Book of Common Prayer
আসফের প্রশংসা গীতগুলির একটি
83 ঈশ্বর, নীরব থাকবেন না!
কান বন্ধ করে রাখবেন না!
ঈশ্বর আপনি কিছু বলুন।
2 ঈশ্বর, শত্রুরা আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে
এবং খুব শীঘ্রই ওরা আক্রমণ করবে।
3 আপনার লোকদের বিরুদ্ধে ওরা ফন্দি আঁটছে।
যে লোকদের আপনি ভালোবাসেন, আপনার শত্রুরা তাদের বিরুদ্ধে শলাপরামর্শ করছে।
4 ওই শত্রুরা বলাবলি করছে, “এস, আমরা ওদের পুরোপুরি ধ্বংস করে দিই।
তাহলে কোন ব্যক্তি আর কোনদিনের জন্যও ইস্রায়েলের নাম স্মরণ করবে না।”
5 ঈশ্বর, ওই সব লোক আপনার বিরুদ্ধে এবং আমাদের সঙ্গে আপনি যে চুক্তি করেছেন,
তার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য, এক জোট হয়েছে।
6-7 ওই শত্রুরা আমাদের সঙ্গে লড়াই করবে বলে এক জোট হয়েছে: ওদের মধ্যে যারা রয়েছে তারা হলো ইদোমবাসী, ইশ্মায়েলীয়, মোয়াব ও হাগারের উত্তরপুরুষ,
গবাল, অম্মোন ও অমালেকের অধিবাসী, সোর দেশের লোক এবং পলেষ্টীয় লোকেরা।
ওই সব লোক আমাদের সঙ্গে লড়াই করার জন্য একজোট হয়েছে।
8 এমনকি অশূরীয়রাও ওদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে।
লোটের উত্তরপুরুষদের[a] ওরা খুব শক্তিশালী করেছে।
9 ঈশ্বর কীশোন নদীর কাছে, যেমন করে আপনি মিদিয়নদের পরাজিত করেছিলেন,
যেমন করে আপনি সীষরা ও যাবীনকে পরাজিত করেছিলেন তেমন করে আপনি ওই শত্রুদের পরাজিত করুন।
10 ঐন্দোরে আপনি ওদের পরাজিত করেছিলেন।
মাটিতেই ওদের দেহগুলো পচে গিয়েছিলো।
11 ঈশ্বর, ওই শত্রু নেতাদের পরাজিত করুন। ওরেব ও সেবদের প্রতি আপনি যা করেছিলেন ওদের প্রতিও তাই করুন।
সেবহ ও সল্মুন্নের প্রতি আপনি যা করেছিলেন ওদের প্রতিও তাই করুন।
12 ঈশ্বর, ওই লোকরা আমাদের
আপনার ভূখণ্ড থেকে বার করে দিতে চেয়েছিল।
13 হে ঈশ্বর, খড় কুটো যেমন বাতাসে উড়ে যায়, তেমনি ভাবে আপনি ওদের উড়িয়ে দিন।
ঝোড়ো হাওয়ায় খড় যেমন ছড়িয়ে যায় তেমনি ভাবে ওদের ইতঃস্তত ছড়িয়ে দিন।
14 দাবানল যেমন করে অরণ্য ধ্বংস করে,
লেলিহান আগুন যেমন করে পাহাড় পুড়িয়ে দেয় তেমন করে আপনি শত্রুদের ধ্বংস করুন।
15 হে ঈশ্বর, ঝড় যেমন করে ধূলো উড়িয়ে নিয়ে যায় তেমনি করে আপনি ওই লোকেদের তাড়া করুন।
টর্নেডোর মত ওদের কাঁপিয়ে দিন, ওদের উড়িয়ে দিন।
16 ঈশ্বর, আপনি ওদের এমন শিক্ষা দিন যাতে ওরা বুঝতে পারে ওরা প্রকৃতই দুর্বল।
তখন ওরা আপনার নামের উপাসনা করতে চাইবে!
