Book of Common Prayer
পরিচালকের প্রতি: “পদ্মসমূহ” গানটির পর্দায় গাওয়া। দায়ূদের একটি গীত।
69 হে ঈশ্বর আমার সংকটসমূহ থেকে আমায় রক্ষা করুন!
আমার মুখ পর্যন্ত জল পৌঁছে গেছে।
2 এখানে এমন কিছু নেই, যার ওপর আমি দাঁড়াতে পারি।
আমি কাদায় ডুবে যেতে বসেছি,
আমি গভীর জলে ডুবে রয়েছি, আমার চারদিকে ঢেউ উত্তাল হয়ে উঠেছে।
আমি প্রায় ডুবে মরতে বসেছি।
3 আমি এতই দুর্বল হয়ে পড়েছি যে সাহায্য চাইতেও অক্ষম হয়ে গেছি।
আমার গলা যন্ত্রণা করছে।
আমার চোখ যন্ত্রণায় টন্ টন্ করে ওঠার আগে পর্যন্ত
আমি আপনার সাহায্যের প্রতীক্ষা করেছি।
4 আমার মাথায় যত চুল আছে, আমার শত্রুর সংখ্যা তার থেকেও বেশী।
কোন কারণ ছাড়াই তারা আমায় ঘৃণা করে।
আমাকে বিনাশ করার জন্য ওরা খুব কঠিন চেষ্টা করে।
শত্রুরা আমার সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলছে।
ওরা বলছে যে আমি নাকি চুরি করেছি।
এরপর যে জিনিস আমি চুরি করি নি, ওরা আমায় তার দাম দিতে বাধ্য করেছে।
5 হে ঈশ্বর, আপনি আমার ত্রুটিগুলি জানেন।
আপনার কাছে আমি আমার পাপ লুকোতে পারি না।
6 হে আমার সদাপ্রভু, সর্বশক্তিমান প্রভু, আমার জন্য যেন আপনার অনুগামীরা লজ্জায় না পড়ে।
হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আপনার অনুগামীরা যেন আমার জন্য বিব্রত বোধ না করে।
7 আমার মুখ লজ্জায় ঢেকে গেছে।
এই লজ্জা আমি আপনার জন্য বহন করছি।
8 আমার ভাইরা অচেনা মানুষের সঙ্গে যেরকম ব্যবহার করে সেরকম আমার সঙ্গে করে।
আমার মায়ের সন্তানরা আমার সঙ্গে ভিন দেশীর মতই ব্যবহার করে।
9 আপনার মন্দির সম্পর্কে আমার তীব্র অনুভূতিই আমাকে শেষ করে দিচ্ছে।
যারা আপনাকে নিয়ে মজা করে তাদের কাছ থেকে আমি অপমান কুড়িয়েছি।
10 আমি কাঁদি এবং উপবাস করি,
এর জন্য ওরা আমায় নিয়ে হাসাহাসি করে।
11 দুঃখ প্রকাশের জন্য আমি প্রায়শ্চিত্ত করি, কাপড় পরি,
লোকে আমায় নিয়ে মজা করে।
12 প্রকাশ্য স্থানে ওরা আমায় নিয়ে আলোচনা করে।
ওই মাতালরা আমায় নিয়ে গান বাঁধে।
13 হে ঈশ্বর, আমার দিক থেকে আপনার কাছে এই প্রার্থনা:
আমি চাই আপনি আমায় গ্রহণ করুন!
হে ঈশ্বর আমি চাই প্রেমের সঙ্গে আপনি আমায় সাড়া দিন।
আমি জানি আপনি আমায় উদ্ধার করবেন।
এ ব্যাপারে আমি আপনার ওপর নির্ভর করতে পারি।
14 আমাকে কাদা থেকে টেনে তুলুন।
আমায় কাদায় ডুবে যেতে দেবেন না।
যারা আমায় ঘৃণা করে তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
এই গভীর জল থেকে আমায় উদ্ধার করুন।
15 ঢেউগুলো যেন আমায় ডুবিয়ে না দেয়।
গভীর গহ্বরকে আমায় ভক্ষণ করতে দেবেন না।
কবরকে আমায় গিলে ফেলতে দেবেন না।
16 প্রভু, আপনার প্রেম ভালো, আপনার ভালোবাসা দিয়ে আমায় উত্তর দিন।
আপনার সব দয়া নিয়ে আমার দিকে ফিরুন, আমায় সাহায্য করুন!
