লূক 24:13-35
Bengali: পবিত্র বাইবেল
ইম্মায়ুর পথে
(মার্ক 16:12-13)
13 ঐ দিনই দুজন অনুগামী জেরুশালেম থেকে সাত মাইল দূরে ইম্মায়ু নামে একটি গ্রামে যাচ্ছিলেন। 14 এই যে সব ঘটনাগুলি ঘটে গেল, যেতে যেতে তাঁরা সে বিষয়েই পরস্পর আলোচনা করছিলেন। 15 তাঁরা যখন এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন, এমন সময় যীশু নিজে এসে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে চলতে লাগলেন। 16 (ঘটনাটি এমনভাবেই ঘটল যাতে তাঁরা যীশুকে চিনতে না পারেন।) 17 যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা যেতে যেতে পরস্পর কি নিয়ে আলোচনা করছ?”
তাঁরা থমকে দাঁড়ালেন, তাঁদের খুবই বিষন্ন দেখাচ্ছিল। 18 তাঁদের মধ্যে ক্লিয়পা নামে একজন তাঁকে বললেন, “জেরুশালেমের অধিবাসীদের মধ্যে আমাদের মনে হয় আপনিই একমাত্র লোক, যিনি জানেন না গত কদিনে সেখানে কি কাণ্ডটাই না ঘটে গেছে।”
19 যীশু তাঁদের বললেন, “কি ঘটেছে, তোমরা কিসের কথা বলছ?”
তাঁরা যীশুকে বললেন, “নাসরতীয় যীশুর বিষয়ে বলছি। তিনি ছিলেন এমন একজন মানুষ, যিনি তাঁর কথা ও কাজের শক্তিতে ঈশ্বর ও সমস্ত মানুষের চোখে নিজেকে এক মহান ভাববাদীরূপে প্রমাণ করেছেন। 20 কিন্তু আমাদের প্রধান যাজকরা ও নেতারা তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেবার জন্য ধরিয়ে দিল, তারা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করে মারল। 21 আমরা আশা করেছিলাম যে তিনিই সেই যিনি ইস্রায়েলকে মুক্ত করবেন।
“কেবল তাই নয়, আজ তিন দিন হল এসব ঘটে গেছে। 22 আবার আমাদের মধ্যে কয়েকজন স্ত্রীলোক আমাদের অবাক করে দিলেন। তাঁরা আজ খুব ভোরে সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; 23 কিন্তু সেখানে তাঁরা যীশুর দেহ দেখতে পান নি। সেখান থেকে ফিরে এসে তাঁরা আমাদের বললেন যে তাঁরা স্বর্গদূতদের দর্শন পেয়েছেন, আর সেই স্বর্গদূতরা তাঁদের বলেছেন যে যীশু জীবিত। 24 এরপর আমাদের সঙ্গে যাঁরা ছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজন সেই সমাধির কাছে গিয়েছিলেন; আর তাঁরা দেখলেন স্ত্রীলোকরা যা বলেছেন তা সত্য। তাঁরা যীশুকে সেখানে দেখতে পান নি।”
25 তখন যীশু তাঁদের বললেন, “তোমরা সত্যি কিছু বোঝ না, তোমাদের মন বড়ই অসাড়, তাই ভাববাদীরা যা কিছু বলে গেছেন তোমরা তা বিশ্বাস করতে পার না। 26 খ্রীষ্টের মহিমায় প্রবেশ লাভের পূর্বে কি তাঁর এইসব কষ্টভোগ করার একান্ত প্রয়োজন ছিল না?” 27 আর তিনি মোশির পুস্তক থেকে শুরু করে ভাববাদীদের পুস্তকে তাঁর বিষয়ে যা যা লেখা আছে, শাস্ত্রের সে সব কথা তাঁদের বুঝিয়ে দিলেন।
28 তাঁরা যে গ্রামে যাচ্ছিলেন তার কাছাকাছি এলে পর যীশু আরো দূরে যাবার ভাব দেখালেন। 29 তখন তাঁরা যীশুকে খুব অনুরোধ করে বললেন, “দেখুন, বেলা পড়ে গেছে, এখন সন্ধ্যা হয়ে এল, আপনি আমাদের এখানে থেকে যান।” তাই তিনি তাঁদের সঙ্গে থাকবার জন্য ভেতরে গেলেন।
30 তিনি যখন তাঁদের সঙ্গে খেতে বসলেন, তখন রুটি নিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেন। পরে সেই রুটি টুকরো টুকরো করে তাঁদের দিলেন। 31 সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের চোখ খুলে গেল, তাঁরা যীশুকে চিনতে পারলেন, আর তিনি সেখান থেকে অদৃশ্য হয়ে গেলেন। 32 তখন তাঁরা পরস্পর বলাবলি করলেন, “তিনি যখন রাস্তায় আমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন ও শাস্ত্র থেকে আমাদের বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, তখন আমাদের অন্তর কি আবেগে উদ্দীপ্ত হয়ে ওঠে নি?”
33 তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে উঠে জেরুশালেমে গেলেন। সেখানে তাঁরা সেই এগারোজন প্রেরিত ও তাঁদের সঙ্গে আরো অনেককে দেখতে পেলেন। 34 প্রেরিত ও অন্যান্য যাঁরা সেখানে ছিলেন তাঁরা বললেন, “প্রভু, সত্যি জীবিত হয়ে উঠেছেন। তিনি শিমোনকে দেখা দিয়েছেন।”
35 তখন সেই দুজন অনুগামীও রাস্তায় যা ঘটেছিল তা তাঁদের কাছে ব্যক্ত করলেন। আর যীশু যখন রুটি টুকরো টুকরো করছিলেন তখন কিভাবে তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন তাও জানালেন।
Read full chapterBengali Holy Bible: Easy-to-Read Version. All rights reserved. © 2001 Bible League International