Print Page Options
Previous Prev Day Next DayNext

Book of Common Prayer

Daily Old and New Testament readings based on the Book of Common Prayer.
Duration: 861 days
Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)
Version
গীতসংহিতা 56-58

পরিচালকের প্রতি: “সুদূর ওক গাছের পারাবত।” গানটির পর্দায় গাওয়া দায়ূদের একটি মিক্তাম যখন পলেষ্টীয়রা তাঁকে গাতে বন্দী করেছিল।

56 ঈশ্বর, লোকে আমায় আক্রমণ করেছে তাই আমার প্রতি কৃপা করুন।
    ওরা সর্বক্ষণ ধরে আমার সঙ্গে যুদ্ধ করে চলেছে, আমায় তাড়া করে চলেছে।
আমার শত্রুরা ক্রমাগত আমায় আক্রমণ করে চলেছে।
    ওখানে অসংখ্য যোদ্ধা আছে।
যখন আমি ভীত হয়ে পড়ি তখন আপনাতে আমার বিশ্বাস স্থাপন করি।
আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, তাই আমি ভয় পাই না। মানুষ আমার কী করবে!
    আমার প্রতি ঈশ্বরের শপথের জন্য আমি তাঁর প্রশংসা করি।
শত্রুরা সব সময় আমার কথাকে বিকৃত করে।
    সর্বদাই ওরা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে।
আমাকে হত্যা করবার একটা পথ খুঁজে পাবার আশায়
    ওরা একসঙ্গে লুকিয়ে থেকে আমার গতিবিধি লক্ষ্য করে।
ঈশ্বর, ওদের অন্য দেশে বিদায় করে দিন।
হে ঈশ্বর, ওদের দুষ্ট কাজের জন্য ওদের শাস্তি দিন।
    আপনার ক্রোধ দেখান এবং ঐসব জাতিদের পরাজিত করুন।
আপনি জানেন যে আমি মানসিকভাবে প্রচণ্ড বিপর্যস্ত।
    আমি যে কত কেঁদেছি তাও আপনি জানেন।
আপনি নিশ্চয় আমার চোখের জলের হিসেব রেখেছেন।

তাই যখন আমি আপনার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি তখন আমার শত্রুদের পরাজিত করুন।
    আমি জানি আপনি তা করতে পারবেন।
কারণ আপনিই আমার ঈশ্বর!

10 তাঁর প্রতিশ্রুতির জন্য আমি ঈশ্বরের প্রশংসা করি।
    আমার প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতির জন্য আমি প্রভুর প্রশংসা করি।
11 আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, তাই আমি ভয় পাই না।
    মানুষ আমার কী করবে!

12 ঈশ্বর, আমি আপনার কাছে বিশেষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছি এবং যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তা আমি পালন করবো।
    আমি আপনাকে আমার ধন্যবাদ উৎসর্গ নিবেদন করবো।
13 কেন? কারণ আপনি আমাকে মৃত্যু থেকে উদ্ধার করেছেন।
    পরাজয় থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন।
তাই আমি প্রকাশ্য দিবালোকে ঈশ্বরের উপাসনা করবো
    যাতে কেবলমাত্র জীবিত লোকেরা দেখতে পায়।

পরিচালকের প্রতি: সুর “ধ্বংস করো না।” গানটির পর্দায় গাওয়া দায়ূদের একটি মিকতাম, যখন তিনি শৌলের কাছ থেকে পালিয়ে গুহায় লুকিয়ে ছিলেন।

57 ঈশ্বর, আমার প্রতি ক্ষমাশীল হোন।
    সদয় হোন কেননা আমার আত্মা আপনাতে বিশ্বাস রাখে।
যখন সমস্যা আসে,
    তখন আমি সুরক্ষার জন্য আপনার কাছে আসি।
আমি পরাৎ‌‌পর ঈশ্বরের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি।
    ঈশ্বর সম্পূর্ণভাবে আমার যত্ন নেন!
স্বর্গ থেকে তিনি আমায় সাহায্য দেন ও রক্ষা করেন।
    যারা আমায় অবদমিত করে তাদের তিনি পরাজিত করেন।
আমার প্রতি ঈশ্বর
    তাঁর প্রকৃত ভালোবাসা প্রদর্শন করেন।

