Book of Common Prayer
যন্ত্রণা কাতর একটি মানুষের প্রার্থনা। সে যখন দুর্বল বোধ করে ও প্রভুকে তার অভিযোগ জানাতে চায় তখনকার প্রার্থনা।
102 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন।
সাহায্যের জন্য আমার ক্রন্দন শুনুন।
2 যখন আমি সমস্যার মধ্যে থাকি তখন আমার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না।
আমার কথা শুনুন, যখন আমি সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করি তখন আমায় উত্তর দিন।
3 ধোঁয়ার মত আমার জীবন কেটে যাচ্ছে।
আমার জীবন একটি আগুনের মত যা ধীরে ধীরে পুড়ে যাচ্ছে।
4 আমার শক্তি চলে গেছে।
আমি শুকনো মৃত প্রায় ঘাসের মত।
আমি আমার খাবার পর্যন্ত খেতে ভুলে গেছি।
5 দুঃখের কারণে আমার ওজন কমে যাচ্ছে।[a]
6 আমি একটি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বাস করা পেঁচার মত নিঃসঙ্গ।
ধ্বংসাবশিষ্ট অট্টালিকায় আমি একা পেঁচার মত বাস করছি।
7 আমি ঘুমোতে পারি না।
আমি ছাদে বাস করা এক নিঃসঙ্গ পাখির মত।
8 শত্রুরা সব সময়ে আমাকে অপমান করে।
ওরা আমাকে নিয়ে মজা করে ও ভৎর্সনা করে।
9 আমার খাদ্যই এখন আমার বিরাট দুঃখ।
আমার চোখের জল আমার পানীয়তে পড়ছে।
10 কেন? কারণ প্রভু আপনি আমার প্রতি ক্রুদ্ধ হয়েছেন।
আপনিই আমাকে তুলে ধরেছেন এবং তারপর আপনিই আমায় ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছেন।
11 দিনের শেষের দীর্ঘ ছায়াগুলির মত আমার জীবন প্রায় শেষ হয়ে গেছে।
আমি শুকনো এবং মৃত প্রায় ঘাসের মত।
12 কিন্তু প্রভু, আপনি চিরদিনই বিরাজিত থাকবেন।
আপনার নাম চিরকাল এবং অনন্তকাল মনে রাখা হবে।
13 আপনাকে উত্থান করতে হবে এবং আপনি সিয়োনকে স্বস্তি দেবেন।
কারণ তাকে সান্ত্বনা দেবার সময় হয়েছে।
14 আপনার দাসগণ সিয়োনের পাথরগুলিকে ভালোবাসে।
এই শহরের ধূলোকে পর্যন্ত তারা ভালোবাসে।
15 লোকরা প্রভুর নামের উপাসনা করবে।
হে ঈশ্বর, পৃথিবীর সমস্ত রাজারা আপনাকে মহিমান্বিত করবে।
16 প্রভু সিয়োনকে আবার নির্মাণ করবেন।
লোকেরা আবার তাঁর মহিমা দেখবে।
17 যে সব লোককে ঈশ্বর বাঁচিয়ে রেখেছেন, তিনি আবার তাদের প্রার্থনার উত্তর দেবেন।
ঈশ্বর তাদের প্রার্থনা শুনবেন।
18 ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এইসব লিখে রাখো
এবং ভবিষ্যতে ওরা প্রভুর প্রশংসা করবে।
19 প্রভু, তাঁর পবিত্র স্থান থেকে নীচের দিকে চেয়ে দেখবেন।
স্বর্গ থেকে প্রভু পৃথিবীর দিকে চেয়ে দেখবেন।
20 তিনি বন্দীদের প্রার্থনা শুনবেন।
যাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে তাদের তিনি মুক্ত করবেন।
21 তারপর সিয়োনে লোকরা প্রভুর কথা বলবে।
জেরুশালেমে তারা প্রভুর নামের প্রশংসা করবে।
22 সব জাতিসমূহ একসঙ্গে জড় হবে।
প্রভুর সেবার জন্য সব রাজ্য ছুটে আসবে।
23 আমার শক্তি কমে এসেছে।
আমার জীবনও ছোট হয়ে এসেছে।
24 তাই আমি বলেছিলাম, “আমি যতক্ষণ যুবক আছি আমাকে মরতে দেবেন না।
ঈশ্বর আপনি চিরদিন বিরাজিত থাকবেন!