17 আপনার দাসের কাছ থেকে দূরে সরে যাবেন না।
আমি সংকটের মধ্যে পড়েছি! তাড়াতাড়ি আমায় সাহায্য করুন!
18 আসুন আমার আত্মাকে রক্ষা করুন।
শত্রুদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
19 আমার লজ্জা আপনি জানেন।
আপনি জানেন যে আমার শত্রুরা আমাকে ঘৃণা ও অপমান করেছে।
ওরা আমার প্রতি যে কাজ করেছে তাও আপনি দেখেছেন।
20 সেই লজ্জা আমায় বিদীর্ণ করে দিয়েছে।
লজ্জায় আমি মরে যেতে বসেছি!
আমি সহানুভূতি পাওয়ার আশা করেছিলাম
কিন্তু কখনই আমি তা পাই নি।
আমি অপেক্ষা করেছিলাম কোন লোক এসে আমায় সান্ত্বনা দিক
কিন্তু কোন লোক আসে নি।
21 ওরা আমায়, আহার নয়, বিষ দিয়েছে।
যখন আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম দ্রাক্ষারসের বদলে ওরা আমায় অম্লরস দিয়েছিল।
22 ওদের টেবিলগুলো খাবারে পরিপূর্ণ।
সমারোহপূর্ণ মঙ্গল আহার ওদের আছে।
ওদের ভোজ যেন ওদের বিনাশ করে।
23 আমি কামনা করি ওরা যেন অন্ধ হয়ে যায় এবং ওদের মেরুদণ্ড যেন দুর্বল হয়ে পড়ে।
24 ওদের আপনার সব ক্রোধ
অনুভব করতে দিন।
25 ওদের ঘর শূন্য করে দিন।
একটা কেউ যেন ওখানে বেঁচে না থাকে।
26 ওদের শাস্তি দিন, ওরা ছুটে পালাবে।
তখন ওরা আলোচনা করার জন্য কিছু যন্ত্রণা ও ক্ষত পাবে।
27 মন্দ কাজের জন্য ওদের শাস্তি দিন।
আপনার ধার্ম্মিকতা ওদের দেখাবেন না।
28 জীবনের গ্রন্থ থেকে ওদের নাম মুছে দিন।
জীবনের পুস্তকে ধার্ম্মিক লোকদের নামের সঙ্গে ওদের নাম লিখবেন না!
29 আমি দুঃখী এবং যন্ত্রণাবিদ্ধ।
ঈশ্বর আমায় টেনে তুলুন; আমায় রক্ষা করুন!
30 গানের মধ্যে দিয়ে আমি ঈশ্বরের প্রশংসা করবো।
ধন্যবাদ গীতের মধ্য দিয়ে আমি তাঁর প্রশংসা করবো।
31 এটাই ঈশ্বরকে সুখী করবে!
উৎসর্গ হিসেবে একটা গোটা পশু দেওয়ার চেয়ে অথবা একটা ষাঁড় হত্যা করার চেয়ে, গানের মধ্যে দিয়ে ধন্যবাদ দেওয়া অনেক ভাল হবে।
32 হে বিনয়ী লোকরা, ঈশ্বরের উপাসনার জন্য এসো।
এইসব জেনে তোমরা খুশী হবে।
33 দরিদ্র ও অসহায় মানুষের কথা প্রভু শোনেন।
যারা বন্দী আছেন প্রভু তাদের এখনও পছন্দ করেন।
34 হে আকাশ ও পৃথিবী, ঈশ্বরের প্রশংসা কর!
হে সমুদ্র এবং সমুদ্রের মধ্যের সবকিছু, প্রভুর প্রশংসা কর!
35 প্রভু সিয়োনকে রক্ষা করবেন।
প্রভু যিহূদার শহরগুলি আবার নির্মাণ করবেন।
সেই ভূখণ্ড যাদের, সেখানে তারা আবার বাস করবে!
