Book of Common Prayer
দায়ূদের একটি মিকতাম।
16 হে ঈশ্বর, আমায় রক্ষা করুন।
কারণ আমি আপনার ওপর নির্ভর করি।
2 আমি প্রভুকে বলেছিলাম,
“প্রভু, আপনিই আমার সদাপ্রভু।
যা কিছু ভালো জিনিস এখন আমার আছে তা আপনার কাছ থেকেই এসেছে।”
3 পৃথিবীতে তাঁর অনুচরদের জন্য প্রভু বিস্ময়কর কাজ করেন।
প্রভু দেখিয়ে দেন যে প্রকৃতই তিনি ঐসব লোকেদের ভালোবাসেন।
4 কিন্তু যারা অন্যান্য দেবতার পূজা করতে ছুটে যায় তারা অনেক যন্ত্রণায় পড়বে।
যে রক্ত তারা ঐসব দেবমূর্ত্তিতে উৎসর্গ করে, আমি সেই উৎসর্গের সামিল হব না।
এমনকি আমি ঐসব দেবমূর্ত্তির নামও উচ্চারণ করবো না।
5 না, আমার ভাগের অংশ, আমার পানপাত্র প্রভুর কাছ থেকে আসে।
প্রভু আপনি আমায় সহায়তা দিয়েছেন।
আপনি আমায় আমার অংশ দিয়েছেন।
6 আমার অংশটুকু অবশ্যই চমৎকার।
আমার উত্তরাধিকার সত্যিই সুন্দর।
7 আমি প্রভুর প্রশংসা করি, কারণ তিনি আমায় উত্তমরূপে শিক্ষাদান করেছেন।
এমনকি নিশাকালে, তাঁর নির্দেশসমূহ তিনি আমার অন্তরের গভীরে রেখে যান।
8 আমি সর্বদাই প্রভুকে আমার সামনে রাখি।
আমি কখনই তাঁর দক্ষিণ পাশ ছেড়ে যাবো না।
9 তাই, আমার হৃদয় এবং আত্মা অত্যন্ত খুশী হবে।
আমার দেহও নিরাপদে বেঁচে থাকবে।
10 কেন? কারণ হে প্রভু পাতালে আপনি আমার আত্মা ছেড়ে চলে যাবেন না।
আপনার বিশ্বস্ত জনকে আপনি কবরে পচতে দেবেন না।
11 আপনি আমাকে বাঁচার প্রকৃত পথ সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করবেন।
হে প্রভু, শুধুমাত্র আপনার সঙ্গে থাকলেই জীবনের চরম শান্তি লাভ হবে।
আপনার ডানদিকে থাকতে পারলেই চিরন্তন সুখ আসবে।
দায়ূদের একটি প্রার্থনা।
17 হে প্রভু, ন্যায্য বিচারের জন্য আমার প্রার্থনা শুনুন।
আমি উচ্চস্বরে আপনাকে ডাকছি
এবং আমি যা বলছি, সৎভাবে বলছি।
অতএব, আমার প্রার্থনা শুনুন।
2 আপনি আমার সম্পর্কে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেবেন।
আপনি সত্যকে দেখতে পান।
3 আপনি আমার অন্তরের গভীর পর্যন্ত দেখেছেন।
সারারাত আপনি আমার সঙ্গে ছিলেন।
আপনি আমায় জিজ্ঞাসা করেছেন এবং আমার মধ্যে কোন ত্রুটি পান নি।
আমি কোন মন্দ ফন্দি করি নি।
4 আপনার নির্দেশ পালন করতে গিয়ে,
মানুষের পক্ষে যতখানি কঠিন প্রচেষ্টা সম্ভব, তা আমি করেছি।
5 আমি আপনার পথ অনুসরণ করেছি।
আমার দুটি পা আপনার প্রদর্শিত জীবনের চলার পথ কখনও পরিত্যাগ করে নি।
6 হে ঈশ্বর, আমি আপনাকে ডাকছি, দয়া করে আমায় উত্তর দিন।
আমার কথা শুনুন, আমার প্রার্থনা শুনুন।
7 হে ঈশ্বর, যারা আপনার ওপর নির্ভর করে,
