Book of Common Prayer
পরিচালকের প্রতি: প্রভুর দাস দায়ূদের একটি গীত। প্রভু যখন দায়ূদকে শৌল এবং অন্যান্য শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন, তখন দায়ূদ এই গীতটি লিখেছিলেন।
18 তিনি বললেন, “প্রভু আমার শক্তি,
আমি আপনাকে ভালোবাসি!”
2 প্রভুই আমার শিলা, আমার দুর্গ, আমার নিরাপদ আশ্রয়স্থল।
আমার ঈশ্বর, আমার শিলা। আমি তাঁর কাছে নিরাপত্তার জন্য ছুটে যাই।
ঈশ্বরই আমার ঢালস্বরূপ। তাঁর শক্তি আমায় রক্ষা করে।
দুর্গম পাহাড়ে প্রভুই আমার গোপন আশ্রয়স্থল।
3 ওরা আমায় উপহাস করেছে।
কিন্তু আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চেয়েছি
এবং আমার শত্রুদের কাছ থেকে রক্ষা পেয়েছি!
4 আমার শত্রুরা আমায় হত্যা করতে চাইছিল!
আমার চারপাশে ছিল মৃত্যুর দড়ি।
এক তীব্র বন্যা আমাকে পাতালের দিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
5 আমার চারপাশে ছিল কবরের রজ্জুগুলি।
আমার সামনে পড়েছিল মৃত্যুর ফাঁদ।
6 ফাঁদে বদ্ধ হয়ে, আমি প্রভুর কাছে সাহায্য চাইলাম।
হ্যাঁ, আমি আমার ঈশ্বরকে ডাকলাম।
ঈশ্বর তাঁর মন্দিরে ছিলেন।
তিনি আমার কন্ঠস্বর শুনতে পেলেন।
তিনি আমার সাহায্যের জন্য কান্না শুনতে পেলেন।
7 সারা পৃথিবী কেঁপে উঠলো,
পর্বতের ভিতগুলো পর্যন্ত নড়ে উঠেছিল। কেন?
কারণ প্রভু ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন!
8 ঈশ্বরের নাক দিয়ে ধোঁয়া বেরিয়ে এলো।
ঈশ্বরের মুখ থেকে বেরিয়ে এলো জ্বলন্ত অগ্নিশিখা।
তাঁর দেহ থেকে জ্বলন্ত আগুন বিচ্ছুরিত হতে লাগলো।
9 আকাশমণ্ডল বিদীর্ণ করে প্রভু নীচে নেমে এলেন!
একটি ঘন কালো মেঘের ওপর তিনি দাঁড়িয়েছিলেন।
10 বাতাসের পাখায় চড়ে তিনি আকাশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে উড়ে বেড়াচ্ছিলেন।
বাতাসের ওপর ভর করে, তিনি সুদূর শূন্যে ভেসে বেড়াচ্ছিলেন।
11 প্রভু একটা ঘন কালো মেঘের মধ্যে লুকিয়েছিলেন, সেই মেঘ তাঁকে তাঁবুর মত ঘিরেছিল।
তিনি ঘন বজ্রময় মেঘের মধ্যে লুকিয়েছিলেন।
12 তারপর মেঘ ভেদ করে ঈশ্বরের আলোকময় ঔজ্জ্বল্য বেরিয়ে এলো।
সেখানে বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি এবং বিদ্যুতের ঝলকানি দেখা দিল।
13 আকাশ থেকে প্রভু বিদ্যুতের মত ঝলসে উঠলেন!
