Book of Common Prayer
আলেফ
119 সেই সব লোক যারা সৎ ও শুদ্ধ জীবনযাপন করে তারা সুখী।
ওই সব লোক প্রভুর শিক্ষামালাকে অনুসরণ করে।
2 যারা প্রভুর চুক্তি মানে তারা সুখী।
তারা সর্বান্তঃকরণ দিয়ে প্রভুকে মানে।
3 ওই সব লোক কোন মন্দ কাজ করে না।
ওরা প্রভুকে মানে।
4 প্রভু, আপনি আমাদের আজ্ঞা দিয়েছেন
এবং আপনি আমাদের ওই আজ্ঞাসমূহ পুরোপুরি মানতে বলেছেন।
5 প্রভু, সবসময় আমি যদি
আপনার বিধি মানি,
6 তাহলে আমি যখন আপনার আদেশগুলি নিয়ে চিন্তা করব
তখন আমি লজ্জিত হবো না।
7 তাহলে আমি প্রকৃতই আপনাকে সম্মান করতে পারবো,
যখন আমি আপনার ন্যায্য বিধিগুলি সমীক্ষা করব।
8 প্রভু আমি আপনার আজ্ঞাগুলো পালন করবো
তাই আমাকে ছেড়ে যাবেন না!
বৈৎ
9 একজন যুবক কি করে শুদ্ধ জীবনযাপন করবে?
আপনার আদেশসমুহ মেনে সে এরকম করতে পারবে।
10 সমগ্র অন্তর দিয়ে আমি প্রভুর সেবা করতে চেষ্টা করি।
ঈশ্বর, আপনার আজ্ঞা মানতে আমায় সাহায্য করুন।
11 আপনার শিক্ষামালা আমি যত্ন করে অনুধাবন করি,
যাতে আমি আপনার বিরুদ্ধে পাপ না করি।
12 হে প্রভু, আপনি ধন্য।
আপনার বিধিসমূহ আমায় শেখান।
13 আমি আপনার সব প্রাজ্ঞ সিদ্ধান্তের কথা বলবো।
14 আমি যে কোন জিনিসের চেয়ে
আপনার চুক্তিসমুহ জানতে বেশী উপভোগ করি।
15 আমি আপনার নিয়মের আলোচনা করি।
আমি আপনার জীবনধারা অনুসরণ করি।
16 আমি আপনার বিধিসমুহ উপভোগ করি।
আপনার বাক্য আমি ভুলবো না।
গিমল
17 আপনার দাস, এই যে আমি, আমার প্রতি ভাল ব্যবহার করুন,
যাতে আমি বেঁচে থাকতে পারি এবং আপনার আজ্ঞাসমুহ মানতে পারি।
18 প্রভু আমার চোখ খুলে দিন, আমাকে আপনার শিক্ষাসমুহ দেখতে দিন
এবং যেসব আশ্চর্য কার্য আপনি করেছেন তা পাঠ করতে দিন।
19 প্রভু, এই দেশে আমি একজন বিদেশী।
আমার কাছ থেকে আপনার শিক্ষাকে আড়াল করে রাখবেন না।
20 সব সময়েই আমি
আপনার সিদ্ধান্তগুলো অনুধাবন করতে চাই।
21 প্রভু, আপনি অহঙ্কারী লোকদের সমালোচনা করেন।
যারা আপনার আদেশগুলি মানতে অস্বীকার করে, তাদের ভাগ্যে মন্দ কিছু ঘটবে।
22 আমাকে লজ্জিত এবং বিব্রত করবেন না।
আমি আপনার চুক্তি পালন করেছি।
23 নেতারা পর্যন্ত আমার সম্পর্কে মন্দ কথা বলেছে।
কিন্তু প্রভু, আমি, আপনার দাস
এবং আমি আপনার বিধিসমূহ অনুধাবন করি।
24 আপনার চুক্তি আমার নিকট বন্ধু।
ওটি আমাকে ভালো উপদেশ দেয়।
পরিচালকের প্রতি: শমীনীৎ সহযোগে দায়ূদের একটি গীত।
12 হে প্রভু, আমায় রক্ষা করুন!