তাদের আপনি সাহায্য করেন।
সেই সব লোক আপনার ডানদিকে দাঁড়াবে।
তাই দয়া করে, আপনার এক অনুগামীর প্রার্থনা শুনুন।
8 আপনার চোখের মণির মত আমায় রক্ষা করুন।
আপনার ডানার ছায়ায় আমায় আশ্রয় দিন।
9 প্রভু, সেই সব মন্দ লোক, যারা আমাকে বিনষ্ট করতে চাইছে, তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
যারা আমার চার পাশে থেকে আমাকে আঘাত করতে চাইছে, তাদের হাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
10 ঐসব মন্দ লোক এত অহঙ্কারী যে তারা ঈশ্বরের বাক্য শুনতেই চায় না
এবং তারা নিজেদের সম্পর্কে বড়াই করে।
11 ঐসব লোক আমাকে তাড়া করেছে।
এখন তারা আমার চারপাশে রয়েছে।
তারা আক্রমণ করার জন্য তৈরী হয়ে রয়েছে।
12 ঐসব মন্দ লোক সিংহের মত অন্য পশুকে হত্যা করে খাবার জন্য অপেক্ষা করছে।
তারা সিংহের মত লুকিয়ে থাকে, আক্রমণের জন্য প্রস্তুত থাকে।
13 প্রভু উঠুন এবং শত্রুদের কাছে যান।
ওদের দিয়ে আত্মসমর্পণ করান।
আপনার তরবারি ব্যবহার করে আমাকে মন্দ লোকদের হাত থেকে রক্ষা করুন।
14 প্রভু, আপনার ক্ষমতা দ্বারা
দুষ্ট লোকদের বসতভূমি থেকে উচ্ছেদ করুন।
প্রভু, বহু লোক আপনার সাহায্যের জন্য এসেছে।
এই জীবনে এইসব লোকদের খুব বেশী কিছু নেই।
ঐসব লোককে প্রচুর খাদ্য দিন।
ওদের শিশুরা যা চায় সব দিন।
ওদের শিশুদের এতই বেশী পরিমান দিন যেন, ওরা ওদের শিশুদের জন্যও উদ্বৃত্ত খাদ্য রেখে যেতে পারে।
15 আমি বিচারের জন্য প্রার্থনা করেছি, তাই হে প্রভু আমি আপনাকে দেখবো।
এবং হে প্রভু, আপনাকে দেখে পরিপূর্ণভাবে পরিতৃপ্ত হব।
পরিচালকের প্রতি: “ভোরের হরিণ” গানটির সুরে বসানো দায়ূদের একটি গীত।
22 হে আমার ঈশ্বর, হে আমার ঈশ্বর!
কেন আপনি আমায় ছেড়ে চলে গেছেন?
আপনি এত দূরে যে, আমাকে রক্ষা করতে পারবেন না!
আপনি এত দূরে যে, আমার সাহায্যের জন্য চিৎকারও শুনতে পাবেন না!
2 ঈশ্বর আমার, সারাদিন ধরে আমি আপনাকে ডেকেছি।
কিন্তু আপনি সাড়া দেন নি।
সারারাত ধরে আমি আপনাকে ডেকেছি।
3 ঈশ্বর, আপনি হলেন সেই পবিত্র একজন।
আপনি রাজার মত থেকে যান। ইস্রায়েলের প্রশংসাই আপনার সিংহাসন।
4 আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার ওপর বিশ্বাস করেছিলেন।
হ্যাঁ, হে ঈশ্বর তাঁরা আপনার ওপর বিশ্বাস করেছিলেন এবং আপনি তাঁদের রক্ষা করেছেন।
5 ঈশ্বর, আমাদের পূর্বপুরুষরা আপনার কাছে সাহায্যের জন্য কেঁদে পড়েছিলেন
এবং তাঁরা তাঁদের শত্রুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন।
তাঁরা আপনার ওপর আস্থা রেখেছিলেন এবং তাই তাঁরা আশাহত হন নি!