36 তাঁর দাসদের উত্তরপুরুষরা এই ভূখণ্ড পাবে।
সেই সব লোক যারা তাঁর নামকে ভালোবাসে তারা সেই ভূখণ্ডে বসবাস করবে।
তৃতীয় খণ্ড
(গীতসংহিতা 73–89)
আসফের একটি প্রশংসা গীত।
73 ঈশ্বর সত্যিই ইস্রায়েলের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করছেন।
যাদের হৃদয় শুচি তাদের সঙ্গে ঈশ্বর ভালো ব্যবহার করেন।
2 আমার প্রায় পদস্খলন হয়েছিলো
এবং আমি পাপ কাজ করতে শুরু করেছিলাম।
3 আমি দেখেছি ঐসব দুষ্ট লোকরা কৃতকার্য হয়েছে
এবং তা দেখে ঐসব উদ্ধত লোকদের প্রতি আমি ঈর্ষা করেছিলাম।
4 ওরা সবাই বলবান লোক ছিলো।
বেঁচে থাকবার জন্য ওদের কোন লড়াই করতে হত না।
5 ঐসব উদ্ধত লোককে আমাদের মত দুর্ভোগ পোহাতে হয় না।
অন্যান্য লোকেদের মত ওদের কোন সংকট নেই।
6 তাই ওরা উদ্ধত এবং মানুষকে ঘৃণা করে।
এই অহঙ্কারকে তারা গলার মালার মত এবং শৌখিন বস্ত্রের মত সহজেই ধারণ করে।
7 ঐসব লোক যদি ওদের পছন্দের কিছু দেখে, ওরা গিয়ে তা নিয়ে চলে আসে।
ওরা যা মনে করে, ওরা তাই করতে পারে।
8 লোকের সম্পর্কে ওরা নির্মম ও অহিতকর কথাবার্তা বলে।
অন্যদের কাছ থেকে ওরা কিভাবে সুবিধে নেয় সে সম্বন্ধে ওরা গর্বের সঙ্গে কথা বলে।
9 ঐসব অহঙ্কারী লোকরা নিজেদের দেবতা বলে ভাবে!
ওরা ভাবে ওরাই পৃথিবীর শাসনকর্তা।
10 এমনকি ঈশ্বরের লোকরা পর্যন্ত সাহায্যের জন্য ওদের কাছে ছুটে যায়।
ঐ উদ্ধত লোকরা যা বলে, ওরাও তাই করে।
11 ঐ মন্দ লোকরা বলে, “আমরা কি করছি ঈশ্বর তা জানেন না!
ঈশ্বর, যিনি পরাৎপর, তিনি জানেন না!”
12 ঐ অহঙ্কারী লোকরা প্রচণ্ড দুর্জন,
কিন্তু ওরা ধনী এবং ওরা ক্রমশঃ আরো ধনী হয়ে উঠছে।
13 তাই আমার আত্মাকে কেন শুদ্ধ হতে হবে?
আমি কেন আমার হাত নির্দোষ রাখব?
14 হে ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমি যন্ত্রণা ভোগ করি।
প্রত্যেকদিন সকালে আপনি আমায় শাস্তি দেন।
15 ঈশ্বর, এইসব বিষয়ে আমি অন্য লোকদের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছি।
কিন্তু আমি জানি তাতে আপনার লোকদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।
16 এইসব বিষয় বোঝার জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করেছি।
কিন্তু এটা আমার পক্ষে ভীষণ কষ্টকর।
17 ততক্ষণ পর্যন্ত আমি আপনার মন্দিরে যাই নি,
আমি ঈশ্বরের মন্দিরে গেলাম এবং তারপর বুঝতে পারলাম।
18 ঈশ্বর, সত্যিই ঐসব লোককে আপনি ভয়ানক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলেছেন।
ওদের পতন এবং বিনাশ এখন সহজ হবে।
19 হঠাৎই সমস্যা আসতে পারে
এবং ঐ অহঙ্কারী লোকরা ধ্বংস হবে।
ওদের সাংঘাতিক কিছু ঘটতে পারে
এবং ওরা শেষ হয়ে যাবে।
20 প্রভু, যেমন করে আমরা জেগে উঠে স্বপ্নকে ভুলে যাই,
ঐসব লোকরা সেই স্বপ্নের মতই বিস্মৃত হবে।
আমাদের রাতের দুঃস্বপ্ন যেমন আপনি অদৃশ্য করে দেন,
তেমনি করে আপনি ওই লোকগুলোকে অদৃশ্য করে দেবেন।
21-22 আমি অত্যন্ত নির্বোধ ছিলাম।
আমি দুষ্ট ও ধনী লোকদের কথা ভাবতাম এবং ক্লেশগ্রস্ত হয়ে পড়তাম।
হে ঈশ্বর, আমি ক্লেশগ্রস্ত ছিলাম এবং আপনার ওপর রাগ করেছিলাম!
