Book of Common Prayer
আসফের সঙ্গীতগুলির অন্যতম।
50 প্রভু, যিনি ঈশ্বরদেরও ঈশ্বর স্বয়ং তিনি কথা বলছেন।
তিনি সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত, অর্থাৎ এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত সমগ্র পৃথিবীর মানুষকে চিৎকার করে ডাক দিচ্ছেন।
2 সিয়োন থেকে দীপ্তিমান ঈশ্বর অসীম সুন্দর!
3 আমাদের ঈশ্বর আসছেন এবং তিনি নীরব থাকবেন না।
তাঁর সামনে সর্বগ্রাসী আগুন জ্বলছে।
তাঁর চারদিকে প্রচণ্ড ঝড় বইছে।
4 যখন তিনি তাঁর লোকদের বিচার করেন
তখন তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে সাক্ষী থাকতে ডাকেন।
5 ঈশ্বর বলেন, “হে আমার অনুগামীরা আমার চারিদিকে এস।
হে আমার ভক্তসকল, আমরা একে অন্যের সঙ্গে চুক্তি করেছি।”
6 ঈশ্বর হলেন বিচারক,
আকাশ তাঁর যথাযথ ধার্ম্মিকতার কথা ঘোষণা করে।
7 ঈশ্বর বলেন, “আমার লোকরা, আমার কথা শোন!
হে ইস্রায়েলের লোকরা, আমি তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষী দেব। আমিই ঈশ্বর, তোমাদের ঈশ্বর।
8 আমি তোমাদের বলি সম্পর্কে অভিযোগ করছি না।
তোমরা ইস্রায়েলের লোকেরা সর্বদাই আমার কাছে হোমবলি দিয়েছ এবং প্রতিদিনই তোমরা তা আমায় দিয়েছ।
9 তোমাদের ঘর থেকে আমি ষাঁড় নেব না।
তোমাদের খোঁয়াড় থেকে আমি ছাগলও নেব না।
10 ঐ পশুগুলো আমি চাই না, ইতিমধ্যেই জঙ্গলের সমস্ত পশুসমুহের আমি অধিকারী।
হাজার হাজার পর্বতের ওপরের সমস্ত পশুগুলি ইতিমধ্যে আমার অধিকারে।
11 উচ্চতম পর্বতের প্রত্যেকটি পাখিকে আমি চিনি।
পাহাড়ের প্রত্যেকটি চলমান বস্তুই আমার।
12 আমি ক্ষুধার্ত নই! যদি আমি ক্ষুধার্তও হতাম আমি তোমাদের কাছে আহার চাইতাম না।
সারা পৃথিবী এবং তার মধ্যে যা যা আছে, আমিই পৃথিবীর এবং পৃথিবীর সমস্ত জিনিষের মালিক।
13 আমি ষাঁড়ের মাংস খাই না অথবা ছাগলের দেহ থেকে রক্ত পান করি না।”
14 অতএব, অন্যান্য ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য তোমাদের ঈশ্বরের কাছে দেয় ধন্যবাদ নৈবেদ্য নিয়ে এস
এবং ঈশ্বরের সান্নিধ্যে থাকার জন্য এসো এবং তোমাদের পরাৎপরের কাছে যা প্রতিশ্রুতি করেছিলে তোমরা তাঁকে তাই দাও।
15 ঈশ্বর বলেন, “যখন তুমি সংকটে পড়বে তখন আমায় ডেকো!
আমি তোমাকে সাহায্য করবো!
তারপর তুমি আমাকে সম্মান করতে পারবে।”
16 কিন্তু দুষ্ট লোকেদের ঈশ্বর বলেন,
“তোমরা আমার বিধির সম্বন্ধে কথা বল।
তোমরা আমার চুক্তির সম্বন্ধে কথা বল।
17 আমি যখন তোমাদের ভুল সংশোধন করে দিই, তখন কেন তোমরা তা ঘৃণা কর?
আমি যা বলি কেন তোমরা তা উপেক্ষা কর?