পরাৎপরের রব শোনা গেল।
সেখানে তখন শিলাবৃষ্টি এবং বজ্রসহ অগ্নিময় বিদ্যুতের ঝলক ছিল।
14 প্রভু তাঁর তীরসমূহ[a] নিক্ষেপ করে শত্রুদের ছত্রভঙ্গ করে দিলেন।
প্রভু তীরের মত ক্ষিপ্রগতিতে অনেকগুলো অশনিপাত করলেন এবং লোকরা বিভ্রান্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়লো।
15 প্রভু আপনি উচ্চস্বরে আপনার আজ্ঞা দিলেন
এবং তীব্র বেগে বাতাস বইতে শুরু করলো।
জল পেছনে সরে গেল এবং আমরা সমুদ্রের তলদেশ দেখতে সমর্থ হলাম।
আমরা পৃথিবীর ভিত দেখতে পেলাম।
16 প্রভু ওপর থেকে নীচে পৌঁছলেন এবং আমাকে রক্ষা করলেন।
প্রভু আমাকে গভীর জল থেকে টেনে তুললেন।
17 আমার শত্রুরা আমার চেয়ে শক্তিশালী ছিলো।
ওই সব লোক আমায় ঘৃণা করেছে।
আমার কাছে আমার শত্রুরা বেশ শক্তিশালীই ছিল, তাই ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেছেন!
18 আমি সমস্যার মধ্যে নিমজ্জিত ছিলাম এবং আমার শত্রুরা আমায় আক্রমণ করেছিল।
কিন্তু আমাকে সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রভু সেখানে ছিলেন!
19 প্রভু আমায় ভালোবাসেন, তাই তিনি আমায় উদ্ধার করলেন।
তিনি আমায় নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেলেন।
20 আমি নিস্পাপ, তাই প্রভু আমাকে আমার যোগ্য পুরস্কার দেবেন।
আমি কোন অন্যায় কাজ করি নি, তাই তিনি আমার জন্য হিতকর কাজই করবেন।
21 কেন? কারণ আমি প্রভুর নির্দেশ পালন করেছি!
আমি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কোন পাপ করি নি।
22 আমি সর্বদাই প্রভুর নির্দেশসমূহ স্মরণে রাখি।
আমি তাঁর নির্দেশিত বিধি পালন করি!
23 তাঁর সামনে আমি সর্বদাই সৎ ও বিশুদ্ধ ছিলাম।
আমি নিজেকে অন্যায় কাজ থেকে দূরে রেখেছিলাম।
24 এই কারণে প্রভু আমাকে আমার পুরস্কার দেবেন!
কেন? কারণ আমি নির্দোষ!
প্রভু দেখেছেন, আমি কোন গর্হিত কাজ করি নি।
তাই আমার প্রতি তিনি হিতকর কাজই করবেন।
25 প্রভু, যদি কোন লোক প্রকৃতই আপনাকে ভালোবাসে আপনিও তাঁর প্রতি প্রকৃত ভালোবাসা প্রদর্শন করুন।
আপনার প্রতি কেউ যদি সৎ ও একনিষ্ঠ হয়, আপনিও তার প্রতি সৎ হন।
26 হে প্রভু, যারা ভাল এবং শুচি তাদের কাছে আপনিও ভাল এবং শুচি।
কিন্তু, নীচতম এবং ক্রুরতম ব্যক্তিকেও আপনি পরাক্রমী করতে পারেন।
27 প্রভু, নম্র লোকদের আপনি সাহায্য করেন।
কিন্তু উদ্ধত ও অহঙ্কারী লোকদের আপনি অবদমিত করেন।
28 প্রভু, আপনিই আমার প্রদীপ জ্বালান।
আমার ঈশ্বর, আমার চারদিকের অন্ধকারকে আলোকিত করেন!
