প্রভুর আশীর্বাদ ছিল। 2 অব্রাহামের সমস্ত সম্পত্তি দেখাশোনার জন্যে একজন পুরানো ভৃত্য ছিল। অব্রাহাম সেই ভৃত্যকে একদিন ডেকে বললেন, “আমার উরুর নীচে হাত দাও। 3 এখন আমার কাছে তুমি একটা প্রতিজ্ঞা করো। স্বর্গ ও মর্ত্যের ঈশ্বর প্রভুর সাক্ষাতে আমায় কথা দাও যে কনানের কোন কন্যাকে আমার পুত্র বিয়ে করবে, এরকমটা তুমি কখনও হতে দেবে না। আমরা কনানীয়দের মধ্যে বাস করি বটে, কিন্তু আমার পুত্রের সঙ্গে কোনও কনানীয় কন্যার বিয়ে হতে দেবে না। 4 আমার দেশে আমার স্বজাতির কাছে ফিরে যাও। সেখানে আমার পুত্র ইস্হাকের জন্যে পাত্রী খুঁজে বার করে তাকে এখানে নিয়ে এস।”
5 ভৃত্যটি তাঁকে বলল, “এমন তো হতে পারে যে কোনও পাত্রী আমার সঙ্গে এদেশে আসতে রাজী হল না। তাহলে কি আমি আপনার পুত্রকে আমার সঙ্গে নিয়ে আপনার জন্মভূমিতে যাব?”
6 অব্রাহাম তাকে বলল, “না! আমার পুত্রকে ঐ দেশে নিয়ে যেও না। 7 স্বর্গের প্রভু স্বয়ং ঈশ্বর আমার স্বদেশ থেকে সপরিবারে আমায় এখানে নিয়ে এসেছেন। ঐ দেশ আমার পিতার ও পরিবারের স্বদেশ ছিল। কিন্তু প্রভু কথা দিয়েছেন যে এই নতুন দেশ হবে আমার পরিবারের স্বদেশ। প্রভু তোমার আগে তাঁর দূত পাঠাবেন যাতে তুমি আমার পুত্রের জন্য একটি পাত্রী পছন্দ করে তাকে এখানে আনতে পার। 8 কিন্তু যদি সেই পাত্রী তোমার সঙ্গে এই দেশে আসতে না চায় তাহলে তুমি তোমার শপথ থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু তুমি কখনও আমার পুত্রকে সেই দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে না।”
9 সুতরাং ভৃত্যটি তার মনিবের উরুর নীচে হাত দিয়ে সেই রকমই শপথ করল।
সন্ধানের শুরু
10 পরিচারকটি অব্রাহামের দশটি উট নিয়ে সেই স্থান ত্যাগ করল। সঙ্গে নিয়ে গেল নানা ধরণের সুন্দর সুন্দর উপহার। সে গেল নাহোরের নগর মেসোপটেমিযাতে। 11 নগরের বাইরে সেই ভৃত্য জলের কূপের দিকে গেল। সন্ধ্যার সময় নগরের মেয়েরা সেই কূপে জল নিতে বেরিয়ে এল। ভৃত্যটি উটগুলোকে সেখানে হাঁটু গেড়ে বসাল।
12 ভৃত্যটি বলল, “প্রভু, আপনি আমার মনিব অব্রাহামের ঈশ্বর। আজ আমার মনিবের পুত্রের জন্য একটি যোগ্য পাত্রী নির্বাচনে আপনি আমায় সাহায্য করুন। অনুগ্রহ করে আমার প্রভু অব্রাহামকে এই দয়া করুন। 13 এখানে কূপের ধারে আমি দাঁড়িয়ে আছি। নগরের তরুণী রমনীরা এই কূপের জল নিতে আসছে। 14 ইস্হাকের জন্যে কোন্ পাত্রীটি উপযুক্ত তা জানার একটা বিশেষ ইঙ্গিত দেখতে পাব বলে এখানে আমি অপেক্ষা করছি। সেই বিশেষ ইঙ্গিতটি হল এই: আমি মেয়েটিকে বলব, ‘তোমার কলসী থেকে আমায় একটু জল দাও।’ সেই মেয়েটিই যে উপযুক্ত তা আমি বুঝতে পারব যদি সে বলে, ‘নিন, এই জলে তেষ্টা মেটান। আপনার উটগুলোকেও আমি জল দিচ্ছি।’ এরকমটা যদি ঘটে তাহলে আমি বুঝব আপনার কাছ হতে আসা সেটাই প্রমাণ যে ঐ মেয়েই ইস্হাকের জন্যে সঠিক পাত্রী এবং আমি জানব যে আপনি আমার মনিবকে দয়া করেছেন।”