18 তোমরা একটা চোরকে দেখ এবং তার সঙ্গে যোগ দিতে ছুটে যাও।
যারা ব্যভিচার করে তোমরা তাদের সঙ্গে বিছানায় ঝাঁপিয়ে পড়।
19 তোমরা মিথ্যা কথা বল এবং
অশুভ ব্যাপারে কথা বল।
20 অন্য লোকদের সম্পর্কে তোমরা সব সময় খারাপ কথা বল।
এমনকি তোমরা নিজের ভাইদের সম্পর্কেও খারাপ কথা বল।
21 তোমরা ঐসব বাজে কাজ করেছো এবং আমি কিছু বলি নি।
তাই তোমরা ভেবেছো আমিও ঠিক তোমাদের মত।
তবে হ্যাঁ, আর বেশীদিন আমি চুপ করে থাকবো না!
এটা আমি তোমার পরিষ্কার বুঝিয়ে দেবো এবং আমি সামনাসামনি তোমার সমালোচনা করবো!
22 তোমরা ঈশ্বরকে ভুলে গেছ।
তাই আমি তোমাদের ছিন্নভিন্ন করার আগে যদি তোমরা উপলদ্ধি কর তো ভাল!
আর যদি না বোঝ
কেউ তোমাদের বাঁচাতে পারবে না!
23 তাই যদি কোন লোক আমায় ধন্যবাদ বলি দেয় তবে সে আমার সম্মান করে।
যদি সে সৎ উপায়ে বাঁচে তাকে বাঁচানোর জন্য আমি আমার সমস্ত ক্ষমতা প্রদর্শন করবো।”
পরিচালকের প্রতি: “বিনাশ করো না।” গানটির পর্দায় গাওয়া দায়ূদের একটি মিকতাম যখন শৌল দায়ূদকে হত্যা করবার জন্য তাঁর বাড়ীতে লোক পাঠিয়েছিলেন।
59 ঈশ্বর আমাকে আমার শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করুন।
যারা আমার সঙ্গে লড়াই করতে এসেছে তাদের পরাজিত করতে আমায় সাহায্য করুন।
2 সেই সব লোক যারা মন্দ কাজ করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
ঐসব খুনীদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
3 দেখুন শক্তিশালী লোকরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে।
যদিও আমি কোন পাপ বা অপরাধ করিনি
তবুও ওরা আমায় হত্যা করার জন্য অপেক্ষা করছে।
4 আমি কোন ভুল করি নি কিন্তু আমাকে আক্রমণ করার জন্য ওরা এখানে ছুটে এসেছে।
প্রভু, উঠুন এবং এসে আমায় সাহায্য করুন। দেখুন কি ঘটছে।
5 প্রভু, আপনিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বর!
উঠুন এবং ঐসব লোককে শাস্তি দিন।
ঐসব বদ বিশ্বাসঘাতকদের প্রতি এতটুকু দয়া দেখাবেন না।
6 ঐসব লোকরা কুকুরের মত
যারা সন্ধ্যা বেলায় ক্রুদ্ধ গর্জন করতে করতে
এবং রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে শহরে আসে।
7 ওদের হুমকি ও অপমান শুনুন।
ওরা ঐসব নির্মম কথাগুলো বলছে।
কিন্তু ওরা খেয়াল করে না কারা তা শুনছে।
8 প্রভু ওদের আপনি উপহাস করুন।
ওদের সকলকে বিদ্রূপ করুন।
9 আমি আপনার উদ্দেশ্যে আমার বন্দনা গান করবো।
ঈশ্বর, উঁচু পর্বতে আপনিই আমার নিরাপদ স্থান।
10 ঈশ্বর আমায় ভালোবাসেন এবং তিনি আমাকে জয়ী হতে সাহায্য করবেন।
তিনি আমায় শত্রুদের পরাজিত করতে সাহায্য করবেন।
11 হে ঈশ্বর, ওদের নিছক হত্যা করবেন না, নতুবা আমার লোকেরা তাদের ভুলে যেতে পারে। কে তাদের জয় এনে দিয়েছে?
হে আমার প্রভু এবং রক্ষাকারী, আপনার ক্ষমতা বলে ওদের আপনি পরাজিত করুন। ছত্রভঙ্গ করুন।
12 ঐসব মন্দ লোক মিথ্যা কথা বলে ও অভিশাপ দেয়।
ওরা যা বলেছে তার জন্য ওদের শাস্তি দিন।
ওদেরই দম্ভের ফাঁদে ওদের পড়তে দিন।
13 আপনার ক্রোধে ওদের ধ্বংস করে দিন।
ওদের সম্পূর্ণরূপে বিনাশ করুন!
সারা পৃথিবীকে বুঝতে দিন যে স্বয়ং ঈশ্বর ইস্রায়েলে শাসন করছেন!