17 ঈশ্বর, চিরদিনের মত ওদের ভীত ও লজ্জিত করে দিন।
ওদের অপমানিত ও বিনষ্ট করুন।
18 তখন ওরা বুঝতে পারবে যে,
আপনিই ঈশ্বর।
ওরা জানতে পারবে যে, আপনিই একমাত্র পরাৎপর,
সারা পৃথিবীর ঈশ্বর!
দ্বিতীয় খণ্ড
(গীতসংহিতা 42–72)
পরিচালকের প্রতি: কোরহ পরিবারের একটি মস্কীল।
42 হরিণ যেমন ঝর্ণার জলের জন্য তৃষ্ণার্ত থাকে,
সেইভাবে হে ঈশ্বর, আমার আত্মাও আপনার জন্য তৃষ্ণার্ত।
2 জীবন্ত ঈশ্বরের জন্য আমার আত্মা তৃষ্ণার্ত।
আমি তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারি?
3 আমার শত্রু আমায় অনবরত উপহাস করে চলেছে।
সে বলছে, “কোথায় তোমার ঈশ্বর?
তিনি কি এখনও তোমায় বাঁচাতে আসেন নি?”
আমি এমনই দুঃখী যে একমাত্র চোখের জলই আমার খাদ্য হয়েছে।
4 পবিত্র মন্দিরে যখন আমার সুসময় ছিল, সে কথা যখন স্মরণ করি তখন আমার হৃদয় বিদীর্ণ হয়ে যায়।
আমার মনে পড়ে আমি ভীড়ের একেবারে সামনে গিয়ে জনতাকে ঈশ্বরের মন্দিরের দিকে নেতৃত্ব দিতে নিয়ে যেতাম।
উৎসব পালনের সময় প্রভুর প্রশংসায়
জনতা যে আনন্দ গীত গাইতো আমি তা স্মরণ করি।
5-6 কেন আমি এত বিমর্ষ হব?
কেন আমি এত মর্মপীড়া ভোগ করব?
আমি ঈশ্বরের সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করবো।
তবু আমি তাঁর প্রশংসা করবার একটা সুযোগ পাবো।
তিনি আমায় রক্ষা করবেন!
“হে আমার ঈশ্বর, আমি এত দুঃখিত কারণ, এই ছোট্ট পাহাড়, এই জায়গা থেকে আমি আপনাকে স্মরণ করছি।
যেখানে হর্ম্মোণ পর্বত ও যর্দন নদী এসে মিলেছে।”
7 পৃথিবীর গভীর অতল থেকে আগত জল,
জলপ্রপাতের মধ্যে দিয়ে ঝরে পড়ছে, আমি সেই জলের গর্জন শুনেছি।
প্রভু আপনার সব তরঙ্গ বিক্ষোভ আমার মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে।
আপনি আমায় সমস্যার মধ্যে ফেলেছেন!
8 প্রত্যেক দিন আমার প্রতি প্রভু তাঁর প্রকৃত ভালোবাসা দেখান।
প্রতি রাতে আমার জীবন্ত ঈশ্বরের জন্য আমার একটি প্রার্থনা সঙ্গীত আছে।
9 আমি আমার শৈলস্বরূপ ঈশ্বরের সঙ্গে কথা বলব, “প্রভু, কেন আপনি আমায় ভুলে গেছেন?
কেন আমি আমার শত্রুদের নিষ্ঠুরতার জন্য ভুগব?”
10 আমার শত্রুরা আমাকে অনবরত অপমান করে চলেছে এবং তারা আমাকে চরম আঘাত হেনে জিজ্ঞাসা করছে, “কোথায় তোমার ঈশ্বর?
তিনি কি এখনও তোমায় বাঁচাতে আসেন নি?”
11 কেন আমি অত দুঃখিত হবো?
কেন আমি অবসন্ন হবো?
আমাকে প্রভুর সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
আমি তবুও তাঁর প্রশংসা করবার একটা সুযোগ পাব।
তিনি আমায় রক্ষা করবেন!