আমার জীবন সঙ্কটাপন্ন।
    শত্রুরা আমার চারদিকে ঘিরে রয়েছে।
ওরা মানুষখেকো সিংহদের মত;
    ওদের দাঁতগুলো তীরের মত তীক্ষ্ণ;
    ওদের জিভগুলো তরবারির মত ধারালো।

হে ঈশ্বর, আপনি স্বর্গের চেয়েও ওপরে।
    আপনার মহিমা পৃথিবীকে আবৃত করে।
আমার শত্রুরা আমার জন্য একটা ফাঁদ পেতেছে।
    ওরা আমায় ফাঁদে ফেলতে চাইছে।
ওরা আমার পথে একটা গভীর গর্ত খুঁড়েছে যাতে আমি ওর মধ্যে পড়ে যাই,
    কিন্তু ওরা নিজেরাই তার মধ্যে পড়ে গেছে!

কিন্তু ঈশ্বর আমায় নিরাপদে রাখবেন।
    তিনি আমায় সাহস দেবেন এবং আমি তাঁর প্রশংসা করবো।
হে আমার আত্মা, জেগে ওঠো!
    হে সারেঙ্গী, হে বীণা, তোমাদের সঙ্গীত শুরু কর! এস আমরা উষাকালকে জাগিয়ে তুলি।
আমার প্রভু সকলের কাছে আমি আপনার প্রশংসা করি।
    সব জাতির কাছেই আমি আপনার প্রশংসা করি।
10 আপনার প্রকৃত ভালোবাসা, আকাশের উচ্চতম মেঘের থেকেও উচ্চ!
11 হে ঈশ্বর, স্বর্গকেও অতিক্রম করে যাও।
    আপনার মহিমা পৃথিবীকে আবৃত করুক।

পরিচালকের প্রতি: “বিনাশ করো না” গানটির পর্দায় গাওয়া দায়ূদের একটি মিকতাম।

58 ওহে বিচারকগণ, তোমরা তোমাদের বিচারে ন্যায় সঙ্গত নও।
    তোমরা সৎ‌ভাবে লোকের বিচার করছো না।
না, তোমরা শুধুই খারাপ কাজ করার কথা ভাবো।
    এই দেশে তোমরা হিংসাত্মক অপরাধসমূহ কর।
সেই সব মন্দ লোক যখনই জন্মায় তখন থেকেই ওরা ভুল কাজ করতে শুরু করে।
    জন্ম থেকেই ওরা মিথ্যাবাদী।
ওদের ক্রোধ সাপের বিষের মতই ভয়ঙ্কর এবং বধির গোখুরে সাপের মত।
    ওরা সত্য কথা শুনতে অস্বীকার করে।
গোখুরে সাপরা সাঁপুড়ের বীণের সুর বা গান শুনতে পায় না।
    ঐসব মন্দ লোকরাও সেইসব সাপের মত, কারণ তারা কু-চক্রান্ত করে।

প্রভু, ঐ লোকগুলো সিংহের মত।
    তাই হে প্রভু, ওদের দাঁতগুলো ভেঙে দিন।
নর্দমা দিয়ে যেমন জল গড়িয়ে যায়, ঐ লোকগুলোও যেন সেভাবেই অদৃশ্য হয়ে যায়।
    পথের ধারে আগাছার মত ওরা যেন বিনষ্ট হয়।
ওরা শামুকের মত হোক্, নড়বার সময় যেন গলে গলে যায়।
    ওরা যেন জন্ম-মৃত শিশুর মত কোনদিন দিনের আলো না দেখে।
যে কাঁটাঝোপকে জ্বালানী হিসেবে জ্বালিয়ে রান্নার পাত্র গরম করা হয়
    ওরা যেন সেই কাঁটাঝোপের জ্বালানীর মত বিনষ্ট হয়।