14 ঐসব মন্দ লোক, ঘেউ ঘেউ করা ভ্রাম্যমান কুকুরের মত,
রাতের বেলায় শহরে এসেছে।
15 তারা কিছু খাবারের খোঁজে ঘুরে বেড়াবে, কিন্তু কোন খাবার পাবে না,
রাতে বিশ্রাম করবার জন্যও কোন জায়গা তারা খুঁজে পাবে না।
16 কিন্তু সকালে, আমি আপনার প্রশংসা গান গাইবো।
আমি আপনার প্রেমে আনন্দ উল্লাস করবো।
কেন? কারণ উচ্চ পর্বতে আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
সংকট এলে আমি আপনার কাছে ছুটে যেতে পারবো।
17 আপনার প্রশংসা করে আমি গান গাইবো। কেন?
কারণ উচ্চ পর্বতে আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
আপনি সেই ঈশ্বর যিনি আমায় ভালোবাসেন!
পরিচালকের প্রতি: “চুক্তির লিলি ফুল” গানটির পর্দায় গাওয়া দায়ূদের একটি মিক্তাম। যখন দায়ূদের অরাম-নহরয়িম ও অরাম-সোবার সঙ্গে যুদ্ধ হয় এবং যখন যোয়াব লবণ উপত্যকায় ইদোমের 12,000 সৈন্যকে পরাজিত করে ফিরে এসেছিলো তখনকার গীত।
60 হে ঈশ্বর, আপনি আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ ছিলেন।
আপনি আমাদের বাতিল করে দিয়েছেন, আমাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন।
দয়া করে আমাদের পুনরুদ্ধার করুন।
2 আপনিই ভূমিকম্প করিয়েছেন এবং পৃথিবীকে দ্বিধাবিভক্ত করেছেন।
আমাদের পৃথিবী টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ছে।
দয়া করে একে ঠিক করুন।
3 আপনি আপনার লোকদের বহু সমস্যা দিয়েছেন।
আমরা নেশাগ্রস্ত লোকদের মত টলমল করতে করতে পড়ে যাচ্ছি।
4 যারা আপনাকে উপাসনা করে তাদের আপনি সতর্ক করেছেন।
এখন তারা শত্রুদের হাত থেকে পালিয়ে যেতে পারে।
5 আপনার পরাক্রম প্রয়োগ করে আমাদের উদ্ধার করুন!
আমার প্রার্থনার উত্তর দিন এবং যাদের আপনি ভালোবাসেন তাদের রক্ষা করুন!
6 ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে কথা বলেছেন এবং এতে আমি খুব খুশী!
তিনি বলেছেন, “আমার লোকদের সঙ্গে আমি এই ভূখণ্ড ভাগ করে নেব।
আমি ওদের শিখিম দেবো।
আমি ওদের সুক্কোতের উপত্যকা দেবো।
7 গিলিয়দ এবং মনঃশি আমার হবে।
ইফ্রয়িম আমার মাথার শিরস্ত্রাণ হবে।
যিহূদা হবে আমার বিচারদণ্ড।
8 মোয়াব দেশ আমার পা ধোয়ার গামলা হবে।
ইদোম আমার জুতো বহনকারী ক্রীতদাস হবে।
আমি পলেষ্টীয়দের পরাজিত করে বিজয় উল্লাসে চিৎকার করে উঠবো!”
9-10 কিন্তু ঈশ্বর, আপনি আমাদের ত্যাগ করলেন!
আমাদের সৈন্যদের সঙ্গে আপনি গেলেন না!
তাই কে আমাকে ঐ দৃঢ় ও সুরক্ষিত শহরে নিয়ে যাবে?
ইদোমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে কে আমায় নেতৃত্ব দেবে?
11 ঈশ্বর, শত্রুদের পরাজিত করতে আমাদের সাহায্য করুন!
জনগণ আমাদের সাহায্য করতে পারে না!
12 একমাত্র ঈশ্বরই আমাদের শক্তিশালী করতে পারেন।
একমাত্র ঈশ্বরই আমাদের শত্রুদের পরাজিত করতে পারেন!
