Book of Common Prayer
প্রথম খণ্ড
(গীতসংহিতা 1–41)
1 একজন ব্যক্তি প্রকৃত সুখী হবে যদি সে মন্দ লোকের পরামর্শে না চলে,
যদি সে পাপীদের মত জীবনযাপন না করে,
যদি সে তাদের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ না করে—যারা ঈশ্বরকে অশ্রদ্ধা করে।
2 একজন সৎ ব্যক্তি প্রভুর শিক্ষাকে ভালোবাসে।
সে প্রভুর শিক্ষা বিষয়ে দিনরাত চিন্তা করে।
3 এই জন্য সেই ব্যক্তি নদীর ধারে পোঁতা গাছের মত শক্ত ও দৃঢ় হয়।
যে গাছ ঠিক সময় ফল দেয়, সেই লোক সেই গাছের মত হয়।
সেই লোক, সেই গাছের মতই হয়, যার পাতা কোনদিন ঝরে যায় না।
সে যা কিছু করে, সবই সফল হয়।
4 মন্দ লোকরা সে রকম নয়।
মন্দ লোকরা বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া তুষের মত।
5 সৎ লোকরা যদি একটা বিচারের সিদ্ধান্ত নেবার জন্য একত্রিত হয়, তবে মন্দ লোকরা অপরাধী হিসেবেই প্রমাণিত হবে।
সেই পাপীরা, বিচারে সরল নিষ্পাপ বলে প্রমাণিত হবে না।
6 কেন? কারণ প্রভু সৎ লোকদের রক্ষা করেন,
কিন্তু মন্দ লোকদের বিনাশ করেন।
2 অন্যান্য জাতিগুলোর লোকজন এত ক্রুদ্ধ কেন?
কেন তারা বোকার মত পরিকল্পনা করছে?
2 তাদের রাজারা এবং নেতারা,
প্রভু এবং তাঁর মনোনীত রাজার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একত্রিত হচ্ছে।
3 সেই সব নেতা বলছে, “এস আমরা ঈশ্বর এবং তাঁর মনোনীত রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করি।
এস আমরা ওদের থেকে আলাদা হয়ে বেরিয়ে এসে নিজেদের মুক্ত করি!”
4 কিন্তু আমার প্রভু, স্বর্গের রাজা,
ওদের প্রতি বিদ্রূপের হাসি হেসেছিলেন।
5 ঈশ্বর ক্রুদ্ধ হয়ে সেই সব লোকদের বলেছেন,
6 “এই ব্যক্তিকে আমি রাজা হিসেবে মনোনীত করেছি!
এবং সে সিয়োন পর্বতে রাজত্ব করবে।
সিয়োন আমার কাছে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ পর্বত।”
এই ঘটনা সেই সব নেতাদের ভীত করলো।
7 এখন আমি তোমাকে প্রভুর চুক্তির কথা বলবো।
প্রভু আমায় বললেন, “আজ আমি তোমার পিতা হলাম!
এবং তুমি আমার পুত্র।
8 যদি তুমি আমার কাছে চাও,
আমি সমগ্র জাতিগুলি তোমার হাতে দিয়ে দেব!
9 ভেঙে যেতে পারে না এমন ক্ষমতা নিয়ে তুমি তাদের ওপর শাসন করবে।
তুমি তাদের ভেঙে চুরমার হয়ে যাওয়া মাটির পাত্রের মত ছড়িয়ে দেবে।”
10 সুতরাং হে রাজন্যবর্গ, জ্ঞানী হও।
অতএব হে শাসকগণ, চালাক-চতুর হও।
11 ভয় ও শ্রদ্ধা সহকারে প্রভুর সেবা কর।
12 ঈশ্বরের পুত্রকে চুম্বন কর এবং প্রমাণ কর যে তুমি ঈশ্বরের পুত্রের প্রতি ভক্তিতে একনিষ্ঠ
যদি তুমি তা না কর তিনি ক্রুদ্ধ হবেন এবং তোমায় বিনাশ করবেন।
সেই সব লোক যারা প্রভুর ওপর আস্থা রাখে তারা ধন্য।
কিন্তু অন্যদের সাবধান হতে হবে, কারণ প্রভু তাঁর ক্রোধ দেখাতে প্রায় প্রস্তুত।
দায়ূদের একটি গীত যখন থেকে তিনি তাঁর পুত্র অবশালোমের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
3 প্রভু, আমার অসংখ্য শত্রু।
বহু লোক আমার বিরুদ্ধে চলে গেছে।
2 বহু লোক আমার বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলছে।
তারা বলছে, “ঈশ্বর ওকে রক্ষা করবেন না!”
