Book of Common Prayer
পরিচালকের প্রতি: দায়ূদের একটি গীত।
31 প্রভু, আমি আপনার ওপর নির্ভর করি।
আমাকে হতাশ করবেন না।
আমার প্রতি সদয় হোন এবং আমায় রক্ষা করুন।
2 হে ঈশ্বর, আমার কথা শুনুন।
শীঘ্রই আপনি এসে আমায় রক্ষা করুন।
আপনি আমার নিরাপদ আশ্রয় হোন।
আপনি আমার নিরাপদ দুর্গ হোন এবং আমায় সুরক্ষিত করুন!
3 ঈশ্বর, আপনিই আমার শিলা;
তাই, আপনার নামের স্বার্থে আমায় পরিচালিত করুন।
4 আমার শত্রুরা আমার সামনে এক ফাঁদ পেতে রেখেছে।
ওদের ফাঁদ থেকে আমায় উদ্ধার করুন।
আপনিই আমার নিরাপদ আশ্রয়।
5 প্রভু, আপনিই সেই ঈশ্বর যাকে আমরা বিশ্বাস করতে পারি।
আমার জীবন আমি আপনার হাতে সমর্পণ করলাম।
আমায় উদ্ধার করুন!
6 যারা মূর্ত্তিসমূহের পূজা করে, তাদের আমি ঘৃণা করি।
আমি একমাত্র প্রভুকেই বিশ্বাস করি।
7 হে ঈশ্বর, আপনার করুণায় আমি খুব খুশী।
আপনি আমার দুর্ভোগ দেখেছেন।
আমার যে সব সমস্যা ছিল তাও আপনি জানেন।
8 আপনি আমাকে আমার শত্রুদের হস্তগত করবেন না।
ওদের ফাঁদ থেকে আপনি আমায় মুক্ত করবেন।
9 প্রভু, আমার অসংখ্য সমস্যা আছে।
তাই আমার প্রতি সদয় হন।
আমি মানসিকভাবে এমন বিপর্যস্ত যে কেঁদে কেঁদে আমার চোখ ব্যথা করছে।
আমার গলা ও পেট জ্বালা করছে।
10 আমার জীবন দুঃখে শেষ হতে চলেছে।
দীর্ঘশ্বাস ফেলতে ফেলতে আমার বছরগুলি কাটছে।
আমার সংকটগুলি আমার সব শক্তিকে কেড়ে নিচ্ছে।
আমার সব শক্তি, আমায় ত্যাগ করছে।[a]
11 শত্রুরা আমায় ঘৃণা করছে।
আমার প্রতিবেশীরাও আমায় ঘৃণা করছে।
সমস্ত আত্মীয়রা আমার সঙ্গে রাস্তায় দেখা করে।
তারা আমাকে ভয় পায় এবং এড়িয়ে চলে।
12 হারিয়ে যাওয়া যন্ত্রপাতির মত
লোকরা আমাকে ভুলে গেছে।
13 লোকরা আমার সম্পর্কে যে সব ভয়ঙ্কর কথা বলে, তা আমি শুনি।
ঐসব লোক আমার বিরুদ্ধে গেছে।
ওরা আমায় মেরে ফেলার চক্রান্ত করেছে।
14 হে প্রভু, আমি আপনাতে আস্থা রাখি।
আপনিই আমার ঈশ্বর।
15 আমার জীবন আপনার হাতে রয়েছে।
আমার শত্রুদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
কিছু লোক আমায় তাড়া করছে।
ওদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
16 দয়া করে আপনার দাসকে অভ্যর্থনা করুন এবং গ্রহণ করুন।
আমার প্রতি সদয় হোন এবং আমাকে রক্ষা করুন!