6 সুতরাং, আমি কি কীট, মানুষ নই?
লোকে আমার সম্পর্কে লজ্জা বোধ করে এবং আমাকে ঘৃণা করে।
7 প্রত্যেকে যারা আমাকে দেখে, আমায় নিয়ে ঠাট্টা করে।
তারা তাদের মাথা নাড়ায় এবং আমায় জিভ ভেঙ্গায়।
8 তারা আমায় বলে: “প্রভুর কাছে সাহায্য চাও।
হয়তো বা তিনি তোমার পরিত্রাণ করবেন।
তিনি যদি সত্যিই তোমায় পছন্দ করেন, নিশ্চয়ই তিনি তোমায় উদ্ধার করবেন!”
9 হে ঈশ্বর, এটাই প্রকৃত সত্য যে, একমাত্র আপনার ওপরেই আমি নির্ভর করি।
এমন কি আমি যখন আমার মায়ের বুকের দুধ খেতাম আপনি আমাকে আশ্বাস এবং স্বস্তি দিতেন।
10 যে দিন আমি জন্মেছি, সে দিন থেকেই আপনি আমার ঈশ্বর।
মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার পরেই আমি আপনার যত্নে লালিত হয়েছি।
11 তাই, হে আমার ঈশ্বর, আমাকে ছেড়ে যাবেন না!
কারণ সংকট নিকটবর্ত্তী।
আমাকে সাহায্য করার মত কেউই নেই।
12 আমার চারপাশে লোকজন রয়েছে, শক্তিশালী বলদের মত
তারা আমার চারদিকে ঘিরে রয়েছে।
13 তাদের মুখগুলো একটা গর্জনকারী সিংহের মত হাঁ করে খোলা,
যেন তার শিকারের দিকে সবেগে ছুটে যাচ্ছে।
14 মাটিতে ফেলে দেওয়া জলের মত আমার শক্তি চলে গেছে।
আমার অস্থিগুলো আলাদা হয়ে গেছে।
আমি আমার সাহস হারিয়ে ফেলেছি!
15 আমার শক্তি[a] ভাঙ্গা মৃত্ পাত্রের মতই শুকিয়ে গেছে।
আমার জিভ তালুতে আটকে যাচ্ছে।
আপনি আমাকে মৃত্যুর ধূলায় পৌঁছে দিয়েছেন।
16 আমার চারপাশে “কুকুর” ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সেই সব মন্দ লোকেদের দল আমাকে ফাঁদে ফেলেছে।
সিংহের মত তারা আমার হাত ও পা বিদ্ধ করে দিয়েছে।
17 আমি আমার হাড়গুলো পর্যন্ত দেখতে পাচ্ছি।
লোকজন আমার দিকে চেয়ে রয়েছে!
তারা ক্রুর দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে!
18 ঐ লোকগুলো ওদের মধ্যে আমার কাপড়গুলো ভাগাভাগি করে নিচ্ছে।
তারা আমার কাপড়ের জন্য ঘুঁটি চালছে।
19 প্রভু, আমাকে ছেড়ে যাবেন না!
আপনিই আমার শক্তি।
শীঘ্রই আমাকে সাহায্য করুন!
20 প্রভু, শত্রুর তরবারি হতে আমায় রক্ষা করুন।
ওই সব কুকুরদের হাত থেকে আমার মূল্যবান জীবন রক্ষা করুন।
21 আমাকে সিংহের মুখ থেকে রক্ষা করুন।
বলদের শিং এর আঘাত থেকে আমায় রক্ষা করুন।
22 প্রভু, আপনার সম্পর্কে আমি আমার ভাইদের বলবো।
মহাসমাজের সামনে আমি আপনার প্রশংসা করব।
23 তোমরা যারা প্রভুর উপাসনা কর, তারা প্রভুর প্রশংসা কর!
হে ইস্রায়েলের উত্তরপুরুষগণ প্রভুর প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর!