10 একজন সৎ‌ লোক তখন খুশী হবে যখন সে দেখবে
    তার প্রতি করা অন্যায় কাজের জন্য মন্দ লোকরা শাস্তি পাচ্ছে।
সে সেই রকম সৈনিকের মত হবে যে
    তার সমস্ত শত্রুদের পরাজিত করেছে।[a]
11 যখন এটা ঘটবে, তখন লোকে বলবে: “সৎ‌ লোকেরা সত্যিই পুরস্কৃত।
    সত্যই একজন ঈশ্বর আছেন যিনি পৃথিবীর বিচার করেন।”

গীতসংহিতা 64-65

সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি গীত।

64 ঈশ্বর, আমার কথা শুনুন।
    আমার শত্রু আমায় শাসাচ্ছে। আমাকে তার হাত থেকে রক্ষা করুন!
শত্রুর গোপন চক্রান্ত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
    ঐ মন্দ লোকেদের কাছ থেকে আমায় লুকিয়ে রাখুন।
ওরা আমার সম্পর্কে খারাপ ও মিথ্যা কথা বলেছে।
    ওদের জিভ তীক্ষ্ণ তরবারির মত, ওদের তিক্ত কথা যেন বিভক্ত তীরের মত।
ওদের গোপন ডেরা থেকে ওরা নির্ভয়ে
    এবং অতর্কিতে সরল ও সৎ‌ মানুষদের দিকে তীর ছোঁড়ে।
মন্দ কাজে ওরা একে অন্যকে উৎসাহিত করে।
    ওরা ওদের ফাঁদ পাতার কথাবার্তা বলে, ওরা একে অন্যকে বলে, “কেউ এই ফাঁদ দেখতে পাবে না!”
ওরা ওদের ফাঁদ লুকিয়ে রেখেছে।
    ওরা জীবন্ত বলিসমূহের সন্ধানে আছে।
মানুষ খুব চতুর হতে পারে, তাই ওরা কি ফন্দি করছে তা জানা মুস্কিল।
কিন্তু ঈশ্বরও ওদের দিকে “তীর” নিক্ষেপ করতে পারেন!
    এটা জানতে পারার আগেই দুষ্ট লোকরা জখম হয়ে যাবে।
মন্দ লোকরা অন্য লোকের খারাপ করারই চিন্তা করে।
    কিন্তু ঈশ্বর ওদের দুষ্ট পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে পারেন এবং ঐ কু-পরিকল্পনা ওদের ওপরেই ঘটাতে পারেন।
তখন যারাই ওদের দেখবে
    তারা বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে মাথা নাড়াবে।
লোকরা দেখবে ঈশ্বর কি করেছেন।
    তাঁর সম্পর্কে তারা অন্য লোকদের বলবে।
তখন প্রত্যেকে ঈশ্বর সম্পর্কে আরও বেশী জানতে পারবে।
    ওরা তাঁকে ভয় ও শ্রদ্ধা করতে শিখবে।
10 একজন ভালো লোক আনন্দের সঙ্গে প্রভুর সেবা করে
    এবং তাঁর ওপর নির্ভর করে।
একজন ভাল ও সৎ‌ লোক ঈশ্বরকে তার অন্তর থেকে প্রশংসা করে।

সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি প্রশংসা গীত।

65 সিয়োনে বিরাজমান হে ঈশ্বর, আমি আপনার প্রশংসা করি।
    আপনাকে যা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা আমি দিয়েছি।
আপনি যে সব কাজ করেছেন সে সম্পর্কে আমরা বলে থাকি।
    আপনিও আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন।
    যারা আপনার কাছে আসে, তাদের প্রত্যেকের প্রার্থনা আপনি শোনেন।
যখন আমাদের পাপের ভার অতিরিক্ত বেড়ে যায়,
    তখন আপনি সেই পাপ ভার লাঘব করেন।
ঈশ্বর, আপনিই আপনার লোকদের মনোনীত করেন।
    আপনার মন্দিরে এসে আপনার উপাসনা করার জন্য আপনিই আমাদের মনোনীত করেছেন।
আপনার মন্দিরে, আপনার পবিত্র প্রাসাদে,
    যে সব মনোরম জিনিস আছে, তাই দিয়ে আমরা সন্তুষ্ট হব!
ঈশ্বর আপনি আমাদের রক্ষা করেন।
    ভালো লোকরা আপনার কাছে প্রার্থনা করে এবং আপনি তাদের প্রার্থনার উত্তর দেন।
তাদের জন্য আপনি আশ্চর্য কার্য করেন।
    সারা পৃথিবীতে লোকরা আপনাতে আস্থা রাখে।
ঈশ্বর তাঁর শক্তি দিয়ে পর্বত সৃষ্টি করেছেন।
    আমাদের চারপাশে আমরা তাঁর শক্তিকে দেখতে পাই।
উত্তাল সমুদ্রকে ঈশ্বর শান্ত করেছেন।
    ঈশ্বরই পৃথিবীতে “জনসমুদ্রসমূহ” সৃষ্টি করেছেন।
আপনি যেসব বিস্ময়কর জিনিস করেন, তাতে সারা পৃথিবীর লোক বিস্ময়-বিহ্বল হয়েছে।
    সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত আমাদের প্রচণ্ড সুখী করে!
আপনিই জমির যত্ন নেন।
    আপনিই জমিতে সেচ দেন এবং তাতে ফসল ফলান।
হে ঈশ্বর, আপনিই সেই জন, যিনি নদী ও খালগুলি জলে ভরে দিয়েছেন
    এবং ফসল ফলাতে সাহায্য করেছেন।
10 হাল দেওয়া জমিতে আপনিই বৃষ্টি ঝরান।
    আপনিই জমিকে জল দিয়ে সিক্ত করেন।
আপনিই বৃষ্টির জল দিয়ে জমিকে নরম করেন
    এবং আপনিই কচি চারা জন্মাতে দেন।
11 আপনি ভালো ফসল দিয়ে নতুন বছর শুরু করেন।
    আপনি বিভিন্ন ফসল দিয়ে গাড়ীগুলি ভরে দেন।
12 পাহাড় ও মরুভূমি ঘাসে আচ্ছাদিত হয়ে আছে।
13 চারণ ভূমিগুলো মেষে ভরে রয়েছে।
    উপত্যকাগুলো ফসলে পরিপূর্ণ হয়েছে।
প্রত্যেকটি মানুষ আনন্দে ধ্বনি দিচ্ছে এবং গান গাইছে।

আদি 19:1-29

লোটের অতিথিগণ

19 1-2 সেদিন সন্ধ্যায় সদোম নগরে দুজন দূত এলেন। তখন লোট নগরের প্রবেশ পথে বসেছিলেন। তিনি দূতদের আসতে দেখলেন। লোট ভাবলেন যে তারা সাধারণ পথিক, নগরের মধ্য দিয়ে কোথাও যাচ্ছে। লোট উঠে গিয়ে তাঁদের অভিবাদন করে বললেন, “মহাশয়গণ, অনুগ্রহ করে একবার আমার বাড়ীতে আসুন এবং আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন। সেখানে আপনারা হাত-পা ধুয়ে রাত্রিবাস করতে পারেন। তাহলে কাল সকালে আবার আপনাদের গন্তব্যস্থল অভিমুখে যাত্রা করতে পারবেন।”

দূত দুজন বললেন, “না, আমরা চকেই রাত্রিবাস করব।”

কিন্তু লোট নিজের বাড়ীতে তাঁদের নিয়ে যাওয়ার জন্যে পীড়াপীড়ি করতে লাগলেন। তাই দূতরা শেষ পর্যন্ত লোটের বাড়ীতে থেকে যেতে রাজী হলেন। তাঁরা লোটের বাড়ীতে গেলেন। লোট তাঁদের কিছু পানীয় দিলেন। লোট তাঁদের রুটি বানিয়ে দিলেন এবং তাঁরা সেই রুটি খেলেন।

সেদিন সন্ধ্যায় ঘুমোতে যাওয়ার ঠিক আগে, নগরের নানা প্রান্ত থেকে নানা বয়সের বহু লোক লোটের বাড়িতে এল। সদোমের সেইসব লোকেরা লোটের বাড়ী ঘিরে ফেলল এবং লোটকে চিৎকার করে ডাকতে লাগল। তারা বলল, “আজ সন্ধ্যায় যারা এসেছে, কোথায় তারা? তাদের বাইরে নিয়ে এস—আমরা তাদের সাথে যৌন সহবাস করতে চাই।”