ভালো লোকরা সবাই চলে গেছে।
প্রকৃত বিশ্বাসীদের এই পৃথিবীর লোকদের সঙ্গে রাখা হয় না।
2 লোকে তার প্রতিবেশীদের মিথ্যা কথা বলে।
প্রত্যেকটি লোক তার প্রতিবেশীকে তোষামোদ করে এবং ঠকাবার জন্য মিথ্যে কথা বলে।
3 যে ঠোঁট দিয়ে মানুষ মিথ্যা কথা বলে, সেই ঠোঁটগুলি প্রভুর কেটে ফেলা উচিৎ।
যে জিভ দিয়ে তারা বড় বড় গল্প বলেছে, প্রভুর সেই জিভগুলিও কেটে ফেলা উচিৎ।
4 সেই লোকেরা বলছে, “আমরা প্রকৃত পক্ষে মিথ্যা কথা বলবো এবং গুরুত্বপূর্ণ লোক হব।
আমরা জানি কি বলতে হবে,
তাই কেউই আমাদের মনিব হবে না।”
5 কিন্তু প্রভু বলছেন: “মন্দ লোকরা দুর্বলদের কাছ থেকে চুরি করেছে।
নিঃসহায় লোকদের জিনিষ ওরা নিয়ে নিয়েছে।
কিন্তু এখন আমি নিজে দাঁড়িয়ে,
ঐসব ভারাক্রান্ত লোকদের রক্ষা করবো।”
6 প্রভুর কথাগুলি, জ্বলন্ত আগুনে গলানো রূপোর মত সত্য ও খাঁটি।
কথাগুলি সেই রূপোর মত খাঁটি
যাকে সাতবার গলিয়ে শুদ্ধ করা হয়েছে।
7 হে প্রভু, নিঃসহায় মানুষের দেখাশুনা করুন।
তাদের এখন এবং চিরদিনের জন্য রক্ষা করুন!
8 মন্দ লোকরা আমাদের চারদিকে রয়েছে।
তারা সব জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ লোকের মত ব্যবহার করে।
এদিকে মানুষের নির্লজ্জ কাজগুলি প্রশংসা পায়।
পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি গীত।
13 হে প্রভু, আর কতক্ষণ আপনি আমায় ভুলে থাকবেন?
আপনি কি চিরদিনের জন্য আমায় ভুলে যাবেন?
আর কতদিন আমার কাছ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখবেন?
2 আর কতকাল আমি এই চিন্তাগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ করব?
আর কতকাল আমার হৃদয় এই দুঃখ ভোগ করবে?
আর কতদিন আমার শত্রুরা আমায় পরাজিত করবে?
3 হে প্রভু আমার ঈশ্বর, আমার দিকে তাকান! আমার প্রশ্নের উত্তর দিন!
আমার প্রশ্নের উত্তর আমায় জানিয়ে দিন; নয়তো আমি মরে যাবো!
4 যদি তাই ঘটে, আমার শত্রুরা বলবে, “আমি ওকে মেরেছিলাম!”
আমাকে পরাজিত করতে পারলে আমার শত্রুরা খুশী হবে।
5 হে প্রভু, আমি আপনার প্রকৃত ভালবাসার ওপর আস্থা রেখেছিলাম।
আপনি আমায় রক্ষা করেছেন এবং সুখী করেছেন!