93 প্রভুই রাজা।
তিনি রাজকীয় এবং শক্তিমান পোশাকে সজ্জিত।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে এই বিশ্বকে তার আপন জায়গায় স্থাপন করেছেন
এবং এটাকে নাড়ানো হবে না।
2 হে ঈশ্বর, আপনার রাজত্ব চিরদিন ধরে রয়েছে।
ঈশ্বর আপনার অস্তিত্ব অনাদিকাল থেকে রয়েছে।
3 প্রভু, নদীর গর্জন প্রচণ্ড তীব্র।
উচ্চকিত ঢেউ প্রচণ্ড গর্জনশীল।
4 সমুদ্রের উচ্চকিত ঢেউ প্রচণ্ড তীব্র ও গর্জনশীল।
কিন্তু উর্দ্ধে অবস্থিত প্রভু তার থেকেও বেশী শক্তিশালী।
5 প্রভু আপনার বিধি চিরদিন বজায় থাকবে।
আপনার পবিত্র মন্দিরের অস্তিত্ব দীর্ঘকালের জন্য বজায় থাকবে।
96 প্রভু যা কিছু নতুন করেছেন তার জন্য একটা নতুন গান গাও!
সারা পৃথিবীকে প্রভুর উদ্দেশ্যে গেয়ে উঠতে দাও।
2 প্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও এবং তাঁর নামকে ধন্য কর!
আনন্দ সংবাদ ছড়িয়ে দাও! যিনি প্রতিদিন আমাদের রক্ষা করেন তাঁর কথা বল!
3 লোকেদের বল যে ঈশ্বর সত্যিই বিস্ময়কর।
ঈশ্বর যে সব আশ্চর্য কার্য করেন তা সর্বত্র মানুষকে বল।
4 প্রভু মহান এবং প্রশংসার যোগ্য।
অন্য যে কোন “দেবতার” চেয়ে তিনি অনেক বেশী ভয়ঙ্কর।
5 অন্যান্য সমস্ত জাতির “দেবতা” মূর্ত্তিমাত্র।
কিন্তু প্রভু স্বর্গ সৃষ্টি করেছেন।
6 তাঁর সামনে অনুপম মহিমা ভাস্বর হয়ে ওঠে।
ঈশ্বরের পবিত্র মন্দিরে শক্তি ও সৌন্দর্য্য দুই-ই আছে।
7 হে পরিবার ও জাতিগণ, প্রশংসার গান কর
এবং প্রভুকে মহিমান্বিত কর।
8 প্রভুর নামের প্রশংসা কর।
তোমাদের নৈবেদ্য নাও এবং মন্দিরে যাও।
9 তোমাদের পবিত্র পোশাকে প্রভুর সামনে নত হও।
পৃথিবীর সমগ্র জনগণ, তাঁর উপস্থিতিতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাও।
10 জাতিগণের মধ্যে ঘোষণা করে দাও যে প্রভু রাজা!
তাহলে বিশ্ব ধ্বংস হবে না।
অতএব প্রভু ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে লোকদের বিচার করেন।
11 হে স্বর্গলোক—সুখী হও! হে পৃথিবী—উল্লসিত হও!
সমুদ্র এবং সমুদ্রে যা কিছু রয়েছে তোমরা সবাই আনন্দে চিৎকার করে ওঠো!
12 ক্ষেতগুলি এবং সেখানে যা কিছু জন্মেছে, সুখী হও!
হে অরণ্যের বৃক্ষরাশি, তোমরা গান গাও ও সুখী হও!
13 খুশী হও, কারণ প্রভু আসছেন।
পৃথিবীকে শাসন[a] করার জন্য প্রভু আসছেন।
ন্যায় বিচার ও সত্যপথে তিনি পৃথিবীকে শাসন করবেন।
এলিয় ও বালের ভাববাদী
18 একটানা তিন বছর অনাবৃষ্টির পর প্রভু এলিয়কে বললেন, “আমি আবার শীগ্গিরই বৃষ্টি পাঠাবো। যাও গিয়ে রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করো।” 2 এলিয় তখন আহাবের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।
সে সময়ে শমরিয় শহরে দুর্ভিক্ষ চলছিল। 3 রাজা আহাব তাই ওবদিয়, যে প্রাসাদ রক্ষনাবেক্ষণ করত তাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। ওবদিয় প্রকৃত অর্থেই প্রভুর অনুগামী ছিলেন। 4 এক সময়ে ঈষেবল প্রভুর সমস্ত ভাববাদীদের হত্যা করতে শুরু করেছিলেন। ওবদিয় 100 জন ভাববাদীকে দুটি গুহার মধ্যে 50 ভাগের দুটি দলে লুকিয়ে রেখে ছিলেন এবং নিয়মিত তাদের খাবার ও জল এনে দিতেন। 5 রাজা আহাব ওবদিয়কে বললেন, “চলো, আমরা বেরিয়ে সমস্ত ঝর্ণা আর নদীগুলোতে গিয়ে দেখি আমাদের ঘোড়া আর খচ্চরগুলোকে বাঁচিয়ে রাখার মতো ঘাস পাওয়া যায় কি না।” 6 দুজনে দুটি অঞ্চল ভাগ করে নিয়ে সারা দেশে জলের খোঁজে বেরিয়ে পড়ল। আহাব গেলেন এক দিকে আর ওবদিয় গেল আরেক দিকে। 7 ওবদিয়র সঙ্গে পথে এলিয়র দেখা হল। এলিয়কে দেখেই ওবদিয় চিনতে পারল এবং তাঁর সামনে নতজানু হয়ে জিজ্ঞেস করল, “এলিয়! সত্যিই কি আপনি আমার সেই মনিব?”
