Book of Common Prayer
পরিচালকের প্রতি। দায়ূদের একটি গীত।
41 সেই ব্যক্তি যে দীন দরিদ্রকে সফল হতে সাহায্য করে, সে বিপুল পরিমানে আশীর্বাদ পাবে।
সমস্যার সময় প্রভু তাকে উদ্ধার করবেন।
2 প্রভু সেই ব্যক্তিকে রক্ষা করবেন এবং জীবিত রাখবেন।
পৃথিবীতে সেই লোকই আশীর্বাদ ধন্য হবে।
তার সেই লোকের শত্রুর হাতে ঈশ্বর তাকে ধ্বংস হতে দেবেন না।
3 যখন সেই ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকে, প্রভু তাকে শক্তি দেন।
সে বিছানায় অসুস্থ থাকতে পারে, কিন্তু প্রভু তাকে সুস্থ করে দেন!
4 আমি বলেছিলাম, “প্রভু, আমার প্রতি সদয় হোন,
আমি আপনার বিরুদ্ধে পাপ করেছি, আপনি আমায় ক্ষমা করে দিন, সুস্থ করে তুলুন।”
5 আমার শত্রুরা আমার সম্পর্কে খারাপ কথা বলছে।
তারা বলে, “যখন ও মারা যাবে তখন ওর নাম মুছে যাবে।”
6 লোকে আমাকে দেখতে আসে
কিন্তু তারা প্রকৃতই কি ভাবছে, তা আমাকে বলে না।
ওরা আমার সম্পর্কে খবর নিতে আসে
এবং ফিরে গিয়ে গুজব ছড়ায়।
7 আমার শত্রু আমার সম্পর্কে কানাঘুষো করে।
ওরা আমার বিরুদ্ধে খারাপ কাজ করার ষড়যন্ত্র করছে।
8 ওরা বলে, “ও নিশ্চয় কোন অন্যায় কাজ করেছিলো।
তাই ও অসুস্থ হয়েছে
এবং আর কখনও ভালো হয়ে উঠবে না।”
9 আমার প্রিয়তম বন্ধু, আমার সঙ্গে খেয়েছে।
আমি ওকে বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু এখন সেও আমার বিরুদ্ধে গিয়েছে।
10 তাই প্রভু আমার প্রতি সদয় হোন।
আমাকে উঠে দাঁড়াতে দিন, ওদের প্রাপ্য আমি ফেরৎ দেবো।
11 প্রভু শত্রুদের হাতে আমাকে আহত হতে দেবেন না।
তাহলে আমি বুঝবো আমাকে আঘাত করার জন্য আপনি ওদের পাঠান নি।
12 আমি নির্দোষ ছিলাম, তাই আপনি আমায় সহায়তা দিয়েছিলেন।
আমাকে উঠে দাঁড়াতে দিন, চিরদিন আপনার সেবা করতে দিন।
13 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের প্রশংসা কর!
তিনি চিরদিন ছিলেন, তিনি চিরদিন বিরাজিত থাকবেন।
আমেন।
পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি মস্কীল। যখন ইদোমীয় দোয়েগ শৌলের কাছে গিয়েছিল এবং তাকে বলেছিল, “দায়ূদ অহীমেলকের ঘরে আছে।”
52 হে যোদ্ধা, তোমার কৃত অন্যায় নিয়ে তুমি এত বড়াই কর কেন?
তুমি অনবরত ঈশ্বরের সম্মানহানি ঘটাও।
2 তোমরা সবসময় অন্য লোকদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত কর। তোমাদের জিভ বিপজ্জনক, খুরের মতই ধারালো।
তোমরা সর্বদাই মিথ্যা কথা বল এবং কাউকে না কাউকে ঠকাতে চেষ্টা কর!
3 ভালোর থেকে মন্দটাই তোমরা বেশী পছন্দ কর।
তোমরা সত্যের থেকে মিথ্যা বলতেই বেশী পছন্দ কর।
4 তোমরা এবং তোমাদের মিথ্যাবাদী জিভ মানুষকে আঘাত করতে ভালোবাসে।
5 তাই ঈশ্বর চিরদিনের জন্য তোমাদের ধ্বংস করবেন!