17 প্রভু, আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছি,
তাই আমি হতাশ হবো না,
মন্দ লোকেরা হতাশ হবে।
ওরা নীরবে কবরে যাবে।
18 ঐসব মন্দ লোক নিজেদের সম্পর্কে বড়াই করে
এবং সৎ লোকেদের সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে।
ঐসব মন্দ লোকেরা প্রচণ্ড উদ্ধত।
কিন্তু যে মুখ দিয়ে ওরা মিথ্যা কথা বলে তা নীরব হয়ে যাবে।
19 হে ঈশ্বর, আপনার অনুগামীদের জন্য আপনি অনেক ভালো জিনিষ বাঁচিয়ে রেখেছেন।
যারা আপনাকে বিশ্বাস করে তাদের জন্য সকলের সামনেই আপনি ভাল কাজ করেন।
20 সৎ লোকদের আঘাত করার জন্য মন্দ লোকরা একসঙ্গে জড় হয়।
ঐসব মন্দ লোক লড়াই শুরু করতে চায়।
কিন্তু আপনি সেই সব সৎ লোকদের লুকিয়ে রাখেন এবং তাদের রক্ষা করেন।
আপনার নিজের আশ্রয়ে আপনি তাদের রক্ষা করেন।
21 প্রভু ধন্য! সারা শহর যখন শত্রুদের দ্বারা বেষ্টিত,
তখন তিনি আমার প্রতি, তাঁর আশ্চর্য করুণা দেখিয়েছেন।
22 আমি ভীত হয়ে বলেছিলাম, “আমি এমন এক জায়গায় রয়েছি সেখানে ঈশ্বরও আমাকে দেখতে পাবেন না।”
কিন্তু হে ঈশ্বর, আপনার সাহায্য চেয়ে আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করেছিলাম এবং আপনি আমার উচ্চস্বরের প্রার্থনা শুনেছিলেন।
23 হে ঈশ্বরের অনুগামীরা, তোমরা অবশ্যই প্রভুকে ভালোবেসো!
যারা প্রভুর প্রতি নিষ্ঠাবান, প্রভু তাদের রক্ষা করেন।
কিন্তু যারা নিজের ক্ষমতা নিয়ে দম্ভ করে প্রভু তাদের শাস্তি দেন।
তারা তাদের প্রাপ্য শাস্তি পায়।
24 তোমরা যারা প্রভুর সাহায্যের জন্য প্রতীক্ষা করছো, তারা সাহসী হও, শক্তিশালী হও!
দায়ূদের একটি গীত।
35 হে প্রভু, আমার বিরোধীপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করুন!
যারা আমার সঙ্গে যুদ্ধ করেছে তাদের সঙ্গে আপনি যুদ্ধ করুন!
2 প্রভু, ঢাল এবং বর্ম তুলে নিন।
উঠুন এবং আমায় সাহায্য করুন।
3 বর্শা এবং বল্লম হাতে তুলে নিন
এবং যারা আমার বিরুদ্ধে রয়েছে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করুন।
হে প্রভু আমার আত্মাকে বলুন, “আমি তোমায় উদ্ধার করবো।”
4 কিছু লোক আমাকে হত্যা করতে চাইছে।
ওদের পরাজিত এবং লজ্জিত করুন।
এমন করুন যেন ওরা পিছন ফিরে পালিয়ে যায়।
ওরা আমায় আঘাত করার চক্রান্ত করছে।
ওদের পরাজিত ও নাস্তানাবুদ করে ছাড়ুন।
5 ওদের তুষের মত বাতাসে উড়িয়ে দিন।
প্রভুর দূত যেন ওদের ধাওয়া করে।
6 প্রভু ওদের পথ অন্ধকারময় এবং পিচ্ছিল করে দিন।
প্রভুর দূত যেন ওদের তাড়া করে।
7 আমি ওদের কাছে কোন ভুল কাজ করিনি কিন্তু ঐসব লোক আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাইছে।
সম্পূর্ণ বিনা কারণে ওরা আমায় ফাঁদে ফেলতে চাইছে।
8 তাই প্রভু, ওদের নিজেদের ফাঁদেই ওদের ফেলুন।
নিজেদের জালেই ওরা হোঁচট খাক্।
কোন অজানা বিপদ যেন ওদের উপরে বর্তায়।
9 তখন আমি প্রভুতে আনন্দ করবো।
তিনি যখন আমায় উদ্ধার করবেন তখন আমি সুখী হবো।
10 আমার সমস্ত সত্ত্বা দিয়ে আমি বলব, “প্রভু আপনার মত কেউই নেই।
শক্তিশালী লোকেদের হাত থেকে আপনি একজন দুর্বল লোককে বাঁচিয়েছেন।
আপনি একজন দরিদ্র লোককে উদ্ধার করেন
যার কাছ থেকে লোকে চুরি করতে চেষ্টা করে।”
11 একদল মিথ্যা সাক্ষী আমায় আঘাত করবার জন্য পরিকল্পনা করছে।
ওরা আমায় নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে। আমি কিন্তু জানি না ওরা কি বিষয়ে বলছে।
12 আমি কেবলমাত্র ভাল কাজই করেছি।
কিন্তু ওরা আমার প্রতি খারাপ কাজই করবে।
প্রভু, যে রকম ভালো জিনিস আমার প্রাপ্য তা আমায় দিন।
13 যখন ওরা অসুস্থ হয়েছিলো, আমি ওদের জন্য দুঃখ পেয়েছিলাম।
উপবাসের মাধ্যমে আমি সেই দুঃখ প্রকাশ করেছি।
ওদের জন্য প্রার্থনা করে এটাই কি আমার প্রাপ্য?