3 কিন্তু হে প্রভু, আপনিই আমার ঢালস্বরূপ।
আপনি আমার গৌরব।
প্রভু আপনি আমাকে গুরুত্বপূর্ণ করেছেন![a]
4 আমি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করবো।
পবিত্র পর্বত থেকে তিনি আমার ডাকে সাড়া দেবেন!
5 আমি শুয়ে পড়ি এবং বিশ্রাম নিই এবং আমি জানি, আবার আমি জেগে উঠবো।
কেন? কারণ প্রভু আমায় আবৃত করে থাকেন। প্রভু আমায় রক্ষা করেন!
6 যদি হাজার সৈন্যও আমায় ঘিরে ফেলে,
আমি ঐ শত্রুদের ভয়ে ভীত হব না!
7 প্রভু, উঠে দাঁড়ান।[b]
হে আমার ঈশ্বর, আপনি এসে আমায় উদ্ধার করুন!
আপনি অসীম শক্তির অধিকারী!
আমার শত্রুদের চোয়ালে আপনি যদি আঘাত করেন
আপনি তাদের সবকটা দাঁতই ভেঙে দেবেন।
8 হে প্রভু, আপনার জয়!
এবং আপনার আশীর্বাদ রয়েছে আপনার লোকদের ওপর।
পরিচালকের প্রতি: তন্ত্রবাদ্যসহ গাইবার জন্য দায়ূদের একটি গীত।
4 হে আমার ধার্ম্মিকতার ঈশ্বর, যখন আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করি,
আমার ডাকে সাড়া দেবেন!
আমার প্রার্থনা শুনুন, আমার প্রতি সদয় হোন!
সঙ্কট থেকে আমায় পরিত্রাণ দিন!
2 হে মানব সন্তানগণ, আর কতদিন তোমরা আমার বিরুদ্ধে মন্দ কথা বলতে থাকবে?
আমার সম্পর্কে বলার জন্য তোমরা নতুন নতুন মিথ্যার সন্ধান করছো। তোমরা মিথ্যা কথা বলতে ভালোবাসো।
3 তোমরা জানো যে, ঈশ্বর তাঁর অনুগামী ভালো লোকদের কথাই শোনেন।
সুতরাং যখন আমি তাঁর কাছে প্রার্থনা করি তখন তিনি আমার কথা শোনেন।
4 যদি কোন কিছু তোমায় বিব্রত করে, তুমি রেগে যেতে পারো, কিন্তু পাপ করো না।
যখন তুমি বিছানায় ঘুমোতে যাও, তখন তুমি অবশ্যই ঐ সব বিষয়ে চিন্তা করবে না এবং শান্ত থাকবে।
5 ঈশ্বরকে ধার্ম্মিকতার বলি উৎসর্গ কর
এবং প্রভুর ওপর আস্থা রাখ।
6 অনেকে বলে, “কে আমাদের ঈশ্বরের ধার্ম্মিকতা দেখাবে?
প্রভু, আপনার দীপ্তিময় মুখখানি আমাদের দেখতে দিন!”
7 প্রভু, আপনি আমায় প্রচণ্ড সুখী করেছেন!
ফসলের সময়, যখন আমাদের কাছে প্রচুর শস্য এবং দ্রাক্ষারস ছিল তখনকার চেয়েও আমি এখন বেশী খুশী।
8 আমি বিছানায় গিয়ে নির্বিঘ্নে ঘুমিয়ে পড়ি। কেন?
কারণ, হে প্রভু, নিরাপদে ঘুমোবার জন্য আপনি আমাকে শুইয়ে দেন।
প্রভুর উদ্দেশ্যে দায়ূদের একটি গীত। এই গানটি বিন্যামীন পরিবারগোষ্ঠীর কূশের পুত্র শৌল সম্পর্কিত।
7 প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমি আপনার ওপর নির্ভর করি। যারা আমায় তাড়া করছে তাদের হাত থেকে আপনি আমায় রক্ষা করুন। আমায় উদ্ধার করুন!