43 হে ঈশ্বর, একজন লোক আছে যে আপনার একনিষ্ঠ ভক্ত নয়।
সে লোক অত্যন্ত ঠগ ও মিথ্যাবাদী।
হে ঈশ্বর, আমাকে ঐ লোকটার হাত থেকে রক্ষা করুন!
আমাকে প্রতিরক্ষা করুন এবং প্রমাণ করে দিন যে আমি নির্দোষ।
2 ঈশ্বর, আপনিই আমার দূর্গস্বরূপ!
প্রভু, কেন আপনি আমায় ত্যাগ করে গেছেন?
কেন আমি আমার পীড়নকারী
শত্রুর হাতে এত বিপর্যস্ত হবো?
3 হে ঈশ্বর, আপনার সত্য এবং আলো আমার ওপর বিকীর্ণ হোক্।
আপনার আলো ও সত্য আমায় পথ দেখাবে।
ঐগুলো আমায় আপনার পবিত্র পর্বতে নিয়ে যাবে।
ঐগুলো আমাকে আপনার গৃহের পথ দেখাবে।
4 আমি ঈশ্বরের বেদীর কাছে যাবো।
আমি সেই ঈশ্বরের কাছে যাবো, যিনি আমায় এত সুখী করেছেন।
ঈশ্বর, হে আমার ঈশ্বর,
আমি বীণা বাজিয়ে আপনার প্রশংসা করবো।
5 কেন আমি এত দুঃখিত?
কেন আমি এত অবসন্ন?
আমার ঈশ্বরের সাহায্যের জন্য প্রতীক্ষা করা উচিৎ।
আমি তবুও প্রভুর প্রশংসা করবার একটা সুযোগ পাব।
তিনি আমায় রক্ষা করবেন!
সঙ্গীত পরিচালকের প্রতি: কোরহ পরিবার থেকে একটি প্রশংসা গীত।
85 প্রভু, আপনার রাজ্যের প্রতি সদয় হোন।
যাকোবের লোকেরা বিদেশে নির্বাসিত।
নির্বাসিতদের ওদের নিজের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন।
2 প্রভু, আপনার লোকেদের ক্ষমা করে দিন!
ওদের পাপ মুছে দিন!
3 প্রভু, আর ক্রুদ্ধ হবেন না।
রাগে আত্মহারা হবেন না।
4 হে আমাদের পরিত্রাতা ঈশ্বর,
আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ হওয়া থেকে বিরত হোন এবং আবার আমাদের গ্রহণ করুন।
5 চিরদিনই কি আপনি
আমাদের ওপর ক্রুদ্ধ থাকবেন?
6 আবার আমাদের জীবন্ত করে দিন!
আপনার লোকদের সুখী করুন।
7 প্রভু আমাদের রক্ষা করুন
এবং আপনি যে আমাদের ভালোবাসেন তা প্রদর্শন করুন।
8 প্রভু ঈশ্বর কি বলেছেন তা আমি শুনেছি।
তিনি বলেছেন, তাঁর লোকদের জন্য ও তাঁর অনুগামীদের জন্য শান্তি থাকবে।
তিনি আরও বলেছেন, তাই ওদের আর কখনও নির্বোধ জীবনযাত্রায় ফিরে যাওয়া উচিৎ হবে না।
9 ঈশ্বর তাঁর অনুগামীদের খুব শীঘ্রই রক্ষা করবেন।
আমরা খুব শীঘ্রই সম্মানের সঙ্গে আমাদের ভূখণ্ডে বাস করবো।
10 তারা সত্য এবং করুণাকে অভিনন্দন জানাবে।
তারা শান্তি ও ধার্ম্মিকতাকে চুমু খাবে।
11 পৃথিবীর লোকরা ঈশ্বরের প্রতি নিষ্ঠাবান হবে।
স্বর্গ থেকে ঈশ্বর ওদের মঙ্গল করবেন।
12 প্রভু আমাদের অনেক ভালো জিনিস দেবেন।
জমিগুলো প্রচুর পরিমাণে ভালো শস্য দেবে।
13 ধার্ম্মিকতা ঈশ্বরের আগে আগে যাবে
এবং তাঁর চলার পথ প্রস্তুত করবে।
দায়ূদের প্রার্থনা।
86 আমি একজন দীন, অসহায় মানুষ।
প্রভু আমার কথা দয়া করে শুনুন এবং আমার প্রার্থনার উত্তর দিন।
2 প্রভু, আমি আপনার অনুগামী, অনুগ্রহ করে আমায় রক্ষা করুন!