6 আমি প্রভুর উদ্দেশ্যে আনন্দ গান গাই,
কারণ তিনি আমার জন্য হিতকর কাজ করেছেন।
পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি গীত।
14 একজন দুষ্ট নির্বোধ লোক মনে মনে বলে, “ঈশ্বর নেই।”
এইসব লোকরা ভয়ঙ্কর ও দুষ্ট কাজকর্ম করে।
তাদের মধ্যে একজনও নেই যে ভালো কাজ করে।
2 ওদের মধ্যে ঈশ্বরের সাহায্য কামনা করে
এমন দেখবার জন্য প্রভু স্বর্গ থেকে
লোকদের প্রতি লক্ষ্য রেখেছিলেন। (জ্ঞানী লোকরা সাহায্যের জন্য ঈশ্বরমুখী হয়।)
3 কিন্তু প্রত্যেকটি লোকই ঈশ্বরের থেকে বিমুখ হয়ে গেছে।
সব লোকই, মন্দ লোকে পরিণত হয়েছে।
না, একটা লোকও ভালো কাজ করে নি!
4 মন্দ লোকরা আমার লোকদের বিনষ্ট করেছে।
ওই সব মন্দ লোকরা ঈশ্বরকে চেনে না।
মন্দ লোকদের জন্য গলাধঃকরণ করার মত প্রচুর খাদ্য রয়েছে।
এমনকি তারা প্রভুর উপাসনা পর্যন্ত করে না।
5 ঐসব মন্দ লোক, একজন দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে উপদেশ শুনতে চায় না।
কেন? কারণ ওই দরিদ্র লোকটি ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে।
6 কিন্তু ঈশ্বর তাঁর সৎ লোকদের সঙ্গে থাকেন।
সুতরাং মন্দ লোকদের ভয়ের অনেক কারণ আছে।
7 সিয়োন পর্বত থেকে কে ইস্রায়েলকে রক্ষা করে?
তিনি স্বয়ং প্রভু যিনি ইস্রায়েলকে রক্ষা করেন!
প্রভু যখন আবার তাঁর লোকদের তাদের দেশ থেকে সমৃদ্ধশালী করেন,
তখন যাকোবের পরিবার আনন্দ করুক।
ইস্রায়েলের লোকেরা সুখী হোক্।[a]
শমূয়েল বৈৎলেহমে গেল
16 প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “শৌলের জন্য আর কতদিন তুমি দুঃখ বোধ করবে? শৌলকে আমি ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে অস্বীকার করেছি একথা তোমাকে বলবার পরও তুমি ওর জন্য দুঃখ করছ। শিঙায় তেল ভর্ত্তি করে বৈৎলেহেমে যাও। তোমাকে আমি একজনের কাছে পাঠাচ্ছি। তার নাম যিশয়। ও বৈৎলেহমেই থাকে। তারই একজন পুত্রকে আমি নতুন রাজা হিসাবে মনোনীত করেছি।”
2 তখন শমূয়েল বলল, “আমি যদি যাই তবে শৌল জানতে পারবে। তখন সে আমায় হত্যা করতে চাইবে।”
প্রভু বললেন, “তুমি বৈৎলেহমে যাও। সঙ্গে একটা বাছুরকে নিও। তুমি বলবে, ‘আমি প্রভুর কাছে একে বলি দিতে এসেছি।’ 3 যিশয়কে এই বলি দেখতে আমন্ত্রণ জানাবে। তারপর কি করবে আমি বলে দেব। যাকে আমি দেখিয়ে দেব তার মাথায় জলপাই তেল ঢেলে দিও।”
4 প্রভুর কথামতো শমূয়েল যা যা করার করল। সে বৈৎলেহমে চলে গেল। সেখানকার প্রবীণরা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে এল। শমূয়েলের সঙ্গে দেখা করে তারা বলল, “আপনি কি শান্তির ভাব নিয়ে এসেছেন?”