25 সুদূর অতীতে আপনি এই বিশ্বসৃষ্টি করেছিলেন।
নিজের হাতে আপনি আকাশ সৃষ্টি করেছিলেন!
26 এই বিশ্ব, এই আকাশ একদিন শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আপনি চির বিরাজমান থাকবেন!
ওদের বস্ত্রের মতই পরিধান করা হবে।
এবং জামাকাপড়ের মতই আপনি ওদের বদল করবেন।
ওরা সবাই পরিবর্তিত হবে।
27 কিন্তু ঈশ্বর, আপনি পরিবর্তিত হবেন না।
আপনি চিরদিন বিরাজ করবেন!
28 আজ আমরা আপনার দাস।
আমাদের সন্তানরাও এখানে বসবাস করবে।
এমনকি তাদের উত্তরপুরুষরাও আপনার উপাসনা করার জন্য এখানেই বসবাস করবে।”
পঞ্চম খণ্ড
(গীতসংহিতা 107–150)
107 প্রভুকে ধন্যবাদ দাও, কেননা তিনি মঙ্গলময়।
তাঁর প্রেম চিরন্তন!
2 প্রভু যাদের রক্ষা করেছেন, তারা প্রত্যেকে অবশ্যই এই একই কথাগুলি উচ্চারণ করবে।
প্রভু ওদের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করেছেন।
3 প্রভু বিভিন্ন দেশ থেকে তাঁর লোকদের জড় করেছেন।
তাদের তিনি পূর্ব ও পশ্চিম এবং উত্তর ও দক্ষিণ থেকে নিয়ে এসেছেন।
4 ওদের কেউ কেউ মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াচ্ছিলো।
ওরা বাঁচার জন্য অন্য জায়গা খুঁজছিলো
কিন্তু ওরা কোন শহর খুঁজে পাচ্ছিলো না।
5 ক্ষুধা-তৃষ্ণায় ওরা ক্রমশঃই
দুর্বল হয়ে পড়ছিলো।
6 তখন ওরা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডাকলো
তাই তিনি ওদের বিপদ থেকে উদ্ধার করলেন।
7 ঈশ্বর সোজা তাদের সেই শহরে নিয়ে গেলেন যেখানে তারা বাস করতে পারে।
8 প্রভুকে তাঁর প্রেমের জন্য এবং তাঁর আশ্চর্য কার্য,
যা তিনি লোকদের জন্য করেছেন, তার জন্য ধন্যবাদ দাও।
9 ঈশ্বর তৃষিত আত্মার তৃষ্ণা নিবৃত্ত করেন;
ঈশ্বর সুন্দর জিনিস দিয়ে ক্ষুধিত আত্মার সন্তুষ্টি করেন।
10 ঈশ্বরের কিছু লোক বন্দী ছিল,
ওরা অন্ধকার গারদে বদ্ধ হয়েছিলো।
11 কেন? কারণ ঈশ্বর যা বলেছেন, ওরা তার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলো।
তারা পরাৎপরের উপদেশসমুহ মান্য করতে অস্বীকার করেছিলো।
12 ওদের কুকর্মের জন্য ঈশ্বর ওদের জীবনকে কঠিনতর করে তুলেছিলেন।
ওরা হোঁচট খেয়ে পড়লো কিন্তু ওদের সাহায্যের জন্য কেউ ছিল না।
13 ওরা সমস্যায় পড়েছিলো, তাই ওরা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডেকেছিলো
এবং তিনি তাদের সমস্যাসমূহ থেকে বাঁচিয়েছিলেন।
14 ঈশ্বর ওদের অন্ধকার কারাগার থেকে বাইরে বার করে এনেছিলেন।
যে দড়ি দিয়ে ওদের বেঁধে রাখা হয়েছিলো, ঈশ্বর তা ছিন্ন করেছিলেন।
15 প্রভুর প্রেমের জন্য এবং মানুষের জন্য
তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য করেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দাও।