লোট বাইরে বেরিয়ে এসে দরজা বন্ধ করে দিলেন। সেই জনতার উদ্দেশ্যে লোট বললেন, “না! বন্ধুরা, আমি মিনতি করছি, এমন খারাপ কাজ কোরো না। দেখ, আমার দুটি মেয়ে আছে—কোনও পুরুষ তাদের স্পর্শ করে নি। তোমাদের জন্য আমি নিজের কন্যাদের দেব। তোমরা তাদের নিয়ে যা খুশী করতে পারো। কিন্তু দয়া করে এই অতিথি দুজনের প্রতি কিছু কোরো না। এই দুজন আমার ঘরে এসেছে এবং আমার অবশ্যই এদের রক্ষা করা উচিৎ‌।”

যেসব লোকেরা লোটের বাড়ী ঘিরে রেখেছিল তারা উত্তর দিল, “আমাদের পথ থেকে সরে যাও।” তারপর তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “এই লোকটা একদিন অতিথি হিসেবে আমাদের নগরে বাস করতে এসেছিল। এখন জ্ঞান দিচ্ছে, আমরা কি করব না করব!” তখন সেই লোকেরা লোটকে বলল, “এখন তোমার প্রতি ওদের চেয়ে আরও বেশী খারাপ ব্যবহার করব।” অতএব সেই জনতা লোটের দিকে এগিয়ে যেতে থাকল। ক্রমে দরজা ভেঙ্গে ফেলার উপক্রম।

10 কিন্তু যে দুজন পুরুষ লোটের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁরা হঠাৎ‌‌ দরজা খুলে বেরিয়ে এসে লোটকে ভেতরে টেনে নিয়ে গেলেন এবং ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিলেন। 11 তারপর তাঁরা বাইরের মারমুখো জনতার জন্য কিছু একটা করলেন। ফলে যুবক, বৃদ্ধ, সব বদমাশ লোকেরা অন্ধ হয়ে গেল। এর ফলে যারা বাড়ির ভেতর জোর করে ঢোকার চেষ্টা করছিল তারা ভেতরে ঢোকার দরজাই খুঁজে পেল না।

সদোম হতে পলায়ন

12 অতিথি দুজন লোটকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার পরিবারের আর কেউ কি এই শহরে বাস করে? তোমার জামাই, ছেলে, মেয়ে কিংবা পরিবারের আর কেউ কি এখানে আছে? যদি থাকে তাহলে তাদের এখনই এই জায়গা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলো। 13 আমরা এই নগর ধ্বংস করে দেব। এই নগর যে কত খারাপ তা প্রভু শুনেছেন। তাই এই নগর ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য তিনি আমাদের পাঠিয়েছেন।”

14 তখন লোট বেরিয়ে গিয়ে তাঁর অন্যান্য মেয়েদের যারা বিয়ে করেছে সেই মেয়েদের স্বামীদের অর্থাৎ‌ জামাইদের সঙ্গে কথা বললেন। লোট বলল, “তাড়াতাড়ি করো! এক্ষুনি এই জায়গা ছেড়ে চলে যাও! প্রভু এখনই এই জায়গা ধ্বংস করবেন।” কিন্তু তারা ভাবল, লোট বোধহয় তামাশা করছেন।

15 পরদিন ভোরে সেই দূতরা লোটকে তাড়া দিলেন। তাঁরা বললেন, “এই নগরবাসীদের শাস্তি দেওয়া হবে। সুতরাং তুমি, তোমার স্ত্রী এবং যে দুজন মেয়ে তোমার কাছে থাকে তাদের নিয়ে শীঘ্রই এই জায়গা ছেড়ে চলে যাও। তাহলে এই নগরের সঙ্গে তোমরা আর ধ্বংস হবে না।”