আমি আপনার দাস, আপনি আমার ঈশ্বর।
আমি আপনাতে বিশ্বাস করি, তাই আমায় রক্ষা করুন।
3 হে আমার প্রভু, আমার প্রতি সদয় হোন।
সারাদিন ধরে আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি।
4 প্রভু, আমার জীবন আমি আপনার হাতে দিলাম।
আমি আপনার দাস, তাই আমায় সুখী করুন।
5 প্রভু, আপনি মঙ্গলময় এবং করুণাময়।
আপনার লোকেরা সাহায্যের জন্য আপনাকে ডাকে।
প্রকৃতই আপনি ওই সব লোককে ভালোবাসেন।
6 প্রভু, আমার প্রার্থনা শুনুন।
করুণার জন্য আমার প্রার্থনা শুনুন।
7 প্রভু, আমার সঙ্কটের সময়ে আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি।
আমি জানি আপনি আমায় উত্তর দেবেন!
8 ঈশ্বর, আপনার মত কেউই নেই।
আপনি যা করেছেন তা আর কেউ করতে পারবে না।
9 প্রভু, আপনিই প্রত্যেকটি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন।
ওরা সবাই যেন এসে আপনার উপাসনা করে।
ওদের সকলে যেন আপনার নামের সম্মান করে।
10 ঈশ্বর, আপনি মহান এবং আপনি আশ্চর্য কার্য করেন!
আপনি একমাত্র আপনিই ঈশ্বর!
11 প্রভু, আপনার পথ সম্পর্কে আমায় শিক্ষা দিন
এবং আমি আপনার সত্য পথ অবলম্বন করে বেঁচে থাকবো।
আপনার উপাসনা করাকে আমার জীবনের
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় করতে আমায় সাহায্য করুন।
12 ঈশ্বর, প্রভু আমার, আমার সকল অন্তর দিয়ে আমি আপনার প্রশংসা করি।
চিরদিন আমি আপনার নামের সম্মান করবো!
13 ঈশ্বর আপনি আমার জন্য কত মহান ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন
এবং মৃত্যুর হাত থেকে আমায় রক্ষা করেছেন।
14 ঈশ্বর, অহঙ্কারী লোকরা আমায় আক্রমণ করছে।
একদল নৃশংস লোক আমায় হত্যার চেষ্টা করছে।
ওই সব লোক আপনাকে সম্মান করে না।
15 প্রভু, আপনি দয়াময় ও করুণাময় ঈশ্বর।
আপনি ধৈর্য্যশীল, বিশ্বস্ত এবং প্রেমে পরিপূর্ণ।
16 ঈশ্বর, আমার প্রতি সদয় হোন এবং দেখান যে আপনি আমার কথা শুনেছেন।
আমি আপনার দাস, আমায় শক্তি দিন।
আমি আপনার দাস, আমায় রক্ষা করুন!