হে ইস্রায়েলের মানুষ, প্রভুকে ভয় ও শ্রদ্ধা কর।
24 কেন? কারণ প্রভু দরিদ্র লোকদের তাদের সংকটে সাহায্য করেন।
প্রভু তাদের জন্য লজ্জিত নন।
যদি মানুষ তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে
তিনি তাদের কাছ থেকে লুকিয়ে থাকেন না।
25 প্রভু, মহাসমাজে আমার প্রশংসা আপনার কাছ থেকেই আসে।
এইসব উপাসনাকারী ভক্তদের সামনে, আমার মানত করা বলি আমি আপনাকে উৎসর্গ করবো।
26 দরিদ্র লোকরা খেয়ে তৃপ্ত হবে।
তোমরা যারা প্রভুকে খুঁজছ, তারা তাঁর প্রশংসা কর!
তোমাদের অন্তঃকরণ চিরজীবি হউক!
27 তোমরা, সুদূর দেশগুলির জনগণ, প্রভুকে মনে রেখো
এবং তাঁর কাছে ফিরে এস!
যে সব মানুষ বিদেশে থাকে তারাও যেন প্রভুরই উপাসনা করে।
28 কেন? কারণ প্রভুই রাজা।
তিনি সব জাতিকে শাসন করেন।
29 বলিষ্ঠ এবং সুদেহী লোকেরা আহারান্তে ঈশ্বরের কাছে প্রণিপাত করবে।
বস্তুতঃ সকলে যারা মারা যাবে
এবং যারা ইতিমধ্যেই মারা গেছে
তারা সকলেই ঈশ্বরের কাছে অবনত হবে!
30 এবং ভবিষ্যতে আমাদের উত্তরপুরুষরা প্রভুর সেবা করবে।
লোকে চিরদিন তাঁর কথা বলবে।
31 প্রত্যেকটি প্রজন্ম তাদের শিশুদের কাছে
ঈশ্বর যে ভাল জিনিসগুলি করেছেন সে সম্পর্কে বলবে।
শলোমনের মন্দির নির্মাণ
5 সোরের রাজা হীরম ছিলেন রাজা শলোমনের পিতা দায়ূদের বন্ধু। হীরম যখন খবর পেলেন দায়ূদের পরে শলোমন নতুন রাজা হয়েছেন, তিনি তাঁর দাসদের শলোমনের কাছে পাঠালেন। 2 শলোমন রাজা হীরমকে জানালেন:
3 “আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, আমার পিতা রাজা দায়ূদকে তাঁর চারপাশে অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছিল যত দিন পর্যন্ত না প্রভু তাঁকে তাদের উপর বিজয়ী হতে দেন, যে কারণে প্রভু, তাঁর ঈশ্বরের সম্মানে কোনো মন্দির বানানোর সময় পাননি। 4 কিন্তু এখন প্রভু, আমার ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমার রাজ্যের সর্বত্র শান্তি বিরাজ করছে। আমার কোন শত্রু নেই। আমার প্রজাদেরও কোন বিপদের সম্ভাবনা নেই।
5 “প্রভু আমার পিতাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘তোমার পরে আমি তোমার পুত্রকেই রাজা করবো, আর সে আমার জন্য একটা মন্দির বানাবে।’ তাই আমার আন্তরিক ইচ্ছা প্রভুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমি এবার সেই মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করব। 6 আর একাজে আমি আপনার সাহায্য চাই। এর জন্য আপনি দয়া করে লিবানোনে আপনার লোকজন পাঠান। তারা সেখানে এসে আমার এই কাজের জন্য এরস গাছ কাটবে। আমার নিজের ভৃত্যরাও আপনার লোকদের সঙ্গে হাত লাগাবে। একাজের জন্য আপনার ভৃত্যদের যে পারিশ্রমিক দেওয়া উচিৎ বলে আপনি মনে করবেন আমি তাই দেব, কিন্তু আপনার সাহায্য অবশ্যই চাই। আমাদের এখানকার ছুতোররা সীদোনের ছুতোরদের মতো দক্ষ নয়।”