আমি নির্বোধ ও অজ্ঞ পশুর মত ব্যবহার করেছিলাম।
23 আমার যা কিছু দরকার তা আমার আছে!
আমি সর্বদাই আপনার সঙ্গে আছি।
হে ঈশ্বর আপনি আমার হাত ধরুন।
24 ঈশ্বর, আমায় সুপরামর্শ দিন ও পরিচালিত করুন।
তাহলে আপনি আমায় গৌরবের পথে নিয়ে যাবেন।
25 হে স্বর্গের ঈশ্বর, আমি সর্বদা আপনার সঙ্গে রয়েছি
এবং আমি যখন আপনার সঙ্গে রয়েছি তখন এই পৃথিবীতে আমি আর কী চাইতে পারি?
26 আমার এই দেহ মন একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে,
কিন্তু আমার শিলা, যাঁকে আমি ভালোবাসি তিনি থাকবেন।
চিরকালের জন্য আমার কাছে ঈশ্বর আছেন!
27 ঈশ্বর যারা আপনাকে ত্যাগ করেছে তারা হারিয়ে যাবে।
যারা আপনার প্রতি অবিশ্বস্ত তাদের আপনি ধ্বংস করে দেবেন।
28 আমি জানি, আমি ঈশ্বরের কাছে এসেছি এবং তাঁর কাছাকাছি থাকা আমার পক্ষে ভালো।
আমি আমার প্রভু, সদাপ্রভুকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল করে নিয়েছি।
ঈশ্বর আপনি যা কিছু করেছেন তাঁর সব কিছু বলতে আমি এসেছি।
ইস্রায়েলীয়রা দায়ূদকে রাজা মনোনীত করল
5 তারপর ইস্রায়েলের সব কটি পরিবারগোষ্ঠী হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এল এবং তারা তাঁকে বলল, “দেখুন, আমরা একই পরিবারভুক্ত।[a] 2 এমন কি শৌল যখন আমাদের রাজা ছিলেন, তখনও যুদ্ধে আপনি আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং আপনিই ইস্রায়েলকে যুদ্ধ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন। এমনকি প্রভু স্বয়ং আপনাকে বলেছেন ‘তুমিই আমার প্রজা সকলের মেষপালক হবে। তুমিই ইস্রায়েলের শাসনকর্তা হবে।’”
3 তাই ইস্রায়েলের নেতারা রাজা দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে হিব্রোণে এলেন। রাজা দায়ূদ প্রভুর সামনে, সেই নেতাদের সঙ্গে একটা চুক্তি করলেন। তারপর ঐ নেতারা দায়ূদকে ইস্রায়েলের রাজারূপে অভিষিক্ত করলেন।
4 দায়ূদের যখন 30 বছর বয়স তখন তিনি শাসনকার্য শুরু করেন এবং 40 বছর ধরে তিনি রাজা হিসেবে বহাল ছিলেন। 5 হিব্রোণে তিনি 7 বছর 6 মাস ধরে যিহূদা শাসন করেন এবং জেরুশালেমে থাকার সময় ইস্রায়েল ও যিহূদাকে 33 বছর শাসন করেন।
দায়ূদ জেরুশালেম শহর জয় করলেন
6 রাজা দায়ূদ এবং তাঁর অনুচররা, জেরুশালেমে বসবাসকারী যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গেলেন। যিবূষীয়রা দায়ূদকে বলল, “তুমি এই শহরে ঢুকতেই পারবে না।[b] আমাদের অন্ধ ও পঙ্গু লোকরাই তোমাকে আটকে দেবে।” (তারা এই কথা বলেছিল কারণ তারা ভেবেছিল দায়ূদ তাদের শহরে ঢুকতে পারবেন না। 7 কিন্তু দায়ূদ সিয়োন দুর্গ দখল করলেন। এই দুর্গটি দায়ূদের শহর হল।)
8 সেইদিন দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের বললেন, “যদি তোমরা যিবুষীয়দের হারাতে চাও তবে জলের সুড়ঙ্গ[c] পথ দিয়ে সেই সব ‘পঙ্গু ও অন্ধ’ শত্রুদের কাছে পৌঁছে যাও।” এই জন্য লোকে বলে, “অন্ধ ও পঙ্গুরা মন্দিরে ঢুকতে পারে না।”