8 এলিয় বললেন, “হ্যাঁ, আমি এসেছি। যাও তোমার রাজাকে এ খবর জানাও।”
9 তখন ওবদিয় বলল, “আমি যদি আহাবকে বলি যে আপনি কোথায় আছেন আমি জানি তাহলে আহাব আমাকে মেরে ফেলবেন। প্রভু আমি তো আপনার কাছে কোনো অপরাধ করি নি, তাহলে আপনি কেন আমাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছেন? 10 রাজা পাগলের মতো উন্মত্ত হয়ে প্রভু, আপনার ঈশ্বরকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন, চতুর্দিকে আপনার খোঁজে লোক পাঠিয়েছেন। প্রত্যেকটা দেশে তিনি আপনাকে খুঁজতে লোক পাঠিয়ে ছিলেন এবং সেখানে আপনাকে পাওয়া না গেলে আহাব সেখানকার শাসকদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করেছেন, যে সত্যি সত্যিই আপনি সেই সব দেশে নেই। 11 আর এখন আপনি আমাকে বলছেন, রাজার কাছে গিয়ে আপনার এখানে থাকার খবর দিতে। 12 আমি গিয়ে রাজা আহাবকে একথা বলার পর, রাজা যখন আপনাকে খুঁজতে আসবেন তখন হয়তো প্রভু আপনাকে অন্য কোন জায়গায় নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখবেন আর আপনাকে খুঁজে না পেয়ে রাজা আমাকেই তখন হত্যা করবেন। আমি সেই ছোটবেলা থেকে প্রভুকে অনুসরণ করে চলেছি। 13 আপনি নিশ্চয়ই জানেন, আমি কি করেছিলাম। ঈষেবল যখন প্রভুর ভাববাদীদের হত্যা করছিলেন, আমি তখন তাদের 50 জন করে দুভাগে মোট 100 জন ভাববাদীকে দুটো গুহায় লুকিয়ে রেখে নিয়মিত খাবার ও জল দিয়েছিলাম। 14 আর এখন আপনি আমাকে রাজার কাছে গিয়ে বলতে বলছেন, যে আপনি এখানে আছেন। রাজা সঙ্গে সঙ্গেই আমাকে হত্যা করবেন।”
15 এলিয় তখন বললেন, “সর্বশক্তিমান প্রভুর উপস্থিতি যেরকম সত্য, আমিও সেই রকমই প্রতিশ্রুতি করছি যে আমি রাজার সামনে আজ দাঁড়াব।”
16 ওবদিয় তখন রাজা আহাবকে গিয়ে এলিয় কোথায় আছে তা জানাল। রাজা আহাব এলিয়র সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।
17 আহাব এলিয়কে দেখে প্রশ্ন করল, “তুমিই কি সেই লোক যার জন্য ইস্রায়েলের এই দুরবস্থা?”
