Book of Common Prayer
দায়ূদের একটি গীত।
37 দুষ্ট লোকদের দেখে মর্মপীড়া বোধ করো না।
যারা মন্দ কাজ করে, ওদের দেখে ঈর্ষান্বিত হয়ো না।
2 মন্দ লোকরা সবুজ ঘাস-পাতার মত,
যা তাড়াতাড়ি বিবর্ণ হয়ে মারা যায়।
3 যদি তুমি প্রভুতে আস্থা রাখ এবং ভালো কাজ কর,
তাহলে তুমি বেঁচে থাকবে এবং এই পৃথিবীর ভাল বস্তুগুলি উপভোগ করবে।
4 প্রভুর সেবা করে নিজে উপভোগ কর
এবং তাহলে তোমার যা প্রয়োজন, তিনি তোমায় তাই দেবেন।
5 প্রভুর ওপরে নির্ভর কর। তাঁকে বিশ্বাস কর,
যা করার তিনি তাই করবেন।
6 প্রভু তোমার ধার্ম্মিকতা ও ন্যায়নীতি
মধ্যাহ্নের সূর্যের মত উজ্জ্বল করুন।
7 প্রভুকে বিশ্বাস কর এবং তাঁর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা কর।
মন্দ লোকরা যখন জয়ী হয় তখন হতাশ হয়ো না।
দুষ্ট লোকেরা যখন কু-পরিকল্পনা করে জয়ী হয়, তখন মর্মপীড়া বোধ করো না।
8 ক্রুদ্ধ হয়ো না! রাগে আত্মহারা হয়ে যেও না!
এতখানি হতাশ হয়ে যেও না, যাতে তোমারও খারাপ কাজ করতে ইচ্ছা হয়।
9 কেন? কারণ মন্দ লোকরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।
কিন্তু যারা সাহায্যের জন্য প্রভুর কাছে প্রার্থনা করবে, তারা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমি পাবে।
10 খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দুষ্ট লোকরা আর সেখানে থাকবে না।
তোমরা হয়তো তাদের খুঁজবে, কিন্তু ততদিনে তারা সবাই গত হয়েছে!
11 বিনয়ী লোকরা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমি পাবে
এবং তারা শান্তি ভোগ করবে।
12 মন্দ লোকরা ভালো লোকদের বিরুদ্ধে মন্দ ফন্দি আঁটবে।
ভালো লোকদের দিকে দাঁত কিড়মিড় করে ওরা ওদের ক্রোধ প্রকাশ করবে।
13 কিন্তু আমাদের প্রভু ওদের দেখে দেখে হাসেন।
ওদের যে কি হবে, তা তিনি দেখতে পান।
14 মন্দ লোকরা তাদের তরবারি তুলে নেয়, ওদের তীর তাক করে।
ওরা দরিদ্র সহায়সম্বলহীন লোককে হত্যা করতে চায়।
সৎ এবং ভালো লোকদের ওরা হত্যা করতে চায়।
15 কিন্তু ওদের তরবারি ওদের বুকেই বিদ্ধ হবে,
ওদের তীরও ভেঙ্গে যাবে।
16 মন্দ লোকদের বিপুল সমাবেশের চেয়ে
মুষ্টিমেয় কিছু সৎ লোক অনেক ভালো।
17 কেন? কারণ মন্দ লোকরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।
কিন্তু প্রভু সৎ লোকদের প্রতি যত্ন নেন।
18 খাঁটি ভালো মানুষদের প্রভু আজীবন রক্ষা করেন।
ওরা অনন্তকাল ধরে পুরস্কার পাবে।
19 সংকট এলে সৎ লোকরা হতাশ হবে না।
দুর্ভিক্ষের সময় ভালো লোকদের জন্য প্রচুর আহার থাকবে।
20 কিন্তু মন্দ লোকরা প্রভুর শত্রু এবং ওরা ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।
ওদের উপত্যকা শুকিয়ে যাবে এবং পুড়ে যাবে।
ওরা সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হবে।