5 শমূয়েল জবাব দিল, “হ্যাঁ, আমি শান্তির ভাব নিয়েই এসেছি। আমি প্রভুর কাছে একটা বলি দিতে এসেছি। তোমরা তৈরী হও। আমার সঙ্গে বলিদানে এসো।” শমূয়েল যিশয় আর তার পুত্রদের প্রস্তুত করে বলিদানের অনুষ্ঠান দেখবার জন্য ডেকে আনল।
6 যিশয় তার পুত্রদের নিয়ে পৌঁছলে শমূয়েল ইলিয়াবকে দেখতে পেল। শমূয়েল ভাবল, “এই সেই যাকে প্রভু বিশেষভাবে পছন্দ করেছেন।”
7 কিন্তু প্রভু শমূয়েলকে বললেন, “ইলীয়াব লম্বা আর সুন্দর দেখতে হলেও এভাবে ব্যাপারটা দেখো না। লোকে যেভাবে কোন জিনিস দেখে বিচার করে ঈশ্বর সেভাবে করেন না। লোকরা মানুষের বাইরের রূপটাই দেখে, কিন্তু ঈশ্বর দেখেন তার অন্তরের রূপ। সেদিক থেকে ইলীয়াব উপযুক্ত লোক নয়।”
8 তখন যিশয় তার দ্বিতীয় পুত্র অবীনাদবকে ডাকলো। অবীনাদব শমূয়েলের পাশ দিয়ে হেঁটে গেল। শমূয়েল বলল, “না একেও প্রভু মনোনীত করেন নি।”
9 একথা শুনে যিশয় শম্মকে শমূয়েলের পাশে আসতে বলল। শমূয়েল বলল, “না এও চলবে না।”
10 যিশয় শমূয়েলকে তার সাত পুত্রকে দেখাল। শমূয়েল বলল, “প্রভু এদের একজনকেও মনোনীত করেন নি।”
11 শমূয়েল বলল, “তোমার পুত্র বলতে এরাই কি সব?”
যিশয় বলল, “না আমার আরেকটা পুত্র আছে। সে সবচেয়ে ছোট, কিন্তু সে এখন মেষ চরাচ্ছে।”
শমূয়েল বলল, “তাকে ডেকে নিয়ে এসো। সে না আসা পর্যন্ত আমরা কেউ খেতে বসব না।”
12 যিশয় একজনকে পাঠালো তার ছোট ছেলেটিকে ডেকে আনতে। তার ছোট ছেলেটি দেখতে ভাল, রক্ত বর্ণের যুবক।
প্রভু শমূয়েলকে বলল, “এই তো সেই ছেলে। ওঠো, একে অভিষেক করো।”
13 শমূয়েল তেল ভর্ত্তি শিঙাটা নিয়ে যিশয়ের সব চেয়ে ছোট ছেলেটার মাথায় ঢেলে দিল। তার ভাই়রা এই ঘটনা দেখল। সেদিন থেকেই প্রভুর আত্মা মহাশক্তিতে দায়ূদের ওপর এল। এরপর শমূয়েল রামায় ফিরে এল।
পিতর ও কর্ণীলিয়াস
10 কৈসরিয়ায় কর্ণীলিয়াস নামে একজন লোক ছিলেন; ইনি ছিলেন ইতালীয় বাহিনীর একজন সেনাপতি। 2 তিনি ছিলেন ঈশ্বর ভক্ত, তাঁর গৃহস্থ সমস্ত পরিজন সত্যময় ঈশ্বরের উপাসনা করত। তিনি ইহুদীদের মধ্যে গরীব দুঃখীদের অর্থ দিতেন আর সবসময়ই ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানাতেন। 3 একদিন প্রায় তিনটের সময় এক দর্শনের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট দেখতে পেলেন যে ঈশ্বরের এক দূত তাঁর কাছে এসে বলছেন, “কর্ণীলিয়াস!”
4 কর্ণীলিয়াস স্বর্গদূতের দিকে চেয়ে ভয় পেয়ে বললেন, “মহাশয়, আপনি কি চান?”