14 ঐসব লোকদের জন্য আমি দুঃখের পোশাক পরেছিলাম এবং ওদের আমি আমার বন্ধুর মত, এমন কি ভাইয়ের মত দেখেছিলাম।
মায়ের মৃত্যুর পর যে লোকটা কাঁদে আমি তার মতই দুঃখিত ছিলাম।
ওদের দুঃখের কারণে আমি কালো কাপড় পরেছিলাম এবং দুঃখে মাথা নত করে আমি হাঁটাচলা করতাম।
15 কিন্তু যখন আমি একটু ভুল করলাম, ওরা আমায় উপহাস করলো।
ওরা আসলে প্রকৃত বন্ধু ছিল না।
আমি ওদের চিনতামও না, কিন্তু চারিদিক থেকে ওরা আমায় ঘিরেছিল এবং আক্রমণ করেছিল।
16 অত্যন্ত খারাপ ভাষায় ওরা আমায় বিদ্রূপ করেছে।
ওরা আমার বিরুদ্ধে ক্রোধ দেখিয়ে দাঁত কিড়মিড় করে।
17 হে আমার প্রভু, আর কতদিন আপনি এইসব খারাপ ঘটনা ঘটতে শুধুই দেখে যাবেন?
ওরা আমায় ধ্বংস করতে চাইছে।
হে প্রভু, আমার জীবন রক্ষা করুন।
আমার প্রিয় জীবনকে ওদের থেকে রক্ষা করুন। ওরা সিংহের মত হিংস্র।
18 প্রভু মন্দিরের মহাসমাজে আমি আপনার প্রশংসা করবো।
সেই বলবান জনতার সামনে আমি আপনার প্রশংসা করবো।
19 ঐসব শত্রুকে কোন কারণেই আমাকে ঘৃণা করতে অথবা পরাজিত করতে দেবেন না।
আমাকে ওদের বিদ্রূপের পাত্র হতে দেবেন না।
ওদের গোপন পরিকল্পনার জন্য ওরা অবশ্যই শাস্তি পাবে।
20 আমার শত্রুরা প্রকৃতপক্ষে শান্তির জন্য পরিকল্পনা করছে না।
ওরা দেশের শান্তিপ্রিয় লোকদের বিরুদ্ধে অনিষ্টকর কাজ করার জন্য গোপনে পরিকল্পনা করছে।
21 শত্রুরা আমার সম্পর্কে বাজে কথা বলে চলেছে।
ওরা মিথ্যা কথা বলে, ওরা বলে “হ্যাঁ হ্যাঁ জানি, তুমি কি করছো।”
22 হে প্রভু আপনি অবশ্যই দেখতে পাচ্ছেন প্রকৃতপক্ষে কি ঘটছে।
তাই, চুপ করে থাকবেন না।
আমায় ছেড়ে যাবেন না।
23 প্রভু, উঠুন! জাগুন!
হে আমার প্রভু, আমার ঈশ্বর, আমার জন্য লড়াই করুন, আমাকে ন্যায় বিচার দিন।
24 প্রভু, আমার ঈশ্বর, আপনার নিরপেক্ষতা দিয়ে আমার বিচার করুন।
ঐ লোকগুলোকে আমার প্রতি বিদ্রূপ করতে দেবেন না।
25 ওরা যেন বলতে না পারে, “হ্যাঁ! এইতো আমরা যা চেয়েছি, তাই পেয়েছি!”
ওরা যেন বলতে না পারে, “আমরা ওকে ধ্বংস করেছি!”
26 আমি আশা করি, আমার সব শত্রু লজ্জিত ও অপমানিত হবে।
যখন আমার কিছু খারাপ হয়েছিল, তখন ওরা খুব খুশী হয়েছিল।
ওরা ভেবেছিলো ওরা আমার থেকে বেশী ভালো!
তাই, ওই সব লোক যেন লজ্জা ও অবমাননায় ঢেকে যায়।
27 কিছু লোক চায় আমার ভালো হোক্। আমি আশা করি, ওরা প্রচণ্ড সুখী হবে!