একটি পত্নী পাওয়া গেল
15 ভৃত্য প্রার্থনা শেষ করার আগেই রিবিকা নামে একটি তরুনী কূপের কাছে এল। রিবিকা বথুযেলের কন্যা। বথুযেল ছিল অব্রাহামের ভাই নাহোর ও তার স্ত্রী মিল্কার পুত্র। জল নেওয়ার কলসী কাঁধে নিয়ে রিবিকা কূপের কাছে এল। 16 রিবিকা অসাধারণ সুন্দরী। সে কখনও কোন পুরুষের সঙ্গে ঘুমায় নি। সে ছিল কুমারী। কূপের ধারে গিয়ে সে কলসী ভরে জল নিল। 17 তখন সেই ভৃত্য তাড়াতাড়ি তার কাছে গিয়ে বলল, “দারুণ তৃষ্ণা, দয়া করে তোমার কলসী থেকে একটু জল দাও।”
18 রিবিকা সঙ্গে সঙ্গে কাঁধ থেকে কলসী নামিয়ে তার আঁজলায জল ঢেলে দিয়ে বলল, “এই নিন, তৃষ্ণা মেটান।” 19 তাকে জল খেতে দেওয়ার পরে রিবিকা বলল, “আপনার উটগুলোকেও আমি জল দিচ্ছি।” 20 তখন রিবিকা কলসী খালি করে সবটা জল ঢেলে দিল উটেদের পানপাত্রে। তারপর আবার কূপ থেকে আরও জল আনতে গেল। এভাবে সে সবগুলো উটকেই জল পান করতে দিল।
21 সেই ভৃত্য নীরবে রিবিকার সমস্ত কাজ লক্ষ্য করতে লাগল। সে নিশ্চিত হতে চাইছিল যে প্রভু তার প্রার্থনা শুনেছেন কিনা এবং ইস্হাকের জন্যে কন্যা সন্ধান সফল হয়েছে কিনা। 22 উটগুলোর জলপান শেষ হলে সে রিবিকাকে একটা 1/4 আউন্স ওজনের সোনার আংটি দিল। তাছাড়া সে এক-একটি 5 আউন্স ওজনের দুখানা সোনার বালাও রিবিকাকে দিল। 23 ভৃত্যটি রিবিকাকে জিজ্ঞেস করল, “তোমার পিতা কে? তোমার পিতার গৃহে কি আমার লোকদের রাতে থাকার কোনও ব্যবস্থা হতে পারে?”
24 রিবিকা উত্তর দিল, “বথুযেল আমার পিতা। তিনি মিল্কা ও নাহোরের পুত্র।” 25 তারপর সে বলল, “উটগুলোকে খেতে দেওয়ার মত খড় আর আপনাদের ঘুমোতে দেওয়ার মত জায়গা দুটোই আমাদের আছে।”
26 ভৃত্যটি সাষ্টাঙ্গে প্রণিপাত করে প্রভুর উপাসনা করল। 27 সে বলল, “ধন্য প্রভু, আমার মনিব অব্রাহামের ঈশ্বর। আমার মনিবের প্রতি প্রভু দয়া ও বিশ্বস্ততার আচরণ করেছেন। প্রভু আমাকে আমার মনিবের আত্মীয়দের বাড়ীতে নিয়ে এসেছেন আমার মনিবের পুত্রের জন্য যোগ্য পাত্রী খুঁজে বার করার জন্য।”
3 যীশুর কথা ভাবো, যখন পাপীরা তাঁর বিরোধিতা করে অনেক নিন্দা-মন্দ করেছিল, তখন তিনি এই সমস্ত বিরোধিতা সহ্য করেছিলেন। যীশু তা করেছিলেন যাতে তোমরাও তাঁর মতো সহিষ্ণু হও এবং চেষ্টা করা থেকে বিরত না হও।
ঈশ্বর হলেন পিতার মতো
4 পাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তোমরা এখনও মৃত্যুর মুখোমুখি হও নি। তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, তিনি তোমাদের সান্ত্বনার কথা বলেন। 5 তোমরা সম্ভবতঃ সেই উৎসাহব্যঞ্জক কথা ভুলে গেছ। তিনি বলেছেন:
“হে আমার পুত্র, প্রভু যখন তোমায় শাসন করেন, মনে করো না যে তার কোন মূল্য নেই।
তিনি যখন তোমায় সংশোধন করেন তখন নিরুৎসাহ হয়ো না।
6 কারণ প্রভু যাকে ভালবাসেন তাকেই শাসন করেন,