16 কিন্তু লোটের সব গুলিয়ে গেল এবং তিনি নগর ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে তাড়া করলেন না। সুতরাং ঐ দুজন লোট এবং তাঁর স্ত্রীর এবং দুই মেয়ের হাত চেপে ধরলেন। ঐ দুজন লোট এবং তাঁর পরিবারকে নিরাপদে নগরের বাইরে নিয়ে গেলেন। লোট এবং তাঁর পরিবারের প্রতি প্রভু দয়ালু ছিলেন। 17 তাই ঐ দুজন লোট এবং তাঁর পরিবারকে নগরের বাইরে নিয়ে এলেন। তাঁরা নগরের বাইরে চলে এলে সেই দুজন দুতের একজন বললেন, “এবার প্রাণ বাঁচাবার জন্য তোমরা দৌড় দাও! আর পেছনের দিকে তাকাবে না। উপত্যকার কোনও জায়গাতে দাঁড়াবে না। যতক্ষণ না ঐ পর্বতে পৌঁছবে ততক্ষণ শুধুই দৌড়বে। থামলে, নগরের সঙ্গে তোমরাও ধ্বংস হয়ে যাবে!”

18 কিন্তু লৌট এই দুজনকে বললেন, “মহাশয়গণ, দয়া করে আমায় অত দূরে দৌড়ে যেতে বলবেন না! 19 আমি আপনাদের সেবকমাত্র, তবু আমার প্রতি আপনাদের অসীম দয়া। দয়া করে আমার জীবন রক্ষা করেছেন। কিন্তু ঐ পর্বত পর্যন্ত সমস্ত পথ দৌড়োবার ক্ষমতা আমার নেই। যদি আমি খুব ধীরে যাই তবে বিপদ ঘটবে এবং আমি নিহত হব! 20 দেখুন, এখানে কাছেই একটা খুব ছোট শহর আছে। আমি সেই শহর পর্যন্ত দৌড়ে বেঁচে যেতে পারি।”

21 দূত লোটকে বললেন, “ভালো কথা আমি তোমার অনুরোধ স্বীকার করেছি। আমি তোমাকে সেটা করতে দেব। আমি ঐ শহর ধ্বংস করব না। 22 কিন্তু সেখানে শীঘ্রই দৌড়ে যাও। যতক্ষণ না নিরাপদে ঐ শহরে তুমি পৌঁছোচ্ছ ততক্ষণ সদোম ধ্বংস করতে পারব না।” (ঐ শহরের নাম সোয়র কারণ শহরটি খুব ছোট।)

সদোম ও ঘমোরা ধ্বংস হল

23 সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে লোট সোয়রে পৌঁছলেন। 24 একই সময়ে প্রভু সদোম ও ঘমোরা ধ্বংস করা শুরু করলেন। প্রভু আকাশ থেকে আগুন আর জ্বলন্ত গন্ধক বর্ষণ শুরু করলেন। 25 অর্থাৎ‌ প্রভু ঐ নগরগুলি ধ্বংস করলেন। সমস্ত গাছপালা, সমস্ত লোকজন, সমগ্র উপত্যকাটাই প্রভু ধ্বংস করলেন।

26 লোট যখন স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে দৌড়ে পালাচ্ছিলেন তখন লোটের স্ত্রী নিষেধ ভুলে একবার পেছনে নগরের দিকে তাকালেন এবং তখনই লবণের মূর্ত্তি হয়ে গেলেন।

27 খুব সকালে অব্রাহাম আগে যেখানটাতে প্রভুর সামনে দাঁড়িয়েছিলেন সেই স্থানটিতে তিনি আবার গিয়ে দাঁড়ালেন। 28 অব্রাহাম সদোম এবং ঘমোরার দিকে তাকিয়ে দেখলেন। সমগ্র উপত্যকার ওপর দৃষ্টিপাত করে অব্রাহাম দেখলেন যে সমস্ত উপত্যকা থেকে ধোঁয়া উঠছে। দেখে মনে হল বিশাল অগ্নিকাণ্ডের ফলস্বরূপ ঐ ধোঁয়া।

29 ঈশ্বর উপত্যকার সমস্ত নগর ধ্বংস করলেন। কিন্তু ঈশ্বর ঐ নগরগুলি ধ্বংস করার সময় অব্রাহামের কথা মনে রেখেছিলেন এবং তিনি অব্রাহামের ভ্রাতুষ্পুত্রকে ধ্বংস করেন নি। লোট ঐ উপত্যকার নগরগুলির মধ্যে বাস করছিলেন। কিন্তু নগরগুলি ধ্বংস করার আগে ঈশ্বর লোটকে অন্যত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।