18 এলিয় উত্তর দিলেন, “আমার জন্য ইস্রায়েলের কোনো দুর্দশাই হয় নি। তুমি ও তোমার পিতৃপুরুষরাই এজন্য দায়ী। তোমরা প্রভুর আদেশ অমান্য করে মূর্ত্তির পূজা শুরু করেছ। 19 এখন ইস্রায়েলের সবাইকে কর্ম্মিল পর্বতে আমার সঙ্গে দেখা করতে বলো। বালদেবের 450 জন ভাববাদী ও রানী ইষেবল সমর্থক আশেরার মূর্ত্তির 400 জন ভাববাদীকেও যেন ওখানে আনা হয়।”
ঈশ্বরের মনোমতো লোক হও
12 হে আমার প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা সবসময় বাধ্য হয়ে চলেছ। আমি যখন তোমাদের মধ্যে ছিলাম তখন তোমরা ঈশ্বরের বাধ্য ছিলে, এখন আরো বেশী প্রয়োজন যে তোমরা বাধ্য হও কারণ এখন আমি তোমাদের সবার থেকে দূরে। তোমাদের পরিত্রাণ সম্পূর্ণ করার জন্য ঈশ্বরে পরম শ্রদ্ধা ও ভীতির সাথে কাজ করে যাও। 13 হ্যাঁ, ঈশ্বর তোমাদের মধ্যে কাজ করছেন; ঈশ্বরের শক্তির সাহায্যে তোমরা সেইসব কাজ কর, যা ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করে।
14 তোমরা অভিযোগ ও তর্ক-বিতর্ক না করে সব কাজ কর, 15 যেন নির্দোষ ও খাঁটি লোক হও, এ যুগের কুটিল ও বিপথগামী লোকদের মাঝে ঈশ্বরের নিষ্কলঙ্ক সন্তানরূপে থাক। তাদের মাঝে এমনভাবে থাক যেন অন্ধকার জগতে তোমরা উজ্জ্বল নক্ষত্র। 16 তোমরা তাদের কাছে সেই শিক্ষা দাও যা জীবন আনে, তাহলে খ্রীষ্ট যখন ফিরে আসবেন তখন আমার আনন্দ করার মত কিছু থাকবে। আমার পরিশ্রম যে বৃথা হয় নি এবং আমি যে বৃথা দৌড়োই নি এই জন্য আমি আনন্দ করতে পারব।
17 ঈশ্বরের সেবার জন্য তোমাদের জীবন বলিরূপে উৎসর্গ করতে তোমাদের বিশ্বাস প্রেরণা যোগায়। হয়তো তোমাদের উৎসর্গের সঙ্গে আমার নিজের রক্তও উৎসর্গ করতে হবে; আর তাই যদি করতে হয় তবে আমি পরম সুখী হব ও তোমাদের জন্য আমি আনন্দে ভরপুর হব। 18 আমার সঙ্গে তোমাদেরও আনন্দ ও উল্লাস করা উচিত।
তীমথিয় ও ইপাফ্রদীতের কথা
19 আমি আশা করছি, প্রভু যীশুর সাহায্যে শীঘ্রই তোমাদের কাছে তীমথিয়কে পাঠাব, যেন তোমাদের খবরা-খবর জেনে আমি আশ্বস্ত হই। 20 আমার কাছে তীমথিয় ছাড়া আর কেউ নেই যে আমার সঙ্গে একাত্ম ও তোমাদের জন্যে সত্যি সত্যিই চিন্তা করে। 21 কারণ অন্য সকলেই খ্রীষ্ট যীশুর বিষয় নয়, কিন্তু কেবল নিজেদের বিষয়েই চিন্তা করছে। 22 আর তোমরা তীমথিয়র চরিত্র জান। ছেলে যেমন তার বাবার সঙ্গে কাজ করে, ইনিও তেমনি আমার সঙ্গে সুসমাচার প্রচারের সেবা কাজ করে চলেছেন। 23 খুব শিগ্গিরই আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠাতে চাইছি। আমার কি হবে তা জানতে পারলেই আমি তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব; 24 আর আমি বিশ্বাস করি যে প্রভুর কৃপায় আমি নিজেও শীঘ্রই তোমাদের কাছে যাব।