2 যদি আপনি আমায় সাহায্য না করেন, আমি সিংহের হাতে ধরা পড়া পশুর মত অসহায় হয়ে পড়ব।
তারা আমাকে টেনে নিয়ে যাবে।
আমাকে রক্ষা করার কেউ থাকবে না!
3 প্রভু আমার ঈশ্বর, আমি কোন অন্যায় করি নি।
আমি শপথ করে বলছি আমি কোন অন্যায় করিনি!
4-6 প্রভু আমার ঈশ্বর, যদি আমার বাক্য কোন মন্দ কাজ করে থাকে
এবং যদি আমি আমার বন্ধুর প্রতি কোন অন্যায় কাজ করে থাকি
এবং যদি কোন কারণ ছাড়াই শত্রুর কাছ থেকে কোন জিনিস নিয়ে থাকি বা আক্রমণ করে থাকি
তাহলে আমার শত্রুরা যেন আমাকে খুঁজে ধরে ফেলে
এবং আমাকে হত্যা করে আমার জীবন ধূলোয় মিশিয়ে দেয়
এবং আমার আত্মাকে পাতালে পাঠিয়ে দেয়।
7 প্রভু, লোকদের বিচার করুন।
সকল জাতিদের আপনার সঙ্গে সঙ্ঘবদ্ধ করুন।
8 এবং লোকদের বিচার করুন।
হে প্রভু, আমারও বিচার করুন।
প্রমাণ করুন আমি সত্য পথে আছি।
প্রমাণ করুন আমি নিষ্পাপ।
9 মন্দ লোকদের শাস্তি দিন,
সৎ লোকদের সাহায্য করুন।
হে ঈশ্বর, আপনিই মঙ্গলময়।
আপনি লোকের হৃদয়ের ভেতরে কি আছে তা দেখতে পান।
10 যাদের হৃদয় সৎ তাদের ঈশ্বর সাহায্য করেন।
তাই ঈশ্বর আমাকে রক্ষা করবেন।
11 ঈশ্বর একজন সুবিচারক।
সব সময় তিনি মন্দের বিরুদ্ধে বলেন।
12 ঈশ্বর তাঁর আক্রমণ থামাবেন না।
তিনি তাঁর আক্রমণ থেকে পিছু হঠবেন না।[a]
তিনি তাঁর ধনুকে টান দিয়েছেন
এবং শত্রুদের প্রতি তাঁর লক্ষ্য স্থির রেখেছেন।
13 তিনি মারণাস্ত্র তৈরী করে রেখেছেন এবং তাঁর তীরগুলো ধারালো করেছেন।
14 কিছু লোক সর্বদাই মন্দ ফন্দি আঁটে।
তারা গোপনে ফন্দি করে
এবং মিথ্যা কথা বলে।
15 তারা অন্য লোকদের ফাঁদে ফেলতে চায় এবং আঘাত করতে চায়।
কিন্তু নিজেদের ফাঁদে পড়েই ওরা আহত হবে।
16 যা শাস্তি ওদের প্রাপ্য ওরা সেই শাস্তিই পাবে।
অপরের প্রতি ওরা নির্দয় ছিল।
ওদের যা প্রাপ্য ওরা তাই পাবে।
17 আমি প্রভুর প্রশংসা করি, কারণ তিনি ভালো।
আমি পরাৎপর প্রভুর নামের প্রশংসা করি।
মানব জাতির শুরু
4 এই হল আকাশ ও পৃথিবীর ইতিহাস। ঈশ্বর যখন পৃথিবী ও আকাশ সৃষ্টি করেছিলেন, তখন যা কিছু ঘটেছিল এটা তারই গল্প। 5 পৃথিবীতে তখন কোন গাছপালা ছিল না। মাঠে তখন কিছুই জন্মাতো না। কারণ প্রভু তখনও পৃথিবীতে বৃষ্টি পাঠান নি এবং ক্ষেতে চাষবাস করার জন্য তখন কেউ ছিল না।
6 পৃথিবী থেকে জল[a] উঠে চারপাশের জমিতে ছড়িয়ে পড়ল। 7 তখন প্রভু ঈশ্বর মাটি থেকে ধুলো তুলে নিয়ে একজন মানুষ তৈরী করলেন এবং সেই মানুষের নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণবায়ু প্রবেশ করালেন এবং মানুষটি জীবন্ত হয়ে উঠল। 8 তখন প্রভু ঈশ্বর পূর্বদিকে একটি বাগান বানালেন আর সেই বাগানটির নাম দিলেন এদন এবং প্রভু ঈশ্বর তাঁর সৃষ্টি করা মানুষটিকে সেই বাগানে রাখলেন। 9 এবং সেই বাগানে প্রভু ঈশ্বর সবরকমের সুন্দর বৃক্ষ এবং খাদ্যোপযোগী ফল দেয় এমন প্রতিটি বৃক্ষ রোপণ করলেন। বাগানের মাঝখানটিতে প্রভু ঈশ্বর রোপণ করলেন জীবন বৃক্ষটি যা ভাল এবং মন্দ বিষয়ে জ্ঞান দেয়।