যেমন করে একটা লোক একটা গাছকে মূলসহ উপড়ে ফেলে, একইভাবে ঈশ্বর তোমাদের বাড়ী[a] থেকে তোমাদের বিচ্ছিন্ন করে দেবেন!
6 ভালো লোকরা তা দেখবে
এবং ঈশ্বরকে ভয় ও শ্রদ্ধা করতে শিখবে।
তারা তোমাদের দেখে উপহাস করে বলবে,
7 “দেখ, ঈশ্বরে যে ব্যক্তি নির্ভর করত না, তার কি অবস্থা হয়েছে।
ঐ লোকটা ভেবেছিলো ওর সম্পদ এবং মিথ্যাচার ওকে রক্ষা করবে।”
8 কিন্তু আমি সবুজ জলপাই গাছের মত প্রভুর মন্দিরে বড় হয়ে উঠছি।
আমি প্রভুর সত্য প্রেমে চিরদিন আস্থা রাখবো।
9 ঈশ্বর যা কিছু আপনি করেছেন তার জন্য চিরদিন আমি আপনার প্রশংসা করবো।
আপনার ভক্তদের সামনে আমি আপনার নামের প্রশস্তি গীত করবো,[b] কারণ সেটা খুব ভালো!
পরিচালকের প্রতি: কোরহ পরিবার থেকে একটি মস্কীল।
44 ঈশ্বর, আমরা আপনার সম্পর্কে শুনেছি।
আমাদের পিতৃপুরুষরা বলে গেছেন তাঁদের জীবদ্দশায় আপনি কি করেছেন।
তাঁরা বলে গেছেন সুদূর অতীতে আপনি কী করেছেন।
2 ঈশ্বর আপনার পরাক্রমী শক্তিবলে এই ভূখণ্ড
আপনি অন্যের কাছ থেকে নিয়ে আমাদের দিয়েছেন।
সেই সব ভিন দেশী লোকেদের আপনি একেবারে ধূলিস্যাৎ করে দিয়েছেন।
এই ভূখণ্ড ছেড়ে যেতে আপনি তাদের বাধ্য করেছেন।
3 আমাদের পিতৃপুরুষরা তাঁদের তরবারির জোরে এই ভূখণ্ড অধিকার করেন নি।
তাঁদের বলিষ্ঠ বাহুর জোরে তাঁরা জয়ী হন নি।
এইসব হয়েছে কারণ, আপনি আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে ছিলেন।
ঈশ্বর আপনার বিপুল শক্তি আমার পিতৃপুরুষদের রক্ষা করেছে।
কেন? কারণ আপনি তাদের ভালোবাসতেন!
4 হে ঈশ্বর, আপনিই আমার রাজা।
আপনি আজ্ঞা দিন এবং যাকোবের লোকদের জয়ের পথে পরিচালিত করুন।
5 হে ঈশ্বর, আপনার সাহায্য নিয়েই আমরা আমাদের শত্রুকে পিছু হটিয়ে দেবো।
আপনার ক্ষমতা নিয়ে আমরা আমাদের শত্রুদের ওপর অনায়াসে বিজয়ী হব।
6 আমি আমার তীর-ধনুকে আস্থা রাখি না।
আমি জানি অন্ততঃ আমার তরবারি আমাকে রক্ষা করবে না।
7 ঈশ্বর আপনিই আমাদের শত্রুর হাত থেকে বাঁচিয়েছেন।
আপনিই শত্রুদের লজ্জার মুখে ঠেলে দিয়েছেন।
8 হে ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমরা আপনার প্রশংসা করেছি!
চিরকাল আমরা আপনার প্রশংসা করবো!