ইব্রীয় 11:1-12

বিশ্বাস

11 বিশ্বাসের অর্থ হল আমরা যা প্রত্যাশা করি তা যে আমরা পাবই সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার ও বাস্তবে যা কিছু আমরা চোখে দেখতে পাই না তার অস্তিত্ব সম্বন্ধে প্রমাণ পাওয়া। অতীতে ঈশ্বরের লোকেরা তাঁদের বিশ্বাসের দরুণই সুখ্যাতি লাভ করেছিলেন।

বিশ্বাসে আমরা বুঝতে পারি যে বিশ্ব ভুমণ্ডল ঈশ্বরের মুখের কথাতেই সৃষ্ট হয়েছিল, তাই চোখে যা দেখা যায় সেই দৃশ্য কোন কিছু প্রত্যক্ষ বস্তু থেকে উৎপন্ন হয় নি।

কয়িন ও হেবল উভয়েই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদান উৎসর্গ করেছিলেন; কিন্তু হেবল উত্তম বলে ঈশ্বরের কাছে গ্রাহ্য হয়েছিলেন কারণ হেবলের বলিদান বিশ্বাসযুক্ত ছিল। ঈশ্বর বলেছিলেন যে হেবল যা উপহার দিয়েছিল তাতে তিনি প্রীত হয়েছিলেন। ঈশ্বর হেবলকে একজন ধার্মিক লোক বললেন, কারণ তাঁর বিশ্বাস ছিল। যদিও হেবল মৃত কিন্তু তাঁর বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তিনি এখনও কথা বলছেন।

হনোককে পৃথিবী থেকে তুলে নেওয়া হয়েছিল, তিনি মরেন নি। এই পৃথিবী থেকে হনোককে তুলে নেবার পূর্বে হনোক এই সাক্ষী রেখে যান যে তিনি ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করেছিলেন। পরে লোকরা হনোকের খোঁজ আর পেলেন না, কারণ ঈশ্বর তাঁকে কাছে রাখার জন্য নিজেই হনোককে তুলে নিয়েছিলেন। হনোকের জীবনে বিশ্বাস ছিল বলেই এমনটি সম্ভব হয়েছিল। বিনা বিশ্বাসে ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করা যায় না। যে কেউ ঈশ্বরের কাছে আসে তাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে ঈশ্বর আছেন; আর যাঁরা তাঁর অন্বেষণ করে, তাদের তিনি পুরস্কার দিয়ে থাকেন।

বিশ্বাসেই নোহ, যা যা কখনও দেখা যায় নি এমন সব বিষয়ে তাকে সতর্ক করে দেওয়া হলে তিনি তা গুরুত্ব সহকারে নিলেন এবং নোহ তাঁর পরিবারের রক্ষার জন্য এক জাহাজ নির্মাণ করলেন। এর দ্বারা তিনি (অবিশ্বাসী) জগতকে দোষী প্রতিপন্ন করলেন, আর বিশ্বাসের মাধ্যমে যে ধার্মিকতা লাভ হয় তার অধিকারী হলেন।

ঈশ্বরে বিশ্বাস ছিল বলেই ঈশ্বর যখন অব্রাহামকে আহ্বান করলেন, তিনি তাঁর বাধ্য হলেন, আর তাঁকে যে দেশ দেবেন বলে ঈশ্বর বলেছিলেন তা অধিকার করতে চললেন। তিনি কোথায় চলেছেন তা না জানলেও তিনি রওনা হলেন। তাঁর বিশ্বাসের বলেই তিনি ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত সেই দেশে আগন্তুকের মতো জীবনযাপন করলেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল বলেই তিনি তা করতে পেরেছিলেন। সেই প্রতিশ্রুত দেশে ইস‌্হাক ও যাকোবের সাথে তিনি তাঁবুতে বাস করেছিলেন, যাঁরা তাঁর মতোই (একই প্রতিশ্রুতির) উত্তরাধিকারী ছিলেন। 10 কারণ অব্রাহাম সেই দৃঢ় ভিত্তিযুক্ত নগরের প্রতীক্ষায় ছিলেন স্বয়ং ঈশ্বর যার স্থপতি ও নির্মাতা।