29 আপনার সাহায্যে হে প্রভু, আমি সৈন্যদের সঙ্গে ছুটতে পারি।
ঈশ্বরের সাহায্য পেয়ে, আমি শত্রুদের দেওয়ালের ওপর চড়তে পারি।
30 ঈশ্বর সর্বদাই যা সঠিক তাই করে থাকেন।
প্রভুর বাক্য পরীক্ষা করা হয়েছে।
যারা তাঁর ওপর বিশ্বাস রাখে, তিনি তাদের রক্ষা করেন।
31 প্রভু ছাড়া আর অন্য কোন ঈশ্বর নেই।
আমাদের প্রভু ছাড়া আর কোন শিলা নেই।
32 ঈশ্বর আমায় শক্তি দেন।
তিনি আমাকে পবিত্র জীবনযাপন করতে সাহায্য করেন।
33 ঈশ্বর আমাকে হরিণের মত দ্রুত দৌড়তে সাহায্য করেন।
উচ্চস্থানে তিনিই আমাকে অবিচল রাখেন।
34 ঈশ্বর আমাকে যুদ্ধের কৌশল শিক্ষা দেন,
তাই আমার বাহুগুলি একটি শক্তিশালী ধনুকে ছিলা পরাতে পারে।
35 ঈশ্বর আপনি আমায় রক্ষা করেছেন এবং জয়ী হতে সাহায্য করেছেন।
আপনার ডান হাত দিয়ে আপনি সহায়তা করেছেন।
আমার শত্রুকে পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন।
36 আমার পা এবং গোড়ালি শক্ত করে দিন,
যেন আমি হোঁচট না খেয়ে দ্রুত দৌড়তে পারি।
37 আমি যেন আমার শত্রুদের তাড়া করতে পারি এবং তাদের ধরে ফেলতে পারি।
তাদের শেষ না করে আমি আর ফিরবো না!
38 আমি আমার শত্রুদের পরাজিত করবো। তারা আর উঠে দাঁড়াবে না।
আমার সব শত্রু আমার পায়ের নীচে পড়ে থাকবে।
39 ঈশ্বর, যুদ্ধে আপনিই আমাকে শক্তিশালী করেছেন।
আপনিই আমার শত্রুকে আমার সামনে ভূপতিত করেছেন।
40 আমার শত্রুদের পরাজিত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন
এবং আমি আমার বিরোধীদের বিনষ্ট করেছি!
41 আমার শত্রুরা সাহায্যের জন্য চিৎকার করেছিল।
কিন্তু তাদের সাহায্য করার কেউ ছিল না।
তারা এমনকি প্রভুকেও ডেকেছিল,
কিন্তু প্রভু তাদের উত্তর দেন নি।
42 আমি আমার শত্রুদের মেরে টুকরো টুকরো করে দিয়েছি।
তারা ধূলোর মত বাতাসে উড়ে গিয়েছিল।
আমি তাদের একেবারে খণ্ড বিখণ্ড করে ছেড়েছি।
43 যারা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে আমাকে তাদের হাত থেকে রক্ষা করুন।
আমাকে সেই সব জাতির নেতা বানিয়ে দিন।
যে সব লোকদের আমি জানি না, তারা আমার সেবা করবে।
44 সেই সব লোক আমার সম্পর্কে শোনামাত্রই আমার আজ্ঞাকারী হবে।
ঐ বিদেশীরা আমায় ভয় করবে।
45 ঐসব বিদেশীরা ভয়ে শুকিয়ে যাবে।
ভয়ে কম্পমান হয়ে ওরা ওদের গোপন ডেরা থেকে বেরিয়ে আসবে।
46 প্রভু জীবন্ত!
আমি আমার শিলার প্রশংসা করি। ঈশ্বর আমায় রক্ষা করেন।
তিনি মহান!
47 ঈশ্বর আমার জন্য আমার শত্রুদের শাস্তি দিয়েছেন।
তিনি লোকদের আমার অধীনে এনে দিয়েছেন।
48 প্রভু, আপনি শত্রুর হাত থেকে আমায় বাঁচিয়েছেন।
যারা আমার বিরুদ্ধে গিয়েছিল, তাদের পরাস্ত করতে আপনি আমায় সাহায্য করেছেন।
নিষ্ঠুর মানুষের হাত থেকে আপনি আমায় রক্ষা করেছেন।
49 হে প্রভু, এই কারণে আমি সকল জাতির কাছে আপনার প্রশংসা করি।
এই জন্যই আপনার নামে আমি স্তোত্র গান করি।
50 প্রভু তাঁর মনোনীত রাজাকে বহু যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করেন!