সেই স্বর্গদূত তাঁকে বললেন, “কর্ণীলিয়াস তোমার প্রার্থনা ঈশ্বর শুনেছেন; গরীবদের তুমি যে সাহায্য কর, তা তিনি দেখেছেন। ঈশ্বর তোমায় স্মরণ করেছেন। 5 তুমি যাফো শহরে লোকদের পাঠাও, সেখানে শিমোন নামে একজন লোক আছে, যার অপর নাম পিতর; তোমার লোকরা সেখানে গিয়ে তাকে এখানে নিয়ে আসুক। 6 সে চামড়ার ব্যবসায়ী শিমোনের বাড়িতে আছে, সেই বাড়ি সমুদ্রের ধারে।” 7 স্বর্গদূত কথা বলে চলে যাওয়ার পর কর্ণীলিয়াস দুজন কর্মচারীকে ও একজন সৈনিককে ডেকে পাঠালেন। ঈশ্বরভক্ত এই সৈনিকটি কাজে সাহায্য করার ব্যাপারে সব সময়ই কর্ণীলিয়াসের কাছে কাছে থাকত। 8 এই তিন ব্যক্তির কাছে কর্ণীলিয়াস সব কিছু বুঝিয়ে তাদের যাফোতে পাঠালেন।
9 পরের দিন তারা যখন যাফোর কাছাকাছি পৌঁছলো সেই সময়ে পিতর প্রার্থনা করার জন্য ছাদের উপর উঠে ছিলেন। বেলা তখন ভর দুপুর। 10 পিতরের খিদে পেল এবং তিনি খেতে চাইলেন। নীচে লোকরা তখন পিতরের জন্য খাবার প্রস্তুত করছে, এমন সময় তিনি আবিষ্ট হলেন। 11 তিনি দেখলেন আকাশ মুক্ত হয়েছে আর একটা কিছু নেমে আসছে। সেটা দেখতে একটা বড় চাদরের মত, তার চারটে খুঁট ধরে কেউ যেন তা মাটিতে নামিয়ে দিচ্ছে। 12 তার মধ্যে পৃথিবীর সব রকমের পশু ও সরীসৃপ এবং আকাশের নানা রকমের পক্ষী রয়েছে। 13 এরপর একটা রব পিতরকে বলল, “পিতর ওঠ, এদের মার এবং খাও।”
14 পিতর বললেন, “প্রভু কখনই না! কারণ আমি কখনও কোন অশুদ্ধ বা অপবিত্র কিছু খাই নি।”
15 তখন আবার এই রব শোনা গেল, “ঈশ্বর যা শুদ্ধ করেছেন তা তুমি ‘অশুদ্ধ’ বোলো না!” 16 এইভাবে তিন বার ঘটে যাবার পর সেই চাদরটি আকাশে তুলে নেওয়া হল।
12 কিন্তু পিতর উঠে দৌড়ে সমাধিগুহার কাছে গেলেন। তিনি নীচু হয়ে ঝুঁকে পড়ে দেখলেন, কেবল যীশুর দেহে জড়ানো কাপড়গুলো সেখানে পড়ে আছে; আর যা ঘটেছে তাতে আশ্চর্য হয়ে ঘরে ফিরে গেলেন।
ইম্মায়ুর পথে
(মার্ক 16:12-13)
13 ঐ দিনই দুজন অনুগামী জেরুশালেম থেকে সাত মাইল দূরে ইম্মায়ু নামে একটি গ্রামে যাচ্ছিলেন। 14 এই যে সব ঘটনাগুলি ঘটে গেল, যেতে যেতে তাঁরা সে বিষয়েই পরস্পর আলোচনা করছিলেন। 15 তাঁরা যখন এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন, এমন সময় যীশু নিজে এসে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে চলতে লাগলেন। 16 (ঘটনাটি এমনভাবেই ঘটল যাতে তাঁরা যীশুকে চিনতে না পারেন।) 17 যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা যেতে যেতে পরস্পর কি নিয়ে আলোচনা করছ?”
তাঁরা থমকে দাঁড়ালেন, তাঁদের খুবই বিষন্ন দেখাচ্ছিল। 18 তাঁদের মধ্যে ক্লিয়পা নামে একজন তাঁকে বললেন, “জেরুশালেমের অধিবাসীদের মধ্যে আমাদের মনে হয় আপনিই একমাত্র লোক, যিনি জানেন না গত কদিনে সেখানে কি কাণ্ডটাই না ঘটে গেছে।”
19 যীশু তাঁদের বললেন, “কি ঘটেছে, তোমরা কিসের কথা বলছ?”