21 দুষ্ট লোকরা খুব তাড়াতাড়ি টাকা ধার করে, কিন্তু কখনও সেটা ফেরৎ দেয় না।
কিন্তু ভালো লোকরা দয়ালু এবং উদারহস্ত।
22 প্রভুর আশীর্বাদপূত প্রত্যেকে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত দেশ পাবে।
কিন্তু প্রভু যাকে অভিশাপ দেন সে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে।
23 যে সৈন্য সাবধানে চলে, প্রভু তাকে সাহায্য করেন।
প্রভু তাকে পড়ে যেতে দেন না।
24 যদি সেই সৈন্য দৌড়ে গিয়ে শত্রুকে আক্রমণ করে,
প্রভু সেই সৈন্যের হাত ধরে তাকে পতন থেকে রক্ষা করেন।
25 একসময় আমি তরুণ ছিলাম, এখন আমি বৃদ্ধ হয়েছি।
আমি কখনও ঈশ্বরকে ভালো লোকেদের পরিত্যাগ করতে দেখি নি।
ভালো লোকেদের সন্তানদের আমি কখনও খাবার ভিক্ষা করতে দেখি নি।
26 একজন সৎ লোক মুক্ত হাতে অন্যকে দেয়।
সৎ লোকদের সন্তানরা আশীর্বাদের মত।
27 যদি তুমি খারাপ কাজ না কর, যদি তুমি ভালো কাজ কর,
তুমি অনন্তকাল বেঁচে থাকবে।
28 প্রভু ন্যায় ভালবাসেন।
সাহায্য না করে তিনি তাঁর অনুগামীদের পরিত্যাগ করেন না।
প্রভু তাঁর অনুগামীদের সর্বদাই রক্ষা করেন।
কিন্তু দুষ্ট লোকদের তিনি বিনাশ করেন।
29 সৎ লোকরা ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত রাজ্য পাবে।
সেখানে তারা চিরদিন বাস করবে।
30 একজন সৎ লোক সর্বদাই সুপরামর্শ দেয়।
সে প্রত্যেকের জন্যই ন্যায্য সিদ্ধান্ত দেয়।
31 তার মনের মধ্যে সর্বদাই প্রভুর শিক্ষামালা থাকে।
তাই সে সৎ পথে বাঁচা থেকে বিরত হবে না।
32 কিন্তু দুষ্ট লোকরা সব সময় সৎ লোকদের হত্যা করবার সুযোগ খোঁজে।
33 সৎ লোকরা যখন মন্দ লোকদের ফাঁদে পড়ে, তখন প্রভু সৎ লোকদের ত্যাগ করেন না।
ঈশ্বর কখনই সৎ লোকদের দোষী বলে বিচারে সাব্যস্ত হতে দেবেন না।
34 ঈশ্বর যা বলেন তা কর এবং তাঁর সাহায্যের প্রতীক্ষা কর।
যখন তিনি মন্দ লোকদের জোর করে তাড়িয়ে দেবেন,
তখন প্রভু তোমাকেই জয়ী করবেন এবং তুমিই প্রভুর প্রতিশ্রুত রাজ্য পাবে।
35 আমি একজন দুষ্ট লোককে দেখেছিলাম যে ছিল ক্ষমতাশালী।
তার ছিল একটা স্বাস্থ্যবান সবুজ গাছের মতো একটি শক্তিশালী দেহ।
36 পরে আমি সেই পথে গিয়েছি।
আমি তাকে খুঁজেছি, কিন্তু পাইনি।
37 সৎ এবং পবিত্র হও।
শান্তিপ্রিয় লোকরা অনেক উত্তরপুরুষ পাবে।
38 কিন্তু যারা ঈশ্বরের বিধান ভাঙে তারা সম্পূর্ণ বিনষ্ট হবে।
এবং তাদের উত্তরপুরুষদেরও দেশ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
39 প্রভু সৎ লোকেদের রক্ষা করেন।
সৎ লোকেরা যখন সংকটে পড়ে, তখন প্রভুই তাদের আশ্রয়।
40 প্রভু সৎ লোকদের সাহায্য করেন, রক্ষা করেন।
সৎ লোকরা প্রভুতে বিশ্বাস রাখে এবং তিনি তাদের দুষ্ট লোকদের হাত থেকে রক্ষা করেন।
পৃথিবীর বিভাজন