তাঁর মনোনীত রাজার প্রতি তিনি প্রকৃত ভালোবাসা দেখান।
তিনি দায়ূদ এবং তাঁর উত্তরপুরুষদের প্রতি চিরদিন বিশ্বস্ত থাকবেন!
ঈশ্বর ডাকলেন এবং যোনা আজ্ঞা পালন করলেন
3 তখন প্রভু আবার যোনার সঙ্গে কথা বললেন, 2 “ঐ বৃহৎ শহর নীনবীতে যাও এবং আমি তোমাকে যা বলি তাই প্রচার কর।”
3 তাই যোনা প্রভুর আজ্ঞাপালন করলেন এবং নীনবীতে গেলেন। নীনবী ছিল বেশ বড় শহর। শহরটাতে ঘুরতে একজন লোকের তিন দিন সময় লাগত।
4 যোনা শহরটির কেন্দ্র স্থলে গিয়ে জনসাধারণকে ধর্মোপদেশ দিতে আরম্ভ করলেন। যোনা বললেন, “আর 40 দিন পর, নীনবী ধ্বংস হয়ে যাবে!”
5 নীনবীবাসীরা ঈশ্বরের কাছ থেকে এই বার্তা পেয়ে বিশ্বাস করল। লোকরা কিছু সময়ের জন্যে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে তাদের পাপ কাজ সম্বন্ধে চিন্তা করল। লোকরা তাদের দুঃখ প্রকাশ করার জন্য বিশেষ ধরণের জামাকাপড় পরল। শহরের সব লোকরাই তা করল, মহান থেকে সাধারণ সকলেই।
6 নীনবীর রাজা এই কথাগুলো শুনলেন এবং তিনি নিজেও তার নিজের খারাপ কাজের জন্য দুঃখিত হলেন। সেজন্য রাজা তাঁর সিংহাসন ছেড়ে দিলেন। তাঁর বিশেষ পোশাকও ছেড়ে ফেললেন এবং তিনি যে দুঃখিত তা দেখাবার জন্য বিশেষ ধরনের পোশাক পরলেন। তারপর রাজা ছাইয়ের মধ্যে বসলেন। 7 রাজা একটি বিশেষ বার্তা লিখে বার্তাটি শহরে প্রেরণ করলেন:
রাজা এবং তাঁর শাসকগণের আদেশ:
কিছু সময়ের জন্য লোকরা এবং পশুরা অবশ্যই কিছু খাবে না। পশুর পালকে মাঠে চরতে দেওয়া হবে না। নীনবীতে জীবিত কিছুই কোন খাদ্য বা পানীয় জল খাবে না। 8 কিন্তু প্রত্যেক লোক এবং প্রত্যেক পশু তার দুঃখ প্রকাশ করার জন্য একটি বিশেষ পোশাক পরবে। লোককে ঈশ্বরের কাছে উচ্চস্বরে কাঁদতে হবে। প্রত্যেক লোকের জীবনযাত্রার পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে এবং তারা খরাপ কাজ করা বন্ধ করবে। 9 তখন ঈশ্বরও হয়তো পরিবর্তিত হবেন এবং তিনি যে কাজ করার কথা ভেবেছিলেন তা করবেন না। হয়তো ঈশ্বরও বদলে যাবেন এবং ক্রুদ্ধ হবেন না। তাহলে আমরা ক্ষয়প্রাপ্ত হব না।
10 লোকে যে সব কাজ করেছে তা ঈশ্বর দেখেছিলেন। ঈশ্বর দেখলেন যে, লোকে খারাপ কাজ করা বন্ধ করেছে। কাজেই ঈশ্বর বদলে গিয়েছিলেন এবং যা ভেবেছিলেন তা করলেন না। লোককে ঈশ্বর শাস্তিও দিলেন না।