16 শত্রুদের পরাজিত করতে ঈশ্বর আমাদের সাহায্য করেন।
ঈশ্বর ওদের পিতলের দরজা ভেঙে দিতে পারেন।
ঈশ্বর ওদের ফটকের লোহা ভেঙে দিতে পারেন।
17 কিছু লোক ওদের পাপসমূহ ও অন্যায়গুলোকে, নিজেদের নির্বোধে পরিণত করতে দেয়।
তারা তাদের পাপসমূহের জন্য ভয়ঙ্কর ভাবে ভুগবে।
18 ওরা আহার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছিলো
এবং প্রায় মারা গিয়েছিলো।
19 ওরা সমস্যায় পড়েছিলো, তাই ওরা প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছিলো।
এবং ওদের সমস্যা থেকে তিনি ওদের বাঁচিয়েছিলেন।
20 ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছিলেন এবং ওদের সমস্যা মুক্ত করেছিলেন।
তাই ওই লোকরা মৃত্যু থেকে রক্ষা পেয়েছিলো।
21 প্রভুকে তাঁর প্রেমের জন্য এবং লোকদের জন্য
তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য করেন তার জন্য ধন্যবাদ দাও।
22 প্রভু যা কিছু করেছেন, তার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যে, প্রভুর কাছে বলি উৎসর্গ কর।
প্রভু যা যা করেছেন তা আনন্দের সঙ্গে বল।
23 কিছু লোক নৌকা করে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছিলো,
ওদের জীবিকা ওদের মহাসমুদ্রে টেনে নিয়ে গিয়েছিলো।
24 ওই সব লোক দেখেছে প্রভু কি করতে পারেন।
সমুদ্রে তিনি যে সব বিস্ময়কর কাজ করেছেন, তা ওরা দেখেছে।
25 ঈশ্বর আজ্ঞা দিয়েছিলেন এবং প্রবল বাতাস বইতে শুরু করেছিলো।
ঢেঊগুলো ক্রমেই উচ্চ থেকে উচ্চতর হয়েছিল।
26 ঢেউগুলো ওদের আকাশে তুলে দিচ্ছিলো
এবং সমুদ্রের গভীরে নামিয়ে দিচ্ছিলো।
সে এমন ভয়ঙ্কর ঝড় ছিলো যে ওরা সাহস হারিয়ে ফেলেছিলো।
27 ওরা টল্মল করছিলো এবং নেশাগ্রস্তের মত বোধ করছিলো।
নাবিক হিসেবে তাদের ক্ষমতা কোন কাজেই লাগেনি।
28 ওরা সমস্যায় পড়েছিলো তাই ওরা সাহায্যের জন্য প্রভুকে ডেকেছিলো
এবং তিনি সমস্যাসমুহ থেকে ওদের রক্ষা করেছিলেন।
29 ঈশ্বর ঝড় থামিয়ে দিয়েছিলেন।
তিনি সমুদ্রকে শান্ত করে দিয়েছিলেন।
30 সমুদ্র শান্ত দেখে নাবিকরা খুশী হয়েছিলো
এবং তারা যেখানে যেতে চেয়েছিলো সেখানে ঈশ্বর তাদের নিরাপদে পৌঁছে দিয়েছিলেন।
31 তাঁর প্রেমের জন্য এবং লোকদের জন্য তিনি যে সব আশ্চর্য কার্য করেন,
তার জন্য প্রভুকে ধন্যবাদ দাও।
32 বিরাট মহাসমাজের সামনে প্রভুর মহাসভায় প্রশংসা কর।
প্রবীণ নেতারা যখন একত্রিত হবে তখন তাঁর প্রশংসা করো।
হিষ্কিয় ভাববাদী যিশাইয়র সঙ্গে কথা বললেন
19 সমস্ত কথা শুনে রাজা হিষ্কিয়ও শোকার্ত হয়ে ভাল পোশাক ছিঁড়ে চটের পোশাক পরে প্রভুর মন্দিরে গেলেন।