ওরা সব সময় বলে, “প্রভু মহান!
যা তাঁর দাসের পক্ষে মঙ্গলকর, তিনি তাই চান।”
28 তাই হে প্রভু, আমি লোকদের বলি, আপনি কত ভাল।
প্রতিদিনই আমি আপনার প্রশংসা করি।
ভাল ডুমুর এবং খারাপ ডুমুর
24 প্রভু আমাকে এই জিনিসগুলি দেখিয়ে ছিলেন: আমি ডুমুর ভর্ত্তি দুটি ঝুড়ি দেখেছিলাম প্রভুর মন্দিরের সামনে রাখা আছে। বাবিলের নবূখদ্রিৎসর যখন যিকনিয়কে বন্দী করে নিয়ে গিয়ে ছিলেন তখন আমার এই স্বপ্নদর্শন হয়েছিল। রাজা যিহোয়াকীমের পুত্র যিকনিয় ও তার গুরুত্বপূর্ণ সভাসদবৃন্দদের জেরুশালেম থেকে গ্রেপ্তার করে বাবিলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। যিহূদার সমস্ত ছুতোর ও কানাদেরও নবূখদ্রিৎসর বাবিলে নিয়ে এসেছিলেন। 2 একটা ঝুড়িতে ছিল খুব ভাল ডুমুর। ঐ ডুমুরগুলি ছিল মরশুমের শুরুতে পাকা ডুমুর। কিন্তু অপর ঝুড়িতে ছিল পচা ডুমুর। যা একেবারেই খাওয়ার অযোগ্য।
3 প্রভু আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “যিরমিয়, তুমি কি দেখতে পাচ্ছ?”
আমি উত্তর দিয়েছিলাম, “আমি ডুমুর দেখতে পাচ্ছি। ভাল ডুমুরগুলো খুবই ভাল। আর পচা ডুমুরগুলো এতোই পচা যে ওগুলো খাওয়া যাবে না।”
4 তারপর আমি প্রভুর কাছ থেকে বার্তা পেয়েছিলাম। 5 প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর আমাকে বলেছিলেন: “যিহূদার লোকদের তাদের দেশ থেকে শত্রুরা বাবিলে নিয়ে গিয়েছিল। সেই লোকগুলি হবে ঐ ভাল ডুমুরগুলোর মতো। এদের প্রতি আমি দয়ালু হবো। 6 আমি তাদের রক্ষা করব। আমি তাদের যিহূদায় ফিরিয়ে আনব। আমি তাদের ছিন্নভিন্ন না করে গড়ে তুলব। আমি তাদের উদ্ধার করবো। আমি তাদের প্রতিষ্ঠা করবো। যাতে তারা বেড়ে উঠতে পারে। 7 আমি তাদের একটি হৃদয় দেব যেটা আমাকে জানতে ইচ্ছা করবে। তখন তারা জানবে যে আমিই প্রভু। তারা হবে আমার লোক। আমি হব তাদের ঈশ্বর। আমি এটা করবো কারণ বাবিলের বন্দীরা সম্পূর্ণ ভাবে তাদের হৃদয় আমার কাছে সমর্পণ করবে।”
8 “কিন্তু যিহূদার রাজা সিদিকিয় হবে ঐ খাওয়ার অযোগ্য পচা ডুমুরগুলির মতো। সিদিকিয়র উচ্চপদস্থ পারিষদগণ, জেরুশালেমে পড়ে থাকা সমস্ত লোক ও মিশরে বসবাসকারী যিহূদার লোকরা হবে ঐ পচা ডুমুরের মতো।
9 “আমি ঐ লোকদের এমন একটি শাস্তি দেব যেটা পৃথিবীর সমস্ত লোককে বিস্ময়াভিভূত করবে। যিহূদার ঐ সব লোকেরা হবে অন্যদের উপহাসের সামগ্রী। আমি তাদের যেখানেই ছড়িয়ে দেব সেখানকার লোকরা তাদের শাপ দেবে। 10 তাদের বিরোধিতা করার জন্য আমি তরবারি, অনাহার এবং রোগ পাঠাব। আমি তাদের যতক্ষণ পর্যন্ত না প্রত্যেকে মারা যায় ততক্ষণ আক্রমণ করব। তাহলে তারা এই দেশ যা আমি তাদের এবং তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম সেখান থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।”
19 তাহলে তোমরা হয়তো আমাকে বলতে পার: “তবে ঈশ্বর কেন পাপের জন্য মানুষকে দোষী করেন?” কারণ ঈশ্বরের ইচ্ছা কে প্রতিরোধ করতে পারে? 20 তা সত্য, কিন্তু তুমি কে? ঈশ্বরকে প্রশ্ন করার কোন অধিকার তোমার নেই। মাটির পাত্র কি নির্মাণকর্তাকে প্রশ্ন করতে পারে? মাটির পাত্র কখনও নির্মাতাকে বলে না, “তুমি কেন আমাকে এমন করে গড়লে?” 21 কাদামাটির ওপরে কুমোরের কি কোন অধিকার নেই, সে কি একই মাটির তাল থেকে তার ইচ্ছামত দুরকম পাত্র তৈরী করতে পারে না? একটি বিশেষ ব্যবহারের জন্য আর অন্যটি সাধারণ ব্যবহারের জন্য?