ঈশ্বরের কৃপা যোনাকে ক্রুদ্ধ করল
4 যোনা ভাবলেন এটা খুবই খারাপ যে ঈশ্বর শহরটি রক্ষা করেছেন। যোনা ক্রুদ্ধ হয়েছিলেন। 2 যোনা প্রভুকে অভিযোগ করে বললেন, “আমি জানি এইসব ঘটনাই ঘটবে! আমি আমার দেশে ছিলাম এবং আপনিই আমাকে এখানে আসতে বলেছিলেন। সেই সময়, আমি জানতাম যে আপনি এই মন্দ শহরের লোকদের ক্ষমা করবেন। সে জন্য আমি ঠিক করেছিলাম তর্শীশে পালিয়ে যাব। আমি জানি যে আপনি খুবই দয়ালু ঈশ্বর! আমি জানি যে আপনি লোকদের ক্ষমা করেন এবং কাউকে শাস্তি দেন না। আমি জানি যে আপনি করুণায় পরিপূর্ণ! আমি জানি যে যদি এই লোকরা তাদের মন্দ কাজকর্ম বন্ধ করে, তাহলে আপনি তাদের ধ্বংস করার পরিকল্পনা পরিবর্তন করবেন। 3 সেজন্য এখন আপনাকে জিজ্ঞাসা করছি, প্রভু দয়া করে আমাকে হত্যা করুন। আমার পক্ষে বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুই ভালো হবে!”
4 তখন প্রভু বললেন, “তুমি কি মনে কর যে, আমি ওই লোকদের ধ্বংস করলাম না বলে তোমার রাগ করা ঠিক হচ্ছে?”
5 এইসব ব্যাপারের জন্য যোনা ক্রুদ্ধ হয়েই রইলেন। সে জন্য সে শহর থেকে চলে গেলেন। যোনা শহরের কাছেই পূর্বদিকে একটা জায়গায় গিয়ে হাজির হলেন। সেখানে যোনা তার নিজের জন্য একটা আশ্রয় তৈরী করলেন। তখন তিনি সেখানকার ছাউনির তলায় ছায়াতে বসলেন এবং শহরে কি ঘটবে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন।
কুমড়ো গাছ ও কীট পতঙ্গ
6 তৎক্ষনাৎ প্রভু একটি কুমড়ো গাছ হওয়ার আদেশ দিলেন এবং সেটি যোনার ওপর খুব তাড়াতাড়ি যোনার মাথা ছাড়িয়ে বেড়ে উঠল। তাতে যোনার পক্ষে আরামে থাকবার জন্য একটি ঠাণ্ডা জায়গা তৈরী হল। এই গাছটির জন্য যোনা খুবই খুশি হল।
7 পরের দিন সকালে, ঈশ্বর একটি কীটকে ওই গাছটির অংশ খাবার জন্য পাঠালেন। কীটটি গাছটি খেতে আরম্ভ করল এবং গাছটি মরে গেল।
8 সূর্য যখন মধ্য আকশে এলো তখন ঈশ্বর পূর্ব দিক থেকে গরম হাওয়া বইয়ে দিলেন। যোনার মাথার ঠিক ওপরে সূর্য খুবই গরম হয়ে উঠলো এবং যোনা খুবই দুর্বল হয়ে পড়লেন। যোনা মরবার জন্য ঈশ্বরের অনুমতি চাইলেন। তিনি বললেন, “আমার বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই বরং ভালো।”
9 কিন্তু ঈশ্বর যোনাকে বললেন, “তুমি কি মনে কর যে শুধু মাত্র গাছটি মরে যাবার জন্যই তোমার রাগ করা ঠিক হয়েছে?”