17 ঈশ্বর, আপনি যে আমায় সাহায্য করবেন তা প্রদর্শন করে আমায় একটা চিহ্ন দিন।
আমার শত্রুরা সেই চিহ্ন দেখবে এবং ওরা হতাশ হবে।
সেটা প্রমাণ করবে যে আপনি আমার প্রার্থনা শুনেছেন এবং আপনি আমাকে সাহায্য করবেন।
ঈশ্বর ইস্রায়েলকে আশ্বাস দিলেন
46 ইস্রায়েল মিশর দেশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন। প্রথমে তিনি বের্-শেবাতে গেলেন। সেখানে ইস্রায়েল তাঁর পিতা ইস্হাকের ঈশ্বরের উপাসনা করলেন এবং বলি দিলেন। 2 রাত্রে ঈশ্বর স্বপ্নে যাকোবের সঙ্গে কথা বললেন। ঈশ্বর বললেন, “যাকোব, যাকোব।”
ইস্রায়েল উত্তর দিলেন, “এই যে আমি।”
3 তখন ঈশ্বর বললেন, “আমি ঈশ্বর, তোমার পিতার ঈশ্বর! মিশরে যেতে ভয় করো না। মিশরে আমি তোমাকে এক মহাজাতিতে পরিণত করব। 4 আমি তোমার সঙ্গে মিশরে যাব আর তোমাকে সেখান থেকে ফিরিয়ে আনব। তুমি মিশরে মারা যাবে কিন্তু যোষেফ তোমার সঙ্গে থাকবে। তুমি মারা গেলে যোষেফই তার নিজের হাত দিয়ে তোমার চোখ বুজিয়ে দেবে।”
ইস্রায়েল মিশরে গেলেন
5 তারপর যাকোব বের্-শেবা ছেড়ে মিশরের দিকে যাত্রা করলেন। ইস্রায়েলের পুত্ররা নিজেদের পিতা যাকোবকে এবং প্রত্যেকে নিজের পুত্র কন্যা ও স্ত্রীদের নিয়ে মিশরে চললেন। ফরৌণ যে মালবাহী গাড়ীগুলো পাঠিয়েছিলেন সেইগুলো করেই তাঁরা গেলেন। 6 তাঁরা তাঁদের পশুপাল এবং কনান দেশে তাঁদের যা যা ছিল সব নিয়ে চললেন। সুতরাং ইস্রায়েল মিশরে তাঁর সমস্ত সন্তান এবং তাদের পরিবার নিয়েই গেলেন। 7 তাঁর সঙ্গে ছিল তাঁর পুত্ররা এবং নাতিরা, তাঁর কন্যারা এবং নাতনিরা। সুতরাং তাঁর সমস্ত পরিবার তাঁর সাথে মিশরে গেলেন।
ইস্রায়েল মিশরে পৌঁছালেন
28 যোষেফের সঙ্গে কথা বলার জন্য যাকোব যিহূদাকে তাঁর আগে পাঠালেন। এর পরে যাকোব এবং তাঁর পুত্ররা গোশন প্রদেশে পৌঁছোলেন। যিহূদা গোশন প্রদেশে যোষেফের সঙ্গে কথা বলতে গেলেন। যাকোব এবং তাঁর পরিবারের লোকজন এরপর সেই প্রদেশে পৌঁছালেন। 29 যোষেফ যখন শুনলেন যে তাঁর পিতা আসছেন তখন তিনি রথ প্রস্তুত করে গোশন প্রদেশে তাঁর পিতা ইস্রায়েলের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। যোষেফ তাঁর পিতাকে দেখে গলা জড়িয়ে ধরে বহুক্ষণ কাঁদলেন।
30 তখন ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, “এখন আমি শান্তিতে মরতে পারব। আমি তোমার মুখ দেখলাম এবং জানলাম যে তুমি এখনও জীবিত।”