9 দায়ূদ সেই দুর্গে বাস করতে লাগলেন এবং সেই শহরকে “দায়ূদের শহর” বললেন। দায়ূদ মিল্লো নামে একটি অঞ্চল নির্মাণ করলেন। তিনি শহরের মধ্যে আরও অনেক বাড়ী তৈরী করলেন। 10 দায়ূদ ক্রমশঃই শক্তিশালী হয়ে উঠলেন কারণ সর্বশক্তিমান প্রভু তার সঙ্গে ছিলেন।
11 সোরের রাজা হীরম দায়ূদের কাছে বার্তাবাহক পাঠালেন। হীরম এরস গাছসমূহ, ছুতোর মিস্ত্রীগণ এবং পাথর দিয়ে বাড়ী তৈরীর মিস্ত্রীও পাঠালেন। তারা দায়ূদের জন্য একটা বাড়ী তৈরী করল। 12 তখন দায়ূদ বুঝতে পারলেন, যে প্রভু সত্যিসত্যিই তাঁকে ইস্রায়েলের রাজা করেছেন এবং তাঁর রাজ্যকে (দায়ূদের রাজ্যকে), তাঁর লোকদের, ইস্রায়েলীয়দের জন্য উন্নীত করেছেন।
পৌল ও সীল থিষলনীকীতে
17 এরপর তারা আম্ফিপলি ও অপল্লোনিয়ার ভেতর দিয়ে থিষলনীকীতে এলেন। এখানে ইহুদীদের একটি সমাজ-গৃহ ছিল। 2 পৌল তাঁর রীতি অনুযায়ী ইহুদীদের দেখার জন্য একটি সমাজ-গৃহে গেলেন। তিনটি বিশ্রামবারে তিনি তাদের সঙ্গে শাস্ত্র নিয়ে আলোচনা করলেন। 3 ইহুদীদের কাছে শাস্ত্র ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দিলেন যে খ্রীষ্টের দুঃখভোগ করা ও মৃত্যু থেকে পুনরুত্থানের প্রয়োজন ছিল। পৌল বললেন, “এই যে যীশুকে আমি তোমাদের কাছে প্রচার করছি, ইনিই খ্রীষ্ট।” 4 তাদের মধ্যে কেউ কেউ এতে সম্মতি জানাল এবং পৌল ও সীলের সঙ্গে যোগ দিল। এদের মধ্যে অনেক ঈশ্বরভক্ত গ্রীক ছিল যারা সত্য ঈশ্বরের উপাসনা করত, ও কিছু গন্য-মান্য মহিলাও ছিলেন।
5 কিন্তু ইহুদীদের মনে ঈর্ষা জাগল। তারা কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোককে বাজার থেকে জোগাড় করল আর এইভাবে একটা দল তৈরী করে শহরে গণ্ডগোল বাধিয়ে দিল। তারা লোকসমক্ষে পৌল ও সীলকে দাঁড় করানোর জন্য যাসোনের বাড়িতে চড়াও হয়ে সেখানে তাঁদের খুঁজতে লাগল। 6 কিন্তু সেখানে তাঁদের না পেয়ে তারা যাসোন ও অন্য কয়েকজন ভাইকে ধরে টানতে টানতে শহরের শাসনকর্তাদের কাছে নিয়ে গেল। তারপর তারা চিৎকার করে বলল, “এই যে লোকরা সারা জগতে গোলমাল পাকিয়ে বেড়াচ্ছে, এরা এখন এখানে এসেছে! 7 আর যাসোন কিনা তাদের নিজের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছে? এরা সকলে কৈসরের আইনের বিরোধিতা করে। এরা বলে বেড়াচ্ছে যে যীশু বলে আর একজন রাজা আছে।”
8 এই কথা শুনে সমবেত জনতা ও কর্ত্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন হল। 9 তারা যাসোন ও বাকী আর সকলের জরিমানা নিয়ে তাদের ছেড়ে দিল।
বিরয়াতে পৌল এবং সীল
10 সেই রাতেই ভাইরা পৌল ও সীলকে বিরয়াতে পাঠিয়ে দিল। সেখানে পৌঁছে তাঁরা ইহুদীদের সমাজ-গৃহে গেলেন। 11 থিষলনীকীয়র লোকদের থেকে এই লোকরা আরো উদার মনোভাবাপন্ন ছিল। এরা আগ্রহের সঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য শুনল। পৌল ও সীলের বক্তব্যের বিষয় সত্য কিনা তা মিলিয়ে দেখার জন্য তারা প্রতিদিন শাস্ত্রের মধ্যে অনুসন্ধান করতে লাগল। 12 এর ফলে ইহুদীদের মধ্যে অনেকে বিশ্বাস করল, এদের মধ্যে কয়েকজন সম্ভ্রান্ত গ্রীক মহিলা ও বহু পুরুষও ছিলেন।