যোনা উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ, আমার রাগ করাই উচিত! আমি এতোই ক্রুদ্ধ যে মরতে চাই।”
10 এবং প্রভু বললেন, “তুমি ওই চারা গাছটার জন্য কিছুই করনি! তাকে তুমি বাড়িয়ে তোলনি! রাত্রিবেলায় চারাগাছটা বেড়ে উঠেছিলো এবং পরের দিন সকালেই মরে গেছে। আর এখন তুমি ওই গাছটার জন্য দুঃখিত! 11 তুমি যদি ওই চারাগাছটার জন্য এত মনঃক্ষুন্ন হতে পারো, তাহলে অবশ্যই আমি ঐ বড় শহর নীনবীর জন্য দুঃখ বোধ করতে পারি এবং তাকে ক্ষমা করতে পারি। ওই শহরে বহু লোক এবং জীবজন্তু আছে। সংখ্যায় 120,000 বেশী মানুষ ওই শহরে আছে, এবং তারা তাদের মন্দ কাজের সম্বন্ধে জানত না।”
27 এইভাবে ঝড়ের মধ্যে চৌদ্দ রাত আদ্রিয়া সমুদ্রে ইতস্ততঃ ভাসমান অবস্থায় থাকার পর মাঝ রাতে নাবিকদের মনে হল যে জাহাজটি কোন ডাঙার দিকে এগিয়ে চলেছে। 28 সেখানে তারা জলের গভীরতা মাপলে দেখা গেল তা একশো কুড়ি ফুট। এর কিছু পরে আবার জল মাপলে জলের গভীরতা নব্বুই ফুটে দাঁড়াল। 29 তারা ভয় করতে লাগল যে জাহাজটি হয়তো কিনারে পাথরের গায়ে ধাক্কা খাবে। তাই নাবিকরা জাহাজের পেছন দিক থেকে চারটি নোঙর নামিয়ে দিল, প্রার্থনা করল যেন শীঘ্র ভোর হয়। 30 নাবিকদের মধ্যে কেউ কেউ জাহাজ ছেড়ে পালাবার মতলব করল, তাই নোঙর ফেলার আছিলায় জাহাজের মধ্য থেকে ডিঙিখানি নীচে নামিয়ে দিল। 31 কিন্তু পৌল সেনাপতি ও সৈন্যদের উদ্দেশ্যে বললেন, “এই লোকরা যদি জাহাজে না থাকে তবে আপনারা রক্ষা পাবেন না।” 32 তখন সৈন্যরা ডিঙির দড়ি কেটে দিল, আর তা জলে গিয়ে পড়ল।
33 এরপর ভোর হয়ে এলে পৌল সকলকে কিছু খেয়ে নেবার জন্য অনুরোধ করে বললেন, “আজ 14 দিন হল আপনারা অপেক্ষা করে আছেন, কিছু না খেয়ে উপোস করে আছেন। 34 আমি আপনাদের অনুরোধ করছি কিছু খেয়ে নিন, বেঁচে থাকার জন্য এর প্রয়োজন আছে, কারণ আপনাদের কারোর একগাছি চুলেরও ক্ষতি হবে না।” 35 এই কথা বলে পৌল রুটি নিয়ে তাদের সকলের সামনে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন, আর তা ভেঙে খেতে শুরু করলেন। 36 তখন সকলে উৎসাহ পেয়ে খেতে শুরু করল। 37 (আমরা মোট 276 লোক জাহাজে ছিলাম।) 38 সকলে পরিতৃপ্তির সঙ্গে খাবার পর বাকী শস্য সমুদ্রে ফেলে দিয়ে জাহাজটি হাল্কা করা হল।
জাহাজ ধ্বংস হল
39 দিন হলে পর তারা সেই জায়গাটা চিনতে পারল না; কিন্তু এমন এক খাড়ি দেখতে পেল যার বড় বালুতট ছিল। তারা ঠিক করল যদি সম্ভব হয় তবে ঐ বালুতটের ওপরে জাহাজটা তুলে দেবে। 40 এই আশায় তারা নোঙ্গর কেটে দিল আর তা সমুদ্রেই পড়ে রইল। এরপর হালের বাঁধন খুলে দিয়ে বাতাসের সামনে পাল তুলে সেই বেলাভূমি লক্ষ্য করে এগিয়ে চলল। 41 কিন্তু একটু এগোতেই তারা বালিয়াড়িতে ধাক্কা পেল, জাহাজের সামনের দিকটা বালিতে বসে গিয়ে অচল হয়ে পড়ল, ফলে ঢেউয়ের আঘাতে পিছনের দিকটা ভেঙে যেতে লাগল।