31 যোষেফ তাঁর ভাইদের এবং পিতার পরিবারের বাকীদের বললেন, “আমি ফরৌণকে বলতে যাচ্ছি যে তোমরা এখানে এসেছ। আমি ফরৌণকে বলব, ‘আমার ভাইরা এবং পিতার পরিবারের বাকী সবাই কনান দেশ ছেড়ে এখানে আমার কাছে এসেছেন। 32 পরিবারের সবাই মেষপালক। তারা সবসময়ই মেষপাল ও গো-পাল রেখে থাকে। তারা তাদের পশু ও আর যা কিছু তাদের ছিল সবই তাদের সঙ্গে নিয়ে এসেছেন।’ 33 ফরৌণ তোমাদের ডাকলে জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমরা কি কাজ কর?’ 34 তোমরা তাকে বলবে, ‘আমরা মেষপালক। সারাজীবন ধরেই আমরা মেষ পালন করে আসছি। আমাদের আগে আমাদের পূর্বপুরুষরা মেষপালক ছিলেন।’ ফরৌণ তোমাদের গোশন প্রদেশে থাকতে দেবেন। মিশরীয়রা মেষপালকদের পছন্দ করেন না, সেইজন্য তোমাদের গোশন প্রদেশে থাকাটাই ভাল হবে।”
যে সব অধিকার পৌল প্রয়োগ করেন নি
9 আমি কি স্বাধীন মানুষ নই? আমি কি একজন প্রেরিত নই? আমাদের প্রভু যীশুকে কি আমি দেখিনি? তোমরাই কি প্রভুতে আমার কাজের দৃষ্টান্ত নও? 2 অন্যরা আমাকে যদি প্রেরিত বলে গ্রহণ নাও করে, তবু তোমরা নিশ্চয় আমাকে প্রেরিত বলে মেনে নেবে। প্রভুতে আমি যে প্রেরিত তোমরাই তো তার প্রমাণ।
3 কিছু লোক যারা আমার দোষগুণ বিচার করে, তাদের কাছে আমার উত্তর এই; 4 আমাদের কি ভোজন পান করার অধিকার নেই? 5 অন্যান্য প্রেরিতেরা, প্রভুর আপন ভাইরা ও কৈফা যেমন করেন তেমনভাবে আমাদের কি কোন বিশ্বাসীকে স্ত্রী হিসাবে সঙ্গে নিয়ে যাবার অধিকার নেই? 6 বার্ণবা ও আমাকেই কি কেবল জীবিকা নির্বাহের জন্য কাজ করতে হবে? 7 কোন সৈনিক কি তার নিজের খরচে সৈন্যদলে থাকে? যে দ্রাক্ষা ক্ষেত প্রস্তুত করে সে কি তার ফল খায় না? যে মেষপাল চরায় সে কি মেষদের দুধ পান করে না?
8 আমি এসব মানুষের বিচার বুদ্ধির ওপর নির্ভর করে বলছি না। ঈশ্বরের বিধি-ব্যবস্থায় কি একই কথা বলে না? 9 কারণ মোশির বিধি-ব্যবস্থায় আছে, “যে বলদ শস্য মাড়ে তার মুখে জালতি বেঁধো না।”(A) ঈশ্বর কি কেবল বলদের কথা ভেবেই একথা বলেছেন? 10 তা নয়, কিন্তু আমাদের কথা চিন্তা করেই তিনি এসব কথা বলেছেন, শাস্ত্রে আমাদের জন্যই এসব লেখা হয়েছে, কারণ যে চাষ করে, সে ফসল পাবার প্রত্যাশাতেই তা করে; আর যে শস্য মাড়াই করে, সে মাড়াই করা শস্য থেকে কিছু পাবার প্রত্যাশাতেই তা করে। 11 আমরা তোমাদের মাঝে আত্মিক বীজ বুনেছি, যেন এখন ফসল হিসাবে যদি তোমাদের কাছ থেকে পার্থিব কোন কিছু পাই, তবে তা কি খুব বেশী কিছু পাওয়া হবে? 12 এই ব্যাপারে তোমাদের কাছ থেকে অন্যেরা যখন দাবী করে, তখন তা পাবার জন্য আমাদের নিশ্চয় আরও বেশী অধিকার আছে। আমরা তোমাদের ওপর এই অধিকার খাটাই না। আমরা বরং সকলই সহ্য করছি, পাছে খ্রীষ্টের সুসমাচার গ্রহণের পথে কোন বাধার সৃষ্টি হয়। 13 তোমরা তো জান, যারা মন্দিরে কাজ করে, তারা মন্দির থেকেই তাদের খাবার পায়। যারা যজ্ঞবেদীর ওপর নিয়মিত নৈবেদ্য উৎসর্গ করে, তারা তারই অংশ পায়। 14 তেমনি প্রভুও সুসমাচার প্রচারকদের জন্য এই বিধান দিয়েছেন, যেন সুসমাচার প্রচারের মাধ্যমেই তাদের জীবিকা নির্বাহ হয়।