7 হীরম শলোমনের এই অনুরোধ শুনে খুবই খুশি হলেন। তিনি আনন্দিত হয়ে বললেন, “প্রভুকে আমি আমার অশেষ ধন্যবাদ জানাই, কারণ এই মহান সাম্রাজ্য শাসনের জন্য তিনি রাজা দায়ূদকে একজন বুদ্ধিমান পুত্র উপহার দিয়েছেন।” 8 এরপর হীরম শলোমনকে খবর পাঠালেন,
“তোমার অনুরোধের কথা জানলাম। তোমার যতগুলি এরস গাছ ও দেবদারু গাছের প্রয়োজন আমি তোমায় দেব। 9 আমার ভৃত্যরা সেগুলো লিবানোন থেকে সমুদ্রের ধার পর্যন্ত আনার পর একসঙ্গে বেঁধে তুমি যেখানে চাও সেখানেই ভেলা করে সমুদ্রের কিনারা বেয়ে ভাসিয়ে দেব। তারপর আমি ভেলাগুলো সরিয়ে নেবার পর তুমি গাছগুলো নিয়ে নিতে পার। এবং আমার পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ করাই হবে আমার প্রতি তোমার অনুগ্রহ।”
10-11 একাজের জন্য শলোমন প্রতি বছর হীরম ও তাঁর পরিবারবর্গের জন্য প্রায় 120,000 বুশেল গম, 120,000 গ্যালন খাঁটি তেল পাঠাতেন।
12 প্রতিশ্রুতি মতো প্রভু শলোমনকে অন্তর্দৃষ্টি ও জ্ঞান দিয়েছিলেন এবং রাজা হীরম ও শলোমনের মধ্যে শান্তি বজায় ছিল। তাঁরা দুজনে নিজেদের মধ্যে একটি চুক্তি করেন।
13 রাজা শলোমন ইস্রায়েলের 30,000 ব্যক্তিকে তাঁর কাজে সহায়তার জন্য নিয়োগ করলেন। 14 তিনি এই সমস্ত লোকদের খবরদারি করার জন্য অদোনীরাম নামে এক ব্যক্তিকে প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করেন। শলোমন এই 30,000 লোককে 10,000 লোকের তিনটি দলে ভাগ করে দিয়েছিলেন। লিবানোনে এক মাস কাজ করবার পর প্রত্যেকটি দলের লোকরা বাড়ী যেত এবং দু মাস বিশ্রাম নিত। 15 এছাড়াও শলোমন পার্বত্য অঞ্চলের 80,000 লোককে এই কাজে যোগ দিতে বাধ্য করেন। এদের কাজ ছিল পাথর কাটা। আর আরো 70,000 লোক সেই পাথর বয়ে নিয়ে যেত। 16 এদের সকলের তদারকির জন্য নিযুক্ত হয়েছিল আরো 3300 জন। 17 রাজা শলোমন শ্রমিকদের মন্দিরের ভিত বানানোর জন্য বড় দামী পাথর কাটার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই সমস্ত পাথরগুলি খুব সাবধানে কাটা হত। 18 তারপর শলোমন ও হীরমের মিস্ত্রিরা আর বিব্লসের লোকরা এইসব পাথর খোদাই করত। তারা মন্দিরের জন্য প্রয়োজনীয় তক্তা ও পাথর বানাত।
শলোমন মন্দির নির্মাণ করলেন
6 ইস্রায়েলের লোকরা মিশর থেকে চলে আসার 480 বছর[a] পরে এবং তাঁর রাজত্বের চার বছরের মাথায়, রাজা শলোমন ঈশ্বরের মন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করেন। এটি ছিল ঐ বছরের দ্বিতীয় মাস বা সিব মাস।
7 দেওয়ালগুলো বানানোর জন্য মিস্ত্রিরা বড় পাথর ব্যবহার করেছিল। এইসব পাথর যেখান থেকে আনা সেখানেই কেটে আনা হয়েছিল বলে মন্দির প্রাঙ্গণে হাতুড়ি, কুড়ুল বা কোন রকমের আওয়াজ পাওয়া যেত না।
পৌল মিলিতা দ্বীপে