10 এদন হতে এক নদী প্রবাহিত হয়ে সেই বাগান জলসিক্ত করল। তারপর সেই নদী বিভক্ত হয়ে চারটি ছোট ছোট ধারায় পরিণত হল। 11 প্রথম ধারাটির নাম পীশোন। এই নদী ধারা পুরো হবীলা দেশটিকে ঘিরে প্রবাহিত। 12 (সে দেশে সোনা রয়েছে আর তা উঁচু মানের। এছাড়া এই দেশে গন্ধদ্রব্য, গুগ্গুল আর মূল্যবান গোমেদকমণি পাওয়া যায়।) 13 দ্বিতীয় নদীর নাম গীহোন, এই নদীটি সমস্ত কুশ দেশটিকে ঘিরে প্রবাহিত। 14 তৃতীয় নদীটির নাম হিদ্দেকল। এই নদী অশূরিয়া দেশের পূর্ব দিকে প্রবাহিত। চতুর্থ নদীটির নাম ফরাৎ।
15 কৃষিকাজ আর বাগানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে এদন বাগানে রাখলেন। 16 প্রভু ঈশ্বর মানুষটিকে এই আদেশ দিলেন, “বাগানের যে কোনও বৃক্ষের ফল তুমি খেতে পারো। 17 কিন্তু যে বৃক্ষ ভালো আর মন্দ বিষয়ে জ্ঞান দেয় সেই বৃক্ষের ফল কখনও খেও না। যদি তুমি সেই বৃক্ষের ফল খাও, তোমার মৃত্যু হবে!”
প্রথম নারী
18 তারপরে প্রভু ঈশ্বর বললেন, “মানুষের নিঃসঙ্গ থাকা ভালো নয়। আমি ওকে সাহায্য করার জন্যে ওর মত আর একটি মানুষ তৈরী করব।”
19 প্রভু ঈশ্বর পৃথিবীর ওপরে সমস্ত পশু আর আকাশের সমস্ত পাখী তৈরী করবার জন্য মৃত্তিকার ধূলি ব্যবহার করেছিলেন। প্রভু ঈশ্বর ঐ সমস্ত পশুপাখীকে মানুষটির কাছে নিয়ে এলেন আর মানুষটি তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা নাম দিল। 20 মানুষটি সমস্ত গৃহপালিত পশু, আকাশের সমস্ত পাখীর এবং অরণ্যের সমস্ত বন্য প্রাণীর নামকরণ করল। মানুষটি অসংখ্য পশু পাখী দেখল কিন্তু সে তার যোগ্য সাহায্যকারী কাউকে দেখতে পেল না। 21 তখন প্রভু ঈশ্বর সেই মানুষটিকে খুব গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করলেন। মানুষটি যখন ঘুমোচ্ছিল তখন প্রভু ঈশ্বর তার পাঁজরের একটা হাড় বার করে নিলেন। তারপর প্রভু ঈশ্বর যেখান থেকে হাড়টি বার করেছিলেন সেখানটা চামড়া দিয়ে ঢেকে দিলেন। 22 প্রভু ঈশ্বর মানুষটির পাঁজরের সেই হাড় দিয়ে তৈরি করলেন একজন স্ত্রী। তখন সেই স্ত্রীকে প্রভু ঈশ্বর মানুষটির সামনে নিয়ে এলেন। 23 এবং সেই মানুষটি বলল,
“অবশেষে আমার সদৃশ একজন হল।
আমার পাঁজরা থেকে তার হাড়,
আর আমার শরীর থেকে তার দেহ তৈরী হয়েছে।
যেহেতু নর থেকে তার সৃষ্টি হয়েছে,
সেহেতু ‘নারী’ বলে এর পরিচয় হবে।”