2 হিষ্কিয় রাজপ্রাসাদের তত্ত্বাবধায়ক ইলীয়াকীম, রাজ-সচিব শিব্ন ও প্রধান যাজকদের আমোসের পুত্র ভাববাদী যিশাইয়র কাছে পাঠালেন। তারাও সকলে শোক প্রকাশের জন্য চটের পোশাক পরেছিল। 3 এরা সকলে গিয়ে যিশাইয়কে বলল, “হিষ্কিয় বলেছেন, ‘এই সঙ্কটের দিনে আমাদের করা ভুল-ভ্রান্তি ও পাপ আচরণের কথা স্মরণ করা উচিৎ। কিন্তু অবস্থা এখন এরকম যে নবজাতকের জন্ম দিতে হবে অথচ প্রসূতির কোন শক্তি নেই। 4 অশূররাজের সেনাপতি এসে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে পর্যন্ত প্রশ্ন তুলেছে, অনেক খারাপ কথা শুনিয়ে গিয়েছে। সম্ভবতঃ আপনার প্রভু ঈশ্বর সে সবই শুনতে পেয়েছেন, হয়তো এর জন্য প্রভু তাঁর শত্রুদের যথোচিত শাস্তিও দেবেন। অনুগ্রহ করে আপনি, যে সমস্ত লোক এখনও জীবিত আছে তাদের জন্য প্রার্থনা করুন।’”
5 মহারাজ হিষ্কিয়র উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারীরা যিশাইয়র কাছে গেলে 6 তিনি তাদের বললেন, “তোমাদের গুরুকে গিয়ে খবর দাও: ‘প্রভু বলেছেন: অশূররাজের কর্মচারীরা আমাকে অপমান করার জন্য যে সব কথা বলে গিয়েছে, তা শুনে ভয় পাবার কোন কারণ নেই! 7 আমি ওর ওপর ভর করার জন্য এক অপদেবতাকে পাঠাচ্ছি। তারপর দেখো, গুজবে ভয় পেয়ে ও নিজেই নিজের দেশে ছুটে পালাবে। সেখানে আমি তরবারির আঘাতে ওর মৃত্যুর জন্য সমস্ত আয়োজন করে রাখছি।’”
হিষ্কিয়কে অশূর-রাজ আবার সতর্ক করলেন
8 অশূর-রাজের সেনাপতি খবর পেলেন, তাদের মহারাজ লাখীশ ছেড়ে গিয়ে লিব্নার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। 9 ইতিমধ্যে অশূর-রাজ গুজব শুনলেন, “কূশদেশের রাজা তির্হকঃ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসছেন!”
তখন অশূর-রাজ হিষ্কিয়র কাছে আবার দূত মারফৎ খবর পাঠালেন। এই বার্তায় বলা হল: 10 “যিহূদা-রাজা হিষ্কিয় সমীপেষু,
‘আপনাদের ঈশ্বরের দ্বারা প্রতারিত হয়ে যদি আস্থা রাখেন অশূর-রাজ জেরুশালেমকে পদানত করতে পারবেন না তাহলে ভুল করবেন। 11 আপনি নিশ্চয়ই অন্যান্য দেশের বিরুদ্ধে অশূর-রাজের যুদ্ধযাত্রা ও তাদের পরিণতির কথা অবগত আছেন। এই সমস্ত দেশকে আমরা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছি। আপনারা কি ভাবছেন যে আপনারা উদ্ধার পাবেন? 12 এই সমস্ত জাতির দেবতা তাঁদের নিজেদের লোকদের বাঁচাতে পারেন নি। আমার পূর্বপুরুষরা, গোষণ, হারণ, রেৎসফ, তলঃশর এদোনের লোকরা এদের সবাইকেই ধ্বংস করেছিলেন। 13 কোথায় গেলেন হমাৎ, অর্পদ, সফর্বয়িম, হেনা, ইব্বার রাজারা? এঁরা সকলেই মরে ভূত হয়ে গিয়েছেন!’”