28 এইভাবে সকলে নিরাপদে তীরে পৌঁছে জানতে পারলাম যে আমরা মিলিতা দ্বীপে উঠেছি। 2 সেখানকার লোকরা আমাদের সঙ্গে খুব ভাল ব্যবহার করল। বৃষ্টি পড়ার দরুন খুব ঠাণ্ডা হওয়ায় তারা আগুন জ্বেলে আমাদের সকলকে স্বাগত জানাল। 3 পৌল এক বোঝা শুকনো কাঠ যোগাড় করে এনে আগুনের ওপর ফেলে দিলে আগুনের হল্কায় একটা বিষধর সাপ বেরিয়ে এসে পৌলের হাতে জড়িয়ে ধরল। 4 তখন সেই দ্বীপের লোকরা তার হাতে সাপটাকে ঝুলতে দেখে বলাবলি করতে লাগল, “এ লোকটা নিশ্চয় খুনী, সমুদ্রের ঝড়ের হাত থেকে বাঁচলেও ন্যায় একে বাঁচতে দিল না।”
5 কিন্তু পৌল হাত ঝেড়ে সেই সাপটাকে আগুনের মধ্যে ফেলে দিলেন, তাঁর কোন ক্ষতি হল না। 6 এই ব্যাপার দেখে তারা মনে করল হয় পৌলের শরীর ফুলে উঠবে, নয়তো তিনি হঠাৎ মারা যাবেন। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পরও তাঁর কিছুই ক্ষতি হল না দেখে তারা পৌল সম্বন্ধে তাদের মত বদল করে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, “ইনি নিশ্চয়ই দেবতা।”
7 সেই জায়গার কাছেই দ্বীপের প্রধান কর্মকর্তা জমিদার পুব্লিয় থাকতেন। তিনি তাঁর বাড়িতে আমাদের সাদরে নিয়ে গেলেন। তিনি আমাদের প্রতি খুব ভাল ব্যবহার করলেন আর তিন দিন ধরে আমাদের আতিথ্য করলেন। 8 সেই সময় পুব্লিয়ের বাবা খুব অসুস্থ ছিলেন। তিনি জ্বর ও আমাশা রোগে শয্যাশায়ী ছিলেন। পৌল তাঁকে দেখার জন্য ভেতরে গেলেন। এরপর তিনি প্রার্থনা করে তাঁর ওপর দুহাত রাখলে তিনি সুস্থ হয়ে গেলেন। 9 এই ঘটনার পর ঐ দ্বীপে অন্য যত রোগী ছিল তারা পৌলের কাছে এসে রোগ মুক্ত হল।
10-11 ঐ দ্বীপের লোকরা আমাদের অনেক উপহার দিয়ে সম্মান দেখাল। আমরা সেখানে তিন মাস থাকলাম আর আমাদের যাত্রা পথের জন্য যা যা প্রয়োজন সে সব জিনিস এনে তারা জাহাজে তুলে দিল।
পৌল রোমে গেলেন
তিন মাস পর আমরা আলেকসান্দ্রীয় এক জাহাজে উঠে যাত্রা করলাম, সেই দ্বীপে শীতকাল এসে পড়ায় ঐ জাহাজটি নোঙ্গর করে রাখা ছিল। জাহাজটিতে যমজ দেবের মূর্তি খোদাই করা ছিল। 12 আমরা প্রথমে সুরাকুষে এলাম, সেখানে তিন দিন থাকলাম। 13 সেখান থেকে যাত্রা করে আমরা রীগিয়ে পৌঁছলাম। পরদিন দক্ষিণা বাতাস বইতে শুরু করলে আমরা জাহাজ ছাড়তে পারলাম, এবং দ্বিতীয় দিনে পূতিয়লীতে পৌঁছলাম। 14 সেখানে আমরা কয়েকজন ভাইয়ের দেখা পেলাম। তাঁরা সেখানে সাতদিন থাকার জন্য আমাদের অনুরোধ করলেন। এইভাবে আমরা রোমে এসে পৌঁছলাম। 15 রোমের ভাইরা আমাদের কথা জানতে পেরে আপ্পিয়ের বাজার ও তিন সরাই পর্যন্ত এগিয়ে এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করলেন। তাঁদের দেখে পৌল ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন ও উৎসাহ বোধ করতে লাগলেন।
রোমে পৌল
16 রোমে পৌল একা থাকার অনুমতি পেলেন; কিন্তু একজন সৈনিককে তাঁর প্রহরায় রাখা হল।