24 এইজন্য পুরুষ পিতামাতাকে ত্যাগ করে স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয় এবং এইভাবে দুজনে এক হয়ে যায়।
25 তখন নর-নারী উলঙ্গ ছিল, কিন্তু সেজন্যে তাদের কোন লজ্জাবোধ ছিল না।
ঈশ্বর তাঁর পুত্রের মাধ্যমে কথা বলেছেন
1 অতীতে ঈশ্বর ভাববাদীদের মাধ্যমে বহুবার নানাভাবে আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। 2 এখন এই শেষের দিনগুলোতে ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আবার কথা বললেন। ঈশ্বর তাঁর পুত্রের দ্বারাই সমগ্র জগত সৃষ্টি করেছেন। তাঁর পুত্রকেই সবকিছুর উত্তরাধিকারী করেছেন। 3 একমাত্র ঈশ্বরের পুত্রই ঈশ্বরের মহিমার ও তাঁর প্রকৃতির মূর্ত প্রকাশ। ঈশ্বরের পুত্র তাঁর পরাক্রান্ত বাক্যের দ্বারা সবকিছু ধরে রেখেছেন। সেই পুত্র মানুষকে সমস্ত পাপ থেকে শুচিশুদ্ধ করেছেন। তারপর স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমার ডানপাশের আসনে বসেছেন। 4 ঈশ্বর তাঁর পুত্রকে এমন এক নাম দিয়েছেন যা স্বর্গদূতদের নাম থেকে শ্রেষ্ঠ; আর স্বর্গদূতদের তুলনায় তিনি হয়ে উঠেছেন আরো মহান।
5 কারণ ঈশ্বর ঐ স্বর্গদূতদের মধ্যে কাকে কখন বলেছিলেন,
“তুমি আমার পুত্র;
আজ আমি তোমার পিতা হয়েছি।”(A)
আবার ঈশ্বর কখনই বা স্বর্গদূতদের বলেছেন,
“আমি তার পিতা হব
আর সে আমার পুত্র হবে।”(B)
6 আবার তাঁর প্রথম পুত্রকে যখন তিনি জগতে নিয়ে এলেন তখন ঈশ্বর বললেন,
“ঈশ্বরের সমস্ত স্বর্গদূতরা তাঁর উপাসনা করুক।”[a]
7 স্বর্গদূতদের বিষয়ে ঈশ্বর বলেন:
“আমার স্বর্গদূতদের আমি তৈরী করি বায়ুর মতো করে
আর আমার সেবকদের আগুনের শিখার মতো করে।”(C)
8 কিন্তু তাঁর পুত্রের বিষয়ে ঈশ্বর বলেন:
“হে ঈশ্বর, তোমার সিংহাসন হবে চিরস্থায়ী;
আর ন্যায় বিচারের মাধ্যমে তুমি তোমার রাজ্য শাসন করবে।
9 তুমি ন্যায়কে ভালবাস এবং অন্যায়কে ঘৃণা কর।
এই কারণে তোমার ঈশ্বর তোমাকে পরম আনন্দ দিয়েছেন;
তোমার সঙ্গীদের থেকে তোমায় অধিক পরিমাণে দিয়েছেন।”(D)
10 ঈশ্বর একথাও বলেছেন:
“হে প্রভু, আদিতে তুমিই পৃথিবীর ভিত্তিমূল স্থাপন করেছ;
স্বর্গ তোমারই হাতের সৃষ্টি।
11 সেসব একদিন অদৃশ্য হয়ে যাবে; কিন্তু তুমিই নিত্যস্থায়ী।
সেসব পোশাকের মতো পুরানো হয়ে যাবে।
12 তুমি সেসব পোশাকের মতো গুটিয়ে রাখবে;
আর পোশাকের মতো সেগুলির পরিবর্তন হবে।
কিন্তু তোমার কোন পরিবর্তন হবে না,
তোমার অনুগ্রহ শেষ হবে না।”(E)
13 কিন্তু ঈশ্বর স্বর্গদূতদের মধ্যে কাউকে কখনও বলেন নি:
“আমি তোমার শত্রুদের যতক্ষণ না তোমার পদানত করি,
তুমি আমার ডানপাশে বস।”(F)
14 ঐ স্বর্গদূতরা কি পরিচর্যাকারী আত্মা নয়? আর যাঁরা পরিত্রাণ লাভ করেছে তাদের পরিচর্যা করার জন্যই কি এদের পাঠানো হয় নি?