9 কিন্তু হে ঈশ্বর আপনি আমাদের ত্যাগ করেছেন।
আপনি আমাদের বিব্রত করেছেন। আপনি আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে আসেন নি।
10 আপনিই আমাদের শত্রুদের আমাদের ঠেলে সরিয়ে দেবার সুযোগ করে দিয়েছেন।
শত্রুরা আমাদের সম্পদ নিয়ে গেছে।
11 আপনি আমাদের সেই মেষের মত ফেলে রেখেছিলেন যাদের বধ করতে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেই সব মেষের মত আমাদের পরিত্যাগ করেছেন।
আমাদের আপনি বিদেশী জাতিগুলির মধ্যে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
12 হে ঈশ্বর, আপনি আপনার লোকদের নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করেছেন।
এমনকি আপনি মূল্য নিয়েও কোন তর্ক করলেন না।
13 প্রতিবেশীদের কাছে আপনি আমাদের হাস্যাস্পদ করে তুললেন।
ওরা আমাদের নিয়ে হাসাহাসি ও মজা করে।
14 আমরা এখন লোকমুখে হাসির গল্পের মত।
এমনকি সেই সব লোক যাদের নিজেদের কোন জাতি নেই তারাও আমাদের দেখে মাথা নাড়িয়ে হাসে।
15 আমি লজ্জায় ডুবে রয়েছি।
সারাদিন ধরে আমি আমার লজ্জাকেই দেখি।
16 যারা আমার প্রতি প্রতিশোধ নিতে ইচ্ছুক,
সেই সব শত্রুর উপহাস এবং অপমান থেকে আমি লজ্জায় নিজেকে লুকিয়ে রাখি।
17 ঈশ্বর, আমরা আপনাকে ভুলি নি।
তথাপি আপনি আমাদের প্রতি ঐসব করলেন।
যখন আপনার চুক্তিতে আমরা স্বাক্ষর করেছিলাম,
তখন আমরা আপনার সঙ্গে মিথ্যাচার করি নি!
18 ঈশ্বর, আমরা আপনার কাছ থেকে মুখ ঘুরিয়ে দূরে চলে যাই নি।
আমরা আপনাকে অনুসরণ করা থেকে বিরত হই নি।
19 কিন্তু হে ঈশ্বর, যেখানে শেয়ালের বাস, সেখানে আপনি আমাদের গুঁড়িয়ে ফেললেন।
মৃত্যুর মত নীরন্ধ্র অন্ধকারে আপনি আমাদের ত্যাগ করে চলে গেছেন।
20 আমরা কি আমাদের ঈশ্বরের নাম ভুলে গিয়েছিলাম?
আমরা কি অন্য কোন দেবতার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম?
না! আমরা তা করি নি।
21 নিশ্চিতভাবে ঈশ্বর এইসব জানেন।
আমাদের গভীরতম গোপন কথা পর্যন্ত তিনি জানেন।
22 ঈশ্বর, সারাদিন ধরে আমরা আপনার জন্য প্রাণ দিয়েছি!
যে সব মেষদের কেটে ফেলা হবে আমরা তাদের মতই হয়েছি।
23 হে আমার প্রভু, উঠুন!
কেন আপনি ঘুমাচ্ছেন?
উঠুন! চিরদিনের জন্য আমাদের ত্যাগ করবেন না!
24 প্রভু, কেন আপনি আমাদের থেকে লুকোচ্ছেন?
আপনি কি আমাদের দুঃখ যন্ত্রণা ভুলে গেছেন?
25 আমাদের ধূলোর মধ্যে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
ধূলোতে উদর ঠেকিয়ে আমরা পড়ে আছি।
26 ঈশ্বর, উঠুন এবং আমাদের সাহায্য করুন!
আপনার চিরন্তণ প্রেম প্রদর্শন করে আমাদের উদ্ধার করুন!