42 তখন সৈন্যরা বন্দীদের হত্যা করবে বলে ঠিক করল, পাছে তাদের কেউ সাঁতার কেটে পালায়। 43 কিন্তু সেনাপতি পৌলকে বাঁচাবার আশায় তাদের এই কাজ করতে নিষেধ করলেন, হুকুম দিলেন যেন যারা সাঁতার জানে তারা ঝাঁপ দিয়ে আগে ডাঙ্গায় ওঠে। 44 বাকী সকলে যেন জাহাজের ভাঙ্গা তক্তা বা কোন কিছু ধরে কিনারে যেতে চেষ্টা করে। এইভাবে সকলেই নিরাপদে তীরে এসে পৌঁছলো।
যীশুই খ্রীষ্ট
(মথি 16:13-19; মার্ক 8:27-29)
18 একদিন যীশু কোন এক জায়গায় নিভৃতে প্রার্থনা করছিলেন। তাঁর শিষ্যরা সেখানে এলে তিনি তাঁদের জিজ্ঞেস করলেন, “লোকেরা কি বলে, আমি কে?”
19 তাঁরা বললেন, “কেউ কেউ বলে আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন, কেউ বা বলে এলিয়, আবার কেউ কেউ বলে প্রাচীনকালের ভাববাদীদের মধ্যে একজন বেঁচে উঠেছেন।”
20 তিনি তাঁদের বললেন, “কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে?”
পিতর বললেন, “ঈশ্বরের সেই খ্রীষ্ট।”
21 তখন তিনি তাঁদের সতর্ক করে দিলেন যেন একথা তাঁরা কারো কাছে প্রকাশ না করেন।
যীশু বললেন যে তাঁকে মৃত্যুবরণ করতেই হবে
(মথি 16:21-28; মার্ক 8:31–9:1)
22 তিনি আরো বললেন, “মানবপুত্রের অনেক দুঃখ ও যাতনা ভোগ করার প্রয়োজন আছে; ইহুদী নেতারা, প্রধান যাজকেরা ও ব্যবস্থার শিক্ষকরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করবে, তারা তাঁকে হত্যা করবে; আর তিন দিনের মাথায় তিনি মৃত্যুলোক থেকে পুনরুত্থিত হবেন।”
23 পরে তিনি তাঁদের সকলের উদ্দেশ্যে বললেন, “যদি কেউ আমার সঙ্গে আসতে চায়, তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক; আর প্রতিদিন নিজের ক্রুশ তুলে নিক এবং আমায় অনুসরণ করুক। 24 যে কেউ নিজের জীবন রক্ষা করতে চায় সে তা হারাবে, কিন্তু যে কেউ আমার জন্য নিজের জীবন হারায় সে তা রক্ষা করবে। 25 সমগ্র জগৎ লাভ করে কেউ যদি নিজেকে ধ্বংস করে তবে তার কি লাভ হল? 26 যদি কেউ আমার জন্য ও আমার শিক্ষার জন্য লজ্জা বোধ করে, তবে যখন মানবপুত্র নিজ মহিমায় এবং পিতা ও পবিত্র স্বর্গদূতদের মহিমায় আসবেন তখন তিনিও তার জন্য লজ্জিত হবেন। 27 কিন্তু আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এখানে এমন কয়েকজন আছে যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্য না দেখা পর্যন্ত মৃত্যুর মুখ দেখবে না।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International