যীশুর শিষ্যরা সকলে তাঁকে ত্যাগ করবে
(মথি 26:31-35; লূক 22:31-34; যোহন 13:36-38)
27 যীশু তাদের বললেন, “তোমরা সকলে বিশ্বাস হারাবে, কারণ শাস্ত্রে লেখা আছে,
‘আমি মেষপালককে আঘাত করব
এবং মেষেরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়বে।’(A)
28 আমি বেঁচে উঠলে, তোমাদের আগে গালীলে যাব।”
29 পিতর তাঁকে বললেন, “সকলে বিশ্বাস হারালেও আমি কিন্তু মোটেই বিশ্বাস হারাব না।”
30 তখন যীশু তাঁকে বললেন, “আমি সত্যি বলছি, আজ এই রাতেই দুবার মোরগ ডাকার আগে তুমি আমাকে তিনবার অস্বীকার করবে।”
31 কিন্তু পিতর আরও জোর দিয়ে বললেন, “যদি আপনার সঙ্গে মরতেও হয়, তবুও আমি আপনাকে অস্বীকার করব না।” বাকি সকলে সেই একই শপথ করলেন।
যীশুর একান্তে প্রার্থনা
(মথি 26:36-46; লূক 22:39-46)
32 তখন তাঁরা গেৎশিমানী নামে একস্থানে এলেন। আর যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “যতক্ষণ আমি প্রার্থনা করি, তোমরা এখানে বসে থাক।” 33 পরে তিনি পিতর, যাকোব এবং যোহনকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, সে সময় ব্যথায় তাঁর আত্মা ব্যাকুল হয়ে উঠল। 34 তিনি তাঁদের বললেন, “আমার প্রাণ মৃত্যু পর্যন্ত উদ্বেগে আচ্ছন্ন। তোমরা এখানে থাক আর জেগে থাক।”
35 পরে কিছুটা এগিয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে তিনি প্রার্থনা করলেন যে যদি সম্ভব হয় তবে এই দুঃখের সময়টা তাঁর কাছ থেকে সরে যাক। 36 তিনি বললেন, “আব্বা, পিতা তোমার পক্ষে তো সবই সম্ভব। এই পানপাত্র[a] আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নাও। কিন্তু তবুও আমি যা চাই তা নয়, তোমার ইচ্ছাই পূর্ণ হোক্।”
37 পরে তিনি এসে দেখলেন তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন, আর তিনি পিতরকে বললেন, “শিমোন তুমি কি ঘুমিয়ে পড়েছ? তুমি একঘন্টাও জেগে থাকতে পারলে না? 38 তোমরা জেগে থাক এবং প্রার্থনা কর, যাতে প্রলুব্ধ না হও। আত্মা ইচ্ছুক কিন্তু শরীর দুর্বল।”
39 তিনি আবার গেলেন এবং একই কথা বলে প্রার্থনা করলেন। 40 তারপর ফিরে এসে দেখলেন তাঁরা ঘুমাচ্ছেন, কারণ ঘুমে তাদের চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল। তাঁরা যীশুর দিকে তাকিয়ে তাঁকে কি বলবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না।
41 পরে তিনি তৃতীয়বার এসে তাঁদের বললেন, “তোমরা কি এখনও ঘুমোচ্ছ, বিশ্রাম করছ? যথেষ্ট হয়েছে। সময় হয়ে গেছে। দেখ, মানবপুত্রকে বিশ্বাসঘাতকতা করে পাপীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। 42 ওঠ! আমরা যাই! ঐ দেখ, যে আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে সে আসছে।”
Bengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International