11 অব্রাহাম বয়োবৃদ্ধ হয়েছিলেন তাই তাঁর সন্তান হওয়ার সম্ভব ছিল না। তাঁর স্ত্রী সারা বন্ধ্যা ছিলেন। কিন্তু ঈশ্বরের ওপর অব্রাহামের বিশ্বাস ছিল, তাই ঈশ্বর শক্তি দিলেন যেন তাঁদের সন্তানলাভ হয়। ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা যে তিনি পূর্ণ করতে পারেন এ বিশ্বাস অব্রাহামের ছিল। তিনি প্রায় মৃতকল্প ছিলেন; কিন্তু এই একটি লোকের মধ্য দিয়ে জন্ম নিয়েছিল আকাশের তারার মতো অজস্র বংশধর। 12 সেই এক ব্যক্তি থেকে সমুদ্র সৈকতে বালুকণার মতো অগনিত বংশধররা এলো।

যোহন 6:27-40

27 খাদ্যের মতো নশ্বর বস্তুর জন্য কাজ করো না। কিন্তু যে খাদ্য প্রকৃতই স্থায়ী ও যা অনন্ত জীবন দান করে, তার জন্য কাজ কর যা মানবপুত্র তোমাদের দেবেন। কারণ পিতা ঈশ্বর তোমাদের দেখিয়েছেন যে তিনি মানবপুত্রের সঙ্গেই আছেন।”

28 তারা তাঁকে বলল, “ঈশ্বরের কাজ করার জন্য আমাদের কি করতে হবে?”

29 এর উত্তরে যীশু তাদের বললেন, “ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন তোমরা যেন তাঁকে বিশ্বাস কর। এই হল ঈশ্বরের কাজ।”

30 তারা তাঁকে বলল, “আপনি কি এমন অলৌকিক কাজ করছেন, যা দেখে আমরা জানতে পারব যে আপনিই সেই ব্যক্তি যাঁকে ঈশ্বর পাঠিয়েছেন ও আপনার ওপর বিশ্বাস করব? 31 আমাদের পিতৃপুরুষরা মরুপ্রান্তরে মান্না খেয়েছিল। যেমন শাস্ত্রে লেখা আছে: ‘তিনি তাদের খাবার জন্য স্বর্গ থেকে রুটি দিলেন।’”(A)

32 তখন যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, মোশি স্বর্গ থেকে সেই রুটি তোমাদের দেন নি, কিন্তু আমার পিতাই স্বর্গ থেকে সত্যিকারের রুটি তোমাদের দেন। 33 স্বর্গ থেকে নেমে এসে যিনি জগত সংসার জীবন দান করেন তিনিই ঈশ্বরের দেওয়া রুটি।”

34 তারা তাঁকে বলল, “মহাশয়, সেই রুটি সব সময় আমাদের দিন।”

35 যীশু তাদের বললেন, “আমিই সেই রুটি যা জীবন দান করে। যে কেউ আমার কাছে আসে সে কখনও ক্ষুধার্ত হবে না, আর যে কেউ আমার ওপর বিশ্বাস রাখে কখনও তার পিপাসা পাবে না। 36 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা আমায় দেখেছ অথচ আমায় বিশ্বাস কর না। 37 পিতা আমাকে যাদের দেন, তারা প্রত্যেকেই আমার কাছে আসবে। আর যারা আমার কাছে আসে, আমি তাদের কখনই ফিরিয়ে দেব না। 38 কারণ আমি আমার খুশী মত কাজ করতে স্বর্গ থেকে নেমে আসি নি, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ করতে এসেছি। 39 যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা এই যে যাদের তিনি আমায় দিয়েছেন তাদের একজনকেও যেন আমি না হারাই; বরং শেষ দিনে যেন তাদের সকলকে আমি উত্থিত করি। 40 আমার পিতা এই চান, যে কেউ তাঁর পুত্রকে দেখে ও তাঁকে বিশ্বাস করে, সে যেন অনন্ত জীবন লাভ করে; আর আমিই তাকে শেষ দিনে ওঠাব।”

Bengali: পবিত্র বাইবেল (BERV)

Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International