দায়ূদ শৌলকে লজ্জায় ফেললেন
24 শৌল পলেষ্টীয়দের হারিয়ে দিলেন। এরপর লোকরা তাঁকে জানাল, “দায়ূদ ঐন্-গদীর কাছাকাছি একটা মরুভূমি অঞ্চলে রয়েছে।”
2 তখন শৌল ইস্রায়েল থেক 3000 জন পুরুষ বেছে নিলেন। শৌল তাদের সঙ্গে বুনো ছাগলের শিলার কাছে দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীদের খোঁজ করতে লাগলেন। 3 শৌল রাস্তার ধারে একটা মেষের গোয়ালে এসে পড়লেন। কাছাকাছি একটা গুহা ছিল। শৌল হাল্কা হতে গুহাটির ভিতর গেলেন। দায়ূদ এবং তাঁর লোকরা গুহার ভিতরে অনেক দূরে লুকিয়ে ছিল। 4 সঙ্গীরা দায়ূদকে বলল, “প্রভু আজকের দিনটার কথাই বলেছিলেন। তিনি আপনাকে বলেছিলেন, ‘আমি তোমার কাছে তোমার শত্রুকে এনে দেব। তারপর তুমি একে নিয়ে যা খুশি তাই করো।’”
দায়ূদ হামাগুড়ি দিয়ে এসে ক্রমে শৌলের বেশ কাছে এসে পড়লেন। তারপর তিনি শৌলের জামার একটা কোণ কেটে ফেললেন। শৌল দায়ূদকে দেখতে পান নি। 5 পরে এর জন্য দায়ূদের মন খারাপ হয়ে গেল। 6 দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের বললেন, “আমি আশা করি আমার মনিবের বিরুদ্ধে এই ধরণের কাজ প্রভু আর আমায় করতে দেবেন না। শৌল হচ্ছেন প্রভুর মনোনীত রাজা। আমি তাঁর বিরুদ্ধে কিছু করব না।” 7 এই কথা বলে দায়ূদ তাঁর সঙ্গীদের থামিয়ে দিলেন। শৌলকে আঘাত করতে তাদের নিষেধ করে দিলেন।
শৌল গুহা ছেড়ে নিজ রাস্তায় চললেন। 8 দায়ূদ গুহা থেকে বেরিয়ে এসে চেঁচিয়ে শৌলকে ডাকলেন, “হে রাজা, হে মনিব।”
শৌল পেছন ফিরে তাকালেন। দায়ূদ আভূমি মাথা নোয়ালেন। 9 তিনি শৌলকে বললেন, “লোকরা যখন বলে, ‘দায়ূদ আপনাকে হত্যা করতে চায়, তখন সে কথায় আপনি কান দেন কেন?’ 10 আমি আপনাকে মারতে চাই না। আপনি নিজের চোখেই দেখে নিন। এই গুহাতে আজ প্রভু আপনাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি আপনাকে হত্যা করতে চাই না। আমি আপনার ওপর সদয় ছিলাম। আমি বললাম, ‘আমি আমার মনিবকে হত্যা করতে চাই না। শৌল হচ্ছেন প্রভুর অভিষিক্ত রাজা।’ 11 আমার হাতের এই টুকরো কাপড়টার দিকে চেয়ে দেখুন। আপনার পোশাক থেকে আমি এটা কেটে নিয়েছিলাম। আমি আপনাকে হত্যা করতে পারতাম, কিন্তু করিনি। একটা ব্যাপার আমি আপনাকে বোঝাতে চাই। আপনার বিরুদ্ধে আমি কোন ষড়যন্ত্র করি নি। আপনার প্রতি আমি কোন অন্যায় করি নি বরং আপনিই আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন, আমায় হত্যা করার জন্য। 12 স্বয়ং প্রভুই এর বিচার করবেন। তিনিই আমার ওপর অবিচার করার জন্য আপনাকে শাস্তি দেবেন। আমি নিজে আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করব না। 13 একটা পুরানো প্রবাদ আছে:
‘মন্দ লোকদের কাছ থেকেই মন্দ জিনিসগুলো আসে।’
“আমি আপনার ওপর কোনো মন্দ কাজ করি নি, আমি আপনার ক্ষতি করবো না। 14 কার পেছনে আপনি ধাওয়া করছেন? কার সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজা যুদ্ধ করতে চলেছেন? আপনাকে আঘাত করবে এমন কারোর পেছনে আপনি ছুটছেন না। মনে হচ্ছে আপনি যেন একটা মৃত কুকুর অথবা একটা নীল মাছির পেছনে তাড়া করছেন। 15 প্রভু এর সুবিচার করুন। তিনিই ঠিক করুন আপনার এবং আমার মধ্যে কে ভাল, কে খারাপ। প্রভু আমাকে সমর্থন করবেন এবং প্রমাণ করবেন যে আমি ঠিক কাজটি করেছি। প্রভু আপনার হাত থেকে আমাকে রক্ষা করবেন।”