22 ঈশ্বর যদিও চেয়েছিলেন, যে লোকেদের বিনাশের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে তাদের ওপর তিনি তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করবেন ও তাঁর ক্ষমতার স্পষ্ট প্রমাণ দেবেন, তবু ঈশ্বর তাঁর ক্রোধের পাত্রদের প্রতি অসীম ধৈর্য্য দেখিয়েছেন। 23 যাতে সেই দয়ার পাত্রদের, যাদের তিনি মহিমা প্রাপ্তির যোগ্য করে তৈরী করেছিলেন, তাদের কাছে তাঁর মহিমার ঐশ্বর্য্য সম্বন্ধে পরিচয় করাতে পারেন। 24 আমরাই সেই লোক, ঈশ্বর যাদের আহ্বান করেছেন। ইহুদী বা অইহুদীর মধ্য থেকে ঈশ্বর আমাদের আহ্বান করেছেন। 25 এবিষয়ে হোশেয়ের পুস্তকে লেখা আছে:
“যারা আমার লোক নয়,
তাদের আমি নিজের লোক বলব,
যে প্রিয়তমা ছিল না
তাকে আমার প্রিয়তমা বলব।”(A)
26 “আর যেখানে ঈশ্বর বলেছিলেন
‘তোমরা আমার লোক নও’,
সেখানেই তাদের বলা যাবে জীবন্ত ঈশ্বরের সন্তান।”(B)
27 যিশাইয় ইস্রায়েল সম্বন্ধে উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন:
“যদিও ইস্রায়েলীদের সংখ্যা সমুদ্র তীরের বালুকণার মত অগনিত হয়,
তবুও তাদের মধ্য থেকে অবশিষ্ট কিছু মানুষ শেষ পর্যন্ত উদ্ধার পাবে।
28 বিচারের ব্যাপারে প্রভু এই পৃথিবীতে যা করবেন বলেছেন, তিনি তা পূর্ণ করবেন, শিগ্গিরই তা শেষ করবেন।”(C)
29 এই রকম কথা যিশাইয় আগেই বলেছিলেন:
“সর্বশক্তিমান প্রভু যদি আমাদের জন্য
কিছু বংশধর রেখে না দিতেন
তবে এতদিনে আমরা সদোমের তুল্য হতাম,
আমরা এতদিনে ঘমোরার তুল্য হতাম।”(D)
30 তাহলে এসবের অর্থ কি? অর্থ এই, যারা অইহুদী তারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার কোন চেষ্টা করে নি; তাদেরই ঈশ্বর ধার্মিক প্রতিপন্ন করলেন। তাদের বিশ্বাসের জন্য তারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হল। 31 আর ইস্রায়েলীয়রা বিধি-ব্যবস্থা পালন করার মধ্য দিয়ে ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার চেষ্টা করেও কৃতকার্য হয় নি। 32 কারণ তারা তাদের কৃতকার্যের দ্বারা ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার চেষ্টা করেছে। ধার্মিক প্রতিপন্ন হবার জন্য তারা ঈশ্বরের ওপর বিশ্বাস করে নি, তারা ব্যাঘাতজনক পাথরে ধাক্কা পেয়ে হোঁচট খেয়েছে। 33 শাস্ত্রে যেমন লেখা আছে:
“দেখ, আমি সিয়োনে একটি পাথর রাখছি
যাতে মানুষ হোঁচট খেয়ে পড়ে যাবে;
কিন্তু যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস করবে তারা কখনও লজ্জায় পড়বে না।”(E)
একজন জন্মান্ধকে যীশুর আরোগ্যদান
9 যীশু পথে হাঁটছিলেন, সেই সময় তিনি একজন লোককে দেখতে পেলেন যে জন্ম থেকেই অন্ধ। 2 যীশুর অনুগামীরা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, “গুরু, কার পাপে এ অন্ধ হয়ে জন্মেছে? এর পাপে অথবা এর বাবা-মার পাপে?”