11 প্লাবনের পরে সমস্ত পৃথিবী এক ভাষাতে কথা বলত। সমস্ত মানুষ একই শব্দগুলি ব্যবহার করত। 2 সেই লোকরা পূর্ব দিক থেকে ঘুরতে ঘুরতে শিনিয়র দেশে এসে সমতল ভূমি পেল। তারা সেখানে বসবাস শুরু করল। 3 তারা বলল, “আমরা মাটি দিয়ে ইঁট তৈরী করব, তারপর আরও শক্ত করার জন্যে ইঁটগুলো পোড়াব।” তখন মানুষ পাথরের বদলে ইঁট দিয়ে বাড়ী তৈরী করল। আর গাঁথনি শক্ত করার জন্যে সিমেন্টের বদলে আলকাতরা ব্যবহার করল।
4 তারা বলল, “এস আমরা আমাদের জন্য এক বড় শহর বানাই। আর এমন একটি উঁচু স্তম্ভ বানাই যা আকাশ স্পর্শ করবে। তাহলে আমরা বিখ্যাত হব এবং এটা আমাদের এক সঙ্গে ধরে রাখবে। সারা পৃথিবীতে আমরা ছড়িয়ে থাকব না।”
5 সেই শহর আর সেই আকাশস্পর্শী স্তম্ভ দেখতে প্রভু পৃথিবীতে নেমে এলেন। মানুষ কি কি তৈরী করেছে সেসব প্রভু দেখলেন। 6 প্রভু বললেন, “সব মানুষ একই ভাষাতে কথা বলছে। আর দেখতে পাচ্ছি যে এসব কাজ করার জন্যে তারা ঐক্যবদ্ধ। তারা কি করতে পারে এ তো সবে তার শুরু। শীঘ্রই তারা যা চায় তাই করতে পারবে। 7 তাহলে এস আমরা নীচে গিয়ে ওদের এক ভাষাকে নানারকম ভাষা করে দিই। তাহলে তারা পরস্পরকে বুঝতে পারবে না।”
8 সুতরাং প্রভু সমস্ত লোকেদের সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিলেন। ফলে মানুষ আর সেই শহর তৈরির কাজ শেষ করতে পারল না। 9 এই সেই স্থান যেখানে প্রভু সমস্ত পৃথিবীর এক ভাষাকে অনেক ভাষাতে বিভ্রান্ত করলেন। তাই এই স্থানটির নাম হলো বাবিল। এইভাবে প্রভু তাঁদের সেই স্থান থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিলেন।
13 ঈশ্বর অব্রাহামের কাছে একটি প্রতিশ্রুতি করেছিলেন আর ঈশ্বর থেকে মহান কেউ নেই। তাই তাঁর থেকে মহান কোন ব্যক্তির নামে শপথ করতে না পারাতে তিনি নিজের নামে শপথ করলেন। 14 তিনি বললেন, “আমি অবশ্যই তোমাকে আশীর্বাদ করব ও তোমার বংশ অগনিত করব।”(A) 15 এই প্রতিশ্রুতির বিষয়ে অব্রাহাম ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করলেন, পরে ঈশ্বর যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা তিনি লাভ করলেন।
16 সাধারণ মানুষ যখন তার থেকে মহান কোন ব্যক্তির নাম নিয়ে শপথ করে, সে তার প্রতিশ্রুতি পালন করবে কিনা সে বিষয়ে এই শপথের দ্বারা সব সংশয়ের অবসান হয়, সব তর্কের নিষ্পত্তি হয়ে যায়। 17 ঈশ্বর যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন সেই প্রতিজ্ঞার উত্তরাধিকারীদের তিনি শপথের মাধ্যমে আরও নিশ্চয়তার সঙ্গে বলতে চাইলেন যে তাঁর সেই প্রতিজ্ঞা অপরিবর্ত্তনীয়। 18 ঈশ্বরের প্রতিশ্রুতি ও শপথ কখনও বদলায় না। ঈশ্বর মিথ্যা কথা বলেন না ও শপথ করার সময়ে ছল করেন না।