16 দায়ূদ থামলেন। শৌল জিজ্ঞেস করলেন, “দায়ূদ পুত্র আমার, এ কি তোমার স্বর? এ কার স্বর শুনছি?” এই বলে শৌল কাঁদতে শুরু করলেন। তিনি খুব কাঁদতে লাগলেন। 17 শৌল বললেন, “তুমিই ঠিক, আমি ভুল করেছি। তুমি আমার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করলেও আমি তোমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছি। 18 যা যা ভালো তুমি করেছ সবই আমাকে বলেছ। প্রভু আমাকে তোমার কাছে এনে দিয়েছিলেন, কিন্তু তুমি আমাকে হত্যা করো নি। 19 এতেই প্রমাণ হয় যে আমি তোমার শত্রু নই। একবার শত্রুকে ধরলে কেউ আবার তাকে ছেড়ে দেয়? শত্রুর জন্য সে কখনও ভালো কাজ করে না। আজ তুমি আমায় যে অনুগ্রহ করলে তার জন্য প্রভু তোমায় পুরস্কৃত করবেন। 20 আমি জানি তুমি ইস্রায়েলের রাজা হবে। আমি জানি যে তুমি ইস্রায়েল রাজ্যের ওপর শাসন করবে। 21 আমাকে তুমি কথা দাও, প্রভুর নামে এই শপথ করো, কথা দাও আমার উত্তরপুরুষদের কাউকে তুমি হত্যা করবে না। কথা দাও, আমার নাম আমাদের বংশ থেকে তুমি মুছে দেবে না।”
22 দায়ূদ শৌলকে প্রতিশ্রুতি দিলেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি শৌলের পরিবারের কাউকে হত্যা করবেন না। তারপর শৌল ফিরে গেলেন। দায়ূদ এবং তাঁর সঙ্গীরা দুর্গে চলে গেলো।
44 পরের বিশ্রামবারে সেই শহরের প্রায় সমস্ত লোক প্রভুর কথা শোনার জন্য সমবেত হল; 45 কিন্তু ইহুদীরা অতো লোকের সমাগম দেখে ঈর্ষাতে জ্বলতে লাগল। তারা পৌলের কথার প্রতিবাদ করে তাদের অপমানও করতে লাগল। 46 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা নির্ভীকভাবে বলতে থাকলেন, “প্রথমে তোমরা যারা ইহুদী তোমাদেরই কাছে ঈশ্বরের বার্তা প্রচার করার প্রয়োজন ছিল; কিন্তু তোমরা যখন তা অগ্রাহ্য করে নিজেদের অনন্ত জীবনের অযোগ্য মনে করছ, তখন আমরা অইহুদীদের কাছেই যাব। 47 কারণ প্রভু আমাদের এমনই আদেশ করেছেন:
‘আমি তোমাদের অইহুদীদের কাছে দীপ্তিস্বরূপ করেছি,
যেন তোমরা জগতের সমস্ত লোকের কাছে পরিত্রাণের পথ জানাতে পারো।’”(A)
48 অইহুদীরা পৌলের এই কথা শুনে আনন্দিত হল ও প্রভুর বার্তার সম্মান করল। আর যারা অনন্ত জীবনের জন্য মনোনীত হয়েছিল, তারা বিশ্বাস করল।
49 প্রভুর এই বার্তা সেই অঞ্চলের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ল। 50 এদিকে কিছু ইহুদীরা ভক্তিমতি ও সম্মানীয় মহিলাদের ও শহরের নেতাদের উত্তেজিত করে পৌল ও বার্ণবার প্রতি নির্যাতন শুরু করল, আর নিজেদের অঞ্চল থেকে তাঁদের তাড়িয়ে দিল। 51 তখন তাঁরা তাদের বিরুদ্ধে পায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলে ইকনিয়ে চলে গেলেন। 52 এদিকে আন্তিয়কে অনুগামীরা আনন্দে ও পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হতে থাকলেন।
একজন চাষীর বীজ বোনার কাহিনী