15 কিন্তু আমি এই অধিকার কখনও প্রয়োগ করিনি। আমি তোমাদের কাছ থেকে ঐরকম সাহায্য নেবার জন্যও লিখছি না। এ বিষয়ে আমার যে গর্ব আছে, তা যদি কেউ কেড়ে নেয় তবে তার থেকে আমার মরণ ভাল।
যীশু পাঁচ হাজারের বেশী লোককে খাওয়ালেন
(মথি 14:13-21; লূক 9:10-17; যোহন 6:1-14)
30 এরপর যে প্রেরিতদের যীশু প্রচার করতে পাঠিয়েছিলেন, তাঁরা যীশুর কাছে ফিরে এসে যা কিছু করেছিলেন ও যা কিছু শিক্ষা দিয়েছিলেন সে সব কথা তাঁকে জানালেন। 31 তখন তিনি তাঁদের বললেন, “তোমরা কোন নির্জন স্থানে গিয়ে একটু বিশ্রাম কর।” কারণ এত লোক যাতায়াত করছিল যে তাঁদের খাবার সময় হচ্ছিল না।
32 তাই তাঁরা নৌকা করে কোন নির্জন স্থানে চললেন। 33 কিন্তু লোকরা তাঁদের যেতে দেখল এবং অনেকে তাঁদের চিনতে পারল, তাই সমস্ত শহর থেকে লোকেরা বার হয়ে কিনারা ধরে দৌড়ে তাঁদের আগে সেখানে পৌঁছল। 34 যীশু নৌকা থেকে বাইরে বেরিয়ে বহু লোককে দেখতে পেলেন, তাঁর প্রাণে তাদের জন্য খুবই দয়া হল; কারণ তাদের পালকহীন মেষপালের মতো দেখাচ্ছিল। তখন তিনি তাদের অনেক বিষয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন।
35 সেই দিন বেলা প্রায় শেষ হয়ে এলে যীশুর শিষ্যরা এসে তাঁকে বললেন, “এটা নির্জন স্থান এবং সন্ধ্যাও ঘনিয়ে এল। 36 এদের বিদায় করুন; যাতে এরা আশপাশের গ্রামে গিয়ে খাবার কিনতে পারে।”
37 কিন্তু যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরাই ওদের খেতে দাও।”
তাঁরা যীশুকে বললেন, “এতো লোককে রুটি কিনে খাওয়াতে গেলে তো দুশো দীনার লাগবে।”
38 তিনি তাঁদের বললেন, “তোমাদের কাছে কখানা রুটি আছে খুঁজে দেখ।”
39 তাঁরা দেখে বললেন, “আমাদের কাছে পাঁচখানা রুটি ও দুটো মাছ আছে।” তখন তিনি প্রত্যেককে সবুজ ঘাসের উপর বসিয়ে দিতে বললেন। 40 তারা শ’ শ’ জন এবং পঞ্চাশ পঞ্চাশ জন করে সারি সারি বসে পড়ল।
41 তখন তিনি সেই পাঁচটা রুটি ও দুটো মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানিয়ে রুটিগুলোকে টুকরো টুকরো করে শিষ্যদের হাতে দিয়ে লোকদের দিতে বললেন। আর সেই দুটো মাছকেও টুকরো টুকরো করে সকলকে ভাগ করে দিলেন।
42 তারা সকলে তৃপ্তির সঙ্গে খেল। 43 আর যা পড়ে রইল সেই সমস্ত টুকরো রুটি ও মাছে বারোটি টুকরি ভর্ত্তি হয়ে গেল। 44 যত পুরুষ সেদিন খেয়েছিল, তারা সংখ্যায় পাঁচ হাজার ছিল।
যীশু জলের উপর দিয়ে হাঁটলেন
(মথি 14:22-33; যোহন 6:16-21)
45 পরে তিনি তাঁর শিষ্যদের নৌকায় উঠে তাঁর আগে ওপারে বৈৎসৈদাতে পৌঁছাতে বললেন, সেই সময় তিনি লোকেদের বিদায় দিচ্ছিলেন। 46 লোকেদের বিদায় করে তিনি প্রার্থনা করবার জন্য পাহাড়ে চলে গেলেন।
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International