13 থিষলনীকীয় ইহুদীরা যখন শুনতে পেল যে পৌল বিরয়াতে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করছেন, তখন তারা সেখানে এসে লোকদের ক্ষেপিয়ে তুলল। 14 তখন সেখানকার ভাইরা তাড়াতাড়ি করে পৌলকে সমুদ্রতীরে পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু সীল ও তীমথিয় বিরয়াতে রয়ে গেলেন। 15 পৌলকে সঙ্গে নিয়ে যাঁরা গিয়েছিলেন তাঁরা আথীনী পর্যন্ত গেলেন। সীল ও তীমথিয়র উদ্দেশ্যে এক বার্তা নিয়ে ভাইরা বিরয়াতে ফিরে এলেন। বার্তাতে বলা ছিল, “যত শীঘ্র সম্ভব তোমরা আমার কাছে চলে এস।”
যীশু একটি অইহুদী স্ত্রীলোককে সাহায্য করলেন
(মথি 15:21-28)
24 পরে তিনি সেই স্থান ছেড়ে সোর অঞ্চলে গিয়ে সেখানে একটা বাড়িতে ঢুকলেন, আর তিনি যে সেখানে এসেছেন সেটা গোপন রাখতে চাইলেন: কিন্তু পারলেন না। 25 যীশুর আসার কথা শুনে একটি স্ত্রীলোক, যার মেয়ের ওপর অশুচি আত্মা ভর করেছিল, সে সঙ্গে সঙ্গে এসে যীশুর পায়ে লুটিয়ে পড়ল। 26 স্ত্রীলোকটি ছিল জাতিতে গ্রীক, সুরফৈনীকী। সে মিনতি করে যীশুকে বলল যেন তিনি তার মেয়ের ভেতর থেকে ভূতকে তাড়িয়ে দেন।
27 তিনি স্ত্রীলোকটিকে বললেন, “প্রথমে ছেলেমেয়েরা তৃপ্ত হোক্, কারণ ছেলেমেয়েদের খাবার নিয়ে কুকুরকে খাওয়ানো ঠিক নয়।”
28 তখন সেই স্ত্রীলোকটি বলল, “প্রভু এটা সত্য; কিন্তু কুকুররাও তো খাবার টেবিলের নীচে ছেলেমেয়েদের ফেলে দেওয়া খাবারের টুকরোগুলো খেতে পায়।”
29 তখন তিনি তাকে বললেন, “তুমি ভালোই বলেছ, বাড়ি যাও, গিয়ে দেখ ভূত তোমার মেয়েকে ছেড়ে চলে গেছে।”
30 তখন সে বাড়ি গিয়ে দেখতে পেল, মেয়েটি বিছানায় শুয়ে আছে এবং ভূত তার মধ্য থেকে বেরিয়ে গেছে।
এক বধিরের আরোগ্যলাভ
31 পরে তিনি সোর থেকে সীদোন হয়ে দিকাপলি অঞ্চলের ভেতর দিয়ে গালীল হ্রদের কাছে ফিরে এলেন। 32 তখন কিছু লোক একটা বোবা কালাকে তাঁর কাছে এনে তাঁকে তার ওপর হাত রাখতে মিনতি করল।
33 তিনি তাকে ভীড়ের মধ্যে থেকে এক পাশে এনে তার দুই কানে নিজের আঙ্গুল দিলেন। তারপর থুথু ফেলে তার জিভ ছুঁলেন। 34 আর স্বর্গের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললেন, “ইপফাথা!” যার অর্থ “খুলে যাক!” 35 সঙ্গে সঙ্গে লোকটি কানে শুনতে পেল, তার জিভের জড়তা কেটে গেল আর সে ভালভাবেই কথা বলতে লাগল।
36 পরে তিনি তাদের একথা আর কাউকে বলতে নিষেধ করলেন; কিন্তু তিনি যতই বারণ করলেন ততই তারা আরো বেশী করে বলতে লাগল। 37 যীশুর এই কাজ দেখে তারা অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে গিয়ে বলল, “তিনি যা কিছু করেন তা অপূর্ব। তিনি কালাকে শোনার শক্তি, বোবাকে কথা বলার শক্তি দেন।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International