(মথি 13:1-9; লূক 8:4-8)
4 পরে আবার তিনি হ্রদের ধারে লোকদের কাছে শিক্ষা দিতে লাগলেন। তাতে এত লোক তাঁর কাছে জড়ো হল যে, তিনি একটা নৌকায় উঠে বসলেন আর হ্রদের পাড়ে সমস্ত লোকরা এসে ভীড় করল। 2 তখন দৃষ্টান্তের মাধ্যমে তিনি তাদের উদ্দেশ্যে শিক্ষা দিতে লাগলেন, বললেন,
3 “শোন! এক চাষী বীজ বুনতে গেল। 4 বোনার সময় কতকগুলো বীজ পথের পাশে পড়ল, তাতে পাখিরা এসে তা খেয়ে ফেলল। 5 আবার কতকগুলো বীজ পাথুরে জমিতে পড়ল, সেখানে বেশী মাটি ছিল না। বেশী মাটি না থাকাতে খুব তাড়াতাড়ি বীজ থেকে অঙ্কুর বার হল: 6 কিন্তু সূর্য ওঠার সাথে সাথে অঙ্কুরগুলো শুকিয়ে গেল, কারণ এর শেকড় গভীরে ছিল না। 7 কতকগুলো বীজ কাঁটাঝোপের মধ্যে গিয়ে পড়ল, কাঁটাবন বেড়ে গিয়ে চারাগাছগুলোকে বাড়তে দিল না, ফলে সে গাছে কোন ফল হল না। 8 কতকগুলো বীজ ভাল জমিতে পড়ল এবং তার থেকে অঙ্কুর বেরল, আর তা বেড়ে ফল দিল। যা বোনা হয়েছিল তার ত্রিশ গুণ, ষাট গুণ ও একশো গুণ ফল দিল।”
9 তিনি তাদের বললেন, “যার শোনার মত কান আছে সে শুনুক।”
যীশু কেন দৃষ্টান্তমূলক কাহিনীর ব্যবহার করলেন
(মথি 13:10-17; লূক 8:9-10)
10 পরে যখন তিনি একা ছিলেন, তাঁর শিষ্যরা সেই বারোজন প্রেরিতের সাথে তাঁকে তাঁর দৃষ্টান্তের অর্থ জিজ্ঞাসা করলেন।
11 তখন তিনি তাঁদের বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্যের নিগূঢ়তত্ত্ব তোমাদের বলা হয়েছে; কিন্তু যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের বাইরের লোক তাদের কাছে সব কিছুই দৃষ্টান্তের মাধ্যমে বলা হচ্ছে। 12 যাতে,
‘তারা দেখবে কিন্তু উপলদ্ধি করতে পারবে না।
তারা শুনবে অথচ বুঝবে না,
পাছে তারা ফিরে আসে ও তাদের ক্ষমা করা যায়।’”(A)
যীশু বীজ বোনার দৃষ্টান্ত ব্যাখ্যা করলেন
(মথি 13:18-23; লূক 8:11-15)
13 তিনি তাদের বললেন, “তোমরা কি এই দৃষ্টান্তের অর্থ বুঝতে পার না? তবে কেমন করে অন্য সব দৃষ্টান্ত বুঝবে? 14 সেই চাষী হল সেই লোক, যে ঈশ্বরের শিক্ষা মানুষেব কাছে নিয়ে যায়। 15 কিছু লোক সেই পথের পাশে পড়া বীজের মতো, যাদের মধ্যে ঈশ্বরের শিক্ষা বোনা যায়, আর তারা শোনার সঙ্গে সঙ্গে শয়তান এসে তাদের মন থেকে যে শিক্ষা বোনা হয়েছিল তা নিয়ে যায়।
16 “কিছু লোক সেই পাথুরে জমিতে পড়া বীজের মতো, যারা শিক্ষা শোনার সাথে সাথে তা আনন্দে গ্রহণ করে। 17 কিন্তু তাদের হৃদয়ের গভীরে মূল যায় না, তারা অল্প সময় স্থির থাকে। সেই শিক্ষা গ্রহণের জন্য যেই তাদের ওপর কষ্ট অথবা তাড়না আসে, অমনি তারা সেই পথ ছেড়ে দেয়।
18 “কিছু লোক সেই কাঁটাঝোপে বোনা বীজের মতো যারা শিক্ষা শোনে, 19 কিন্তু সংসারের চিন্তা, অর্থের মায়া ও অন্যান্য বিষয়ের অভিলাষ মনের ভেতর গিয়ে ঐ বাক্য চেপে রাখে, আর তাই তাতে কোন ফল হয় না।
20 “আর কিছু লোক সেই উর্বর জমিতে পড়া বীজের মত, যারা সেই বাক্য সকল শুনে গ্রহণ করে এবং ত্রিশ গুণ, কেউ ষাট গুণ ও কেউ শত গুণ ফল উৎপন্ন করে।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International