অতএব আমরা যারা নিরাপত্তার জন্যে ঈশ্বরের কাছে ছুটে যাই, তাদের পক্ষে এই বিষয়গুলি বড় সান্ত্বনার। ঐ বিষয় দুটি ঈশ্বরের প্রদত্ত আশাতে জীবন অতিবাহিত করার জন্য আমাদের সান্ত্বনা ও শক্তি যোগাবে। 19 আমাদের জীবন সম্পর্কে আমাদের যে প্রত্যাশা আছে তা নোঙরের মত দৃঢ় ও অটল। তা পর্দার আড়ালে স্বর্গীয় মন্দিরের পবিত্র স্থানে আমাদের প্রবেশ করায়। 20 যীশু, যিনি মল্কীষেদকের রীতি অনুযায়ী চিরকালের জন্য মহাযাজক হলেন, তিনি আমাদের হয়ে সেখানে প্রবেশ করেছেন এবং আমাদের জন্য পথ খুলে দিয়েছেন।
শমরীয়ার এক স্ত্রীলোকের সঙ্গে যীশুর কথাবার্তা
4 ফরীশীরা জানতে পারল যে যীশু যোহনের চেয়ে বেশী শিষ্য করেছেন ও বাপ্তাইজ করছেন। 2 যদিও যীশু নিজে বাপ্তাইজ করছিলেন না, বরং তাঁর শিষ্যরাই তা করছিলেন। 3 তারপর তিনি যিহূদিয়া ছেড়ে চলে গেলেন এবং গালীলেই ফিরে গেলেন। 4 গালীলে যাবার সময় তাঁকে শমরিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হল।
5 যাকোব তাঁর ছেলে যোষেফকে যে ভূমি দিয়েছিলেন তারই কাছে শমরীয়ার শুখর নামে এক শহরে যীশু গেলেন। 6 এখানেই যাকোবের কুয়াটি ছিল, যীশু সেই কুয়ার ধারে এসে বসলেন কারণ তিনি হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন। তখন বেলা প্রায় দুপুর। 7 একজন শমরীয়া স্ত্রীলোক সেখানে জল তুলতে এল। যীশু তাকে বললেন, “আমায় একটু জল খেতে দাও তো।” 8 সেই সময় শিষ্যরা শহরে কিছু খাবার কিনতে গিয়েছিল।
9 সেই শমরীয় স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, “একি আপনি একজন ইহুদী হয়ে আমার কাছ থেকে খাবার জন্য জল চাইছেন? আমি একজন শমরীয় স্ত্রীলোক!” (ইহুদীরা শমরীয়দের সঙ্গে কোনরকম মেলামেশা করত না।)
10 এর উত্তরে যীশু তাকে বললেন, “তুমি যদি জানতে যে ঈশ্বরের দান কি আর কে তোমার কাছ থেকে খাবার জন্য জল চাইছেন তাহলে তুমিই আমার কাছে জল চাইতে আর আমি তোমাকে জীবন্ত জল দিতাম।”
11 স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, “মহাশয়, আপনি কোথা থেকে সেই জীবন্ত জল পাবেন? এই কুয়াটি যথেষ্ট গভীর। জল তোলার কোন পাত্রও আপনার কাছে নেই। 12 আপনি কি আমাদের পিতৃপুরুষ যাকোবের চেয়ে মহান? তিনি আমাদের এই কুয়াটি দিয়ে গেছেন। তিনি নিজেই এই কুয়ার জল খেতেন এবং তাঁর সন্তানরা ও তাঁর পশুপালও এর থেকেই জল পান করত।”
13 যীশু তাকে বললেন, “যে কেউ এই জল পান করবে তার আবার তেষ্টা পাবে। 14 কিন্তু আমি যে জল দিই তা যে পান করবে তার আর কখনও পিপাসা পাবে না। সেই জল তার অন্তরে এক প্রস্রবনে পরিণত হয়ে বইতে থাকবে, যা সেই ব্যক্তিকে অনন্ত জীবন দেবে।”
15 স্ত্রীলোকটি তাঁকে বলল, “মশায়, আমাকে সেই জল দিন, যেন আমার আর কখনও পিপাসা না পায় আর জল তুলতে আমায় এখানে আসতে না হয়।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International