তাঁরা যীশুকে বললেন, “নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে বলছি। তিনি ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি তাঁর কথা ও কাজের শক্তিতে ঈশ্বর ও সমস্ত মানুষের চোখে নিজেকে এক মহান ভাববাদীরূপে প্রমাণ করেছেন। 20 কিন্তু আমাদের প্রধান যাজকরা ও নেতারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেবার জন্য ধরিয়ে দিল, তারা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে মারল। 21 আমরা আশা করেছিলাম যে তিনিই সেই যিনি ইস্রায়েলকে মুক্ত করবেন।
“কেবল তাই নয়, আজ তিন দিন হল এসব ঘটে গেছে। 22 আবার আমাদের মধ্যে কয়েকজন স্ত্রীলোক আমাদের অবাক করে দিলেন। তাঁরা আজ খুব ভোরে সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; 23 কিন্তু সেখানে তাঁরা যীশুর দেহ দেখতে পান নি। সেখান থেকে ফিরে এসে তাঁরা আমাদের বললেন যে তাঁরা স্বর্গদূতদের দর্শন পেয়েছেন, আর সেই স্বর্গদূতরা তাঁদের বলেছেন যে যীশু জীবিত। 24 এরপর আমাদের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজন সেই সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; আর তাঁরা দেখলেন স্ত্রীলোকরা যা বলেছেন তা সত্য। তাঁরা যীশুকে সেখানে দেখতে পান নি।”
25 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা সত্যি কিছু বোঝ না, তোমাদের মন বড়ই অসাড়, তাই ভাববাদীরা যা কিছু বলে গেছেন তোমরা তা বিশ্বাস করতে পার না। 26 খ্রীষ্টের মহিমায় প্রবেশ লাভের পূর্বে কি তাঁর এইসব কষ্টভোগ করার একান্ত প্রয়োজন ছিল না?” 27 আর তিনি মোশির পুস্তক থেকে শুরু করে ভাববাদীদের পুস্তকে তাঁর বিষয়ে যা যা লেখা আছে, শাস্ত্রের সে সব কথা তাঁদের বুঝিয়ে দিলেন।
28 তাঁরা যে গ্রামে যাচ্ছিলেন তার কাছাকাছি এলে পর যীশু আরো দূরে যাবার ভাব দেখালেন। 29 তখন তাঁরা যীশুকে খুব অনুরোধ করে বললেন, “দেখুন, বেলা পড়ে গেছে, এখন সন্ধ্যা হয়ে এল, আপনি আমাদের এখানে থেকে যান।” তাই তিনি তাঁদের সঙ্গে থাকবার জন্য ভেতরে গেলেন।
30 তিনি যখন তাঁদের সঙ্গে খেতে বসলেন, তখন রুটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। পরে সেই রুটি টুকরো টুকরো করে তাঁদের দিলেন। 31 সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চোখ খুলে গেল, তাঁরা যীশুকে চিনতে পারলেন, আর তিনি সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। 32 তখন তাঁরা পরস্পর বলাবলি করলেন, “তিনি যখন রাস্তায় আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন ও শাস্ত্র থেকে আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন আমাদের অন্তর কি আবেগে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে নি?”
33 তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে উঠে জেরুশালেমে গেলেন। সেখানে তাঁরা সেই এগারোজন প্রেরিত ও তাঁদের সঙ্গে আরো অনেককে দেখতে পেলেন। 34 প্রেরিত ও অন্যান্য যাঁরা সেখানে ছিলেন তাঁরা বললেন, “প্রভু, সত্যি জীবিত হয়ে উঠেছেন। তিনি শিমোনকে দেখা দিয়েছেন।”
35 তখন সেই দুজন অনুগামীও রাস্তায় যা ঘটেছিল তা তাঁদের কাছে ব্যক্ত করলেন। আর যীশু যখন রুটি টুকরো টুকরো করছিলেন তখন কিভাবে তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন তাও জানালেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International