25 ইপাফ্রদীত খ্রীষ্টেতে আমার ভাই, খ্রীষ্টের সেনাদলে তিনি আমার এক সহকর্মী ও সেবক। আমার প্রয়োজনের সময় তোমরা তাঁকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছিলে। আমি এখন ভাবছি যে তাঁকে তোমাদের কাছে ফেরৎ পাঠানোর প্রয়োজন। 26 আমি তাঁকে পাঠাচ্ছি এই জন্য যে তিনি তোমাদের সকলকে দেখতে চান, আর তোমরা তাঁর অসুস্থতার কথা শুনেছ বলে তিনি খুবই চিন্তিত। 27 সত্যিই তিনি খুবই অসুস্থ হয়েছিলেন। মরণাপন্ন অবস্থা হয়েছিল, কিন্তু ঈশ্বর তাঁর প্রতি করুণা করেছেন। কেবল তাঁর প্রতি নয় কিন্তু আমার ওপরও দয়া করেছেন যেন দুঃখের উপর আরো দুঃখ আমার না হয়। 28 তাই এত আগ্রহের সঙ্গে আমি তোমাদের কাছে তাঁকে পাঠাচ্ছি যেন তোমরা তাঁকে দেখে আবার আনন্দ পাও আর তোমাদের বিষয়ে আমাকে আর চিন্তা করতে না হয়। 29 তোমরা তাঁকে প্রভুতে সানন্দে গ্রহণ করো। এই ধরণের লোকদের সম্মান করো। 30 তাঁকে সম্মান দেখানো উচিত কারণ খ্রীষ্টের কাজের জন্য তিনি প্রায় মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন। আমাকে সাহায্য করতে গিয়ে তিনি নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিয়েছিলেন; এ এমন সাহায্য ছিল যা তোমরা করতে পারতে না।
যীশুকে নিয়ে পিতামাতার মিশরে গমন
13 তাঁরা চলে যাবার পর প্রভুর এক দূত স্বপ্নে যোষেফকে দেখা দিয়ে বললেন, “ওঠো! শিশুটি ও তাঁর মাকে নিয়ে মিশরে পালিয়ে যাও। যতদিন না আমি তোমাদের বলি, তোমরা সেখানেই থেকো, কারণ এই শিশুটিকে মেরে ফেলার জন্য হেরোদ এর খোঁজ করবে।”
14 তখন যোষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে রাতে মিশরে রওনা হলেন। 15 আর হেরোদের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকলেন। এরূপ ঘটল যাতে ভাববাদীর মাধ্যমে প্রভুর কথা সফল হয়; প্রভু বললেন, “আমি মিশর থেকে আমার পুত্রকে ডেকে আনলাম।”(A)
হেরোদ বৈৎলেহমের শিশু পুত্রদের হত্যা করলেন
16 হেরোদ যখন দেখলেন যে সেই পণ্ডিতরা তাঁকে বোকা বানিয়েছে, তখন তিনি প্রচণ্ড ক্রুদ্ধ হলেন। তিনি সেই পণ্ডিতদের কাছ থেকে যে সময়ের কথা জেনেছিলেন, সেই হিসাব মতো দু’বছর ও তার কম বয়সের যত ছেলে বৈৎলেহম ও তার আশেপাশের অঞ্চলে ছিল, সকলকে হত্যা করার হুকুম দিলেন। 17 এর ফলে ভাববাদী যিরমিয়র মাধ্যমে ঈশ্বর যে কথা বলেছিলেন তা পূর্ণ হল:
18 “রামায় একটা শব্দ শোনা গেল,
কান্নার রোল ও তীব্র হাহাকার,
রাহেল তাঁর সন্তানদের জন্য কাঁদছেন।
তিনি কিছুতেই শান্ত হতে চাইছেন না, কারণ তারা কেউ আর বেঁচে নেই।”(B)
মিশর থেকে যোষেফ ও মরিয়মের প্রত্যাবর্তন
19 হেরোদ মারা যাবার পর প্রভুর এক দূত মিশরে যোষেফকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বললেন, 20 “ওঠো! এই শিশু ও তাঁর মাকে সঙ্গে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে ফিরে যাও, কারণ যারা এই ছেলের প্রাণ নাশের চেষ্টা করেছিল তারা সকলে মারা গেছে।”
21 তখন যোষেফ উঠে সেই শিশু ও তাঁর মাকে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে গেলেন। 22 কিন্তু যোষেফ যখন শুনলেন যে হেরোদের জায়গায় তাঁর পুত্র আর্খিলায় যিহূদিয়ার রাজা হয়েছে, তখন তিনি সেখানে ফিরে যেতে ভয় পেলেন। পরে আর এক স্বপ্নে তাঁকে সাবধান করে দেওয়া হল, 23 তখন তিনি গালীলে ফিরে নাসরৎ নগরে বসবাস করতে লাগলেন। এই রকম ঘটল যেন ভাববাদীর মাধ্যমে ঈশ্বর যা বলেছিলেন তা পূর্ণ হয়: তিনি নাসরতীয়[a] বলে আখ্যাত হলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International