হিষ্কিয় প্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন
14 দূতদের কাছ থেকে এই চিঠি নিয়ে পড়ার পর হিষ্কিয় প্রভুর মন্দিরে গিয়ে প্রভুর সামনে চিঠিখানা মেলে ধরলেন। 15 তারপর তিনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “প্রভু করূব দূতদের মধ্যে আসীন ইস্রায়েলের ঈশ্বর আপনি এই পৃথিবীর সমস্ত ভূ-ভাগ, সমস্ত দেশেরই নিয়ামক। স্বর্গ ও পৃথিবী আপনারই হাতে গড়া। 16 প্রভু, অনুগ্রহ করে আমার কথা শুনুন, চোখ খুলে এই চিঠিখানা দেখুন। কিভাবে সন্হেরীব জীবন্ত ঈশ্বরকে অপমান করেছেন তা শুনুন। 17 প্রভু এটা সত্য অশূর-রাজ এসমস্ত দেশ ধ্বংস করেছেন। 18 তারা তাদের মূর্ত্তিসমূহকে আগুনে ছুঁড়ে ফেলেছেন এসবই সত্যি কথা। কিন্তু সেই সব মূর্ত্তি তো আসলে মানুষের বানানো কাঠ এবং পাথরের পুতুল মাত্র ছিল। যে কারণে অশূর-রাজ ওদের ধ্বংস করতে পেরেছিলেন। 19 কিন্তু এখন প্রভু, আমাদের ঈশ্বর অশূর-রাজের কবল থেকে উদ্ধার করুন। তাহলে পৃথিবীর সর্বত্র সবাই জানবে প্রভুই একমাত্র ঈশ্বর।”
20 আমোসের পুত্র যিশাইয়, হিষ্কিয়কে খবর পাঠালেন, “প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর জানিয়েছেন: তুমি সন্হেরীবের বিরুদ্ধে আমার কাছে যে প্রার্থনা করেছো, আমি তা শুনতে পেয়েছি।
16 তবে আমি সুসমাচার প্রচার করি বলে গর্ব করছি না। সুসমাচার প্রচার করা আমার কর্তব্য, এটি আমার অবশ্য করণীয়। আমি যদি সুসমাচার প্রচার না করি তবে তা আমার পক্ষে কত দুর্ভাগ্যের বিষয় হবে! 17 যদি নিজের ইচ্ছায় সুসমাচার প্রচার করতাম তবে আমি পুরস্কার পাবার যোগ্য হতাম। কিন্তু যেখানে আমি নিজে থেকে এই কাজ করিনি কিন্তু দায়িত্ব হিসাবে আমার ওপর এই কাজ ন্যস্ত হয়েছে, 18 সেখানে আমি কি পুরস্কার পাব? এই আমার পুরস্কার; যখন আমি সুসমাচার প্রচার করি, তা বিনামূল্যে করি। এইভাবে সুসমাচার প্রচার করা কালীন আমার বেতন পাবার যে অধিকার আছে, তা আমি ব্যবহার করি না।
19 আমি স্বাধীন! আমি কারোর অধীনে নেই, তবু আমি সকলের দাস হলাম, যাতে অনেককে আমি খ্রীষ্টের জন্য লাভ করতে পারি। 20 ইহুদীদের জয় করার জন্য আমি ইহুদীদের কাছে ইহুদীদের মতো হলাম। যারা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবন কাটাচ্ছে, তাদের লাভ করার জন্য আমি নিজে বিধি-ব্যবস্থার অধীন না হলেও আমি তাদের মত হলাম। 21 আবার যারা বিধি-ব্যবস্থার অধীনে নেই তাদের জয় করার জন্য আমি তাদের মতো হলাম। অবশ্য এর মানে এই নয় যে আমি বিধি-ব্যবস্থা মানি না, আমি তো খ্রীষ্টের বিধি-ব্যবস্থার অধীনে জীবনযাপন করছি। 22 যারা দুর্বল, তাদের কাছে আমি দুর্বল হলাম, যেন তাদেরকে জয় করতে পারি। আমি সকলের কাছে তাদের মনের মত হলাম, যাতে সম্ভাব্য সকল উপায়ে তাদের বাঁচাতে পারি। 23 আমি এসব সুসমাচারের জন্যই করি, যেন এর আশীর্বাদের সহভাগী হই।
24 তোমরা কি জান না, যখন দৌড় প্রতিযোগিতা হয় তখন অনেকেই দৌড়ায়; কিন্তু কেবল একজনই বিজয়ী হয়ে পুরস্কার পায়। তাই এমনভাবে দৌড়োও যেন পুরস্কার পাও! 25 আবার দেখ, যে সব প্রতিযোগী খেলায় অংশগ্রহণ করে, তারা কঠিন নিয়ম পালন করে। তারা অস্থায়ী বিজয় মুকুট পাবার জন্য তা করে; কিন্তু আমরা অক্ষয় মুকুটে ভূষিত হবার জন্য করি। 26 তাই সেইভাবে একটা লক্ষ্য নিয়ে আমি দৌড়োচ্ছি। শূন্যে মুষ্ট্যাঘাত করছে, এমন লোকের মত আমি লড়াই করি না। 27 বরং আমি আমার দেহকে কঠোরতা ও সংযমের মধ্যে রেখেছি, যেন অন্য লোকদের কাছে সুসমাচার প্রচার করার পর নিজে কোনভাবে ঈশ্বরের দৃষ্টিতে অযোগ্য বলে বিবেচিত না হই।