সমস্ত পুত্রই পিতা কর্ত্তৃক শাসিত হয়।”(A)
7 এখন যা কিছু কষ্ট পাচ্ছ তা পিতার কাছ থেকে শাসন বলে মেনে নাও। পিতা যেমন তাঁর সন্তানকে শাসন করেন, তেমনি করেই ঈশ্বর তোমাদের জীবনে এইসব আসতে দিয়েছেন। সব সন্তানই পিতার অনুশাসনের অধীন। 8 তোমরা যদি কখনই শাসিত না হও (পুত্র মাত্রেই শাসিত হয়) তবে তোমরা তো তাঁর প্রকৃত সন্তান নও, যথার্থ পুত্র নও। 9 এই পৃথিবীতে আমাদের সবার পিতাই আমাদের মার্জিত ও সংশোধিত করেন এবং আমরা তাঁদের সম্মান করি। যিনি আমাদের আত্মিক পিতা তাঁর অনুশাসনের কাছে আমাদের সত্যিকারের জীবনের জন্য আমরা কি আরো বেশী মাথা নোয়াবো না? 10 পৃথিবীতে আমাদের পিতারা অল্প সময়ের জন্য শাস্তি দেন। কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করার জন্য শাস্তি দেন যেন আমরা তাঁর মত পবিত্র হই। 11 কোনও ধরণের শাসনই শাসনের মুহূর্তে আমাদের আনন্দ দেয় না, বরং আমরা তাতে দুঃখ পাই; কিন্তু এটা যাদের জীবনকে প্রভাবিত করেছে, পরে তাদের জীবনে ধার্মিকতা ও শান্তি রাজত্ব করে।
যীশু ও তাঁর ভাইরা
7 এরপর যীশু গালীলের চারদিকে ভ্রমণ করছিলেন। তিনি যিহূদিয়ায় ভ্রমণ করতে চাইলেন না, কারণ ইহুদীরা তাঁকে খুন করবার সুযোগ খুঁজছিল। 2 এই সময় ইহুদীদের কুটিরবাস পর্ব[a] এগিয়ে আসছিল। 3 তখন তাঁর ভাইরা তাঁকে বলল, “তুমি এই জায়গা ছেড়ে যিহূদিয়াতে ঐ উৎসবে যাও যাতে তুমি যে সব অলৌকিক কাজ করছ তা তোমার শিষ্যরাও দেখতে পায়। 4 কারণ কেউ যদি প্রকাশ্যে নিজেকে তুলে ধরতে চায় তবে সে নিশ্চয়ই তার কাজ গোপন করবে না। তুমি যখন এত সব মহত্ কাজ করছ তখন নিজেকে জগতের কাছে প্রকাশ কর। যেন সবাই তা দেখতে পায়।” 5 তাঁর ভাইরাও তাঁকে বিশ্বাস করত না।
6 যীশু তাঁর ভাইদের বললেন, “আমার নিরূপিত সময় এখনও আসে নি; কিন্তু তোমাদের যাওয়ার জন্য যে কোন সময় সঠিক, এখনই তোমরা যেতে পার। 7 জগত সংসার তোমাদের ঘৃণা করতে পারে না, কিন্তু আমাকে ঘৃণা করে। কারণ পৃথিবীর লোকেরা, যারা মন্দ কাজ করে, সেই সব লোকদের বিরুদ্ধে আমি সাক্ষ্য দিই। 8 তোমরা পর্বে যাও, আমি এখন এই উৎসবে যাচ্ছি না, কারণ আমার নিরূপিত সময় এখনও আসে নি।” 9 এই কথা বলার পর তিনি গালীলেই রয়ে গেলেন।
10 তাঁর ভাইরা উৎসবে চলে গেল। পরে তিনিও সেখানে গেলেন, কিন্তু তিনি প্রকাশ্যে সেই পর্বে না গিয়ে গোপনে সেখানে গেলেন। 11 ইহুদী নেতারা উৎসবে এসে তাঁর খোঁজ করতে লাগল। তারা বলাবলি করতে লাগল, “সেই লোকটা গেল কোথায়?”
12 আর জনতার মধ্যে তাঁকে নিয়ে নানা রকম গুজব ছড়াতে লাগল। কেউ কেউ বলল, “আরে তিনি খুব ভালো লোক।” কিন্তু আবার অন্যরা বলল, “না, না, ও লোকদের ঠকাচ্ছে।” 13 কিন্তু ইহুদী নেতাদের ভয়ে তাঁর বিষয়ে প্রকাশ্যে কেউ কিছু বলতে চাইল না।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International