যীশুর পৃথিবীতে আগমন
1 আদিতে বাক্য[a] ছিলেন, বাক্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন আর সেই বাক্যই ছিলেন ঈশ্বর। 2 সেই বাক্য আদিতে ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন। 3 তাঁর মাধ্যমেই সব কিছুর সৃষ্টি হয়েছিল এবং এর মধ্যে তাঁকে ছাড়া কোন কিছুরই সৃষ্টি হয় নি। 4 তাঁর মধ্যে জীবন ছিল; আর সেই জীবন জগতের মানুষের কাছে আলো নিয়ে এল। 5 সেই আলো অন্ধকারের মাঝে উজ্জ্বল হয়ে উঠল; আর অন্ধকার সেই আলোকে জয় করতে পারে নি।
6 একজন লোক এলেন তাঁর নাম যোহন; ঈশ্বর তাঁকে পাঠিয়েছিলেন। 7 তিনি সেই আলোর বিষয়ে সাক্ষ্য দেবার জন্য সাক্ষী রূপে এলেন যাতে তাঁর মাধ্যমে সকল লোক সেই আলোর কথা শুনে বিশ্বাস করতে পারে। 8 যোহন নিজে সেই আলো ছিলেন না; কিন্তু তিনি এসেছিলেন যাতে লোকদের কাছে সেই আলোর বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে পারেন। 9 প্রকৃত যে আলো, তা সকল মানুষকে আলোকিত করতে পৃথিবীতে এসেছিলেন।
10 সেই বাক্য জগতে ছিল এবং এই জগত তাঁর দ্বারাই সৃষ্ট হয়েছিল; কিন্তু জগত তাঁকে চিনতে পারে নি। 11 যে জগত তাঁর নিজস্ব সেখানে তিনি এলেন, কিন্তু তাঁর নিজের লোকরাই তাঁকে গ্রহণ করল না। 12 কিন্তু কিছু লোক তাঁকে গ্রহণ করল এবং তাঁকে বিশ্বাস করল। যারা বিশ্বাস করল তাদের সকলকে তিনি ঈশ্বরের সন্তান হবার অধিকার দান করলেন। 13 ঈশ্বরের এই সন্তানরা প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারে কোন শিশুর মতো জন্ম গ্রহণ করে নি। মা-বাবার দৈহিক কামনা-বাসনা অনুসারেও নয়, ঈশ্বরের কাছ থেকেই তাদের এই জন্ম।
14 বাক্য মানুষের রূপ ধারণ করলেন এবং আমাদের মধ্যে বসবাস করতে লাগলেন। পিতা ঈশ্বরের একমাত্র পুত্র হিসাবে তাঁর যে মহিমা, সেই মহিমা আমরা দেখেছি। সেই বাক্য অনুগ্রহ ও সত্যে পরিপূর্ণ ছিলেন। 15 যোহন তাঁর সম্পর্কে মানুষকে বললেন, “ইনিই তিনি যাঁর সম্বন্ধে আমি বলেছি। ‘যিনি আমার পরে আসছেন, তিনি আমার থেকে মহান, কারণ তিনি আমার অনেক আগে থেকেই আছেন।’”
16 সেই বাক্য অনুগ্রহ ও সত্যে পূর্ণ ছিলেন। আমরা সকলে তাঁর থেকে অনুগ্রহের ওপর অনুগ্রহ পেয়েছি। 17 কারণ মোশির মাধ্যমে বিধি-ব্যবস্থা দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু অনুগ্রহ ও সত্যের পথ যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে এসেছে। 18 ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখেনি; কিন্তু একমাত্র পুত্র, যিনি পিতার কাছে থাকেন, তিনিই তাঁকে প্রকাশ করেছেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International