কুষ্ঠ রোগীকে আরোগ্যদান
(মার্ক 1:40-45; লূক 5:12-16)
8 যীশু সেই পাহাড় থেকে নেমে এলে অনেক লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলতে লাগল। 2 সেই সময় একজন কুষ্ঠ রোগী যীশুর কাছে এসে তাঁর সামনে নতজানু হয়ে বলল, “প্রভু, আপনি ইচ্ছে করলেই আমাকে ভাল করে দিতে পারেন।”
3 তখন যীশু সেই কুষ্ঠ রোগীর দিকে হাত বাড়িয়ে তাকে স্পর্শ করলেন। তিনি বললেন, “হ্যাঁ, আমি তাই-ই চাই। তুমি ভাল হয়ে যাও।” সঙ্গে সঙ্গে তার কুষ্ঠ রোগ ভাল হয়ে গেল। 4 তখন যীশু তাকে বললেন, “দেখ, তুমি কাউকে একথা বোলো না, বরং যাও যাজকের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও; আর গিয়ে মোশির আদেশ অনুসারে নৈবেদ্য উৎসর্গ কর। তাতে তারা জানবে যে তুমি ভাল হয়ে গেছ।”
শতপতির দাসের আরোগ্যলাভ
(লূক 7:1-10; যোহন 4:43-54)
5 এরপর যীশু যখন কফরনাহূম শহরে গেলেন, তখন একজন শতপতি তাঁর কাছে এসে অনুনয় করে বললেন, 6 “প্রভু, আমার চাকরের পক্ষাঘাত হয়েছে, সে বিছানায় পড়ে আছে ও যন্ত্রণায় ছট্ফট্ করছে।”
7 যীশু তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ, আমি যাব, এবং তাকে সুস্থ করব।”
8 সেই শতপতি তখন যীশুকে বললেন, “প্রভু, আমি এমন যোগ্য নই যে আমার বাড়ীতে আপনি আসবেন। আপনি কেবল মুখে বলে দিন, তাতেই আমার চাকর ভাল হয়ে যাবে। 9 আমি নিজে অপরের কর্তৃত্বের অধীন আর আমার সৈন্যদের উপরে আমি কর্তৃত্ব করি। আমি কাউকে ‘যাও’ বললে সে যায়, আবার কাউকে ‘এস’ বললে সে আসে; আর আমার চাকরকে ‘এটা কর’ বললে সে তা করে।”
10 যীশু একথা শুনে আশ্চর্য হলেন; যাঁরা তাঁর পিছনে পিছনে যাচ্ছিল তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সমগ্র ইস্রায়েলে আমি এত বেশী বিশ্বাস কারও মধ্যে দেখতে পাইনি। 11 আমি তোমাদের আরো বলছি যে, পূর্ব ও পশ্চিম থেকে অনেকে আসবে আর অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের সঙ্গে স্বর্গরাজ্যে ভোজে বসবে। 12 কিন্তু যাঁরা রাজ্যের উত্তরাধিকারী, তাদের বাইরে অন্ধকারে ফেলে দেওয়া হবে। সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করবে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষবে।”
13 এরপর যীশু সেই শতপতিকে বললেন, “যাও, তুমি যেমন বিশ্বাস করেছ, তেমনি হোক্।” আর সেই মূহুর্তেই তার চাকর সুস্থ হয়ে গেল।
যীশু অনেক লোককে সুস্থ করলেন
(মার্ক 1:29-34; লূক 4:38-41)
14 যীশু পিতরের বাড়ীতে গিয়ে দেখলেন, পিতরের শাশুড়ীর ভীষণ জ্বর হয়েছে, আর তিনি বিছানায় শুয়ে আছেন। 15 যীশু তাঁর হাত স্পর্শ করা মাত্রই জ্বর ছেড়ে গেল। তখন তিনি বিছানা ছেড়ে উঠে যীশুর সেবা করতে লাগলেন।
16 সন্ধ্যা হলে লোকেরা ভূতে পাওয়া অনেক লোককে যীশুর কাছে নিয়ে এল। আর তিনি তাঁর হুকুমে সেই সব ভূতদের দূর করে দিলেন। এছাড়া তিনি রোগীদের সুস্থ করলেন। 17 এর দ্বারা ভাববাদী যিশাইয়র ভাববাণী পূর্ণ হল:
“তিনি আমাদের দুর্বলতা গ্রহণ করলেন, আমাদের ব্যাধিগুলি বহন করলেন।”(A)
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International