3 যীশু বললেন, “এই লোকটির বা এর বাবা-মার পাপের জন্য যে এ অন্ধ হয়ে জন্মেছে তা নয়, বরং এই ব্যক্তি অন্ধ হয়ে জন্মেছে যাতে আমি যখন তাকে সুস্থ করি, তখন লোকে ঈশ্বরের শক্তির প্রকাশ দেখতে পায়। 4 যতক্ষণ দিন আছে ততক্ষণ যিনি আমায় পাঠিয়েছেন তাঁর কাজ আমাদের করে যেতে হবে। যখন রাত আসবে তখন আর কেউ কাজ করতে পারবে না। 5 আমি যতক্ষণ এই জগতে আছি, আমিই এই জগতের আলো।”
6 এই কথা বলার পর তিনি মাটিতে থুতু ফেললেন। আর মুখের সেই লালা দিয়ে মণ্ড তৈরী করে, তা অন্ধ লোকটির চোখে লাগিয়ে দিলেন। 7 এরপর যীশু সেই অন্ধ লোকটিকে বললেন, “শীলোহ সরোবরে গিয়ে ধুয়ে ফেল।” (শীলোহ অনুবাদ করলে এই নামের অর্থ “প্রেরিত।”) তখন সে গিয়ে ধুয়ে ফেলল আর দৃষ্টিশক্তি লাভ করে ফিরে এল।
8 তখন সেই লোকটির প্রতিবেশীরা ও যারা তাকে ভিক্ষা করতে দেখত তারা বলল, “এ কি সেই লোক নয় যে বসে বসে ভিক্ষা করত?”
9 কেউ কেউ বলল, “হ্যাঁ, সেই তো।” আবার অন্যরা বলল, “না, এই লোকটা তারই মতো দেখতে।”
কিন্তু সে বলল, “আমি সেই একই লোক।”
10 তখন তারা তাকে বলল, “তুমি কি করে দৃষ্টিশক্তি লাভ করলে?”
11 সে এর উত্তরে বলল, “যীশু নামের লোকটি মণ্ড তৈরী করে, আমার চোখে তা লাগিয়ে দিলেন, আর বললেন শীলোহ সরোবরে যাও ও তোমার চোখ ধুয়ে ফেল। তখন আমি গেলাম ও ধুয়ে ফেললাম আর তখনই দৃষ্টিশক্তি লাভ করলাম।”
12 তারা তাকে বলল, “সেই যীশু কোথায়?”
সে বলল, “আমি জানি না।”
যে লোকটিকে যীশু আরোগ্যদান করলেন ইহুদীরা তাকে প্রশ্ন করল
13 যে লোকটি আগে অন্ধ ছিল তাকে তারা ফরীশীদের কাছে নিয়ে গেল। 14 যে দিন যীশু মণ্ড তৈরী করে ঐ লোকটির চোখে লাগিয়ে তাকে দৃষ্টিশক্তি দান করেন, সে দিনটি ছিল বিশ্রামবার। 15 তাই ফরীশীরা আবার তাকে জিজ্ঞেস করল, “তুমি কিভাবে তোমার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেলে?”
লোকটি উত্তর দিল, “তিনি মণ্ড তৈরী করে আমার চোখে লাগিয়ে দিলেন, আমি চোখ ধুয়ে ফেলবার পর দেখতে পেলাম।”
16 ফরীশীদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, “এই লোক ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে নি, কারণ এ বিশ্রামবারের নিয়ম মানে না।”
আবার অন্যরা বলল, “একজন পাপী কিভাবে এইসব অলৌকিক কাজ করতে পারে?” তাই এই নিয়ে তাদের মধ্যে মতভেদ দেখা দিল।
17 এরপর ইহুদী নেতারা অন্ধ লোকটিকে আবার জিজ্ঞেস করল, “যে লোকটি তোমার দৃষ্টিশক্তি দিয়েছে, তার বিষয়ে তুমি কি বল?”
লোকটি বলল, “তিনি একজন ভাববাদী।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International